চোখের যেসব সমস্যা গুরুতর রোগের লক্ষণ
চোখ মানব দেহের প্রধান ইন্দ্রিয় গুলোর মধ্যে অন্যতম।
দৃষ্টিশক্তির পাশাপাশি মস্তিষ্কের কার্যকারি- তাতেও বিশেষ প্রভাব ফেলে চোখ।
তাই চোখের কোনো সমস্যা হলে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে শরীরে।
মাঝে মধ্যেই চোখ দিয়ে পানি পড়া থেকে শুরু করে চোখ লাল হয়ে যাওয়া এমনকি চুলকানিও হয়ে থাকে।
তবে এসব সমস্যাকে সবাই সাধারণ ভাবে নেয়। যা মোটেও ঠিক নয়।
কারণ এসব সমস্যাও হতে পারে বিভিন্ন রোগের কারণ। জেনে নিন কোন কোন রোগ প্রভাব ফেলে চোখে-
- শরীরের অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্ত চাপ প্রভাব ফেলতে পারে চোখে।
এর ফলে রেটিনার রক্ত নালী গুলো ক্ষতি গ্রস্ত হতে পারে।
ফলে হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি প্রায় অনিবার্য।
আয়নায় আপনার চোখ দেখার সময় এটি চোখে পড়বে না।
তাই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে নিয়মিত চোখ পরীক্ষা করা জরুরি।
- যদি চোখের আশে পাশের চামড়া সাদা হয়ে উঁচু অবস্থায় দেখতে পান,
তবে এটি উচ্চ কোলেস্টেরলের মাত্রার লক্ষণ হতে পারে।এটি বার্ধক্য জনিত কারণে,
বা নিম্ন-ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিনের মাত্রার কারণেও হতে পারে যা স্ট্রোকের ঝুঁকির ইঙ্গিত দেয়।
- বর্তমানে সবারই চোখই বেশির ভাগ সময় কম্পিউটার, টিভি বা মোবাইলের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকে।
এর ফলে অনেক সময় চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে।
চোখ অতিরিক্ত ক্লান্ত হলে এই ঘটনা ঘটতে পারে।
আবার ডায়াবেটিস রোগীরাও প্রায়শই এই উপসর্গের অভিযোগ করেন।
এটি আবার ছানি বা ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের লক্ষণও হতে পারে।
- অনিদ্রার কারণে চোখ লাল হয় ও অস্বস্তি লেগেই থাকে।
আর অনিদ্রা শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে।
- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনেকের কাছের জিনিস দেখতে অসুবিধা তৈরি হয়। বার্ধক্য জনিত কারণে এমনটি হয়ে থাকে। তাই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
চোখের পাতার ওপর বা ভেতরের অংশে কখনো কখনো ব্যথা হয়।
চোখের পাতায় ব্যথা সাধারণত চুলকানি, অ্যালার্জি ও জ্বালাপোড়ার কারণে হয়ে থাকে।
চোখের বাইরে থেকে কিছু পড়লে, সংক্রমণের জন্য চোখ চুলকালে ;
বা চোখের পাতার ওপর যে মেমব্রেনের আস্তরণ থাকে, তাতে প্রদাহ হলে ব্যথা হয়।
তবে চোখের ভেতরের অংশে ব্যথা হলে তা সত্যিই উদ্বেগের।
গুরুতর কোনো শারীরিক অসুস্থতার কারণে এ ব্যথা হতে পারে।
যেমন, ব্ল্যাক ফাঙ্গাসসহ বিভিন্ন সংক্রমণ, চোখের নানা জটিল রোগের কারণে এ সমস্যা হতে পারে।
চোখের ভেতরে ব্যথাঃ
বিভিন্ন কারণে এ লক্ষণ দেখা দিতে পারে। যেমন অ্যালার্জিজনিত কনজাঙ্কটিভাইটিস (সংক্রমণ), ছানি,
ক্যালাজিয়ন, কনজাঙ্কটিভাইটিস, কর্নিয়া ইনফেকশন, ডেঙ্গু জ্বর, ব্ল্যাক ফাঙ্গাস,
দাঁতের ক্ষয়রোগ, টাইফয়েড, ক্ষীণদৃষ্টি, কালাজ্বর, সিউডোটিউমার সেরেব্রি,
প্রেসবায়োপিয়া, টেরিজিয়াম, ব্লাস্টোমাইকোসিস, ফ্যাট এমবলিজম ;
অ্যামব্লায়োপিয়া, ক্রনিক গ্লুকোমা, রেটিনাল ডিটাচমেন্ট ছাড়া রয়েছে আরও অনেক কারণ।
উল্লেখ যোগ্য লক্ষণ হলো চোখে লাল ভাব, কম দেখা, মাথাব্যথা, চোখ ফুলে যাওয়া,
চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখে চুলকানি, চোখের ভেতরে কোনো কিছুর অস্তিত্ব অনুভব করা,
চোখ জ্বালা পোড়া করা, ঘোলাটে দৃষ্টি, মুখমণ্ডলে ব্যথা,
চোখ থেকে সাদা বর্ণের তরল জাতীয় পদার্থ বের হওয়া ইত্যাদি।
যাঁরা ঝুঁকির মধ্যে আছেনঃ
পুরুষদের মধ্যে এ লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঝুঁকি বেশি। ডায়াবেটিস ও অন্যান্য রোগে ;
যাঁদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, তাঁদের সংক্রমণ ও প্রদাহ বেশি হয়।
চোখের ব্যথা ও ক্লান্তি নিরাময়ঃ
দীর্ঘ সময় যারা কম্পিউটারে কাজ করেন, কম ঘুমান কিংবা লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত থাকেন,
চোখে ব্যথা তাদের নিত্য দিনের সঙ্গী। সেই সাথে আছে চোখ ক্লান্ত হয়ে যাওয়া,
চোখের কোনে কালি জমা সহ আরও অনেক সমস্যা।
আজ রইলো এমন একটি টিপস, যাতে আপনার চোখের ব্যথা ও ক্লান্তি নিরাময় হবে।
সেই সাথে মিটবে অন্যান্য সমস্যাও। আর এতে আপনার সঙ্গী হবে টি ব্যাগ!
দুটি টি ব্যাগ নিন। তারপর এদেরকে বরফ শীতল পানি দিয়ে ভিজিয়ে রাখুন।
বেশি নয়, অল্প পানি। দুটি টি ব্যাগের জন্য ৩ টেবিল চামচ পানি হলেই চলবে।
৫/৬ মিনিট ভিজিয়ে রাখার পর এই ভেজা টি ব্যাগ চোখের ওপরে দিয়ে শুয়ে থাকুন আধ ঘণ্টা।
ব্যাস, এতেই চলবে। আধ ঘণ্টা পর দেখুন চোখের ব্যথা একেবারেই কমে গেছে।
সাথে কমেছে চোখের ক্লান্তি, রক্ত জমাট ভাব, চোখের ফোলা, কালো দাগও।