বিটকয়েন ক্রিপ্টোকারেন্সি যা বিকেন্দ্রিক ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে পরিচিত।

বিটকয়েন (₿) বিশ্বের সর্বপ্রথম মুক্ত-সোর্স ক্রিপ্টোকারেন্সি যেটিকে বিকেন্দ্রিক ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে পরিচিতি দেয়া হয়।

এখানে লেনদেনের জন্য কোন ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান বা নিকাশ ঘরের প্রয়োজন হয় না এবং এটি কোন দেশের সরকার কর্তৃক ইস্যুকৃত মুদ্রা নয়।

২০০৯ সালে সাতোশি নাকামোতো ছদ্মনামে কোন এক ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এই মুদ্রাব্যবস্থার প্রচলন করে যা পিয়ার-টু-পিয়ার মুদ্রা বলে অভিহিত হয়।

বিটকয়েনের লেনদেন হয় প্রেরক থেকে সরাসরি প্রাপকের কম্পিউটারে অনলাইনের ভিত্তিতে।

এই লেনদেনগুলি সত্যাখ্যান করা হয় ক্রিপ্টোগ্রাফির মাধ্যমে এবং প্রকাশ্যে লিপিবদ্ধ করা হয় একটি খতিয়ানে যা সকলের কাছে বিতরিত হয়। এই উন্মুক্ত এবং বিতরিত খতিয়ানকে ব্লকচেইন বলা হয়।

বিটকয়েন উৎপাদিত হয় মাইনিং এর মাধ্যমে যেখানে কম্পিউটারের প্রসেসিং ক্ষমতার ভিত্তিতে লেনদেন লিপিবদ্ধ এবং সত্যাখ্যান করা হয়।

 লেনদেন থেকে মোট কত বিটকয়েন উৎপাদিত হবে তা প্রতি চার বছর পরপর কমে যায়।

এভাবে ২১৪০ সাল পর্যন্ত মোট ২,১০,০০,০০০ বিটকয়েন তৈরী হবে এবং পরবর্তীতে আর কোন নতুন বিটকয়েন তৈরী করা হবে না।

বিটকয়েনের লেনদেন সম্পন্ন করতে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না, এর লেনদেনের প্রাপক এবং প্রেরকের বাস্তব পরিচয়পত্র সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্য অনুসরণ করা যায় না। 

বিধায় একাধিক দেশে বিটকয়েন ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বর্তমানে বিটকয়েন ডিজিটাল মুদ্রা, পণ্য বা সেবা আকারে ব্যবহার করা হয় । বৈধ পণ্য লেনদেন ছাড়াও মাদক চোরাচালান এবং অর্থপাচার কাজেও বিটকয়েনের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

যদিও বিটকয়েন ডিজিটাল কারেন্সি হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে এর দর মারাত্মক ওঠানামা, দুষ্প্রাপ্যতা এবং ব্যবসায় এর সীমিত ব্যবহারের কারণে অনেকেই এর সমালোচনা করেন।

ভোক্তাদের সুরক্ষা এবং অর্থ পাচারের মতো অবৈধ কার্যকলাপ প্রতিরোধের লক্ষ্যে অনেক দেশ ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার এবং ব্যবসার জন্য বিবিধ নিয়ম প্রণয়ন করেছে।

সম্প্রতি কানাডার ভ্যানক্যুভারে  বিটকয়েন এর প্রথম এটিএম মেশিন চালু করেছে।

মাদক, চোরাচালান অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা ও অন্যান্য বেআইনি ব্যবহার ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডীয় সরকার বিটকয়েনের গ্রাহকদের নিবন্ধনের আওতায় আনার চিন্তাভাবনা করছে।

কি করে বিটকয়েন কে নিরাপদ করা যায় :

হ্যাকার এবং স্ক্র্যামররা হামেশাই বিটকয়েন হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে তাই এটি সবার আগে সুরক্ষিত করা উচিত।

যদি আপনি বিটকয়েনে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হন এবং কিছু পরিমান বিটকয়েন কিনতে চান তাহলে সব থেকে ভালো হয় বিটকয়েন ওয়ালেট ব্যবহার করা।

এখানে দুটি ওয়ালেট এর কথা বলা হলো ।

i) Ledger nano s :- এটি একটি বিটকয়েন সিকিউরিটি কোম্পানি যা প্রচুর সিকিওর বিটকয়েন স্টোরেজ ডিভাইস দেয়।

এটি বর্তমানে সব থেকে সুরক্ষিত ওয়ালেট হিসেবে পরিগণিত।

ii)Trezor:- ট্রেজর একটি হার্ডওয়্যার ওয়ালেট। এটি বিটকয়েনের প্রাইভেট কি অফলাইনে প্রদান করে।

যেহেতু এই বিটকয়েনের সমস্ত লেনদেন ইন্টারনেটের মাধ্যমেই করা হয় তাই এটি ভীষণ দরকারি।

বিটকয়েন মাইনিং এ কি বিনিয়োগ করা উচিত :

বিটকয়েন মাইনিং ইন্ডাস্ট্রি বর্তমানে খুব তীব্র গতিতে এগোচ্ছে । আগে এই মাইনিং এর কাজটা ঘরে কম্পিউটার এর মাধ্যমেই করা যেত কিন্তু এখন স্পেশালাইজ ডেটা সেন্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

এই ডেটা সেন্টার গুলি হলো এক একটি ওয়ারহাউস যেখানে প্রচুর কম্পিউটার আছে শুধুমাত্র বিটকয়েন খোঁজার জন্য।

বর্তমানে লাভজনক অবস্থায় বিটকয়েন মাইনিং শুরু করার জন্য কয়েক কোটি টাকা লাগে। এবং বিনিয়োগ যে ফেরত আসবেই তার কোন নিশ্চয়তা নেই।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *