ক্ষতিকর ভাইরাসের খপ্পরে ইন্টারনেট নিরাপত্তাঃ

কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহারকারী মাত্রই ভাইরাসের সাথে বহুল পরিচিত।

আপনি হয়ত অনেক সময় এ সব ভাইরাস সম্পর্কে শুনেছেন এবং আপনি জানেন এসব ভাইরাস কতটা খারাপ হতে পারে।

ভাইরাসের অনলাইন আক্রমণ আপনার সিস্টেমকে ধ্বংস করে দিতে পারে এবং কখনো কখনো আপনার অজান্তেই তারা আঘাত করে।

আপনি হয়তো ভাবছেন একটি নির্মল রেজিস্ট্রি ক্লিনার ডাউনলোড করেছেন।

সমস্যা অনুভব করবেন তখন, যখন আপনার কোন ফাইল হারাবেন বা দেখবেন আপনার মাউস কাজ করছে না কিংবা আপনি কোন ডকুমেন্ট ওপেন করতে পারছেন না।

যদি ঘটনা এ রকম হয়ে থাকে তবে সম্ভবত একটি ভাইরাস ডাউনলোড করেছেন।

এই ধরনের ঘটনা ঘটার জন্য অপেক্ষা না করে আপনার উচিত হবে ঘটনা ঘটার আগেই ইন্টারনেট নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা।

আপনার নিরাপত্তা চাহিদানুসারে বাজারে বিভিন্ন ধরনের এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার রয়েছে।

যা আপনাকে সঠিক মাত্রায় সুরক্ষা প্রদান করতে পারে।

এসব সফটওয়্যার ব্যবহার আপনার জন্য জ্ঞানীর কাজ হবে এবং এন্টিভাইরাসের কার্যক্রমের পাশাপাশি আপনি এসব সফটওয়্যার থেকে অন্যান্য কিছু সুবিধা পাবেন।

একটি ভাল এন্টিভাইরাসের অন্যান্য কিছু ব্যবহারিক বৈশিষ্ট্য থাকা উচিত যেমন- স্পাইওয়্যার সনাক্তকরণ, ফায়ারওয়াল ক্যাপাবিলিটি এবং অটো-আপডেটিং প্রক্রিয়া।

আপনার কম্পিউটারের অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং উক্ত সুবিধাগুলো প্রদান করতে প্রোগ্রামগুলো ডিজাইন করা হয়েছিল।

আগে আপনি এগুলোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব না করলেও নিশ্চিতভাবেই এসব সফটওয়্যার ইন্সটল আপনার কম্পিউটারের নিরাপত্তা রক্ষায় বেশ কার্যকরী।

যে কারণে সবগুলো ফিচার এক সাথে চালু করা সময়কে প্রভাবিত করতে পারে।

সুতরাং আপনি গুরুত্বানুসারে যে একটি কাজ করতে চান তা করতে পারেন যেমন- অটোমেটিক আপডেট, ফায়ারওয়াল এবং অটোমেটিক স্ক্যানিং।

অনলাইন হুমকি, ক্ষতিকর ভাইরাস থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে হবে।

অনেক সময় এ বিষয়টি আপনার ব্রাউজারের উপর নির্ভর করে।

যাতে সাধারণত নিরাপত্তামূলক বৈশিষ্ট্য সন্নিবিষ্ট থাকে। যদিও সকল ব্রাউজার সমান বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন নয়।

কিছু ব্রাউজার রয়েছে যেগুলো অন্যান্য ব্রাউজারের চেয়ে উচ্চমাত্রার নিরাপত্তা সুবিধা নিশ্চিত করতে আপনাকে অফার করবে। সুতরাং পছন্দের বিষয়টি আপনার বিবেচনাধীন।

কিছু রয়েছে যেগুলো সহজ সরলভাবে নিয়মিত অধিক ভিন্নতায় আপনার ডাটার ব্যাকআপ সৃষ্টি করে।

স্মরণ রাখতে হবে যে, একটিমাত্র ভাইরাসের ফলে আপনার কম্পিউটার ক্রাশ করতে পারে। সুতরাং ভাইরাসের হাত থেকে নিরাপদ থাকতে হবে।

সর্বোপরি একটি ছোট ভাইরাস কি করতে পারে এমনটা ভেবে আপনি সত্যিই তাকে অবহেলা করতে পারেন না।

