নতুন উপদ্রব হয়ে আসছে মাঙ্কিপক্স? কতোটা মারাত্মক জানুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

  ২০ মে ২০২২, ২১:৩৮
আপডেট  : ২১ মে ২০২২, ১২:০০

১৯৭০ সালে জায়ারে বর্তমানে ডেমোক্রে- টিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে প্রথম মাঙ্কি- পক্স শনাক্ত হয়। এ রোগে প্রথম আক্রান্ত হয় ৯ বছর বয়সী এক শিশু। ১৯৭০ সালের পর থেকে আফ্রিকার ১১টি দেশে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ে। আর ২০০৩ সালে আফ্রিকার বাইরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম এই রোগ শনাক্ত হয়।

সম্প্রতি নতুন ভাবে উত্তর আমেরিকা, ইউরোপসহ বেশ কিছু দেশে কয়েক ডজনের বেশি মাঙ্কি পক্সের রোগী শনাক্ত হয়েছে। অনেক দিন পূর্ব থেকে এ রোগে সংক্রমণের সংখ্যা ক্রমাগত উদ্বেগ জনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রোগ সমকামী পুরুষদের ক্ষেত্রে বেশি ছড়াচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

মাঙ্কিপক্স সম্পর্কে যুক্ত রাজ্যের গবেষকদের মতে, মাঙ্কিপক্সকে আগে যৌন বাহিত রোগ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়নি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) বলছে, ‘যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে’ বেশির ভাগ মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।

মাঙ্কিপক্স কী?

মাঙ্কিপক্স হচ্ছে একটি ভাইরাস। ইহা পশু থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। জ্বর, গায়ে ব্যথা, আকারে বড় বসন্তের মতো গায়ে গুটি ওঠাকে আপাতত মাঙ্কিপক্সের উপসর্গ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আফ্রিকায় দড়ি কাঠ বিড়ালি, গাছ কাঠ বিড়ালি, গাম্বিয়ান ইঁদুর, ডর্মিসের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির বানর এবং অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে মাঙ্কিপক্স পাওয়া গেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমণ ঘটলেও তা সীমিত সংখ্যায় হয়ে থাকে।

যেভাবে মাঙ্কিপক্স ছড়ায়ঃ

রক্ত, শারীরিক তরল ও সংক্রমিত প্রাণীর শ্লেষ্মার সরাসরি সংস্পর্শে এলে মানুষের শরীরে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ ঘটতে পারে।
এ ছাড়া, শ্বাস-প্রশ্বাস, সংক্রমিত ব্যক্তির ত্বকের ক্ষত বা তার ব্যবহৃত জিনিস পত্রের সংস্পর্শে এলে মানুষে মানুষে সংক্রমণ ঘটতে পারে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ থেকে পুরুষে শারীরিক সংসর্গে এই রোগ ছড়ানোর ঘটনা ঘটেছে। তবে এ বিষয়ে এখনও স্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।

মাঙ্কিপক্স কতটা মারাত্মকঃ

মাঙ্কিপক্স সাধারণতঃ উপসর্গ দেখা দেওয়ার দুই থেকে চার সপ্তাহ স্থায়ী হয় । তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এই সময় বেশি হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত বেশির ভাগ রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সুস্থ হয়ে যান। এ রোগে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম।

তবে এ রোগ ছড়ানোর মাত্রা, রোগীর শারীরিক অবস্থা ও কী কী জটিলতা তৈরি হয়েছে, তার ওপর এর ভয়াবহতা নির্ভর করে।

এ রোগের একটি ধরণ এতটাই ভয়ংকর যে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ১০ শতাংশ এ রোগে মারা যেতে পারেন।

চিকিৎসাপদ্ধতিঃ

এ রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। তবে গুটি বসন্তের টিকা মাঙ্কিপক্স প্রতি- রোধে ৮৫ শতাংশ কার্যকর। কিন্তু বিশ্ব জুড়ে গুটি বসন্তে আক্রান্তের সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়ায় বর্তমানে এ রোগের টিকা পাওয়া খুবই কঠিন।

সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এরিক ফিগেল- ডিং বলেন, গুটি বসন্তের টিকা মাঙ্কি পক্সের বিরুদ্ধে কার্যকর ইহা ভালো সংবাদ। কিন্তু, দুঃসংবাদ হলো ৪৫ বছরের কম বয়সী বেশিরভাগ মানুষের গুটিবসন্তের টিকা দেওয়া নেই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *