গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ :

রিভার্স ইমেজ সার্চের সময় প্রধান কিছু তথ্যের দিকে নজর রাখতে হবে।

যেমন,  ছবিটি প্রথম কোথায় ও কোন পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করা হয়েছিল, ছবিটির সোর্স কী, এবং সেই সোর্সটি বিশ্বাসযোগ্য কি না। 

কয়েক বছর আগে, সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায়: একটি বেজি মাছরাঙার পিঠে চড়ে উড়ে যাচ্ছে।

অনেকে পরবর্তীকালে দুর্দান্ত এই ছবি দিয়ে মিম বানায়।

ছবিটি এত বেশি ভালো ছিল যে, এটিকে সত্যি বলে মনে হচ্ছিল না। এতে ভুয়া বা কারসাজি করা ছবির সব লক্ষণ ছিল।

কিন্তু গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ থেকে দেখা যায়: ছবিটি সত্যিই আসল। এটি একটি সিরিজের অংশ হিসেবে তুলেছিলেন এক শখের ফটোগ্রাফার।

সার্চ থেকে সেই ফটোগ্রাফারের একটি সাক্ষাৎকারও বেরিয়ে আসে। 

বিবিসিকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, কীভাবে এই অসাধারণ ছবি তোলা হয়েছিল।

গুগল রিভার্স ইমেজ সার্চ কীভাবে ব্যবহার করবেন :

০১. https://images.google.com – এই ইউআরএলটি আপনার হোম স্ক্রিনে যুক্ত করে নিন “অ্যাড হোম স্ক্রিন বাটন” পদ্ধতি অনুসরণ করে। ওপরে টিনআইয়ের ক্ষেত্রে যেটি দেখানো হয়েছে। 

০২. যে ছবিটি আপনি যাচাই করতে চান সেটি সেভ বা ডাউনলোড করে নিন।

অথবা ছবিটির ওয়েব অ্যাড্রেসটি কপি করে নিন। আবারও মাথায় রাখুন: ইউআরএলটি হতে হবে ছবিটির, পুরো ওয়েবপেজের নয়। 

০৩. হোম স্ক্রিনে যদি শর্টকাট সেভ না করে থাকেন, তাহলে ফোনের ব্রাউজারে https://images.google.com – এই ইউআরএল ওপেন করুন। 

০৪. ব্রাউজার মেনু ওপেন করে, ড্রপডাউন মেনু থেকে “রিকোয়েস্ট ডেস্কটপ সাইট” বাছাই করুন। ‍

ওপরে, ডান দিকে যে তিনটি তিন-বিন্দু দেখবেন, সেখানেই গুগল ক্রোম-এর মেনু পাবেন ।

ফায়ারফক্সে এটি থাকে নিচে, ডান দিকে। সাফারিতে নিচে মাঝখানে। 

০৫. এবার সার্চ বারে ক্যামেরা আইকনটিতে ক্লিক করুন। 

০৬. এবার আপনি কয়েকটি অপশন পাবেন: হয় সার্চবারে ছবিটির ইউআরএল বসিয়ে সার্চ করতে পারেন, বা “আপলোড অ্যান ইমেজ” ট্যাবে ক্লিক করে ফোন থেকে ছবি বাছাই করে দিতে পারেন।

০৭. এরপর টুলটিই ভারী কাজগুলো করে ফেলবে। এবার আপনি সার্চ ফলাফলগুলো দেখে যাচাই করুন যে, ছবিটি কবে ও কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে, এবং কোন প্রেক্ষাপটে।

আপনি যদি অনেক পেছনে যেতে পারেন, তাহলে ছবিটি প্রথম কোথায় ব্যবহার করা হয়েছিল এবং এটির মেধাস্বত্ব কার—সেই তথ্যও বের করে ফেলতে পারবেন।

পরামর্শ: আপনি যদি মোবাইলের ডিফল্ট ব্রাউজার হিসেবে গুগল ক্রোম ব্যবহার করেন, তাহলে ছবিটিতে ক্লিক করে ধরে থাকলে একটি ড্রপডাউন মেনু আসবে।

সেখান থেকে আপনি “সার্চ উইথ গুগল লেন্স” বাছাই করেও রিভার্স ইমেজ সার্চ করতে পারেন। (পুরোনো ভার্সনগুলোতে বলা থাকতে পারে “সার্চ গুগল ফর দিস ইমেজ।”)

ফটো শার্লক :

আমি ফটো শার্লক অ্যাপ বেশি ব্যবহার করি, কারণ, এটি ফ্রি।

তা ছাড়া এখানে আপনি তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ চালাতে পারবেন।

কোনো পোস্টার বা ম্যাগাজিন, সংবাদপত্রে ছাপা ছবি কোথায় প্রথম দেখা গিয়েছিল, সেটিও দেখার সুযোগ আছে এখানে।

এটি ব্যবহারের জন্য, শুরুতে আপনার অ্যান্ড্রয়েড  বা আইফোনে অ্যাপটি ডাউনলোড করে নিন। 

ফটো শার্লক যেভাবে ব্যবহার করবেন :

ফটো শার্লক ওপেন করার পর, আপনার সামনে এই ধরনের অপশন আসবে :

০১. কোনো পোস্টার বা ম্যাগাজিন-সংবাদপত্র থেকে ছবি তুলে সার্চ করার জন্য ক্লিক করতে পারবেন শাটার আইকনে। 

০২. কোনো ছবি আপলোড করার জন্য চাপ দিন সাদা বর্গের মধ্যে থাকা দুটি কালো ত্রিভুজের আইকনে।

এবার আপনি বেশ কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন ফোল্ডার অপশন পাবেন।

যেমন “গ্যালারি,” ‍[গুগল] “ড্রাইভ,” ও “ফাইলস”। এখানে ক্লিক করে আপনি দেখিয়ে দিতে পারবেন যে ছবিটা কোথায় রাখা আছে। ছবিটি খুঁজে বের করুন এবং সেটি বাছাই করুন। 

০৩. অ্যাপটি এরপর অনলাইনে সেই ছবির অন্য ভার্সনগুলোর জন্য খোঁজ চালাবে।

ডিফল্ট হিসেবে এটি শুরুতে সার্চ করে গুগলে। কিন্তু আপনি যদি অন্য কোনো সার্চ ইঞ্জিন দিয়ে সার্চ করতে চান, তাহলে প্রথম সার্চ ফলাফলের নিচে, মাঝখানে তীরচিহ্নওয়ালা ছোট বাক্সের চিহ্নে ক্লিক করুন।

এবার আপনি বিং বা ইয়ানডেক্স সার্চ ইঞ্জিন বাছাই করে দেওয়ার অপশন পাবেন।

ইয়ানডেক্স একটি শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন। তবে এটি রাশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের জন্য বেশি ভালো।  

০৪. এবার ফলাফলগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখুন যে, ছবিটি এর আগে কোথায়, কোন সময়ে এবং কী পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করা হয়েছে।

ফেক ইমেজ ডিটেক্টর :

কোনো ছবির আদি উৎস ও যথার্থতা যাচাই করার ক্ষেত্রে এই অ্যাপ দুটি পর্যায়ে কাজ করে।

প্রথমে এটি দেয় একটি “এরর লেভেল অ্যানালাইসিস”।

যেখানে কম্পোজিশন রেশিও পরীক্ষা করে দেখা হয়, ছবিটির কোনো জায়গায় কারসাজি করা হয়েছে কি না।

আরেকটি যে জিনিসের দিকে নজর দেওয়া হয়, তা হলো: মেটাডেটা।

“দৃশ্যের আড়ালে থাকা” এসব ডেটা স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি ও এমবেড হয়ে যায় আপনার তোলা যে কোনো ছবির সঙ্গে। 

পরামর্শ: এই টুল শুধু অ্যান্ড্রয়েড চালিত ফোন- গুলোতে কাজ করে।

আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য এ রকম একটি ভালো টুল: ভেরাসিটি।

অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে এটি বিনা মূল্যে ডাউনলোড করতে পারবেন। ফলে এটি ব্যবহার করা নিরাপদ। 

ফেক ইমেজ ডিটেক্টর যেভাবে ব্যবহার করবেন :

ব্যবহার শুরু করার জন্য ক্রোম বা ফায়ারফক্স অ্যাপ স্টোর থেকে ফেক ইমেজ ডিটেক্টর ডাউনলোড ও ইনস্টল করুন।

এরপর অ্যাপটি খুলে, নিচের দুই অপশনের মধ্য থেকে একটি বাছাই করুন :

০১. চুজ ফ্রম গ্যালারি; গ্যালারি থেকে ছবি বাছাই করুন।

এই অপশনের মাধ্যমে আপনি আপনার ফোনে থাকা কোনো ছবি বাছাই করে দিতে পারেন এবং রিভার্স ইমেজ সার্চ চালাতে পারেন। 

০২. চুজ ফ্রম রিসেন্ট ইমেজেস; পোস্টার বা ম্যাগাজিন-সংবাদপত্রে ছাপা সাম্প্রতিক ছবি তুলে সেটি ধরে সার্চ করতে পারেন। 

০৩. এবার আপনি এই ধরনের জবাব পাবেন: “ডিজিটালি অল্টার্ড,” “নট ফ্রম ক্যামেরা,” “৫০-৫০ চান্স,” বা “লাইক এ রিয়াল ক্যামেরা ইমেজ।”

মাথায় রাখুন, এগুলো শুধুই ইঙ্গিত, পুরোপুরি নিশ্চিত নয়।

সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে, আপনাকে সেগুলো সতর্কতার সঙ্গে যাচাই করে দেখতে হবে। 

০৪. প্রতিটি রেসপন্সের নিচে, আপনি ছবির  মেটাডেটা পাবেন।

মেটাডেটা যদি মুছে ফেলা না হয়, তাহলে এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে তথ্য আপনি পাবেন, তা হলো: আসল ছবিটি তোলার দিন ও সময়, যা থেকে আপনি বুঝতে পারবেন ছবিটি কখন তোলা হয়েছিল। 

 ছবি যাচাইয়ের জন্য দরকারি পরামর্শ :

কোনো ছবি আসল কি না, তা যাচাই করতে গেলে, রিপোর্টার হিসেবে দক্ষতার পাশাপাশি, আরও কিছু প্রশ্ন আপনাকে মাথায় রাখতে হবে : 

০১. আপনি কি ছবিটির আদি সংস্করণ দেখছেন?

০২. ছবিটি প্রথম কোথায় ব্যবহার করা হয়েছিল?

আপনি যে ছবিটি যাচাই করতে চাইছেন, তার আগে কি সেই ছবিটি কোথাও ব্যবহার করা হয়েছিল? 

০৩. আদি ছবিটি কোন পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করা হয়েছিল?

মাথায় রাখুন যে, আসল, অসম্পাদিত ছবিও প্রায়ই ভিন্ন কোনো পরিপ্রেক্ষিতে ব্যবহার করা হয় ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্ত করার জন্য। 

০৪. আপনি কি জানেন ছবিটি কে তুলেছিল? এটি যদি জানা থাকে, তার মানে আপনি আরও তথ্য ও পরিপ্রেক্ষিত জানার জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। 

০৫. আপনি কি জানেন, ছবিটি কোন জায়গায় তোলা হয়েছিল?

মানুষজন কী ধরনের পোশাক পরে ছিল? ছবিটি যে দেশে তোলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, সেখানকার মানুষ কি এই ধরনের পোশাক পরে?

০৬. ছবিতে থাকা ট্রাফিক সাইন, অন্যান্য সংকেত, দোকান ও বিলবোর্ডের লেখা, নিবন্ধন প্লেট ইত্যাদি নানা কিছু লক্ষ করুন, যেখান থেকে আপনি বের করতে পারবেন, ছবিটি কোথায় তোলা হয়েছিল।  

০৭. ছবিতে আবহাওয়া কেমন দেখা যাচ্ছে? আপনার যদি ছবিটি তোলার তারিখ জানা থাকে, তাহলে উলফ্রামআলফা ব্যবহার করে সেদিনের আবহাওয়া পরিস্থিতি জেনে নিন। এবং দেখুন, সেটি আপনার ছবির সঙ্গে মিলছে কি না। 

০৮. ছবিতে আলো সংক্রান্ত কোনো অসংগতি আছে কি না, লক্ষ করুন। কাছাকাছি থাকা দুটি বস্তুর ওপর আলো কি একইভাবে পড়েছে, নাকি কোনোটা বেশি উজ্জ্বল বা নিষ্প্রভ মনে হচ্ছে?

যদি তেমনটি মনে হয়ে থাকে, তাহলে ভালো সুযোগ আছে যে ছবিটিতে অন্য কিছু যোগ করা হয়েছে বা ডিজিটাল কারসাজি করা হয়েছে। 

০৯. ছবিতে থাকা কোনো বস্তু বা মানুষের প্রান্তরেখাগুলো কি অস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে?

যদি হয়ে থাকে, তাহলে এটি একটি ইঙ্গিত যে ছবিটিতে কারসাজি করা হয়েছে। 

১০. ছায়ার দিকে লক্ষ করুন। প্রায়ই, বিশেষ করে দুর্বলভাবে সম্পাদনা করা ছবিগুলোতে যদি কিছু যোগ করা হয়, তাহলে সেটির ছায়া বাদ দেওয়া হয়; কারণ, সেগুলো তৈরি করা বেশ কঠিন।

১১. সাধারণ মানদণ্ডের বাইরে থাকা আকার- আকৃতির ছবিগুলো খেয়াল করুন।

প্রায়ই এটি এমন ইঙ্গিত দেয় যে, ছবিটি সম্পাদনা করা হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ কোনো প্রাসঙ্গিক তথ্য মুছে দেওয়ার জন্য।

১২. প্রকৃতিতে, সব সময়ই আলো ও রঙের স্পষ্ট বৈচিত্র্য দেখতে পাওয়া যায়।

ফলে যদি কোনো ছবির একটি বড় অংশের রং একই রকম হয়, তাহলে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, ছবি কারসাজির কোনো সফটওয়্যার দিয়ে কোনো কিছু যোগ করা বা মুছে দেওয়া হয়েছে। 

১৩. একাধিক মানুষ আছে—এমন কোনো উজ্জ্বল ছবি হলে তাদের চোখের দিকে খেয়াল করুন যে, সেখানে প্রতিফলিত হওয়া আলোর মধ্যে সামঞ্জস্য আছে কি না।

রিপোর্টার বা সাধারণ কোনো নাগরিক হিসেবে এ রকম ছবি যাচাই করতে বসলে একটি প্রধান প্রশ্ন আমাদের সবার সামনেই থাকে: যিনি ছবিটি তুলেছেন, তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে কি আপনার জানা?

ছবিটি কি আপনাকে বিষণ্ন বা রাগান্বিত করে তুলছে, বা শক্ত কোনো আবেগ তৈরি করছে?

বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কারসাজি করা বা প্রাসঙ্গিকতা বিহীন ছবি ছড়ানো হয় মানুষের আবেগকে নাড়া দেওয়ার জন্য। 

মোদ্দা কথা। ছবিটির যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে সেটি শেয়ার করবেন না।

আপনি “ভুয়া সংবাদ” সমস্যা সমাধানের অংশও হতে পারেন, বা খোদ সমস্যারও অংশ হয়ে যেতে পারেন।  

ফার্স্ট ড্রাফট নিউজের ভেরিফিকেশন টুলবক্স আপনাকে সাহায্য করবে সহজেই কোনো ছবি ও ইউটিউব ভিডিওর আদি উৎস যাচাই করতে।

রিসোর্স :

এখানে আরও কিছু রিভার্স ইমেজ সার্চ টুলের খোঁজ থাকছে, যেগুলো ব্যবহার করতে পারেন: 

ফার্স্ট ড্রাফট নিউজের ভেরিফিকেশন টুলবক্স আপনাকে সাহায্য করবে সহজেই কোনো ছবি ও ইউটিউব ভিডিওর আদি উৎস যাচাই করতে।

তথ্য যাচাইয়ের আরও বেশ কিছু উপকারী টুল ও রিসোর্স পাবেন ফার্স্ট ড্রাফট নিউজ-এর ওয়েবসাইটে।

এখানে ছবি কারসাজি নিয়ে একটি ভিডিও, এবং ছবি যাচাইয়ের জন্য রিসোর্স ডাউনলোড করতে পারবেন। 

গুগলের ফ্যাক্ট চেক এক্সপ্লোরার-এ আপনি কি-ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করতে পারবেন কোনো ব্যক্তি বা বিষয় সম্পর্কে যাচাই করা তথ্যগুলো। 

ফুলফ্যাক্ট গাইড থেকে জানা যাবে: কীভাবে অনলাইনে বিভ্রান্তিকর ও কারসাজি করা ছবি শনাক্ত করবেন। 

হাউ-টু-গিক’স গাইড আপনাকে বলবে কোনো ছবি ফটোশপ বা কারসাজি করা হয়েছে কি না। 

ভিডিও ও ছবি যাচাই নিয়ে আরও ‍কিছু গুরুত্বপূর্ণ রিসোর্সের সন্ধান পাবেন জিআইজেএন- এর  ফ্যাক্ট-চেকিং অ্যান্ড ভেরিফিকেশন গাইডে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *