ওয়ার্ডপ্রেস কী? ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন যেভাবে :
Md. Ashraful Alam Shemul
April 7, 2023
বর্তমান সময়ে ওয়েবসাইট তৈরির সবচেয়ে সহজ সমাধান হলো ওয়ার্ডপ্রেস।
যদিও এটির যাত্রা শুরু হয়েছিল ব্লগ ওয়েবসাইট তৈরি করার জন্য।
কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে এখন যে কোনো ধরনের ওয়েবসাইটই তৈরি করা সম্ভব খুব সহজে, কম সময়ে এবং কম খরচে।
এই ব্লগে আলোচনা করবো ওয়ার্ডপ্রেস কি, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার উপায়, ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন, ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার উপায়সহ বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে।
মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে জেনে নিবো কিছু শব্দ সম্পর্কে, যেমন: ওয়েবসাইট, সিএমএস ইত্যাদি। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক!
ওয়েবসাইট কী?
ওয়েবসাইট হলো এক বা একাধিক ওয়েব পেইজের সমষ্টি, যা নির্দিষ্ট ডোমেইনের মাধ্যমে অন্তত একটি সার্ভারে হোস্ট করা হয়।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, আপনি এখন যেই ওয়েবসাইটটি দেখছেন এটি ১০ মিনিট স্কুলের একটি ওয়েবসাইট।
এটি একটি নির্দিষ্ট সার্ভারে হোস্ট করা আছে। আর, এই যে 10minuteschool.com নামটি দিয়ে আপনি এই ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারছেন, এটিই হলো ডোমেইন নেইম। এই ওয়েবসাইটের ভেতরে যে সব পাতা বা পৃষ্ঠা দেখছেন সে সবই হলো ওয়েবপেইজ।
ওয়েবসাইট বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী টুলগুলোর একটি।
এর মাধ্যমে খুব সহজেই নিজের ব্যবসা থেকে শুরু করে খুব সহজেই সব কিছু পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরা সম্ভব।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিষয়ক ওয়েবসাইট, যেমন: ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি আমাদের যোগাযোগকে করেছে অনেক সহজ।
Web Design Course
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
ওয়েবসাইট তৈরির প্ল্যানিং, ডিজাইনিং এবং কোডিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা।
ওয়েবসাইটের লেআউট ও টেমপ্লেট তৈরি করা।
ইউজার ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট তৈরির পদ্ধতি।
সিএমএস কী?
ওয়েবসাইট যেহেতু জেনে নিলেন, এখন ওয়ার্ডপ্রেস কি বিষয়টি বুঝতে গেলে আরেকটি টার্মের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে।
সেটি হলো কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস (সিএমএস)।
কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমস (সিএমএস) এই নামটি থেকেই -এর কাজ বোঝা যাচ্ছে।
অর্থাৎ, সিএমএস একটি ওয়েবসাইটের কনটেন্টকে সাজানো, উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনার কাজে যুক্ত।
একটি ওয়েবসাইট শূন্য থেকে ডেভেলপ করা যেতে পারে।
কিন্তু সে ক্ষেত্রে অনেক কিছু নিজের তৈরি করে নিতে হবে।
সেটা একদিকে যেমন সময় সাপেক্ষ তেমনি খরচেরও বিষয়।
কিন্তু সিএমএস ব্যবহার করলে আপনার ওয়েবসাইট তৈরি হয়ে যাবে মুহূর্তেই!
কেননা, সিএমএস-এ আপনার প্রয়োজনীয় সকল টুল আগে থেকেই তৈরি করাই থাকে।
ফলে, একদিকে আপনার সময় বেঁচে যাচ্ছে কেননা আপনি মুহূর্তেই একটি ওয়েবসাইট চালু করতে পারছেন, অন্যদিকে আপনার ডেভেলপমেন্ট খরচও শূন্য হয়ে যাচ্ছে।
এমনকি এর জন্য আপনার কোন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজও শেখার প্রয়োজন পড়ছে না।
পাশাপাশি, এগুলোর ইন্টারফেসও বেশ সাধারণ ও সহজ হয়ে থাকে।
এখন চলুন জেনে নিই কয়েকটি জনপ্রিয় সিএমএস-এর নাম:
WordPress
Joomla
Drupal
Magento
Squarespace
Wix
TYPO3
ওয়ার্ডপ্রেস কি?
এতক্ষণে নিশ্চয়ই বুঝে গিয়েছেন ওয়েবসাইট ও সিএমএস কি, এখন চলুন মূল আলোচনায় প্রবেশ করা যাক।
ওয়ার্ডপ্রেস হলো পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় একটি সিএমএস।
ধারণা করা হয় যে, বিশ্বের প্রায় ৮১ কোটি ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। অর্থাৎ প্রায় ৪২% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি!
প্রতিদিন ৫০০-এরও অধিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি হয়!
ওয়ার্ডপ্রেস সেরা হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, এটি দিয়ে যে কোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব।
পাশাপাশি, এটি হলো পিএইচপি নামক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দ্বারা তৈরি।
পিএইচপি হলো বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্ভার সাইড প্রোগ্রামিং ভাষা।
ফলে, কমিউনিটি সাপোর্ট থেকে শুরু করে সবকিছুই এখানে সহজ।
একবার এটি ব্যবহার করলেই বুঝতে পারবে, ওয়ার্ডপ্রেস কি অসাধারণ একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম।
ওয়ার্ডপ্রেস কেনো এতো জনপ্রিয়?
ওয়ার্ডপ্রেসের জনপ্রিয়তার মূল কারণ হলো এটি পিএইচপি নামক প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দ্বারা তৈরি।
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যক্তিগত ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করা যায়।
এমনকি এর কোন সীমাবদ্ধতাও নেই বা কোন পেইড প্ল্যানও নেই।
আবার, এটি জিপিএল ২-এর অধীনে লাইসেন্স করা ওপেন সোর্স সফটওয়্যার।
ফলে যে কেউ তার কাজের জন্য একে ইচ্ছেমত মডিফাই করে ব্যবহার করতে পারবে।
প্রশ্ন আসতেই পারে, ওয়ার্ডপ্রেস কি কাজে ব্যবহার হয় কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস কি শুধুই ব্লগে ব্যবহার করা যায় কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস কি যে কোনো ওয়েবসাইট তৈরিতেই কাজে লাগানো সম্ভব কিনা।
হ্যাঁ, যে কোনো ধরনের ওয়েবসাইট তৈরিতে এটি খুবই সহজ সমাধান।
এছাড়াও এটির থিম ও প্লাগিন লাইব্রেরি এতটাই সমৃদ্ধ যে, এটা দিয়ে যা ইচ্ছে তাই তৈরি করে ফেলতে পারবেন কোনো রকম কোডিং ছাড়াই!
আর, এর জন প্রিয়তা অত্যাধিক হওয়ায় যে কোনো রকম সাপোর্ট পাওয়াও খুব সহজ।
স্ট্যাকওভারফ্লো থেকে শুরু করে যে কোনো ফোরামেই ওয়ার্ডপ্রেসের বিশাল কমিউনিটি পাবেন।
এছাড়াও, আপনি যদি একজন ডেভেলপার হন, তাহলে ওয়েবসাইটকে কাস্টমাইজ করতে পারবেন নিজের মতো করে।
এ ক্ষেত্রে আপনি নিজের মতো করে থিম ও প্লাগিন তৈরি করে যে কোনো রকম ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন।
শুধু যে ওয়েবসাইট বানানোতে সুবিধা, তা-ই কিন্তু নয়। এর কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সুবিধাও অসাধারণ।
সাথে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (এসইও) বিষয়ক কাজও খুব সহজেই ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে হয়ে যাবে।
একটি প্লাগিন ইন্সটল করে দিলেই মোটামুটি সব কাজ আপনা-আপনিই হয়ে যাবে।
এতসব কারণেই ওয়ার্ডপ্রেস এত জনপ্রিয়। আর, এতে দক্ষ হয়ে গেলে ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার সুযোগও রয়েছে নানানভাবে।
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি :
ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরির আগে চিন্তা করতে হবে আপনি কী ধরনের ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন।
আপনি কী সেলফ হোস্টেড ওয়েবসাইট বানাচ্ছেন নাকি ফ্রি হোস্টেড।
এর জন্য আপনাকে বুঝতে হবে WordPress.com
ও WordPress.org ওয়েবসাইট দুটোর পার্থক্য। চলুন, জেনে নেয়া যাক!
WordPress.com নাকি WordPress.org?
WordPress.com ও WordPress.org, দুটো ওয়েবসাইটই একই প্রতিষ্ঠানের।
কিন্তু কাজের ধরনের জন্য এদের মধ্যে একটু পার্থক্য রয়েছে।
WordPress.org-এ মূলত ওয়ার্ডপ্রেসের মূল সফটওয়্যারটি পাওয়া যায়।
এছাড়াও, থিম ও প্লাগিনসহ অন্যান্য বিষয়াবলীও এখানে পাওয়া যায়।
কিন্তু এখানে ওয়েবসাইট হোস্ট করার কোন সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে আপনার নিজস্ব হোস্টিং ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ওয়েবসাইট থেকে লেটেস্ট ফাইলটি ডাইনলোড করুন, আপনার হোস্টিংয়ে আপলোড করুন এবং ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল করুন। হয়ে যাবে, আপনার ওয়েবসাইট তৈরি!
অন্যদিকে WordPress.com হলো ব্লগ তৈরির ওয়েবসাইট।
এখানে ওয়ার্ডপ্রেস ভিত্তিক ব্লগ ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন সহজেই।
অর্থাৎ, আপনার সাইট হোস্ট করার জন্য আলাদা কোন হোস্টিং প্রয়োজন হবে না। তাদের থেকেই বিনামূল্যে সাইট তৈরি করতে পারবেন।
এ ক্ষেত্রে আপনাকে তাদের ডোমেইন থেকে একটি সাবডোমেইন দেবে, আপনার সাইট পাবলিশ করার জন্য।
তবে, চাইলে আপনি নিজে ডোমেইন কিনে সেটাও কানেক্ট করতে পারবেন।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন, ওয়ার্ডপ্রেস কি চমৎকার একটি টুল!
কোনটি ব্যবহার করবেন, সেটা নির্ভর করবে ওয়ার্ডপ্রেস কি কাজে আপনি ব্যবহার করবেন।
অর্থাৎ, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস কি শুধু ব্লগিং করার কাজে ব্যবহার করতে চান এবং হোস্টিংয়ের জন্য খরচ করতে চান না?
সে ক্ষেত্রে আপনি তাদের ব্লগ সাইট ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা, আপনি ওয়ার্ডপ্রেস কি কোন প্রফেশনাল কাজে ব্যবহার করতে চাচ্ছেন?
সে ক্ষেত্রে সফটওয়্যারটি আপনার নিজস্ব হোস্টিংয়ে ব্যবহার করুন।
চলুন, এদের মধ্যে পার্থক্য ছকাকারে দেখে নিই:
WordPress.orgWordPress.comওয়ার্ডপ্রেস সফটওয়্যার প্রদানকারী ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ হোস্টিং প্রোভাইড করে না।
বিনামূল্যে হোস্টিং প্রোভাইড করে ডোমেইন প্রোভাইড করে না।
বিনামূল্যে সাবডোমেইন প্রোভাইড করে সফটওয়্যার ব্যবহারে কোন বিজ্ঞাপন নেই।
ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যের সেবা, কোন পেইড সেবা নেই বিনামূল্যের পাশাপাশি পেইড সেবাও আছে।
SEO Course for Beginners
চাকরি ও ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে SEO স্কিল এর মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে আয় করা যায়।
ওয়েবসাইটে অর্গানিক ট্রাফিক বাড়াতে এবং পেজ র্যাংক করাতে সার্চ ইঞ্জিন, ডোমেইন-হোস্টিং, কি-ওয়ার্ড রিসার্চ, On-Page SEO, Off-Page SEO ও বিভিন্ন SEO টুলসের প্র্যাক্টিকালি ব্যবহার শিখতে আজই এনরোল করুন আমাদের এই কোর্সটিতে!
