ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে ?
ইন্টারনেটের জগতে ইউটিউব এখন এক অপরিহার্য নাম।
২০০৫ সালে পথচলা শুরু হলেও বর্তমানে ইউটিউব সবার ভার্চুয়্যাল জগতে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে।
শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য নয়, অর্থ উপার্জনের জন্য অনন্য এবং জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে এই ইউটিউব।
যে কেউ তার পছন্দ, দক্ষতা এবং অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে আপলোডের মাধ্যমে মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জন করতে পারে।
বর্তমানে পড়াশোনা, রান্না, বিনোদন, ভ্রমন এমন নানা ধরনের বিষয়ের উপর ইউটিউব ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে।
অনেকের আবার এ ধরনের ভিডিও তৈরি করে আপলোড করাকে রীতিমতো পাকাপোক্ত পেশা হিসেবে গ্রহন করেছেন।
শুরুর দিকে ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে- তা নিয়ে অনেকের সন্দেহ এবং সংশয় কাজ করে।
এদের মধ্যে অনেকে আবার তারকাখ্যাতি পেয়েছেন; লাখ লাখ অনুসারী তাদের।
তবে বিষয়টা এমন নয় যে আপনি মনে করলেন একটি ইউটিউব চ্যানেল খুললাম কিছু ভিডিও আপলোড হলো আর লাখো ভিউয়ের পাশাপাশি দেদারসে অর্থও আসতে শুরু করলো।
সব কাজের মতো এরও কিছু পদ্ধতি ও নিয়ম- নীতিমালা রয়েছে।
ইউটিউব থেকে উপার্জন করতে হলে আমাদের মূলত একটি নির্দিষ্ট ধরনের বা বিভিন্ন ধরনের ভিডিও নিয়মিত আপলোড দিতে হবে।
জানতে হবে এর নানা খুঁটিনাটি বিষয়গুলো। বেশির- ভাগ সময় দেখা যায় নতুন ইউটিউবাররা জানে না ইউটিউবের জন্য কি ধরনের ভিডিও তৈরি করলে ভালো হবে।
কোন ধরনের ভিডিওগুলো খুব সহজে দর্শকদের মন জয় করে নিবে ও সাবস্ক্রাইবারও পাওয়া যাবে অনেক বেশি।
ইউটিউব নিস (Niche) কি?
এক কথায় বলতে গেলে ইউটিউব নিস বলতে ইউটিউবের জন্য যে ভিডিও তৈরি করা হবে তার বিষয়বস্তু নির্ধারন করা।
ইউটিউবে কি বিষয়ের ওপর ভিডিও তৈরি করলে ভালো হবে, কোন ধরনের ভিডিও বেশি দেখা হয়, ইউটিউবে বেশিরভাগ দেখা ভিডিও কোনগুলো।
এসব বিষয় বিবেচনা করলে ইউটিউবের জন্য ভিডিও তৈরির বিষয়বস্তু সহজে পাওয়া যায়।
যেমন-কেউ হয়তো ট্রান্সপোর্ট নিয়ে কাজ করবে এ ক্ষেত্রে তার নিস বা আইডিয়া হচ্ছে পরিবহন ও এর সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়।
আবার কেউ যদি পরিবহন খাতের মধ্যে শুধুমাত্র সাইকেলের ওপর কোন ভিডিও তৈরি করতে চায় তাহলে এ ক্ষেত্রে সাইকেল হলো সাব নিস।
আবার সাইকেলের মধ্যে যদি শুধুমাত্র এর চাকা নিয়ে কাজ করতে চায় তাহলে এটি হবে মাইক্রো বা ক্ষুদ্র নিস।
বড় নিস, সাব নিস ও মাইক্রো নিস নিয়ে ধারণা থাকলে বিষয়বস্তু খোঁজে পাওয়া , কাজ করা সহজ হয়ে উঠে।
ইউটিউব ভিডিও তৈরিতে নিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ আপনার ভিডিওটি সফল হবে কিনা তা নির্ভর করছে সঠিক নিস নির্বাচনের ওপর।
কারণ প্রতিটি ভিডিওর একটি লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য থাকতে হবে । জানতে হবে এর শ্রোতা বা দর্শক কারা।
ভিডিওর বিষয়টি নিজেকে প্রথমে ভালোভাবে বুঝতে হবে। আর এ কারণেই যে বিষয়ে অভিজ্ঞ তা নিয়েই কাজ করা ভালো।
মূলত নিস আইডিয়াই ইউটিউব ব্যবসার মূল ভিত্তি। ফলে ইউটিউবার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে হলে অথবা ইউটিউব ভিডিও থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে নিজের আগ্রহ , দক্ষতার পাশাপাশি দর্শক আগ্রহের বিষয় মাথায় রেখে বিষয়বস্তু নির্বাচন করতে হবে।
কারণ নির্ধারিত নিস সম্পর্কে যদি নিজের আগ্রহ না থাকে তাহলে কাজটি ভালো হবে না।
ফলে ইউটিউব চ্যানেলটির ভিউ ক্রমে নিচের দিকে নামতে থাকবে।
তাই নিজের আগ্রহ ও দক্ষতার জায়গা থেকে ইউটিউব নিস বা বিষয়বস্তু বাছাই করতে হবে।
কোন বিষয়ে ইউটিউব ভিডিও বানানো লাভ জনক?
অনলাইন থেকে অনেকভাবে আয় করা যায়। ইউটিউব তার একটি মাধ্যম। এটি ভিডিও আপলোড করে অর্থ উপার্জনের একটি সহজ মাধ্যম।
ইউটিউবে সব মানুষের জন্য পৃথক পৃথক কাজ রয়েছে।
ইউটিউব থেকে মূলত চারভাবে অর্থ উপার্জন করা যায়।
ভিডিও বানিয়ে, অ্যাফিলেট করে, স্পন্সর থেকে ও অ্যাড বানিয়ে।
অনেকে পেশাদার ইউটিউবার হওয়ার জন্য কোর্স করে, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ও লাইটিয়ের জন্য হাজার হাজার টাকা খরচ করে।
কিন্তু সফলতার মুখ দেখে না। আবার অনেকেই হাতে থাকা সাধারন স্মার্টফোন, হাজার টাকার মাইক্রো- ফোন দিয়ে কাজ শুরু করেই তারকাখ্যাতি পেয়ে যান।
এ জন্য পরিশ্রম, দক্ষতা, চিন্তাশীল দৃষ্টিভ্গী , সৃজনশীলতা ও ধৈর্য্যরে পাশাপাশি দর্শকরা কোন ধরনের কনটেন্ট বেশি পছন্দ করে তা খোঁজে বের করতে হবে।
কোন ধরনের কনটেন্টে মানুষের আগ্রহ রয়েছে ও তাদের জন্য উপকারী মনে করে সে ধরনের বিষয়ের ওপর ভিডিও তৈরি করলে তা লাভজনক হবে।
ইউটিউব চ্যানেলের জন্য কেবল একটি নিস বাছাই করা প্রয়োজন কেন?
একটি ইউটিউব চ্যানেলের সফলতার অন্যতম কারণ সঠিক নিস বাছাই।
আপনার ইউটিউব চ্যানেলে কোন ধরনের ভিডিও আপলোড করা হবে অর্থাৎ আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মূল থিম কি তার উপর এটি নির্ভর করছে।
তাই একটি ইউটিউব চ্যানেলে একাধিক বিষয় বস্তুর উপর ভিডিও আপলোড করা হলে দর্শকরা সেই চ্যানেল সম্পর্কে স্বচ্ছ ধারণা রাখতে পারবেন না।
যেমন-ইউটিউব চ্যানেলের বিষয়বস্তু রান্না, শিক্ষা, কমেডি, লাইফস্টাইল নানারকম হতে পারে।
এখন একটি চ্যানেলে যদি এই সব ধরনের বিষয়বস্তু নিয়েই ভিডিও প্রচার করা হয় তাহলে দর্শকদের কাছে তা জগাখিচুড়ি মনে হতে পারে।
অনেকে বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার দ্বারা ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোড করে তা নিজের চ্যানেলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে।
কিন্তু প্রতিটি বিষয়ের ওপর যদি আলাদাভাবে চ্যানেল থাকে তাহলে দর্শকদের কাছে পুরো বিষয়টি পরিস্কার থাকবে। চ্যানেলের ভিউ বাড়বে।
ইউটিউবে কী কী বিষয়ে ভিডিও তৈরী করলে ভালো হবে?
পূর্বেই বলা হয়েছে ইউটিউব চ্যানেলের কনটেন্ট হতে হবে দর্শকের আগ্রহ ও ইউটিউবারের আগ্রহের মিশেলে।
কারণ দর্শক আগ্রহ নেই এমন কোন নিস নির্বাচন করলে তা খুব বেশি ভিউয়ার পাবে না।
অন্যদিকে যে কনটেন্টটি তৈরি করবে বিষয়টি নিয়ে যদি তার আগ্রহ না থাকে তাহলে কিন্তু ভিডিওটি ভালো হবে না।
ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও তৈরি করা যায় এমন কিছুৃ টপিক নিয়ে আলোচনা করা হলো-
০১. টেকনোলজি সম্পর্কিত ভিডিও :
বর্তমান যুগকে বলা হয় প্রযুক্তির যুগ। আমাদের সকালে ঘুম থেকে উঠা শুরু করে ঘুমুতে যাওয়া পর্যন্ত নানা কাজে বিভিন্নরকম প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়।
তাই প্রযুক্তির খুটিনাটি বিষয়ে সবারই জানার আগ্রহ রয়েছে।
প্রযুক্তির সমস্যাগুলো সমাধানে ইউটিউবে খোঁজে থাকে।
ফলে ইউটিউবে প্রযুক্তি বা টেকনোলজি সম্পর্কিত ভিডিও তৈরি করলে তা বেশ লাভজনক হবে।
ইউটিউব চ্যানেলে মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট বিষয়ে নানা রকম টিপস দিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়।
০২. ভ্রমন বা ট্রাভেল গাইড ভিডিও :
ব্যস্ত জীবন থেকে সাময়িক ছুটি পেতে ভ্রমন চমৎকার উপায় । কিন্তু কোথাও ঘুরতে যাওয়ার আগে সে জায়গা সম্পর্কে জেনেশুনে গেলে ভ্রমনটা আরো উপভোগ্য হয়ে উঠে।
তাই বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান , সেখানে যাওয়ার উপায়, থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ইত্যাদিসহ ভ্রমনের নানা খুটিনাটি নিয়ে ইউটিউব ভিডিও দর্শক আকৃষ্ট করে বেশ।
০৩. শিক্ষামূলক বা সচেতনতামূলক ভিডিও :
ইউটিউবকে আধুনিক যুগের শিক্ষক বলা চলে। আজকাল কারো কিছু জানার প্রয়োজন হলে ইউটিউবে একবার ঢু দিবেই।
সেটা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা, ধর্মীয় শিক্ষা থেকে শুরু করে রান্না-বান্না, ডিজিটাল মার্কেটি, পেইন্টি, গিটার বাজানো, সাজুগুজু, পড়াশোনা যাই হোক না কেন।
শিক্ষামূলক ভিডিও নিয়ে মানুষের প্রচুর আগ্রহ রয়েছে।
স্কুলে পড়াশোনা করা বাচ্চা থেকে অবসরে থাকা বয়স্ক নাগরিকরাও এখন ঘরে বসে কিছু না কিছু শিখছে।
এছাড়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সচেতনতা ভিডিওগুলোরও অনেক বেশি ভিউ হয়।
তবে শিক্ষামূলক ও সচেতনতামূলক ভিডিও তৈরি করতে হলে জানাশোনার পরিমান গভীর হওয়া অত্যন্ত জরুরী।
০৪. স্বাস্থ্য ও লাইফস্টাইল সক্রান্ত ভিডিও :
দৈনন্দিন জীবনটা কিভাবে সাজালে ভালো হয়, সুস্বাস্থ্য কিভাবে রক্ষা করা যাবে এ সক্রান্ত ভিডিওগুলোও দর্শকরা খুব পছন্দ করে।
