গুগল থেকে টাকা আয় করার ৩ টি কার্যকরী উপায় :
আপনার যদি অনলাইনে কিছু জানার ইচ্ছা হয় তবে নিশ্চয় গুগলে সার্চ করেন।
আজকে আপনাদের জানাব কিভাবে গুগল থেকে টাকা আয় করা যায়।
বর্তমান সময়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইনে আয় করার অনেক কার্যকরী উপায় রয়েছে।
অনেকে তো আবার অনলাইনে আয়কে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
অনলাইনে আয় নিয়ে কথা উঠলে সবার মাথায় একটাই প্রশ্ন ঘুরপাক খায়। সেটি হল, “অনলাইনে আয় কি আসলেও সম্ভব?”
এক্ষেত্রে এক কথায় আমার উত্তর হচ্ছে “অবশ্যই সম্ভব”।
অনলাইনে আয় নিয়ে আমাদের আরও কয়েকটি লেখা রয়েছে।
অনলাইনে ইনকাম সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে সেগুলো অবশ্যই পড়বেন। আপনার সুবিধার্থে নিচে সেগুলো দেওয়া হলঃ
এই আর্টিকেল গুলো পড়ে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন কিভাবে ইন্টারনেট থেকে সহজে আয় করতে পারবেন।
আজকে আমরা কিভাবে গুগল থেকে টাকা আয় করা যায় (google theke taka income) সে বিষয়ে জানব।
গুগল ইন্টারনেট ভিত্তিক সেবা বিশিষ্ট একটি আমেরিকান মাল্টিন্যাশনাল প্রযুক্তি কোম্পানি।
সার্চ ইঞ্জিন, ক্লাউড কম্পিউটিং, অনলাইন এডভার্টাইজিং, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ইত্যাদি নানা রকমের প্রোডাক্ট গুগলের রয়েছে।
গুগল কে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানি হিসেবে ধরা হয়।
গুগলের অনেক রকমের অনলাইন সার্ভিস আছে যেগুলো ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ঘরে বসে অনলাইনে আয় করতে পারবেন।
আপনি ঠিক মত কাজ করতে পারলে দিনে ১০ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। তবে, অনেকে এর থেকেও বেশি টাকা অনলাইন গুগল থেকে আয় করছেন।
তাই, যদি আপনিও ঘরে বসে Google থেকে অনলাইন ইনকাম করার কথা ভেবে থাকেন, তাহলে এই পোস্টটি আপনার জন্য অনেক উপকারি হবে।
গুগল থেকে টাকা আয় করার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় :
আজকে আপনাদের সাথে গুগল থেকে আয় করার যে উপায়গুলো শেয়ার করব সেগুলো অনেক উপকারি হবে বলে আমার বিশ্বাস।
বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ এ উপায়গুলো কাজে লাগিয়ে প্রচুর ইনকাম করছে। তো চলুন উপায় গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
০১. ব্লগিং করে আয় (Make money from Blogging)
গুগল থেকে টাকা আয় করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হল Blogger. এটি গুগলের একটি প্লাটফর্ম যেখানে আপনি নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করে ব্লগিং করতে পারেন।
সাধারণত একটি ব্লগ সাইট তৈরির জন্য আপনাকে ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনতে হবে। এছাড়াও অন্যান্য কিছু খরচ হতে পারে।
কিন্তু গুগলের এই প্লাটফর্মটিতে আপনি সম্পূর্ন বিনামূল্যে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করে ফেলতে পারেন।
ব্লগিং করে অনলাইন থেকে ইনকাম করা লোকের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে।
কেননা, আপনার যদি একটি জনপ্রিয় এবং অর্গানিক ট্রাফিক আসা ব্লগ থাকে তবে খুব সহজেই আপনি আপনার ব্লগ থেকে প্রতিদিন ৫ ডলার থেকে ৫০ ডলার ইনকাম করতে পারবেন।
এখন তো Youtube দেখে ঘরে বসেই একটি সুন্দর ব্লগ সাইট বানিয়ে নিতে পারেন।
জেনে নিন একটি ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যেতে পারেঃ
প্রথমে Blogger.com এ গিয়ে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করতে হবে।
নিজের জন্য একটি পছন্দসই ডোমেইন বেছে নিতে হবে।
ব্লগের জন্য একটি ভাল এবং দ্রুত গতির থিম ইনস্টল করতে হবে।
ব্লগের সেটিংস গুলো নিজের সুবিধা মত কাস্টমাইজ করে নিতে হবে।
এই সেটিংস গুলো সম্পর্কে ভালভাবে জানতে চাইলে ইউটিবের সাহায্য নিতে পারেন।
নিজের ব্লগ সাইটে ভাল মানের, ইউনিক এবং কোয়ালিটি সম্পন্ন আরটিকেল রেগুলার পাবলিশ করতে থাকুন।
আপনার লেখাগুলোকে গুগলে তাড়াতাড়ি র্যাংক করানোর জন্য ভালভাবে এসইও (SEO) করুন।
ব্লগে মোটামুটি অর্গানিক ট্রাফিক আসা শুরু হলে গুগল এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করুন।
গুগল এডসেন্স থেকে এপ্রোভাল পাওয়ার পর আপনার ব্লগ সাইটে বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় করুন।
উপরের সবগুলো কাজ নিয়ম মেনে করলে আপনি খুব তাড়াতাড়ি ইনকাম, শুরু করতে পারবেন।
আর যদি আপনার ব্লগে প্রচুর পরিমান ভিজিটর আসা শুরু হয় তবে আপনি বিজ্ঞাপন দেখানোর পাশাপাশি এফিলিয়েট মার্কেটিং করেও অনেক টাকা কামিয়ে নিতে পারবেন।
০২. ইউটিউব চ্যানেল থেকে আয় (Earn from Youtube Channel)
ব্লগিং এর পর অনলাইন থেকে ইনকাম করার কার্যকরি উপায় হল ইউটিউবিং করা।
বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গায় এমনকি গ্রামেও 3G স্পিড আছে অনেক জায়গায় তো 4G স্পিডও অনায়াসে পাওয়া যায়।
শুধু তাই নয় এখন গ্রামাঞ্চলেও Wifi এর দেখা মেলে।
ফলে ইউটিউবের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলছে। মানুষ ছোট খাট প্রয়োজনেও এখন ইউটিউবের ধারস্থ হয়।
তাই এটি বর্তমানে অনলাইন আয়ের জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে।
আপনি যদি কনটেন্ট তৈরির জন্য ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলে বিভিন্ন কনটেন্ট উপরের ভিডিও তৈরি করে আপলোড করেন।
তাহলে অনলাইনে আয়ের একটি সুন্দর সুযোগ আপনার হয়ে যাবে ।
ইউটিউবে ভিডিও বানিয়ে মানুষ ফেমাস হওয়ার পাশাপাশি লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতেছেন।
তবে, এর জন্য আপনার ভিডিও গুলো অনেক মান সম্মত, আনন্দ দায়ক কিংবা প্রয়োজনীয় হতে হবে।
এসব গুণাগুণ থাকলেই কেবল আপনি একজন সফল ইউটিউবার হতে পারবেন।
স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নিন একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে কিভাবে আয় করবেনঃ
প্রথমে Youtube.com এ গিয়ে একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করুন।
চ্যানেল তৈরি করার ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে আপনার চ্যানেলের জন্য একটি ভাল নাম বাছাই করতে করতে হবে।
চ্যানেল খোলা শেষ হলে চ্যানেলের জন্য একটি সুন্দর লোগো আপলোড করুন।
এর পর Channel Description বক্সে আপনার চ্যানেলটি সম্পর্কে কিছু লিখুন।
এরপর আপনার চ্যানেলে মানসম্মত ভিডিও বানিয়ে আপলোড করতে থাকুন।
মনে রাখবেন অন্যের ভিডিও ডাউনলোড করে আপনার চ্যানেলে আপলোড করা যাবে না।
ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করার সময় মানসম্মত এবং আকর্ষণীয় Title এবং Description দিন।
ভিডিও আকর্ষণীয় করার জন্য সুন্দর Thumbnail ব্যবহার করুন।
কেউ সার্চ করলে নিজের ইউটিউব ভিডিও যাতে সার্চ রিজাল্টের একদম প্রথম দিকে থাকে সেজন্য প্রত্যেকটি ভিডিও অবশ্যই SEO করুন।
এবার ইউটিউব থেকে আয় করা শুরু করার পালা।
এ জন্য আপনাকে প্রথমে আপনার ভিডিও মনিটোনাইজ করতে হবে।
তবে গুগল এ্যডসেন্স মনিটাইজেশনের জন্য আপনার চ্যানেলে ৪০০০ ঘন্টা ভিডিও ওয়াচ টাইম (Video watch time) এবং ১০০০ subscriber থাকতেই হবে।
উপরের শর্ত পূরণ হলে আপনি আপনার চ্যানেলটি গুগল এডসেন্সের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন। অর্থাৎ, Google Adsense Monetization এর জন্য এপ্লাই করতে পারবেন।
আপনার চ্যানেলের ভিডিওগুলো যদি ইউটিউব এবং গুগল এডসেন্সের নিয়ম মেনে আপলোড করা হয়ে থাকে তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই Google Adsense আপনার চ্যানেলটি approve করে দিবে।
চ্যানেল গুগল এডসেন্সে এপ্রুভ হবার পর আপনার আপলোড করা ভিডিও গুলোতে আপনি বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করতে পারবেন।
আপনি যদি ইউটিউবের নীতিমালা মেনে ভিডিও আপলোড করেন তাহলে আপনি এক সময় অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।
০৩. গুগল প্লে স্টোর থেকে টাকা আয় (Earn Money from Google Play Store)
গুগল থেকে আয় করার মত গুগলের আরেকটি প্রোডাক্ট রয়েছে। সেটি হচ্ছে Google play store.
এনড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা এখান থেকে ফ্রিতে এবং কিছু এপ্স টাকার বিনিময়ে ডাউনলোড করে ব্যবহার করতে পারেন।
এখানে লক্ষ লক্ষ ফ্রি এপ্স রয়েছে যেগুলো এনড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য।
এই এনড্রয়েড এপস বানিয়েও আপনি গুগল থেকে টাকা আয় করতে পারেন। আপনি হয়তো নিজের মোবাইলে বিভিন্ন এনড্রয়েড এপস ব্যবহার করেছেন।
ব্যবহার করার সময় কি কখনো লক্ষ করেছেন? আপনি যে এপটি ব্যবহার করেন সেটি কিছুক্ষণ পর পর আপনাকে কিছু না কিছু বিজ্ঞাপন দেখিয়ে থাকে।
এই বিজ্ঞাপন দেখানোর মাধ্যমে মোবাইল এপ্স ডেভেলপারেরা ভাল টাকা ইনকাম করে থাকেন। চাইলে কিন্তু আপনিও তাদের একজন হতে পারেন।
চলুন জেনে নেই কিভাবে মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে টাকা ইনকাম করা যায়।
কোনো ওয়েবসাইট বা ইউটিউব থেকে টাকা আয় করার জন্য যেমন আপনাকে আপনার সাইট কিংবা চ্যানেলকে প্রথমে Google Adsense এর সাথে কানেক্ট করতে হয় ।
তেমনি একটি এনড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে টাকা আয় করার জন্য, অ্যাপটিকে Google Admob এর সাথে কানেক্ট করতে হয়।
Google Admob হল Google Adsense এর মত একটি অনলাইন এডভার্টাইজিং কোম্পানি।
তবে, Admob দিয়ে শুধু মোবাইল অ্যাপেই বিজ্ঞাপন দেখানো হয়।
অপরদিকে Google Adsense ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ব্লগ এবং ইউটিউব ভিডিও গুলিতে বিজ্ঞাপন দেখানোর জন্য। তবে Admob ও গুগলের একটি প্রতিষ্ঠান।
আপনি যদি নিজের বানানো অ্যাপ গুলিতে Admob এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে গুগল প্লে স্টোরে আপলোড করেন ।
মানুষ আপনার অ্যাপ গুলো ডাউনলোড করে ব্যবহার করে তবে আপনি সেখান থেকে অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।
বুঝলেন তো, কিভাবে গুগল প্লে স্টোর থেকে টাকা আয় করতে পারবেন? চলুন মোবাইল অ্যাপ বানিয়ে কিভাবে আয় করা শুরু করা যায় তা স্টেপ বাই স্টেপ জেনে নেই।
সবার আগে আপনাকে যেটি নিয়ে ভাবতে হবে তা হচ্ছে আপনি কোন বিষয়ের উপর অ্যাপটি বানাবেন। এর পর তা বানানোর কাজ শুরু করতে হবে।
এরপর আপনাকে আপনার মোবাইল অ্যাপটি বানাতে হবে।
এজন্য অনলাইনে অনেক সফটওয়্যার আছে যারা আপনাকে এনড্রয়েড অ্যাপ বানিয়ে দিবে। এজন্য আপনার কোন কোডিং জানা লাগবেনা!
অ্যাপ বানানোর কাজ শেষ হলে Google Admob এ গিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করুন।
এরপর আপনি আপনার অ্যাপে Admob ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন লাগিয়ে নিন এবং গুগল প্লে স্টোরে আপনার মোবাইল অ্যাপটি পাবলিশ করে ফেলুন।
অবশ্যই মাথায় রাখবেন, কোন অ্যাপ গুগল প্লে স্টোরে পাব্লিশ করার আগে আপনাকে Google play console এ গিয়ে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে।
সেখানে সাইন আপ করার জন্য আপনার ২৫ ডলার রেজিস্ট্রেশন ফি দেওয়া লাগবে।
সবকিছু করা শেষ হলে সোশিয়াল মিডিয়া, ডিজিটাল মার্কেটিং এবং বিভিন্ন অনলাইন পোর্টালে আপনার অ্যাপটির প্রচারণা চালান।
মনে রাখবেন প্রচারেই কিন্তু প্রসার। যত বেশি মানুষ আপনার বানানো অ্যাপটি মোবাইলে ইন্সটল করবে আপনার তত ইনকাম বাড়বে।
এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের এমন ৩ টি উপায় বললাম, যেগুলি ব্যবহার করে গুগল থেকে অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন। আশা করি একটু হলেও উপকার করতে পেরেছি।