ডিজিটাল মার্কেটিং কী? ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট হতে চাইলে যা যা জানা দরকার :

মার্কেটিং এ সাফল্য লাভের মূল একটি মন্ত্র হলো ঠিকভাবে ব্যবসার প্রচারণা করা। কথায় আছে না, প্রচারেই প্রসার। ব্যবসার প্রসার তখনই হবে যখন এর প্রচারণা ঠিক মতো হবে।

ব্যবসা বাণিজ্যের শুরু থেকেই প্রচারণার ব্যাপারটি সাথে জড়িত আছে। তবে আধুনিকতার যুগে এই প্রচারণার ব্যবস্থাটিও হয়ে উঠেছে আধুনিক।

প্রচারণার এই আধুনিকতার নাম হলো ডিজিটাল মার্কেটিং। চলুন তাহলে ডিজিটাল মার্কেটিং কি ও ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক!

ডিজিটাল মার্কেটিং কি :

সহজ ভাষায়, ডিজিটাল মার্কেটিং হলো যোগাযোগ মাধ্যমের সকল প্রকার আধুনিক প্রযুক্তি, বিশেষ করে ইন্টারনেটের সুবিধা ব্যবহার করে কোনো পণ্য বা সেবার প্রচারণা চালানো।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক ধরণ ও প্রকারভেদ রয়েছে এবং তা নির্ভর করে কোন ধরণের প্রচারণার জন্য এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। উপরের কথা মতো যে কেবল ব্যবসার প্রসারের জন্যই মার্কেটিং করতে হয় তা কিন্তু না।

Facebook Marketing কোর্সটি করে যা শিখবেন :

ফেসবুকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফিচারের ব্যবহার, ফেসবুক পেজ ও ফেসবুক গ্রুপের অর্গানিক রিচ বাড়ানো।

ফেসবুক বুস্টিং ও ফেসবুক অ্যাড ম্যানেজারের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয়া ও শক্তিশালী ব্র্যান্ড দাঁড় করানোর উপায়।

বর্তমান যুগে যে কোনো ধরণের সেবা প্রদান কিংবা নতুন কিছু শুরু করার জন্য চাই প্রচারণা। হোক সেটি কোনো অনুষ্ঠান কিংবা প্রতিযোগিতার প্রচারণা অথবা কোনো নির্বাচনী প্রচারণা। আর যেহেতু সময়টি এখন ডিজিটাল, তাই প্রচারণার মাধ্যমটিও হওয়া চাই ডিজিটাল। 

তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে আমরা টেলিভিশনে যতো অ্যাড দেখি, সোশ্যাল মিডিয়াতে যতো অ্যাড দেখি, মোবাইলে গেইম খেলার সময় যতো অ্যাড দেখি, তার সবই ডিজিটাল মার্কেটিং কি?

উত্তরটি হচ্ছে ‘হ্যা’, এগুলো সবই ডিজিটাল মার্কেটিং। এখন বুঝতে পারছেন ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব?

ডিজিটাল মার্কেটিং বনাম অ্যানালগ মার্কেটিং :

ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধারণাটিকে সঠিকভাবে কাজে লাগানোর জন্য একজন মার্কেটারকে অবশ্যই বেশ কিছু ব্যাপারে দক্ষ হতে হবে।

তার আগে ডিজিটাল মার্কেটিং এর পূর্বসূরি অ্যানালগ মার্কেটিং এর ব্যাপারে একটু জেনে নেই। ডিজিটাল মার্কেটিং এ আমরা ঘরে বসেই নতুন কোনো পণ্যের ব্যাপারে বা কোনো সংগঠনের ব্যাপারে জানতে পারছি।

কিন্তু অ্যানালগ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটি ততো সহজ ছিলো না। বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর বদলে তখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে প্রচারণা চালাতে হতো।

বর্তমানে নির্বাচনের সময় যেমন আমরা দেখি প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ভোট চাচ্ছে ব্যাপারটা অনেকটা সে রকম।

এখানে প্রার্থীরা নিজে উপস্থিত থেকে তার সংগঠনের ব্যাপারে সবাইকে জানান দেয়। এখানে তারা চায় ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটাকে গড়ে তুলতে।

অ্যানালগ মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা একই রকম। ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে দিলেই এক সাথে কয়েক হাজার কিংবা কয়েক লাখ মানুষ জেনে যাচ্ছে।