যদি আপনি এই বিষয়ের উপর বিশেষজ্ঞ না হন তবু আপনি কাউকে পেতে পারেন যিনি এসব বিষয়ে মোটামুটি বিশেষজ্ঞ।

ভাইরাস কর্তৃক আপনার ফাইল এবং এমনকি আপনার সিস্টেম ধ্বংস হবার আগেই যত শীঘ্রই দ্রুত আপনাকে ভাইরাসগুলো মৃত্যু নিশ্চিত করতে হবে।

যখন ক্ষতি করতে ভাইরাসগুলো আসে তখন আপনার কম্পিউটারকে আক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করা হচ্ছে একমাত্র নিরাপদ পথ।

প্রশ্ন হতে পারে কেন এন্টিভাইরাস সফটওয়্যার সর্বদাই প্রয়োজনীয়?

যদি আপনি সম্ভাব্য অনলাইন আক্রমণ হ্রাস করতে চান এবং অনেক সময় না জেনেই কম্পিউটারে ভাইরাস ডাউনলোড করে থাকেন।

আপনার কম্পিউটার নিরাপদ রাখতে আপনি এ ব্যাপারে সাহায্যহীন নন।

প্রত্যহ নতুন ভাইরাস যেমন সৃষ্টি হচ্ছে তাই ডাটাবেজে ভাইরাস সনাক্ত করতে আপনার এন্টিভাইরাসকে নিয়মিত আপডেট করতে হবে।

আপনার কম্পিটউটারের সাধারণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি আইপি হিডার ইন্সটল করতে পারেন,

যা আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন রাখতে যখন আপনি অনলাইনে অবস্থান করবেন।

যখন আপনি অনলাইনে বেনামি থাকবেন অর্থাৎ আপনার আইপি অ্যাড্রেস গোপন থাকবে,

তখন কোন হ্যাকার আপনাকে খুঁজবে না এবং আপনি হ্যাকার থেকে নিরাপদ থাকবেন।

প্রতারণামূলক ইমেইলে বিশ্বাস করাঃ

প্রতারক চক্র সর্বদা নিত্য নতুন কৌশল অবলম্বন করে নানা রকমভাবে অনলাইনে প্রতারণার ঘটনা ঘটাচ্ছে।

এবং নিত্য নতুন এসব প্রতারণা দিন দিন বেড়েই চলছে।

ফলশ্রুতিতে অনলাইন প্রতারণার বিষয়ে অসচেতন নিরীহ ব্যক্তিরা প্রতিনিয়তই শিকারে পরিণত হচ্ছে প্রতারক চক্রের।

প্রতিদিনই অনলাইনে প্রতারণামূলক নানা ঘটনা ঘটছে।

যদি আপনি বেশ কিছু সময় ধরে আপনার ইমেইল বন্ধ রাখেন তবে আপনি সম্ভবত বিশ্বের বিভিন্ন অজানা উৎস থেকে অনেক প্রতারণামূলক ও হাস্যকর ম্যাসেজ পেয়ে থাকবেন।

ম্যাসেজে কেউ হয়ত বলবে আপনি পাঁচ মিলিয়ন ডলার জিতেছেন একটি লটারীর মাধ্যমে,

যেখানে আপনি কখনো সরাসরি অংশগ্রহণ করেননি কিন্তু আপনি রেনডমলি নির্বাচিত হয়েছেন। তাই ডলারগুলো আপনাকে এখন গ্রহণ করতে হবে।

এই ধরনের বেশিরভাগ ইমেইলই সংগঠিত চক্রের মাধ্যমে ঘটানো হয়ে থাকে।

যারা অজ্ঞতা বশত এই ধরনের প্রতারণায় পড়ে থাকে তারা অনেক সময়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এবং প্রতারক চক্র লাভবান হয়।

ইমেইল স্ক্যামার এর মাধ্যমে আমেরিকা ও যুক্তরাজ্য তাদের কারেন্সির বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার হারিয়েছে এবং এই সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

এতে কোন সন্দেহ নেই যে ইন্টারনেট হচ্ছে ব্যবহার- কারীদের জন্য একটি মুক্ত কেন্দ্রস্থল যেখানে প্রতারক চক্রও বিচরণ করতে পারে।

ফলে ইন্টারনেটে তারা প্রবেশ করে সাধারণ ব্যবহারকারীদের সাথে নানা রকম প্রতারণায় লিপ্ত হচ্ছে।

সনাতন ধারার যোগাযোগ পদ্ধতি যেমন- স্নেইন মেইল এবং ফ্যাক্সের চেয়ে স্ক্যাম অনেক সহজ হওয়ায় প্রতারকরা তা ব্যবহার করে থাকে।

সর্বোপরি ইমেইলে প্রতারণামূলক কার্যক্রমগুলো ওয়েব জগতে বেশ জটিলতা তৈরি করছে তাদের জন্য যারা জানেন না কিভাবে এগুলো প্রতিরোধ করতে হয়।

এখন পর্যন্ত ইন্টারনেট নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা কমপক্ষে পাঁচ ধরনের সাম্প্রতিক সময়ে পরিচালিত স্ক্যাম ইমেইল চিহ্নিত করেছেন।

নাইজেরিয়ান স্ক্যাম লেটারে অগ্রিম-ফি বিষয়ে প্রতারণা করা হয়।

অনেকে বড় অংকের জন্য প্রেরককে অর্থ-কড়ি পাঠিয়ে থাকে।

ফিশিং স্ক্যাম এর লিংকে ক্লিক করলে আপনার অজান্তেই কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ডাউনলোড হয়ে যায়।

অনেক সময় প্রতারণামূলক ইমেইল থেকে দেখা যায় যে কিছু লোক আপনাকে খুন করার জন্য বের হয়েছে এবং আপনার জীবন রক্ষা করার জন্য তারা আপনার কাছে অর্থ দাবী করবে।

আরো এক ধরনের স্ক্যাম চিহ্নিত হয়েছে যা হচ্ছে এন্টি-স্পাইওয়্যার স্ক্যাম।

যা আপনাকে একটি এন্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার ডাউলোড করতে চেষ্টা করবে।

সত্যিকার অর্থে তা কোন এন্টিভাইরাস নয় এটি হচ্ছে এক প্রকার ভাইরাস যার মাধ্যমে প্রেরক আপনার কম্পিউটারের যাবতীয় তথ্য চুরি করতে পারে।

বর্তমানে সরকার এবং প্রাইভেট সংস্থাগুলো সাইবার আক্রমণের বিরুদ্ধে নানা রকম কার্যক্রম পরিচালিত করছে,

এবং এ বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে ব্যবহার- কারীদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে।

এত কিছু সত্ত্বেও এই ধরনের কার্যক্রম চলতেই আছে। এর অন্যতম প্রধান অন্তরায় হচ্ছে যথাযথ তদন্ত করে অনলাইনে প্রতারণাকারীদের বিচারের অভাব।

এখনই সকল অনলাইন প্রতারণা বন্ধে যথাযথ উদ্দ্যোগ নিতে সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত।

আপনার পার্সোনাল অনলাইন নিরাপত্তার জন্য আপনি কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন।

এ ক্ষেত্রে স্ক্যাম এবং সর্বোপরি অনলাইন নিরাপত্তার খুঁটিনাটি বিষয়ে আপনাকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করতে হবে।

যখন আপনি এসব বিষয় সম্পর্কে জানবেন তখন আপনি আপনার কম্পিউটারকে নিরাপদ,

এবং আপনার অনলাইন পথচলা নিরাপদ করতে কি কি বর্জন ও গ্রহণ করতে হবে তা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারবেন।

আপনার আইপি অ্যাড্রেসকে গোপন রাখতে আপনি একটি আইপি চেঞ্জিং সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন যা সেইফগার্ড হিসেবে কাজ করবে।

যখন আপনার আইপি গোপন থাকবে অর্থাৎ ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকলেও অনলাইনে কেউ আপনার উপস্থিতি টের পাবে না।

এর মানে হচ্ছে, ইমেইল স্ক্যাম, ম্যালওয়ার বা অন্যান্য ক্ষতিকর কিছু আপনাকে পাঠাতে পারবেনা,

কারণ তারা আপনাকে খুঁজে পাবে না আপনার আইপি গোপন থাকার ফলে।

ফলে আপনি অনলাইনে অধিক সুরক্ষিত ও নিরাপদে বিচরণ করতে পারবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *