ব্যায়াম করার ভালো সময়

ভোর বেলা সূর্যোদয়ের পূর্বে এবং রাতে খাওয়ার পর ঘুমানোর আগে  ব্যায়াম করার ভালো সময়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করা যেতে পারে। দীর্ঘ সময় ঘুমের পর সকালে ব্যায়াম সারা দিন ফুর ফুরে রাখতে পারে শরীরকে । 

প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ৩০মিনিট বা ১ ঘন্টা ব্যায়াম করুন তাতেই যথেষ্ট।  এ ছাড়া সন্ধ্যার আগে বিকেলটাও ব্যায়াম করার জন্য উপযুক্ত সময় । 

ব্যায়াম করতে গেলে সময় নির্ধারণ করতে হবে । 

প্রথমে ফজরের নামাজ পড়ে তার পর এক বা আধাঁ ঘন্টা ব্যায়াম করতে হবে । আর সকাল ৬.৩০ থেকে ৭টা প্রযর্ন্ত ব্যায়াম যদি করতে পারেন তাহলে ভালো । 

তরুণরা বিশেষ করে বয়ঃসন্ধি কালে হাইট বাড়ানোর জন্য ব্যায়াম করে। লাফানো, যেমন – দড়ি লাফানো, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালানো, প্রতি দিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট । জিমে  জয়েন করুন, পারলে খেলাধুলা করুন ।

Six Pack Body তৈরির জন্য  খাদ্য এবং ব্যায়ামঃ

সকালেঃ  রুটি ২টা, সবজি এবং ডিম একাধিক । 

দুপুরেঃ  ভাত, মাছ বা মুরগি, শাক সবজি ; 

বিকেলেঃ  হালকা নাশতা ; এখানে থাকতে পারে চা-বিস্কুট ও ফলমূল । 

রাতেঃ রাতের খাবারে ভাতের সঙ্গে মাছ বা মাংস । 

মাসল মোটা করার  ব্যায়ামঃ

মাসলের এ বিষয়টা অনেকটাই জিন গত বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভরশীল। তবে কিছু ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশি গুলোকে আরো উন্নত করা যায়। 

এর মধ্যে ডাম্বেল দিয়ে ব্যায়াম অত্যন্ত জনপ্রিয়। Push-Up ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । মানুষ সাধারনতঃ ২৫ বছর পর্যন্ত বাড়ে ।  উচ্চতা বাড়ানোর জন্য আপাততঃ সকালে ঝুলে থাকা ব্যায়াম ও পাশা পাশি পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে । 

ফিট থাকার জন্য বাসায় বসে ব্যায়াম করার পাশাপাশি  ফ্যাট যুক্ত খাবার খাওয়া বাদ দিতে হবে।  আর প্রতিদিন সকালে নাস্তা করতে হবে । দিনে একবার হলেও নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ।

লম্বা হতে সুষম খাদ্য খেতে হবে । বিশেষ করে শর্করা,আমিষ, চর্বি এ জাতীয় খাবার নিয়মিত খেতে হবে । এবং ঝুলে থাকা ব্যায়াম অর্থাৎ গাছের ডালে বা ঝোলন সৃষ্টির মাধ্যমে লম্বা হতে প্রতিদিন সকালে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে । 

ঘরে বসে যে ব্যায়াম গুলো করলে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারেঃ

সাধারণতঃ যারা ঘর হতে বেরোতে বেশি সময় পাননা বা জিমে যাওয়ার সুযোগ নাই তারা ঘরে বসে বিভিন্ন ব্যায়াম করতে পারেন । 

আমাদের এই  উপমহাদেশে ঘরে ব্যায়াম করার সব চেয়ে উপযোগী  হলো যোগ ব্যায়াম বা Yoga. বিভিন্ন ধরনের যোগ ব্যায়াম গুলো করার মাধ্যমে শারীরিক নমনীয়তা অর্জন করতে পারেন। 

ব্যায়াম বা শারীরিক কসরত করা মানব দেহের জন্য অনেক উপকারী । এর ফলে শরীরের বাড়তি মেদ কাটে, কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে, শারীরিক সক্ষমতা ও শক্তি বাড়ে, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো মন প্রফুল্ল থাকে ।

নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য ব্যায়াম করার নিয়ম সম্পর্কে সবার ধারণা রাখা উচিত। প্রতিটি মানুষের জন্য ব্যায়াম করা খুবই গুরুত্ব পূর্ণ। 