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল
ওয়ার্ডপ্রেস কি সেটা তো জানা হলো। আপনি ওয়ার্ডপ্রেস কি আগে কখনও ব্যবহার করেন নি? সমস্যা নেই, আজই এ নিয়ে বিস্তারিত জেনে যাবেন। এখন ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল অংশে আলোচনা করব, ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে কীভাবে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনিও একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে সক্ষম হবেন।
ধরে নিচ্ছি, আপনার নিজস্ব ডোমেইন ও ওয়েব হোস্টিং আছে এবং তার ফাইল ম্যানেজার বা এফটিপি-তে আপনার প্রবেশাধিকার আছে ও আপনি ফাইল আপলোড, ডেটাবেজ ম্যানেজ করতে সক্ষম। তাই এখন আপনাকে বিনামূল্যে একটি ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট তৈরির উপায় দেখাবো। এক্ষেত্রে ধরে নিচ্ছি, আপনার ডোমেইন নেইম example.com। এ গাইডলাইন এই ডোমেইন নামের ভিত্তিতেই দেয়া হবে। তো চলুন, শুরু করা যাক।
ওয়ার্ডপ্রেস ইন্সটল
ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড করতে এই লিঙ্কে ভিজিট করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড করুন।
একটি জিপ ফাইল পাবেন, সেটি এক্সট্র্যাক্ট করুন।
তারপর সেখানে একটি ফোল্ডার পাবেন wordpress নামে। এর ভেতরের সব কনটেন্ট আপনার হোস্টিংয়ে আপলোড করুন।
একটি ডেটাবেজ তৈরি করুন।
এখন আপনার সাইটের অ্যাড্রেসে প্রবেশ করুন। ইন্সটল করার উইজার্ড চলে আসবে।
সব তথ্য দিয়ে সাবমিট করলে মুহূর্তেই আপনার ওয়েবসাইট রেডি!
এরপর আপনি example.com/wp-admin/ এই লিঙ্কে ভিজিট করে আপনার ওয়েবসাইটের অ্যাডমিন প্যানেলে প্রবেশ করবেন। নিচের ছবির মতো একটি পেইজ আসবে। সেখানে ইন্সটল করার সময় যে অ্যাডমিন তথ্য দিয়েছেন, সেটি দিয়ে লগইন করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: অ্যাডমিন লগইন পেইজ
ওয়ার্ডপ্রেস ব্লগ পোস্ট
ওয়ার্ডপ্রেস সাইট তো তৈরি হয়েই গেল। চলুন, এবার একটি ব্লগ পোস্ট করা যাক! আগের নিয়মে আপনার ওয়েবসাইটে লগইন করুন। লগইন করলে একটি ড্যাশবোর্ড আসবে। সেখানের সাইড মেন্যুতে নিচের ছবির মতো “All Posts” এ মাউস ধরলে “Add New” অপশন পাবেন। সেখানে ক্লিক করুন।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: নতুন পোস্ট তৈরি
তারপর নিচের মতো ব্লগ পোস্ট লেখার জন্য একটি ফাঁকা পেইজ আসবে।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: নতুন পোস্ট লেখা
“Add Ttitle” দেয়া বক্সে পোস্টের নাম এবং নিচের বড় ফাঁকা বক্সে আপনার যা লেখার তা লিখবেন। এটা অনেকটা নিচের ছবির মতো হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: নতুন ব্লগ পোস্ট :
এখন ডানে অবস্থিত Publish বাটনে ক্লিক করলেই পোস্ট পাবলিশ হয়ে যাবে।
চাইলে আপাতত “Save Draft” বাটনে ক্লিক করে এটি পরবর্তীতে কাজের জন্য সেইভ করেও রাখতে পারেন।
ঠিক একই নিয়মে পেইজও তৈরি করা যায়। এ ক্ষেত্রে বামের মেন্যু থেকে “Pages” অপশন থেকে “Add New” -তে যেতে হবে। বাকি সব আগের মতোই।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন :
চলুন এবার ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে ফেলি।
আবারও সাইড মেন্যুতে লক্ষ্য করি। সেখানে
“Appearance” -এ মাউস রাখলে “Themes”অপশন পাওয়া যাবে। সেখানে ক্লিক করতে হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: থিম পরিবর্তন
(Source: stechbd.net)
তারপর নিচের ছবির মতো থিমের তালিকা পাবেন। এই তালিকাটি ওয়ার্ডপ্রেসের থিম ডিরেক্টরি থেকে আসে।
এখানে নানান রকম থিম একদম বিনা মূল্যেই পাবেন। আপনার পছন্দ মতো থিম সেট করুন।
“Upload Theme” থেকে চাইলে আপনার নিজস্ব থিমও আপলোড করতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস টিউটোরিয়াল: থিম ইন্সটল (Source: stechbd.net)
এ ভাবেই আপনার একটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন।
এখন ওয়ার্ডপ্রেসের সেটিংসের বিভিন্ন অপশনে গিয়ে আপনার পছন্দ মতো বিভিন্ন অপশন ঠিক করে নিন।
তারপর আপনার ওয়েবসাইটটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে বাকিদেরকেও আপনার ওয়েবসাইট দেখার সুযোগ করে দিন।
এভাবেই আপনি মাত্র কয়েকটি ধাপে তৈরি করে ফেলতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইট!
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন :
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্টে যেমন পুরো একটি থিম একদম শুরু থেকে কোড করতে হয়, এ ক্ষেত্রে সে বালাই নেই।
এ ক্ষেত্রে বিদ্যমান থিমকে ইচ্ছেমত এডিট করা হয়, চাহিদা অনুসারে। তাই, এটি সহজসাধ্য একটি কাজ।
কিন্তু সহজসাধ্য বলে এমন না যে, এটা নিমিষেই করে ফেলার জিনিস কিংবা তেমন দক্ষতার প্রয়োজন।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজ করতে হলে আপনাকে সফটওয়্যার ডেভেলপার তথা ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে। সাথে ডিজাইন সেন্সও বেশ ভালো হতে হবে।
এ ক্ষেত্রে আপনার পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট ও সিএসএস-এর উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
যেহেতু থিম কাস্টমাইজেশন করবেন, সেহেতু ডিজাইনিংয়ে বেশ ভালো দক্ষতা থাকা জরুরি।
কেননা থিমের মূল উদ্দেশ্যই থাকে সৌন্দর্য। তাই সৌন্দর্যের বিষয়টিতে অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে।
থিম কাস্টমাইজেশন করে নিজের ওয়েবসাইটে কাজে লাগাতে পারেন।
কিংবা ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হিসেবে কোন প্রতিষ্ঠানে কাজও করতে পারেন। অর্থাৎ এটা হতে পারে আপনার ক্যারিয়ার ডেসটিনেশন!
ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় :
ওয়ার্ডপ্রেস শেখার মাধ্যমে নিজের ওয়েবসাইট যেমন বানাতে পারবেন, তেমনি আয়ের সুযোগও তৈরি করতে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেস বিষয়ক কাজ শিখে নানান ভাবেই আয়ের সুযোগ আছে।
ওয়ার্ডপ্রেস কি কি উপায়ে আপনার আয়ের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে সেগুলো দেয়া হলো:
ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ম্যানেজ করে চাইলে আপনি আয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন।
অনেক প্রতিষ্ঠানই তাদের ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট ও কনটেন্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য নিয়োগ দিয়ে থাকে।
আপনি এরকম কোন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারেন।
আবার চাইলে নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন।
সেখানে বিজ্ঞাপন কিংবা পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ করতে পারেন।
আবার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও আয়ের একটি সুযোগ রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে প্রধান সুবিধা হচ্ছে, আপনাকে সফটওয়্যার ডেভেলপার হতে হবে না।
এমনকি লাগবে না পূর্ব কোন কাজের অভিজ্ঞতাও! যে কেউ ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি ওয়েবসাইট ম্যানেজ করতে পারে।
কেননা এর ইন্টারফেস খুবই সহজ এবং সাধারণ। তাই এটিই হতে পারে এই ক্ষেত্রে আপনার কাজ শুরু করার বড় একটি সুযোগ।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট :
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট করতে হলে আপনাকে সফটওয়্যার ডেভেলপার তথা ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে। সাথে ডিজাইন সেন্স থাকাটাও জরুরি।
এ ক্ষেত্রে আপনার পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট ও সিএসএস-এর উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
আর, থিমের ক্ষেত্রে ডিজাইনিংয়ে দক্ষতা বেশি থাকাটা জরুরি।
কেননা থিমের মূল উদ্দেশ্যই থাকে সৌন্দর্য। তাই সেটাতে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ হলে কোন প্রতিষ্ঠানে যেমন কাজ করতে পারবেন, তেমনি আপনি থিম তৈরি করে সে গুলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিক্রিও করতে পারবেন।
যেহেতু ওয়ার্ডপ্রেসের মার্কেট অনেক বড়, সেহেতু ভালো মানের থিম ডেভেলপার হতে পারলে, এদিকে ক্যারিয়ার গড়া খুব একটা কঠিন হবে না।
Web Design Course
HTML, CSS, ওয়েবসাইট লে-আউট, রেসপন্সিভ ও ইন্ট্যারাক্টিভ ডিজাইনের মাধ্যমে ওয়েব ডিজাইনের জন্য প্রয়োজনীয় স্কিলের শেখার পাশাপাশি ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করার পরিপূর্ণ গাইডলাইন রয়েছে এই কোর্সে!
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট :
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট করতে হলেও আপনাকে সফটওয়্যার ডেভেলপার তথা ওয়েব ডেভেলপার হতে হবে। সাথে হালকা ডিজাইন সেন্স থাকাটাও জরুরি।
আগের মতো এক্ষেত্রেও আপনার পিএইচপি, জাভাস্ক্রিপ্ট ও সিএসএস-এর উপর ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
তবে, প্লাগিনের ক্ষেত্রে প্রবলেম সলভিংয়ে দক্ষতা বেশি থাকাটা জরুরি।
কেননা প্লাগিন তৈরির মূল উদ্দেশ্যই থাকে সাইটের কোন কাজকে সহজ করা। তাই এক্ষেত্রে প্রবলেম সলভিং ক্ষমতা খুবই জরুরি।
ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ হলে কোন প্রতিষ্ঠানে যেমন কাজ করতে পারবেন, তেমনি আপনি প্লাগিন তৈরি করে সেগুলো বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিক্রিও করতে পারবেন।
যেহেতু ওয়ার্ডপ্রেসের মার্কেট অনেক বড়, সেহেতু ভালো মানের প্লাগিন ডেভেলপার হতে পারলে, ওয়ার্ডপ্রেস প্লাগিন ডেভেলপার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়া একটি ভালো সুযোগ হতে পারে আপনার জন্য।
ব্লগিং :
ব্লগিং করেও ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় করা যায়। এজন্য আপনার লেখালেখিতে ভালো দক্ষতা থাকতে হবে।
কেননা লেখার মান ভালো না হলে পাঠক ধরে রাখা খুবই কষ্টকর হবে।
তবে, এটি তুলনামূলক সহজ উপায়। এরজন্য আপনার কোন প্রোগ্রামিং ভাষা বা প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জন করতে হবে না।
শুধু ভালো মানের লেখা হলেই কাজ করতে পারেন। কোন প্রতিষ্ঠানে কনটেন্ট রাইটার হিসেবে চাকরি করতে পারেন।
কিংবা নিজের ওয়েবসাইট হলে, আয়ের একটি ভালো উৎস হতে পারে বিজ্ঞাপন।
এছাড়াও অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং অন্যান্য উপায় তো আছেই।
ফ্রিল্যান্সিং :
ওয়ার্ডপ্রেসে ভালো দক্ষতা থাকলে ফ্রিল্যান্সিং করেও ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় করা যায়।
এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন রকম কাজ পাওয়া যায়।
হতে পারে সেটা ব্লগিং, থিম ডেভেলপমেন্ট, প্লাগিন ডেভেলপমেন্ট কিংবা এসইও।
তবে, মার্কেটপ্লেসে ভালো করতে হলে আপনি যেই কাজটিই করবেন না কেন, সেটিতে আগে ভালো দক্ষতা অর্জন করে নেবেন।
তারপর একবার কাজ পেয়ে গেলে এবং ভালো রেটিং হলে, এ ক্ষেত্রে অনেক ভালো কিছু করা সম্ভব।
ওয়ার্ডপ্রেস শেখার উপায় :
ওয়ার্ডপ্রেস শেখার ক্ষেত্রে আমি দুটো মাধ্যমে শেখার উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
একটি হলো অনলাইন মাধ্যম ও অন্যটি হলো অফলাইন মাধ্যম।
এ গাইডলাইন ফলো করলে আপনিও ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে যাত্রা শুরু করতে পারবেন বলে আশা করা যায়।
অনলাইন :
অনলাইনে ওয়ার্ডপ্রেস শেখার উপায় বলতে গেলে, শুরুতে আপনাকে ওয়েব ডিজাইন নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।
এ ক্ষেত্রে ১০ মিনিট স্কুলের একটি কোর্স রয়েছে। কোর্সটিতে ভর্তি হতে এই লিঙ্কে ভিজিট করুন: Web Design।
এই কোর্স থেকে ওয়েবসাইটের ডিজাইন অংশটি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান চলে আসবে।
এই কোর্সে আপনি এইচটিএমএল ও সিএসএস খুব ভালো করে শিখে ফেলবেন।
এরপর পিএইচপি ও জাভাস্ক্রিপ্ট ভালোভাবে শিখে নিলেই আপনি ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপার হওয়ার জন্য প্রস্তুত!
এ ক্ষেত্রে ইউটিউব একটি ভালো মাধ্যম হতে পারে আপনার জন্য।
অফলাইন :
চাইলে অফলাইনে আপনি যে কোনো ট্রেনিং সেন্টার থেকেও শিখতে পারেন।
এটার মাধ্যমেও আপনি ওয়ার্ডপ্রেস বিষয়ক কাজ শিখতে পারবেন খুব সহজেই।
এখানে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, এর মাধ্যমে আপনি কারো থেকে হাতে-কলমে শিখতে পারেন। সরাসরি সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে।
শেষ কথা
এই লেখায় আলোচনা করার চেষ্টা করেছি ওয়ার্ডপ্রেস কি, ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার উপায়, ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন, ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার উপায় ইত্যাদি বিষয় নিয়ে।
আশা করছি, পুরো বিষয়টি আপনাদের কাছে পরিষ্কার হয়েছে।
যদি হয়ে থাকে, তাহলে আজই শুরু করে দিন ওয়ার্ডপ্রেস যাত্রা!