ফেসবুক থেকে আয় করার নিম্নবর্নিত ০১ হতে ১৭পর্যন্ত উপায়
০১) সোশ্যাল মিডিয়া পেইজে বিজ্ঞাপন –
আপনি যদি জনপ্রিয় হন এবং আপনার লাখ লাখ ফলোয়ার থাকে তবে অনেক কোম্পানি আপনাকে তাদের জিনিস পরিধান করে পিক ও তাদের কোন পণ্য বা নাম নিয়ে লেখা আপনার ফেসবুক বা ইনষ্ট্রোগ্রাম একাউন্টে থেকে পোস্ট করলে টাকা দেয়ার জন্য বসে আছে ।
আপনাকে শুধু পোস্ট করতে হবে । টাকাই টাকা টাকার অভাব নাই শুধু আপনাকে বিষয়গুলো জানতে হবে ।
ডাটা এন্ট্রি –
অনলাইনে খুব সহজ ও প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ হচ্ছে ডাটা এন্ট্রি । এর জন্য আপনার কোন রকম উচ্চ শিক্ষা বা ডিগ্রি দরকার নেই ।
খুব অল্প কম্পিউটারের ব্যবহারিক জ্ঞান থাকলে আপনি আয় করতে পারবেন । তবে ডাটা এন্ট্রি কি বা কিভাবে মানুষ আয় করে জানতে চাইলে – যারা এসব কাজ করে তাদের সাথে সরাসরি আলোচনা করা সবচেয়ে ভাল ।
তবে আপনি যদি ইংলিশ এ ভাল হন তবে অনালাইনে কয়েক মাস একটু লেখা পড়া করা সবচেয়ে উত্তম ।
০২) পার্সোনাল ট্রেইনিং –
আপনি যদি, ফিটনেস, ওজন কমানো, বডি বিল্ডিং, মার্শাল আর্ট বা এমন কিছু সম্পর্কে খুব ভাল জ্ঞান রাখেন তবে অনেক বড় লোক বা তাদের ছেলে মেয়েদের জন্য তারা মোটা অংকের টাকা খরচ করতে প্রস্তুত ।
শুধু আপনার সেক্টরে সেরা হতে হবে আর সমাজের উচু শ্রেণির লোকদের সাথে একটু যোগাযোগ থাকতে হবে ।
০৩) ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট –
শহরে কলেজ ভার্সিটির অনেক ছেলে মেয়ে আজকাল এই কাজের সাথে নিজেদের জড়িয়ে নিয়েছে ।
আপনি এই কাজ করতে চাইলে আপনার কলেজ ও ভার্সিটির যে বন্ধুরা এই কাজ করে তাদের সাথে যোগাযোগ করুন, আশাকরি একটা জব পেয়ে
যাবেন ।
শহরে এই কোম্পানি অনেক গড়ে উঠেছে । বিয়ে, গায়ে হলুদ, কনসার্ট থেকে শুরু করে প্রায় সব রকম কর্পোরেট ইভেন্ট ব্যবস্থাপনায় ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট অনেক প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দিয়েছে ।
০৪) ফটোগ্রাফার –
অনলাইন কোম্পানির পাশাপাশি বিয়ে, গায়ে হলুদ, জন্মদিন , এ্যানিভারসারি সহ প্রায় যে কোন অনুষ্ঠান উদযাপনে ফটোগ্রাফার অবশ্যই লাগবে ।
আজকাল ছবি আপনি অনলাইলে বিক্রি ও করতে পারবেন ।
আপনার যদি একটা ভাল ক্যামেরা থাকে আর আপনার ছবি তুলতে খুব ভাল লাগে তবে আপনি অবশ্যই এই পেশায় আয় করতে পারবেন ।
০৫) ইনটেরিওর ও এক্সটেরির ডিজাইনার –
আপনার যদি রিয়েল এস্টেট ভাল লাগে , ভাল বুঝেন এবং বিভিন্ন বাসা বাড়ি অফিস ও নানা রকম ভবনের ডিজাইন দেখতে মন থেকে খুব ভাল লাগে তবে আপনি এই কাজ করে টাকা আয় করতে পারেন।
এই কাজের সব চেয়ে বড় সুবিধে হল আপনাকে খুব বেশি টাকা বিনিয়োগ করতে হবে না । শুধু নিজেকে কাজটা পুরোপুরি জানতে ও বুঝতে হবে ।
সাবধান আমাদের দেশের মানুষ বাকিতে কিছু পেলে জিবনে আর ফেরত দিতে চায় না তাই অবশ্যই অগ্রিম টাকা নেয়ার পরে কাজ শুরু করবেন ।
মনে রাখবেন কখনই যেন আপনার পকেটের টাকা উল্টা কোন প্রজেক্টে ঢুকে না যায় ।
ক্লাইন্ড যে টাকা দেবে সেই টাকা থেকেই কাজ করবেন যাতে করে আপনি কখনই কোন লসে না পড়েন ।
০৬) ফুড টেঁসটার –
আপনি যদি ঘুরতে ও নানা রকম নতুন নতুন খাবার খেটে পছন্দ করেন তবে আপনি এই পথে টাকা আয় করতে পারবেন ।
আপনার সাথে একজন ক্যামেরা ম্যান রাখতে হবে আপনি যখন ভিভিন্ন যায়গায় নতুন নতুন খাবার খাবেন তখন আপনার কামেরা ম্যানকে সেসব দৃশ্য কামেরায় ছবি বা ভিডিও আকারে ধারন করতে
হবে ।
পরবরতিতে আপনার ব্লগ বা গ্রুপ বা পেইজে বা ইউটিউব চানেলে এসব আপলোড করতে হবে । আপনি ফ্রি খাবার খেলেন, কিছু বখশিস ও পেলেন।
আবার পরেই ওই ভিডিও থেকে বা পোস্ট থকে বা গ্রুপ থেকে আয় ও করতে পারবেন ।
মজাই মজা বেশ । ডায়েট কন্ট্রোল করতে না চাইলে আজকেই শুরু করে দিন ।
০৭) ফ্রিলেন্স লেখক –
অওেবসাইত কন্টেন্ট লেখক, পত্রিকার কলাম লেখক, পত্রিকার সংবাদ লেখক, বই ও মাগাজিন লেখক , নাটক ও সিনেমা লেখক , জগতে সব জায়গায় লেখা লেখির কাজ আপনি পাবেন শুধু আপনাকে কাজটা খুজে নিয়ে কষ্ট করে করতে হবে ।
আপনার নিজের ভাল লাগে এবং সেক্টর খুজে নিয়ে আপনার লেখা লেখির দক্ষতা কাজে লাগিয়ে আজীবন আপনি আয় করতে পারবেন ।
০৮) স্টার্ট-আপ শুরু করা –
আমেরিকাতে ১৭ সালে ভেঞ্চার কাপিতালিস্ত ৬১ বিলিয়ন ডলারের ও বেশি টাকা নতুন সব স্টার্ট আপে বিনিয়োগ করে ।
আমাদের বাংলাদেশেও এই ঢেউ লেগেছে । চালডাল , বিডি জবস সহ অনেক গুলো কোম্পানি মিলিওন মিলিওন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ বাগিয়ে নিয়েছে ।
আপনার মাথায় অসাধারণ কোন আইডিয়া থাকলে সেটা নিয়ে গবেষণা করে একটি বিজনেস প্লান লিখে ফেলুন ।
তারপরে জেনে বুঝে শুরু করে দিন আপনার স্বপ্নের স্টার্ট আপ, ভাল আইডিয়া হলে আপনিও হতে পারেন কুটিপতিদের একজন । বিষয়টি সহজ নয় কিন্তু
সম্ভব ।
০৯) অনলাইন মারকেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি –
Shopify AliExpress, LightInTheBox, or DinoDirect , আমাজন, দারাজ, বিক্রয় ডট কম সহ অনেক জনপ্রিয় মার্কেট প্লেস আছে যেখানে আপনি খুব অল্প বিনিয়োগে বিজনেস করতে
পারবেন ।
যদি ধারনা না থেকে থাকে তবে গুগল এ সার্চ দিয়ে এসব বিষয়ে ২/৪ দিন একটু পড়ালেখা করে দেখুন সব বুঝতে পারবেন ।
অনলাইনে আয়ের ওয়েবসাইটে নিজের কোন পণ্য বিক্রির বিজনেস দিন দিন অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । অনলাইন ভাল লাগলে আপনি চেষ্টা করে দেখতে পারেন ।
১০) অনলাইন উপদেষ্টা –
একেক মানুষ একেক বিষয়ে খুব দক্ষ বা পারদর্শী হয়ে থাকেন । আপনি যে বিষয়ে খুব অভিজ্ঞ ও পারদরশি সেই বিষয়ে লেখালেখি করুন, ব্লগিং করুন, ভিডিও তৈরি করুন, বা বিশেষ কোন বিষয়ে পারদর্শী হবার উপায়গুলো নিয়ে একটি কোর্স তৈরি করুন ।
অনেকেই অনেক টাকা দিয়ে আপনার থেকে পরামর্শ নেয়ার জন্য বসে আছে আপনাকে শুধু আপনার বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে ।
অনলাইনে আপনার জনপ্রিয়তা একবার হয়ে গেলে মানুষ টাকা নিয়ে লাইন ধরবে আপনার থেকে উপদেশ বা পরামর্শ নেয়ার জন্য ।
১১) পডকাস্ট –
আমাদের দেশে বিষয়টি একটু নতুন মনে হলেও টাকা ইনকাম করার জন্য অতি সুন্দর একটি মাধ্যম ।
এটা অনেকটা ইউটিউব চ্যানেলের মত । আপনার খুব পছন্দের ও জানা শুনার মধ্য টপিক্স ঠিক করে রেগুলার সেসব নিয়ে কথা বললে আস্তে আস্তে আপনার অনেক ভক্ত শ্রুতা পেয়ে জাবেন ।
যারা রেগুলার আপনার এগুলো শুনবে । জন নামের একজন আমেরিকান তার podcast Entrepreneur on Fire মাসে প্রায় ২ লাখ ডলার ইনকাম করেন ।
২০১২ সালের পর থেকে তিনি প্রায় ১৩ মিলিয়ন ডলার আয় করেন । এই মার্কেট অনেকটা নতুন এবং যারা নতুন তারা খুব সহজে এই মার্কেট এ ঢুকতে পারবেন ।
আপনি পডকাস্ট শুরু করার পরে কি কি ভাবে ইনকাম করতে পারবেন আমি বলে দিচ্ছি –
বিজ্ঞাপন (sponsors)
নিজের পণ্য বিক্রি
গিফট বা দান
সাবস্ক্রাইবার দের থেকে ইনকাম
Putting on live shows লাইভ সো থেকে ইনকাম
১২) অ্যামাজন ই-বুক (নিজে পাবলিশ করা ) –
অনেক মানুষ নিজে বই লিখতে চায়, কিন্তু লেখা হয়ে ওঠে না । অনেকে লিখে আবার পাবলিশ করতে পারে না বা করা হয়ে ওঠে না ।
বসে না থেকে এখনি লিখতে বসে যান যে বই মানুষের কল্যাণে, উপকারে, বা দক্ষতা বৃদ্ধিতে ভুমিকা রাখতে পারে এমন বই লিখে ফেলুন ।
আপনি নিজের লেখা বই নিজেই অ্যামাজনে আপলোড করতে পারবেন, যেখানে বই বিক্রির ৭০% টাকা আপনি পাবেন আর বাকি ৩০% অ্যামাজন ফি হিসেবে কেটে নেবে ।
অ্যামাজনের রয়েছে সারা বিশ্ব জোড়া গ্রাহক ও
সুনাম । নিজেকে ছোট করে দেখবেন না হতেও পারে আপনার হাতেই লেখা হবে সামনের বছরের বেষ্ট সেলার ।
১৩) সোশ্যাল মিডিয়া সেলিব্রেটি –
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে পারলে এর পরে আপনি যা নিয়ে কথা বলবেন, যাদের সাথে ছবি তুলবেন, যে পোশাক পরে ছবি তুলবেন , যে বিজনেস বা পন্য নিয়ে কথা বলবেন সবাই আপনাকে টাকা দেবে । ইন্সট্রগ্রাম ফেসবুকে কোম্পানির প্রচার করে সেলিব্রেটিরা লাখ লাখ টাকা আয় করছে ।
আপনিও ইহা করতে চাইলে আপনাকে কয়েক বছর রাতদিন পরিশ্রম করে নিজের পরিচিতি ও অবস্থান গড়ে নিতে হবে । পরে শুধু টাকা আর টাকা ।
১৪) ভিডিও ইডিটর –
ইউটিউব চ্যানেলের জন প্রিয়তার সাথে সাথে ভিডিও এডিটরদের চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে ।
আপনি যদি ২/৩ টি খুব ভাল মানের ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার শিখে হাই ক্লাস ভিডিও এডিট করে দিতে পারেন তবে আপনি এই কাজ করে অনেক টাকা ইনকাম করত পারবেন ।
যদি জব পছন্দ করেন তবে অনেক মিডিয়ায় জব নিতে পারবেন ।
১৫) অওেবসাইট –
আপনার নিজের লেখা বা স্পেশাল কোন বিষয় নিয়ে আপনি ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন ।
সেখানে নিয়মিত কন্টেন্ট আপলোড দিতে থাকলে আপনার সাইটে দিন দিন ভিজিটর বাড়তে থাকবে ।
আপনি গুগল অ্যাডসেন্স থেকে আপনার সাইটে ভিডিও দেখিয়ে নিয়মিত ইনকাম করতে পারবেন ।
এই কাজ খুব সহজ না আজকে শুরু করলেই কালকে ইনকাম হবে এমন না ।
কিন্তু আপনি দীর্ঘদিন চেষ্টা করলে অবশ্যই একটি ভাল মানের ওয়েবসাইড বানাতে পারবেন এবং একটি ভাল ওয়েবসাইড আপনাকে নিশ্চিত আয় করার সুযোগ দেবে ।
১৬) কর্পোরেট ওয়ার্কশপ –
কর্পোরেট বিজনেস সেক্টরে যদি আপনার অগাধ জ্ঞান ও দক্ষতা থেকে থাকে তবে আপনি কর্পোরেট ওয়ার্কশপ করতে পারেন ।
বিজনেস মালিকগন সব সময় তাদের কর্মচারীদের কর্মঠ ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলার জন্য এবং পজেটিভ মোটিভেশন দেয়ার জন্য টাকা খরচ করার জন্য সদা প্রস্তুত ।
আপনি যদি আপনার স্কিল বা দক্ষতায় ৬ বা ১২ ঘণ্টার একটা প্যাকেজ তৈরি করতে পারেন তবে অনেক কোম্পানি আপনাকে টাকা দিয়ে তাদের স্টাফদের ট্রেনিংয়ের জন্য সুযোগ করে দেবেন ।
আপনি শুরুতে একটি সুন্দর সোশ্যাল মিডিয়া পরিচিতি বা আইডি করে ফেলুন এবং এমন কোম্পানি খুজে বের করুন যারা আপনার সেবা নেয়ার জন্য প্রস্তুত ।
১৭) ইকমারস শুরু করা –
অনলাইন জগতে যে কোন পণ্য বা সেবা বিক্রির মাধ্যমে আপনিও সাবলম্বি হতে পারবেন তবে বিষয়টি খুব সহজ না ।
তাই না বুঝে শুরু করার কোন সুযোগ নাই । অনলাইনে কিছু শুরু করতে চাইলে আপনাকে পড়ালেখা করে জেনে বুঝে এই কাজ করতে হবে নয়তো সব টাকা হারিয়ে পথে পথে ঘুরতে হবে ।
হাজার টাকা নিয়ে অ্যামাজন, আলিবাবা হবার স্বপ্ন না দেখাই ভাল । বরং বাস্তব সম্মত সেবা বা পণ্য নিয়ে অনেক আয়ের সুযোগ আছে এই বিষয়ে লিখে শেষ করার সুযোগ নাই ।
আপনাকে ই-কমার্স বিজনেস করতে হলে অনলাইনে কমপক্ষে ৩/৪ মাস সময় দেয়া লাগবে, তারপরে আপনার বাজেট ও কি কি পণ্য নিয়ে কাজ করবেন সেটা ঠিক করে নিয়ে আস্তে আস্তে আগাতে হবে ।