কিন্তু অ্যানালগ মার্কেটিং -এ এক জনের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে সেই এক জনের মাধ্যমে আরো ১০ জনের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়।

এজন্য এখানে ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই সম্পর্ক ধরে নিজের প্রচারণার জন্য একটি কার্ড বা লিফলেট সবাইকে দেয়া হয়, যেখানে ব্যক্তির পরিচয় এবং তার ঠিকানা দেয়া থাকে।

নতুন কোনো সিনেমা বের হলে দেখা যায় এলাকায় এলাকায় পোস্টারিং করা হচ্ছে এবং খবরের কাগজেও এর পোস্টার ছাপা হচ্ছে। এগুলো সবই অ্যানালগ মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।

মার্কেটিং এর জন্য ওয়ান টু ওয়ান সম্পর্কটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ :

এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে যে, ডিজিটাল মার্কেটিং কি অ্যানালগ মার্কেটিং কে সরিয়ে দিয়েছে? উত্তর হলো, না। ডিজিটাল মার্কেটিং এসে অ্যানালগ মার্কেটিং এর কাজটি আরও সহজ করে দিয়েছে।

আগে যেখানে বাড়ি বাড়ি ঘুরে নিজের প্রচারণা চালাতে হতো কিংবা লোকজনের কাছে নিজের পরিচয়ের একটি কার্ড বিলি করতে হতো প্রচারণার জন্য।

সেখানে আজকাল সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো একটি পোস্ট কিংবা কোনো প্রকার অ্যাড-ভার্টাইজ-ম্যান্টের মাধ্যমেই নিজের পরিচয় জানান দেয়া যায়।

বাংলাদেশে এখনও অনেক জায়গায় সাধারণ বিল বোর্ডের মাধ্যমে মার্কেটিং করতে দেখা যায়। এটি কিন্তু এক প্রকার অ্যানালগ মার্কেটিং।

কিন্তু নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কোয়ারে কিংবা জাপানের টোকিও শহরে তো বিল বোর্ডের ছড়াছড়ি। এতো আধুনিক দেশ কিন্তু এতো পুরনো পদ্ধতিতে মার্কেটিং করছে কেন?

আসলে তাদের সবকটি বিল বোর্ডে রয়েছে উন্নত প্রযুক্তির ছোঁয়া। তারা তাদের প্রায় সবকটি বিল বোর্ডে ডিসপ্লে স্ক্রিন ব্যবহার করে, কেননা তারা ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব বুঝে।

মার্কেটিং সফল হওয়ার পিছনে মূল মন্ত্র হলো আপনি দর্শককে কতটুকু আকৃষ্ট করতে পারছেন। আপনার অ্যাডভার্টাইজিং যতো বেশি জাঁকজমক পূর্ণ হবে, দর্শক ততো বেশি আকৃষ্ট হবে।

কখন প্রয়োজন ডিজিটাল মার্কেটিং?

এখন কথা হলো ডিজিটাল মার্কেটিং কি আমরা সব জায়গায় করে বেড়াবো? আগেই বলেছি মার্কেটিং এর মূল উদ্দেশ্য হল দর্শককে আকৃষ্ট করা।

দর্শকের চোখ যদি একবার আপনার অ্যাডের দিকে ঘুরানো যায়, তাহলে আপনি কী লিখেছ তা সে পড়ে দেখবেই। ধরন আপনি মরুভূমির মাঝে কোনো এক রাস্তার পাশে একটি বিলবোর্ড বসিয়ে আপনার কোম্পানির প্রচারণা করতে চাচ্ছেন ।

এখন মরুভূমিতে মানুষজনের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কি আপনি ডিসপ্লে বিলবোর্ড বসাবেন?

মরুভূমির রাস্তা দিয়ে যারা চলে তারা আশে পাশে মরুভূমি ছাড়া আর তেমন কিছুই লক্ষ্য করে না। তাই আপনি যদি খুবই সাধারণ ধরণের একটি বিলবোর্ড বসিয়ে দেন, তাহলে সেটিও মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে।

অর্থাৎ বর্তমান সময়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব অনেক বেশি হওয়া সত্ত্বেও মার্কেটিং বলতেই যে তা ডিজিটালই হওয়া লাগবে এমন কোনো কথা নেই। অবস্থান ও পরিস্থিতি ভেদে তা পুরাতন নিয়মেও কার্যকরী করে তোলা যায়।

এবার এক নজরে দেখে নেয়া যাক ডিজিটাল মার্কেটিং কি কি ধরনের ও কত প্রকারের হতে পারে :

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO)

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

কন্টেন্ট মার্কেটিং

ইমেইল মার্কেটিং

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

 SEO কী? জেনে নিন সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন সম্পর্কে বিস্তারিত :

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) -এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং :

ধরব আপনি একটি অনলাইন বইয়ের দোকান চালু করতে চাচ্ছেন । মানুষজন বই অর্ডার করলে আপনার দোকান থেকে সেটি হোম ডেলিভারি দেয়া হবে।

এখন কেউ আপনার দোকানের ব্যাপারে জানে না। কারো যদি অনলাইনে বই কেনার দরকার পড়ে, তখন সে গুগল মামাকে জিজ্ঞাসা করবে “Online Book Shops in Bangladesh.” গুগল মামাও সুন্দর মতো বর্তমান বুকশপগুলোর ব্যাপারে তাকে বলে দিবে।

কিন্তু মজার ব্যাপার হলো, ভদ্রলোক সেই শপগুলোর ব্যাপারেই জানবে যে গুলো গুগলের প্রথম পেইজে আছে।

নতুন দোকানের মালিক হিসেবে গুগল আপনাকে নাও চিনতে পারে। তাই গুগল হয়তো আপনাকে প্রথম পেইজে দেখালো না।

এখন SEO হলো এমন একটি পদ্ধতি যা গুগলকে বাধ্য করবে আপনাকে সার্চের প্রথম পেইজে নিয়ে আসতে। এজন্য ওয়েবসাইট ডেভলপ করার সময় বেশ কিছু কী-ওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়।

আবার গুগলকে পে করলে সে নিজেই আপনাকে প্রথম পেইজে নিয়ে আসবে। সেটিকে আবার বলে SEM বা সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং। এছাড়াও SEO এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গেলে অনেক মজার মজার তথ্য পাবেন।

SEO Course for Beginners কোর্সটি করে যা শিখবেন :

SEO Basics, সার্চ ইঞ্জিন, ডোমেইন-হোস্টিং, কি-ওয়ার্ড রিসার্চ, অনপেজ SEO, অফপেজ SEO গুগল সার্চ কনসোল-সহ SEO-এর বিভিন্ন টুলের ব্যবহার।

SEO শিখে ক্যারিয়ার গড়ার উপায়।

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং 

বড় রকমের সম্ভাবনা আছে যে, আপনি এই লেখার লিঙ্কটি প্রথম দেখেছেন টেন মিনিট স্কুলের  ফেইসবুকে পেইজে।

কারণ দিনের একটা বড় অংশ আপনি , আমি এবং অন্য সকলেই সোশ্যাল মিডিয়াতে কাটিয়ে দেই। যেহেতু সোশ্যাল মিডিয়া বর্তমান সমাজে যোগাযোগ ব্যবস্থার একটি বড় মাধ্যমে পরিণত হয়েছে, তাই ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য এটি একটি বড় মঞ্চ সকলের কাছে।

কোনো ইভেন্ট কিংবা কোনো পণ্য বিক্রির প্রচারণার জন্য সোশ্যাল মিডিয়া এখন সকলেই ব্যবহার করছে। এছাড়াও দেখা যায় কোনো ইভেন্টের প্রচারণার জন্য অনেকে এখন প্রোফাইল পিকচারে ফিল্টার হিসেবে ফ্রেম ব্যবহার করে।

এ গুলোর মাধ্যমেও ইভেন্টের মার্কেটিং করা যায়। পোস্ট শেয়ারিং এবং বুস্টিং এর মাধ্যমে সহজেই মানুষের দ্বারে দ্বারে আপনার প্রচারণা চালাতে পারেন।

সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা এখন বেশ সহজ :

সোশ্যাল মিডিয়া স্টোরির মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং

প্রতি দিন প্রতি ঘণ্টায় কেউ না কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টোরি আপলোড দিচ্ছেই। কী করছে, কী খাচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে যাচ্ছে এই সবকিছু স্টোরিতে শেয়ার দেয়া লাগবেই ।

পণ্য বিক্রি করার ক্ষেত্রেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এই স্টোরির সুবিধা নিচ্ছে। সেই সাথে দেখা যায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের অ্যাফিলিয়েটদের দিয়ে স্টোরিতে তাদের পণ্যের প্রমোশন করাচ্ছে। এধরণের প্রচারণা সত্যিই এখন বেশ প্রচলিত হয়ে উঠেছে এবং সবাই তা গ্রহণও করছে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় স্টোরি শেয়ার এখন বেশ প্রচলিত :

সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিডিও মার্কেটিং :

সোশ্যাল মিডিয়াতে লাইভ ভিডিও শেয়ারিং এখন এতো বেশি হয় যে, মার্কেটাররাও এর সুবিধা নিতে ভুল করেনি। বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহারের উপর লাইভ ভিডিও কিংবা পণ্যের মোড়ক উন্মোচনের লাইভ ভিডিও এখন গ্রাহকদের অনেক বেশি আকর্ষণ করছে।

ভিডিও শেয়ারিং এর মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছে নিজেদের বার্তা অনেক সহজেই তুলে ধরা যায়। অনেকে ৩৬০° ভিডিও ব্যবহার করে যা আরও আকর্ষণীয় করে তুলে পুরো ব্যাপারটিকে।

Facebook Marketing

ফেসবুক পেজ, গ্রুপ এবং ফেসবুকে বুস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত শিখে আপনার ফেসবুক ব্যবসাকে পৌঁছে দিন টার্গেট কাস্টমারের কাছে। আজই এনরোল করে শিখুন ফেসবুক মার্কেটিং-এর খুঁটিনাটি।

ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং :

বর্তমানে সব চেয়ে বেশি দেখা যায় এ ধরণের মার্কেটিং। ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর মূল বিষয় হলো, জনসাধারণের কাছে পরিচিত এবং জনপ্রিয় এমন কাউকে দিয়ে পণ্যের প্রচারণা চালানো।

হতে পারে তিনি কোনো বিখ্যাত খেলোয়াড়, সেরা কোনো অভিনেতা কিংবা জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী। মূল কথা হলো এমন কাউকে দিয়ে প্রচারণা করা যার কথা সবাই শুনে এবং বিশ্বাস করে।

তখন অনেকের মনে এই ধারণা জন্ম নেয় যে, “আমার প্রিয় তারকা এই পণ্যটি ব্যবহার করে। তাহলে আমিও এই পণ্যই কিনবো।” মূলত এই ধরণের মানসিকতা তৈরি লক্ষ্যই হলো ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং।

 ফেসবুক মার্কেটিং কী? জেনে নিন ফেইসবুক মার্কেটিং -এর আদ্যোপান্ত :

কন্টেন্ট মার্কেটিং -এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং :

এখন প্রায়ই দেখা যায় যে, বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠানের নামে কোনো অনলাইন পত্রিকায় কিংবা ব্লগ সাইটে প্রোমোশনাল ব্লগ লেখা হচ্ছে। সেই ব্লগ পড়ে মানুষজন সেই প্রতিষ্ঠানে কী রকম সেবা দেয় তা জানতে পারছে।

এভগুলো হলো কন্টেন্ট মার্কেটিং। মার্কেটিং এর জগতে নিজের ঢোল নিজে পিটানো তো লাগবেই, সেই সাথে অন্যদের হাতেও ঢোল দিতে হবে একটু পিটিয়ে দেয়ার জন্য।

নিজের প্রতিষ্ঠানের সেবার ব্যাপারে মানুষজনকে জানানোর জন্য এরকম মার্কেটিং এখন বেশ কার্যকরী।

নিজে লিখতে না পারলে কোনো পেশাদারী ব্লগ লেখককে দিয়েও নিজেদের ব্যাপারে কন্টেন্ট লিখিয়ে নেয়া যায়।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং -এর মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং :

এটি অনেকটা ইনফ্লুয়েন্সার মার্কেটিং এর অনুরূপ। তবে এখানে জনসাধারণের পরিচিত মুখ থাকাটা তেমন জরুরি না। ধরেন আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল আছে।

সেখানে আপনি যা কিছু করেন না কেনো, তার জন্য সবসময় নির্দিষ্ট একটি ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহারের কথা উল্লেখ করুন । আপনার যদি একটি রান্নার চ্যানেল থাকে, তাহলে সেখানে একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের পণ্য সামগ্রীর ব্যাপারে সবাইকে বলতে পারেন ।