আপনি প্রতিদিন কোন ধরনের কাজ করেন বা কোন ধরনের কাজ করতে পছন্দ করেন সে বিষয়ক ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
তবে এগুলোর সাথে শিক্ষণীয় বিষয় থাকতে হবে। যেমন-কোন ধরনের কৌশল অবলম্বন করলে প্রতিদিনকার কাজকর্ম সহজ হবে।
স্বাস্থ্য ভালো রাখার ছোটখাট টিপস দিয়েও ভিডিও তৈরি করা যায়।
০৫. আর্ট ও ক্রাফট ওয়ার্ক :
অনেকেরই আর্টওয়ার্ক বা শিল্পকর্ম নিয়ে আগ্রহ থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার অভাবে শখ পূরণ করতে পারেন না।
তাদের জন্য ইউটিউব খুবই সহজ ও উপকারী মাধ্যম। তাই ইউটিউবে শিল্পকর্ম বা আর্টওয়ার্ক শেখানোর ভিডিও আপলোড করা একটি ভালো আইডিয়া হতে পারে।
এছাড়া ক্রাফটি নিয়েও ভিডিও তৈরি করা যেতে পারে।
এই ধরনের ভিডিওগুলোতে সাধারনত কাগজ, প্লাস্টিকসহ হাতের কাছে থাকা সহজলভ্য জিনিসগুলো দিয়ে ঘর সাজানোর জন্য নান্দনিক শোপিস তৈরি করা যায়। সৃজনশীল এ ভিডিওগুলো মানুষ খুব পছন্দ করে।
০৬. ক্যারিয়ার পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা :
পেশাজীবন শুরুর ক্ষেত্রে ইউটিউবই সাহায্য করতে পারে।
বিভিন্ন ধরনের পেশা ও তার বিভিন্ন দিকনির্দেশনা নিয়ে ভিডিওগুলো মানুষের আগ্রহ থাকে।
তাই একটি পেশা ও সেই পেশা থেকে কিভাবে সফলতা লাভ করা যায় সে বিষয়ক দিকনির্দেশনা দিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়।
০৭. ফুড রেসেপি ও রান্নাবান্না সক্রান্ত ভিডিও :
ইউটিউবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিওর মধ্যে রান্নাবান্না। ইউটিউবের কল্যাণে অনেকের কাছেই রান্না সহজ হয়ে উঠেছে।
নানা পদের নানা অঞ্চলের রান্না শেখানো হয় ইউটিবের বিভিন্ন রান্নার চ্যানেলে।
ইউটিউবের বিভিন্ন চ্যানেল ঘুরে ঘু্ের আমরা নিত্য নতুন রান্না শিখতে চাই। তাই খুব সহজে দর্শকদের মনমতো ভিডিও তৈরি করা যায়।
০৮. তথ্য ও প্রতিবেদনমূলক ভিডিও :
কোন নির্দিষ্ট তথ্য বা ভিডিও প্রকাশ করছে এমন ইউটিউব ভিডিওগুলো ইদানি খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। যেমন: সরকারি চাকুরি নিয়ে অনেকেই ভিডিও তৈরি করে শেয়ার করছেন।
কোন কোন চাকুরিরর বিজ্ঞাপন প্রকাশ হয়েছে, কিভাবে আবেদন করা যাবে ইত্যাদি তথ্যযুক্ত এসব ভিডিও প্রকাশ করা হয়।
এছাড়া ইতিহাস, বিভিন্ন সিনেমা, কোন জিনিস বা জায়গা নিয়েও তথ্যসমৃদ্ধ ভিডিও তৈরি করা যায়।
এ ধরনের ভিডিওগুলোর অনেক ভিউ হয়। তবে এসব ভিডিও তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন সঠিক তথ্যযুক্ত হয়।
০৯. সংস্কৃতি ও বিনোদনমূলক ভিডিও :
বিনোদন ও সস্কৃতি নিয়ে মানুষের আগ্রহ অনেক। তাই এ বিষয়টি ইউটিউব ভিডিওর একটি ভালো আইডিয়া হতে পারে।
নিজ দেশ ছাড়াও নানা দেশের সস্কৃতি ও রীতিনীতি নিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়; যা থেকে বিভিন্ন দেশের সস্কৃতি বিষয়ে জানা যাবে। এছাড়াও বিনোদন জগত নিয়েও তৈরি করা যায় ভিডিও।
১০. গেমিং ও খেলাধুলা সংক্রান্ত ভিডিও :
গেমিং ও খেলাধুলা ইউটিউব ভিডিওর জনপ্রিয় বিষয়। বর্তমানে এ বিষয়টির ওপর অনেকেই কাজ করছে।
তাই এক্ষেত্রে কিছুটা বৈচিত্র এনে ভিডিও করলে ভিউ অনেক বেশি হবে।
ইউটিউবে গেমিংয়ের আলাদা একটি ফিচার রয়েছে যার সাহায্যে অনেক ভালোভাবে ভিডিও তৈরি করা যাবে।
একটি সার্ভেতে দেখা গিয়েছে ইউটিউব ভিডিওতে কেবল গেমিং ভিডিও দেখা ৭০ শতাশই শুধুমাত্র গেমিং ভিডিও দেখতে পছন্দ করেন।
তারা নিজেরা গেমিং ভিডিও না দেখলেও ভিডিও- গুলো দেখে।
তাই স্মার্টফোন বা কম্পিউটারের মাধ্যমে গেম খেলে সেই গেমপ্লেগুলো ভিডিওতে আপলোড করা যায়।
এছাড়া খেলাধূলা নিয়েও ভিডিও তৈরি করা যায়। খেলাধূলায় আগ্রহ রয়েছে এমন দর্শকদের কাছে এ ধরনের ভিডিও বেশ জনপ্রিয়।
এসব ভিডিওতে খেলাধূলা নিয়ে বিভিন্ন টিপস দেয়া যায়। এছাড়া কোন খেলাগুলো শরীরের জন্য উপকারী সে বিষয়ে তথ্য দেয়া যায়।
১১. মুভি রিভিও ভিডিও :
মুভি বা সিনেমা প্রেমীর সংখ্যা অগণিত। তাই নিজ দেশ ছাড়াও অন্যান্য দেশের চলচ্চিত্র নিয়ে পর্যালোচনামূলক ভিডিওগুলো বেশ জনপ্রিয় হয়। এসব ভিডিওর ভিউ অনেক বেশি।
স্কিল ডেভেলপমেন্ট ভিডিও:
আজকাল এ ধরনের ভিডিও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। অন্য কোথাও না দৌড়ে ঘরে বসে নিজের দক্ষতাকে ঝালাই করে নেয়া যায় এ ধরনের ভিডিওর মাধ্যমে।
১২. কার্টুন ও এনিমেটেড ভিডিও :
সরল বিনোদনের অন্যতম মাধ্যম কার্টুন । কার্টুন ভিডিওগুলোতে প্রচুর পরিমান ভিউ হয়ে থাকে।
তাই ইউটিউব ভিডিও তৈরিতে কার্টুন ও এনিমেটেড ভিডিও একটি চমৎকার নিস হতে পারে।
তবে এজন্য প্রয়োজন কার্টুন মেকি ভিডিও শিখে নেয়া।
এরপর কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন দিয়ে সহজেই এসব ভিডিও তৈরি করা যায়।
বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোয় এমন অনেক এপ্লিকেশন রয়েছে যার মাধ্যমে কার্টুন ভিডিও তৈরি অনেক সহজ।
এছাড়া ইউটিউবে সার্চ দিয়ে এ সক্রান্ত টিউটোরিয়াল থেকেও কার্টুন ভিডিও তৈরি শিখে নেয়া যায়।
১৩. ব্যবসা,মার্কেটি ও উদ্যেক্তা সংক্রান্ত ভিডিও:
ব্যবসা ও মার্কেটি সংক্রান্ত নানা টিপস দিয়ে ভিডিও তৈরি করা যায়।
এছাড়া উদ্যেক্তাদের জন্য সহায়ক হবে এমন পরামর্শ দিয়েও কিছু ভিডিও তৈরি করা যায়।
রহস্যমূলক ও ভৌতিক ভিডিও:
রহস্যময় সবকিছুর প্রতি মানুষের আগ্রহের কমতি নেই। পুরো বিশ্বে এমন অনেক রহস্যময় ঘটনা রয়েছে।
রহস্যময় দুনিয়া, আজব দুনিয়া, লুকায়িত জগত এমন বেশ কয়েকটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে যেখানে রহস্যময় সব ব্যাপার-স্যাপার দেখানো হয়।
ইউটিউবে এ ধরনের চ্যানেল খোলে ভিডিও আপলোড করে অর্থ উপার্জন করা যায়।
১৪. জ্ঞান-বিজ্ঞান সম্পর্কিত ভিডিও :
সাধারন জ্ঞান ও বিজ্ঞান নিয়ে নানা রকম চ্যানেল রয়েছে ইউটিউবে।
বিজ্ঞান কি, ৩২টি আশ্চর্যজনক বিজ্ঞান পরীক্ষা এমন অনেক চ্যানেল রয়েছে বিজ্ঞান শেখানোর জন্য।
এসব চ্যানেলে খুব সহজে বিজ্ঞানের নানা খুঁটিনাটি শেখানোন হয়। যার ভিউ অনেক বেশি।
তাই আপনি এ ধরনের কোন চ্যানেল খোলে উপার্জনের একটি ভালো পথ বের করতে পারেন।
দেশ-বিদেশের খবর সক্রান্ত ভিডিও:
দেশ-বিদেশের নানা খবর আমরা সংবাদ চ্যানেল , অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও সংবাদ পত্রেই পেয়ে থাকি ।
কিন্তু এরমধ্যে আকর্ষনীয় ও চমকপ্রদ খবরগুলো নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল করা যায়। এসব চ্যানেলের ভিউ অনেক বেশি হয়।
১৫. মোটিভেশনাল ভিডিও :
কাজে সফলতা পাওয়ার জন্য নীতিবাক্য প্রচার করা মোটিভেশন ভিডিও চ্যানেলগুলো সবার পছন্দের।
ছোট-বড় ব্যবসায়ি থেকে শুরু করে চাকুরিজীবি, গৃহনী, শিক্ষার্থী সব বয়সের মানুষেরাই জীবন চলতে নানা সমস্যার সমাধানে মোটিভেশন বা উদ্দীপনা খোঁজে।
নিজেদেরও ডিপ্রেশন কাটাতে তারা এ ধরনের ভিডিওগুলো খুব দেখে।
তাই এ ধরনের ভিডিও আপলোড করার চ্যানেল- গুলোর ভিউয়ারস পাওয়া যায় অনেক বেশি।
১৬. ইতিহাস, ঐতিহ্য দার্শনিক ভিডিও :
প্রাচীন ইতিহাস, বিভিন্ন দেশের ইতিহাস, দার্শনিক জায়গাগুলোর ভিডিওর দর্শক ভিউ অনেক বেশি।
নানা জায়গার ছবি, ভিডিও যুক্ত করে তথ্যসমৃদ্ধ এসব ভিডিও তৈরি যায় ।
তবে এসব ভিডিও তৈরির সময় পর্যাপ্ত তথ্য ও এর যথার্থতার বিষয়ে নিশ্চিত থাকতে হবে।
শেষ কথা :
ইউটিউবের বিষয়বস্তুর ওপর একাধিক চ্যানেল রয়েছে।
কিন্তু দেখা যায় কিছু চ্যানেলের ভিউ ও সাবসক্রাই- বারের হার অনেক বেশি।
এমন সফলতা অর্জন করতে হলে মূলত পছন্দসই নিস নির্বাচন করে নিজের দক্ষতা, মেধা ও সৃজনশীল- তাকে কাজে লাগিয়ে ভিডিও তৈরি করতে হবে।
এরসাথে ধৈর্য্য যুক্ত করতে হবে। কারণ ভিডিও আপলোড করলাম সাথে সাথে প্রচুর ভিউ হলো।
চ্যানেলের সাবসক্রাইবারের সংখ্যা হু হু করে বাড়লো সাথে টাকাও আসতে থাকলো। এ ধরনের অতি কল্পনা থেকে সরে আসতে হবে।