ব্যায়াম করলে শারীরিক ভাবে সুস্থ থাকবেন। ব্যায়াম করার ফলে শরীরের রোগ প্রতি রোধের ক্ষমতা অনেকাংশে বেড়ে যাবে। ব্যায়াম করলে শরীরে আলাদা এনার্জি অনুভব হয় ।  

যার ফলে আপনার কর্ম ক্ষেত্রে কাজ করার সময় সহজে ক্লান্তি অনুভব করবেন না । যারা খুব শারীরিক পরিশ্রম কম করেন তাদের মধ্যে অলসতা বেশি কাজ করে। 

তাই শারীরিক ভাবে পরিশ্রম করলে শরীর ও মন দুটোই ভালো থাকে। যারা সারাদিন শুয়ে বসে থাকে তাদের অসুখ বিসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । তাই ব্যায়াম করার জন্য ব্যায়াম করার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া জরুরী । 

তাহলে চলুন ব্যায়াম করার নিয়ম গুলো জেনে নেওয়া যাকঃ

কিছু ব্যায়াম করার নিয়ম রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ফলা ফল পাবেন। আপনি যদি ব্যায়াম করার নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থাকেন এবং ব্যায়াম করেন তাহলে উপকারের থেকে অপকারই বেশি হবে। 

ব্যায়াম করার নিয়ম রয়েছে এই নিয়ম মোতাবেক ব্যায়াম করলে কিছু দিনের মধ্যে আপনার শরীরের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

আমরা অনেকেই বুঝে উঠতে পারিনা কোন সময়ে ব্যায়াম করলে সব থেকে ভালো ফলা ফল পাওয়া যায় । সত্যি কথা বলতে ব্যায়াম করার জন্য কোন সময় সীমা নেই ।  যেই সময় ব্যায়াম করে ভালো অনুভূতি অনুভব করবেন ; সেই সময়ই ব্যায়াম করতে পারেন । 

যারা চাকরি জীবী বা বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তাদের কাজের সুবিধা অনুযায়ী সময় বের করে ব্যায়াম করবেন। 

কিন্তু ব্যায়াম করার জন্য ঠান্ডা আবহাওয়া সব থেকে ভালো । এর ফলে ব্যায়াম করার সময় অতিরিক্ত ঘাম বের হবে না এবং সহজে ক্লান্তি অনুভব হবে না । তাই চেষ্টা করবেন সকাল বেলার দিকে এবং বিকালের পর থেকে যে কোন সময় ব্যায়াম করার ।

যারা নতুন ব্যায়াম করতে চাচ্ছেন তাদের মনে এই প্রশ্নটা সব সময় কাজ করে যে ,  ব্যায়াম করার আগে নাকি পরে খাবার গ্রহণ করতে হয়। 

আসলে বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে এটি করতে হয়,   যদি ওজন কমানোর জন্য ব্যায়াম করেন তাহলে খালি পেটে ব্যায়াম করলে ভালো । 

এর কারণ হলো অতিরিক্ত  চর্বিগুলো কমে যাবে । আর যারা ওজন বৃদ্ধি করার জন্য ব্যায়াম করতে চান তারা হালকা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করে ব্যায়াম করতে পারেন।

যারা প্রফেশনাল বডি বিল্ডার করে, তারা খালি পেটে কখনো ব্যায়াম করে না । এর কারণ হচ্ছে খালি পেটে ব্যায়াম করলে মার্সেল কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আর ব্যায়াম করার পরেই ৩০ থেকে ৪০ মিনিটের মধ্যে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করবেন। ব্যায়াম করার নিয়ম কানুন রয়েছে সেগুলো জেনে তারপর ব্যায়াম করতে হবে।  

বর্তমান বয়স এবং ওজন সেট করে নিন।  তারপর  ওজন কত কেজি বাড়াতে অথবা কমাতে চাচ্ছেন সেটি সেট করুন। 

জিমে ব্যায়াম করলে ব্যায়ামের মেশিনের সাহায্যে ব্যায়াম করতে পারবেন, যা ব্যায়াম করার অভিজ্ঞতা কে আরো সুন্দর করে তুলবে। 

যদি বডি বিল্ড করতে চান তাহলে জিমে গিয়ে ব্যায়াম করুন । আর যদি শারীরিক সুস্থতার জন্য হালকা-পাতলা ব্যায়াম করতে চান তাহলে বাসায় ব্যায়াম করাটাই উত্তম । এর ফলে বাড়তি খরচ কমবে তার সাথে সময়ও  বাঁচবে।

হাঁটা চলা-ব্যায়ামের অভাবে বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ লোকই গুরুতর রোগ এবং অকালে মৃত্যুর ঝুঁকিতে আছে । নগরায়নের কারণে হাঁটা চলা কমে যাচ্ছে মানুষের, বাড়ছে রোগের ঝুঁকি। 

আপনি কি আজ অন্তত কিছুটা পথ হেঁটেছেন? অফিসে কাজ কি চেয়ারে বসে করতে হয়, নাকি হাতে-কলমে করতে হয়? আজ কোন খেলাধুলা করেছেন কি?

যদি এর উত্তর ‘না’ হয়ে থাকে – তাহলে কিন্তু আপনার হৃদরোগ, ডায়াবেটিস বা ক্যান্সারের মত রোগের ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে অকালে মৃত্যুর ঝুঁকি।

এক জরিপের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, শারীরিক ভাবে যথেষ্ট সক্রিয় না হবার কারণে পৃথিবীর এক- চতুর্থাংশেরও বেশি লোকই নানা গুরুতর রোগে আক্রান্ত হবার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

তাই পৃথিবীর প্রায় দেড়শ’ কোটি লোকই এখন হয়তো অকালে অর্থাৎ স্বাভাবিক বয়েসের আগেই মারা যেতে পারেন, এমন সম্ভাবনা আছে – বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।

জরিপের রিপোর্ট বলা হচ্ছে, যারা শারীরিক ভাবে সক্রিয় নয় বা ব্যায়াম করে না তাদের হৃদরোগ, টাইপ-টু ডায়াবেটিস এবং কয়েক ধরণের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি।

ল্যানসেট গ্লোবাল হেল্থ জার্নালে প্রকাশিত এই জরিপটিতে ২০ লক্ষ অংশ গ্রহণ কারীর উপাত্তের বিশ্লেষণ করা হয়েছে।

পৃথিবীর ১৬৮টি দেশের মধ্যে ১৫৯টি তে ই দেখা যায়, যথেষ্ট শারীরিক সক্রিয়তার অভাব পুরুষদের চেয়ে মেয়েদের মধ্যেই বেশি। কিছু দেশে এ পার্থক্য ১০ শতাংশের মতো ।

বাংলাদেশ সহ ৯টি দেশে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যথেষ্ট শারীরিক সক্রিয় তার মাত্রার পার্থক্য ২০ শতাংশেরও বেশি।

অর্থ নৈতিক পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষের জীবন যাত্রা বদলে যাচ্ছে।  মানুষ এখন কম হাঁটে, কম সাইকেল চালায়, সব মিলিয়ে মানুষের শারীরিক চলা ফেরা , তৎপরতা  এখন 

অনেক কমে গেছে ।

“বিশ্বায়ন, নগরায়ন – এ সব কিছুর প্রভাবে মানুষ যেভাবে কাজ করে, যেভাবে যাতায়াত করে, সেটা পর্যন্ত বদলে যাচ্ছে।”

শারীরিক সক্রিয়তার অভাবে রোগের ঝুঁকি বাড়ছে বিভিন্ন দেশে। 

এতে দেখা গেছে, আমেরিকান দের মধ্যে ৪০ ভাগই যথেষ্ট শারীরিক পরিশ্রম সাধ্য কাজ করে না। 

সউদি আরব ও ইরাকে পরিস্থিতি আরো খারাপ। সেখানে অর্ধেকেরও বেশি মানুষের কোন শারীরিক তৎপরতাই নেই।

দক্ষিণ এশিয়ায় ৩৩ শতাংশ লোকই শারীরিক ভাবে যথেষ্ট সক্রিয়  নন । পুরুষদের  মধ্যে  ২৩ শতাংশ  এবং মেয়েদের মধ্যে ৪৩ শতাংশ এ কাতারে পড়েন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশ মালা অনুযায়ী 

সু স্বাস্থ্যের জন্য মানুষের প্রতি সপ্তাহে কম পক্ষে ১৫০ মাঝারি থেকে উচ্চ মাত্রার শারীরিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম করা

প্রয়োজন ।

এই প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ার অবস্থা সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে । 

ব্যায়াম কত প্রকার এবং কী কী?

ব্যায়াম ২ প্রকার যেমন – 

(১)  সরঞ্জাম সহ ব্যায়াম । 

(২)   সরঞ্জাম বিহীন ব্যায়ম । 

নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিটি মানুষের ব্যায়াম করা উচিত এবং তার পাশাপাশি অবশ্যই পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে ।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *