কোনটি দিয়ে ব্লগিং শুরু করবেন? ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) নাকি ব্লগার (Blogger)!
ওয়েবসাইট তৈরি করার কথা ভাবছেন ব্লগিং শুরু করার জন্য। কিন্তু কোন প্লাটফর্মটা বেছে নিবেন বুঝতে পারছেন না ।ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) নাকি ব্লগার (Blogger) ।আপনার জন্য কোন দিকে যাওয়া ভাল হবে।
বেশি সুবিধা পাওয়া যাবে কোনটাতে ?
আপনার মনের মধ্যে যদি এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খায় তাহলে আজকের আর্টিকেলটি মূলত আপনার জন্য। সর্ব প্রথম দুটি নাম আমাদের সামনে চলে আসে ব্লগিং ওয়েবসাইট তৈরির কথা চিন্তা করলেই,
একটি হলো “ব্লগার” বা “ব্লগ স্পট” অপরটি হলো “ওয়ার্ডপ্রেস”। যেগুলোর সাহয্যেও আপনি ব্লগ ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন আরো একাধিক প্লাটফর্ম আছে কিন্তু ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) এবং ব্লগার (Blogger) এ দুইটা বেশ জন প্রিয়। খুব সহজেই উক্ত দুইটি প্লাটফর্মে আপনার
ব্লগিং ওয়েবসাইটটি বানাতে পারবেন।
ব্লগিং ইন্ডাস্ট্রিতে আপনি যদি নতুন হয়ে থাকেন তাহলে কোন প্লাটফর্ম ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানাবেন, কোন প্লাটফর্ম আপনার জন্য ভালো হবে তা বুঝতে পারছেন না। আর না বুঝতে পারার কারণে এবং ভুল প্লাটফর্ম বেছে নেবার কারণে আফসোস করতে হয় পরে। এ কারণে অনেকে ব্লগিং এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এর কারণ হলো আপনার দরকার ছিলো ওয়ার্ডপ্রেস কাজ শুরু করেছেন ব্লগ স্পটে আবার দরকার ছিলো ব্লগস্পট আপনি শুরু করেছেন ওয়ার্ডপ্রেসে।
আপনার সমস্যাটা নিয়ে আপনি হয়ত অনেকের সাথে আলোচনা করেছেন, বা করবেন। কিন্তু এখানেও দেখবেন যে একেক জন একেক দিকে যেতে বলবে। কেউ বলবে ব্লগার ব্যবহার করতে আবার কেউ ওয়ার্ড- প্রেস বেছে নিতে বলবে । আপনি হয়তো ধাধায় পড়ে যাবেন একেক জন একেক ধরণের পরামর্শ দেওয়ার কারণে ।
এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সব চেয়ে ভাল সমাধান হলো কিছুটা পড়াশোনা করা ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার এই দুইটা বিষয়
নিয়ে । আপনি অনেক অনেক আর্টিকেল পাবেন ইন্টারনেটে সার্চ করলে এই দুইটা বিষয়ের উপর ।
আপনার ভেতরে একটা ধারণা চলে আসবে এসব আর্টিকেল পড়ার মাধ্যমে । আর তখন আপনি নিজেই আপনার জন্য আসলে কোন প্লাটফর্মটা ভালো হবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ওয়ার্ডপ্রেস এবং ব্লগার সম্পর্কে আমি এই আর্টিকেলে ক্লিয়ার একটা ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো। একটা সুনির্দিষ্ট ধারণা পেয়ে যাবেন আপনার জন্য কোন প্লাটফর্মটা ভালো হবে। পুরো আর্টিকেল জুড়ে আশা করি আপনি সাথে থাকবেন। শুরু করা যাক তাহলে ।
ওয়ার্ডপ্রেস কি (WordPress)?
ওয়ার্ডপ্রেস কি, কেন শিখব? এর সহজ উত্তর হচ্ছে- সবচে জনপ্রিয় ব্লগ পাব্লিশিং সফটওয়্যার হচ্ছে বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress). ইহা শুধু ব্লগ পাব্লিশিং সফটওয়্যারই না ইহা একটি শক্তিশালি কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমও।
ওয়ার্ডপ্রেস php, MySql দ্বারা তৈরিকৃত একটি ওপেনসোর্স কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS)।সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়ার্ডপ্রেস ডাউনলোড এবং ব্যবহার । ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে শুধু ব্লগ প্রথম পর্যায়ে তৈরি করা গেলেও বর্তমানে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট বানানো যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহারের সবচে বড় সুবিধা হলো –
আপনি প্রায় সব ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট না জানলেও, আপনার কোন প্রকার কোডিং জ্ঞান না থাকলেও ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাই- জেশন করে । খুবই সহজ ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করা । বর্তমানে প্রতি ১০০টা ওয়েবসাইটের ৪১টি ওয়েবসাইটই ওয়ার্ডপ্রেসের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে।
WordPress.org এবং WordPress.com এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য কি?
ওয়ারডপ্রেস এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানাতে দুটি ওয়েবসাইট যথা-
WordPress.com এবং WordPress.org.
WordPress.com হলো ফ্রি এবং বেসিক ভার্সন এখানে একাউন্ট করার মাধ্যমে এবং একটি সাব ডোমেইন ব্যবহার করার মাধ্যমে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে ওয়েব- সাইট তৈরি করতে পারবেন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে।
অপরদিকে WordPress.org হলো একটি পরিপূর্ণ ভার্সন ওয়ার্ডপ্রেস অর্গ ব্যবহারে সম্পূর্ণ স্বাধীণতা পাবেন। যে কোন ধরণের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট করার মাধ্যমে ।
প্রফেশনাল মানের ওয়েবসাইট বানাতে পারবেন ওয়ার্ড- প্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট না জানলেও ওয়ার্ড- প্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করেও । এখানে যেমন বেশি সুযোগ সুবিধা পাবেন তেমনি এটির রক্ষণাবেক্ষণের দায় সম্পূর্ণ আপনার।
ডোমেইন এবং হোস্টিং বাবদ কিছু টাকা খরচ করতে হবে ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) এর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বানাতে ।
WordPress.com (ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম) এর সুবিধা
সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট ব্যকআপ এবং সিকিউরিটি নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না।
ফ্রিতে ৩ জিবি হোস্টিং সার্ভার স্পেস ব্যবহার করতে পারবেন। এর পরে দরকার হলে কিছু টাকা খরচ করে স্পেস কিনতে পারবেন।
ফ্রিতে সাবডোমেইন ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানালেও যে কোন সময় কাস্টম ডোমেইন এড করতে পারবেন।
নির্ধারিত কিছু ওয়ার্ডপ্রেস থিম আছে ওয়ার্ডপ্রেস ডট কমেও ।খুব সহজেই এসব ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টমাইজেশন করে ওয়ার্ডপ্রেস সাইট রেডি করে ফেলতে পারবেন।
WordPress.com (ওয়ার্ডপ্রেস ডট কম) এর অসুবিধা:
ফ্রিতে কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন না। সাবডোমেইন ব্যবহার করেই আপনাকে সন্তষ্ট থাকতে হবে।
আপনি আপনার ইচ্ছামত থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করতে পারবেন না।
থিম আপগ্রেড করতে পারবেন না।
আপনি না মেনে চললে ওয়ার্ডপ্রেস টার্মস এন্ড কন্ডিশন যে কোন সময় আপনার সাইট ডিলেট করে দিতে পারে।
আপনার ব্লগ প্রতি মাসে ২৫০০০ পেজ ভিউ
যদি না পায় তাহলে নিজের পছন্দ মত বিজ্ঞাপন যোগ করতে পারবেন না। তারপর বিজ্ঞাপন ব্যবহার করতে দিলেও মোট আয়ের ৫০% তাদেরকে দিতে হবে।
তাদের পছন্দ মত বিজ্ঞাপন শো করাবে আপনার ওয়েব সাইটে । আপনাকে টাকা খরচ করতে হবে এসব বিজ্ঞাপন রিমুভ করতে চাইলে ।
এখানে আপনি কোন প্রকার কাস্টম কোড ব্যবহার করতে পারবেন না।
আপনি চাইলেও অন্যকোন সার্ভারে ওয়েবসাইট ট্রান্সফার করতে পারবেন না।
WordPress.org (ওয়ার্ডপ্রেস ডট অর্গ) এর সুবিধা
আপনি আপনার পছন্দ মত একটি কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন।
থিম এবং প্লাগিন ব্যবহার করতে পারবেন। কাস্টমাইজ, মোডিফাই করতে পারবেন আপনার পছন্দ মত । কাস্টম থিম এবং যেকোন ধরণের ফাংশনালিটি এড করতে পারবেন।
এখানে মালিকানা, কর্তৃত্ব যেহুতু সম্পূর্ণ আপনার হাতে সেহুতু অন্যকোন থার্ডপার্টির বালাই নাই।
ট্রান্সফার করতে পারবেন কারো অনুমতি ছাড়াই ওয়েবসাইট এক হোস্ট থেকে অন্যহোস্টে ।
যে কোন ধরণের বিজ্ঞাপন ব্যবহার করে পছন্দমত ওয়েবসাইট থেকে আয় করতে পারবেন।
সুবিধা পাবেন Custom Analytics এবং Tracking ব্যবহার করার ।
WordPress.org (ওয়ার্ডপ্রেস ডট অর্গ) এর অসুবিধা:
ডোমেইন এবং হোস্টিং কেনার জন্য টাকা খরচ করতে হয়।
যে কোন প্রকার আপডেট এবং আপগ্রেড করার দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।
নিজেকেই নিতে হবে নিয়মিত ওয়েবসাইট ব্যাকাপের দায়িত্ব ।
ওয়েবসাইটকে যে কোনা প্রকার স্পামিং এবং ভাইরাস এটাক হতে রক্ষার দায়িত্ব নিজেকেই নিতে হয়।