এর বিনিময়ে সেই ব্র্যান্ড আপনাকে একটি সম্মানি প্রদান করে থাকে। এখানে আপনি সেই ব্র্যান্ডের অ্যাফিলিয়েট হিসেবে কাজ করছেন । অর্থাৎ, আপনি আপনার কাজের মাধ্যমে সবাইকে সেই ব্র্যান্ডের ব্যাপারে বলছেন ।

অনেক সময় অ্যাফিলিয়েটদের জন্য আলাদা প্রোমো কোড দেয়া হয়, যার মাধ্যমে ক্রেতারা কোনো পণ্যের উপর বিশেষ ছাড় পেতে পারে।

ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য যা যা জানা জরুরি :

ডিজিটাল মার্কেটিং ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স
বলা হয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে এক সময় পুরো পৃথিবী ছেয়ে যাবে।

মানুষের কাজ তখন প্রায় শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। ২০২৩ সালে এসে মার্কেটিং-এর বাজারে একটি বড় অংশ দখল করে নিয়েছে এই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা AI, যা ডিজিটাল মার্কেটিং এর গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

উদারহণ হিসেবে ফেসবুকের মেসেঞ্জার বটের কথাই ধরেন । কোনো সেলিং কোম্পানিকে আপনি যদি মেসেঞ্জারে নক করেন, তাহলে তারা প্রায় সাথে সাথেই উত্তর দিয়ে থাকে।

আর আপনার চাহিদা অনুযায়ী যদি তাদের কাছে পণ্য চান, তাহলে আপনার পছন্দমতো পণ্যও তারা দেখাতে পারে।

এমনকি তোমার কেমন চাহিদা তার উপর ভিত্তি করে তারা পরবর্তীতেও আপনার সামনে তাদের পণ্য প্রদর্শন করে।

আপনি যদি শার্ট কিনতে পছন্দ করেন, তাহলে তাদের কালেকশনে নতুন শার্ট আসলে তা আপনাকে জানানো হবে। এরকম সুবিধা কে না পছন্দ করে?

চ্যাটবটস :

ফেইসবুকে বর্তমানে আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো এই চ্যাটবট। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দ্বারা পরিচালিত এই চ্যাটবট ব্যবহারকারীর যে কোনো চাহিদা সহজেই অনুধাবন করে সেই অনুযায়ী তথ্য সরবরাহ করে থাকে।

মূল উত্তরভদাতার তুলনায় চ্যাটবট অনেক দ্রুত উত্তর দিতে পারে বলে ব্যবহারকারীরা এই চ্যাটবট ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের DUmamabot নামের চ্যাটবটের সাহায্যে ব্যবহারকারীরা সহজেই বাস ছাড়ার সময় ও পরবর্তী বাস কখন আসবে তা জানতে পারে। এরকম চ্যাটবট এখন প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই ব্যবহার করা হয়।

আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স ও চ্যাটবটের মাধ্যমে যোগাযোগ :

এ গুলো হলো বর্তমান যুগের ডিজিটাল মার্কেটিং এর ব্যাপারে প্রাথমিক ধারণা । পরবর্তী পর্বে আমরা আলোচনা করবো ডিজিটাল মার্কেটিং এর বেশ কিছু ট্রিকস নিয়ে।

ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রিকস অ্যান্ড ট্যাক্টিকস :

এ:গুলো ছিলো বর্তমান সময়ে প্রচলিত বেশ কিছু ডিজিটাল মার্কেটিং ট্রেন্ড। এবার আসি এমন কিছু ট্যাক্টিকস নিয়ে যা যে কোনো ছোট-খাটো ব্যবসায় মার্কেটিং-এর কাজে ব্যবহার করা যাবে।

এই ট্যাক্টিকসগুলো ব্যবহার করে সহজেই ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয় করা সম্ভব।

০১. টার্গেট গ্রুপ কী পছন্দ করে তা খেয়াল করা :

সোশ্যাল মিডিয়াতে এখন ভালো যে কোনো পোস্ট হলে তা শেয়ার করার হিড়িক পড়ে যায়। মার্কেটিং-এর জন্য আপনি এই জিনিসটি কাজে লাগাতে পারেন ।

অনেক নামী রেস্টুরেন্ট এই বুদ্ধিটি কাজে লাগিয়ে তাদের পপুলারিটি বাড়িয়ে নিচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় দু’টি নির্দিষ্টি প্রতিষ্ঠানের মাঝে এক প্রকার সোশ্যাল মিডিয়া যুদ্ধ লেগে যায় এই নিয়ে যে, কে কার চেয়ে মজার পোস্ট তৈরি করতে পারে।

সাধারণ মানুষজন তা দেখে মজা পায় এবং শেয়ারও করে। এভাবে নিছক মজার ছলেই নিজেদের মার্কেটিং করে ফেলা যায়।

০২. গ্রাহক যাতে একই সাথে মোবাইল ও ডেস্কটপ ব্যবহার করে সুবিধা নিতে পারে তার ব্যবস্থা করা :

বর্তমানে প্রায় সব ধরণের ব্যবসার জন্য একটি নিজস্ব ওয়েব সাইট ডেভলপ করা হয়। ধরে নিলাম আপনি অনলাইনে পণ্য বিক্রি করার জন্য একটি ওয়েব সাইট বানাবেন ।

এখন আপনার দেখতে হবে গ্রাহকরা কোন মাধ্যমে ওয়েব সাইটে বেশি এক্সেস করতে পারে। আপনি যদি কেবল ডেক্সটপের জন্য সাইট ডেভলপ করেন , তাহলে দেখা যাবে খুব একটা গ্রাহক পাবেন না।

কারণ বেশিরভাগ গ্রাহক এখন মোবাইল ফোন ব্যবহারে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। তাই দেখা যাবে ব্যবসার শুরুতেই আপনি গ্রাহকদের একটি বড় অংশ হারিয়ে ফেলছেন যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

এজন্য আপনি মোবাইল ফোনের গ্রাহকদের জন্য আলাদা ওয়েব ডিজাইন অথবা একটি অ্যাপের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারেন।

০৩. সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর ব্যাপারে বেশি গুরুত্ব দাও :

সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো এখন ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি বড় অংশে পরিণত হয়ে গিয়েছে। যেহেতু মানুষজন এখন দিনের একটা বড় অংশ সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটিয়ে দেয় তাই এর মাধ্যমে তাদের কাছে নিজেদের মার্কেটিং করা তুলনা মূলক অনেক সহজ।

অনেক সময় দেখা যায় মাঠ পর্যায়ে প্রচারণার চেয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারণা চালানো অনেক বেশি কার্যকরী।

সেই সাথে নিজদের সমস্ত কাজ আপডেটেড রাখার জন্যও মানুষ সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে। এতে গ্রাহকরা অনেক বেশি আকৃষ্ট হয়।

০৪. ওয়েবসাইট ডেভলপ করার সময় গ্রাহকের সাথে সরাসরি কথা বলার ব্যবস্থা রাখেন :

যে কোনো ব্যাপারে গ্রাহকদের মতামতে গুরুত্ব দেয়া বর্তমানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকরা তাদের মতামত যাতে তুলে ধরতে পারে সে জন্য যে কোনো ওয়েবসাইট বা অ্যাপ ডেভলপ করার সময় তা খেয়াল রাখতে হবে।

তা ছাড়া গ্রাহকদের সাথে সরাসরি কথা বলারও ব্যবস্থা থাকা উচিত। তাহলে গ্রাহকদের যদি তাৎক্ষণিক কোনো জিজ্ঞাসা থাকে তা করতে পারবে। এভজন্য আপনি চাইলে একটি মেসেঞ্জার বটেরও ব্যবস্থা করতে পারেন।

০৫. একটি টার্গেট ই-মেইল গ্রুপ রাখেন :

যখন আপনি নতুন কোনো পণ্য আনবেন তা সাথে সাথে আপনার প্রিয় গ্রাহকদের জানানোর সব চেয়ে সহজ এবং কার্যকরী উপায় হলো তাদেরকে ই-মেইল অথবা মেসেজের মাধ্যমে জানানো।

এতে করে যে সকল গ্রাহক আপনার থেকে নিয়মিত পণ্য কেনে তাদের সাথে যোগাযোগ বেশি হবে এবং ঘনিষ্ঠতা বাড়বে আগের থেকে। নিজের সফলতার জন্য এ ধরণের গ্রাহকের তালিকা রাখা অত্যন্ত জরুরি।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *