ক্ষুধায় কাতর
দুগ্ধবতী গাভীর পেছন হেঁটেই শেষ প্রান্তে যেতো
প্রতিদিন সকালে খালি পায়ে ছেঁড়া জামা কাপড়
পরে যেখানে সবুজ ঘাসে মোড়া একটা মাঠ ছিল
সেখানে চারণ ভূমিতে গাভীটাকে ছেড়ে দিয়ে সে
গাছের ছায়ায় বসেই পাখীদের সাথে গান গাইত।
নদীর সুরে সুর মিলিয়ে কাঁদতে খুব হিংসা হতো
গাভীর অফুরন্ত খাবার দেখে কখন ফুলের দ্রুত
বৃদ্ধি এবং প্রজাপতির ডানা মেলা নিয়ে ভাবনায়
হারিয়ে যেতো চিন্তার জগতে শেষে সারা দিনের
ক্লান্তি আর ক্ষুধায় কাতর হয়ে বাড়ি ফিরে যেতো।
গোগ্রাসে গিলত ভুট্টার রুটি জীর্ণ কুটিরে ফিরে
নিজ অভিভাবকের শিশুর সাথে বসেই রুটিতে
অল্প একটু শুকনো ফল কখনো তেল সিরকায়
ডোবানো তরকারী তারপর শুকনো খড়কুটোয়
বিছনায় হাত দুটোয় শুয়ে পড়তো বালিশ করে।
শুয়ে সে ভাবত জীবনটা গভীর ঘুমের মত হতো
যদি পুরোটা স্বপ্নচ্ছেদ ব্যতীত অন্তহীনও এভাবে
মুহূর্তেই পাড়ি দিত ঘুমের দেশে ভোরে ধমক দিত
অভিভাবক তাকে প্রাতঃক্রিয়া সারার জন্য তাঁর
ধমক শুনেই ভয়ে কাঁপতো শয্যাও ত্যাগ করতো।
এভাবে বেশ ক’ বছর অসহায় ছেলের কেটে গেল
দূরবর্তী টিলা উপত্যকার মাঝে গাছের ডালের মত
সে লিকলিকিয়ে বাড়তে থাকলো মনের অজান্তেই
গহীনে জন্ম নিতে লাগলো নানা আবেগ অনুভূতি
যেমন করে ফুলের গভীরে জন্মানো সৌরভ পেল।
চোখের সামনে স্বপ্ন ও দুশ্চিন্তা লাগলো ভিড় হতে
পরস্পর পালা করে তার যেমন ভাবে পালা করেই
জলের ঘাটে পৌঁছোয় ভেড়ার পাল এবার সে এক
চিন্তামগ্ন কিশোরে পরিণত হলো উর্বর মাটির মতো
বীজ বপন করেনি জ্ঞান তখন অর্জন হয়নি তাতে।