ভিটামিন
ভিটামিন এক শ্রেণীর জৈব যৌগ যা বিভিন্ন খাদ্যে স্বল্প মাত্রায় থাকে ও জীবের পুষ্টি সাধনে ভূমিকা রাখে ।
ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ হলো জৈব খাদ্য উপাদান যা সাধারণ খাদ্যে অতি অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে। দেহে ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণের অভাবে বিভিন্ন রোগ বা সমস্যার প্রাদুর্ভাব হয়। চোখের দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে ভিটামিন A’র অভাবে । শরীরে যে কোনো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিলে তার স্বাভাবিক কার্য ক্ষমতা নষ্ট হয়, দেখা দিতে পারে নানান সমস্যা। চুল পড়ে যাওয়া, স্নায়ুতে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা কিংবা দুর্বলতা, অবসাদ, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি এমনই কিছু শারীরিক সমস্যা ।
সকল পুষ্টি উপাদানের অভাবেই শরীর বিশেষ কিছু ইঙ্গিত দেয়, তা হতে পারে শারীরিক কিংবা মানসিক।
পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে সাত ধরনের ভিটামিনের অভাবের শারীরিক লক্ষণ সম্পর্কে
জানানো হলঃ
শুষ্ক ঠোঁট: ঠোঁট শুকিয়ে যাওয়া কিংবা ফেটে যাওয়া ঘটনা শীতকালেই শুধু ঘটে । শরীরের ভিটামিন বি টুয়েলভ’য়ের অভাব হলে সব ঋতুতেই এই সমস্যায় ভুগতে হবে।
হাঁস-মুরগি খাওয়া বাড়ালে ভিটামিন বি টুয়েলভ’য়ের অভাব কমতে পারে। অন্যথায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট নিতে হবে।
চুল অকালে পাকাঃ অল্প বয়সে চুল পেকে যাওয়ার একটি কারণ হতে পারে শরীরে কপারের অভাব। এজন্য মাশরুম, তিলের বীজ, কাজুবাদাম ইত্যাদি কপারযুক্ত খাবার খেতে হবে ।
খুশকিঃ শরীরে ফ্যাটি অ্যাসিডের অভাব হলে চুলে খুশকি হয় । আখরোট, চিয়া ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত তিসির দানা ইত্যাদি খেতে হবে ।
মলিন চুলঃ বিটামিন বি’র অভাব হলে চুলে মলিন ভাব দেখা দেয় । চুলের উজ্জ্বলতা ফিরে পেতে ডিম, হাঁস-মুরগি, গরু-খাসির মাংস ইত্যাদি খাদ্যাভ্যাসে যোগ করা যায়।
মলিন ত্বকঃ ভিটামিন ই’র অভাবে ত্বক মলিন হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে খামারজাত পশুর মাংস,উদ্ভিজ্জ তেল, কাঠবাদাম, পালংশাক, ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরে ভিটামিন ই’র অভাব মেটাতে হবে ।
কাটাছেড়াঃ সহজেই ত্বক কেটে গেলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন সি’র অভাব রয়েছে। সিট্রাস টকজাতীয় খাবার ভিটামিন সি’র অভাব মেটাতে পারে।
অবসাদঃ যথেষ্ট বিশ্রাম নেওয়ার পরও কিছু মানুষ অবসাদগ্রস্ত থাকেন সবসময় , যার কারণ ভিটামিন ডি’র অভাব হতে পারে । শীতকালে বেশি চোখে পড়ে এই সমস্যা ।
সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খেতে হবে। আর ভিটামিন ডি’র আদর্শ উৎস হল সূর্যের আলো। তাই সকালের রোদে হাঁটার অভ্যাস গড়তে হবে ।
শারীরিক সমস্যা প্রকট হলে কিংবা দীর্ঘদিন ধরে ভোগলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আরও বিভিন্ন কারণে ভিটামিনের অভাব ছাড়া উপরের সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। তাই ফার্মেসি থেকে ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট কিনে হুট করে খাওয়া উচিত হবে না। ভিটামিন ‘এ’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান আমাদের শরীরের জন্য । আর এটি হচ্ছে একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যেটি আমাদের সঠিক দৃষ্টিশক্তি, শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা, প্রজনন এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতিসহ অনেক শারীরিক ক্রিয়াকলাপের জন্য দরকারি ভূমিকা পালন করে।
সাধারণতঃ দুই ধরনের ভিটামিন ‘এ’ খাবারের মাধ্যমে পাওয়া যায়। এর একটি হচ্ছে প্রিফর্মড ভিটামিন ‘এ’। এই ধরনের ভিটামিন ‘এ’ মাংস, মাছ, ডিম ও দুগ্ধজাত দ্রব্যে পাওয়া যায়। আর অন্যটি হচ্ছে প্রোভিটামিন এ। এটি শরীর উদ্ভিদের খাবারে ক্যারোটিনয়েডকে রূপান্তরিত করে। এই ভিটামিনটি লাল, সবুজ, হলুদ ও কমলা রঙের ফল এবং শাকসবজিতে পাওয়া যায়।
ভিটামিন এ সমৃদ্ধ বিভিন্ন খাবার খেলে সাধারণতঃ এর ঘাটতি দেখা দেয় না। কিন্তু তারপরেও যাদের ঘাটতির সর্বোচ্চ ঝুঁকি রয়েছে তারা হচ্ছেন, গর্ভবতী নারী, বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু । আর সিস্টিক ফাইব্রোসিস এবং দীর্ঘস্থায়ী ডায়রিয়া এই ভিটামিনের অভাবের ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে । শরীরে স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হয়, যে কোনো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিলে । চুল পড়ে যাওয়া, স্নায়ুতে ব্যথা, পেশিতে ব্যথা কিংবা দুর্বলতা, অবসাদ, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি এমনই কিছু শারীরিক সমস্যা । শারীরিক কিংবা মানসিক বিশেষ কিছু ইঙ্গিত দেয় সকল পুষ্টি উপাদানের অভাবেই ।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে পুষ্টিবিজ্ঞানের তথ্যানুসারে প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে সাত ধরনের ভিটামিনের অভাবের শারীরিক লক্ষণ সম্পর্কে এখানে জানানো হলঃ
সুস্বাস্থ্যের জন্যে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ দেহের ভেতরেই তৈরি হয়। আবার প্রতিদিনের খাবার থেকেও এসব উপাদান পাওয়া যায়। খাবার থেকে যেসব ভিটামিন পাওয়া যায় তার মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন হল বি ১২। এই ভিটামিন মানুষের শরীরে তৈরি হয় না। লাল রক্ত কোষ এবং ডিএনএ তৈরির ক্ষেত্রে এই ভিটামিন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে ভিটামিন বি ১২-এর অভাব হলে ভুলে যাওয়ার প্রবণতা, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। রক্তশূন্যতাও দেখা দিতে পারে। এর ফলে রোগী দুর্বল হয়ে পড়ে, অল্প শ্রমেই ক্লান্ত ও হাঁপিয়ে ওঠে, বুক ধড়ফড় করে। ভিটামিন-১২ এর অভাবে পাকস্থলীর সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য। দীর্ঘদিন ভিটামিন বি ১২-এর ঘাটতির কারণে স্নায়বিক সমস্যা হতে পারে। ফলে হাঁটতে-চলতে এবং ভারসাম্য রাখতে অসুবিধা হয়। ভিটামিন বি ১২ পানিতে দ্রবণীয় উপাদান। অর্থাৎ দেহের চাহিদা পূরণ হয়ে গেলে অতিরিক্ত ভিটামিন মূত্রের মধ্যে দিয়ে দেহের বাইরে বেরিয়ে যায়। বয়সের উপর ভিত্তি করে এই চাহিদার কম-বেশি হয়।
সারা দিন ক্লান্ত লাগা এবং দুর্বলভাব ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। শরীরে ভিটামিন বি ১২ পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকলে লাল রক্ত কোষ তৈরি হয় না। ফলে শরীরে অক্সিজেন চলাচল স্বাভাবিক নিয়মে হয় না। এর কারণে প্রায়ই নিঃশ্বাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ঝাপসা দৃষ্টিশক্তিও বি ১২ ভিটামিনের অভাবের আরও একটি লক্ষণ। এই ভিটামিনের ঘাটতি প্রভাব ফেলে বিভিন্ন স্নায়ুতে। তার মধ্যে রয়েছে অপটিক নার্ভও। এছাড়া ফ্যাকাসে ত্বকও ভিটামিন বি ১২ এর ঘাটতির লক্ষণ।
প্রাণিজ খাবারে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে মেলে ভিটামিন বি ১২। ছোলা, দুধ, দই ও দুগ্ধজাত পদার্থ, ডিম, মাশরুম, বিভিন্ন ধরনের মাংস ও কলিজা, টুনা, স্যামন ও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ, ঢেঁকি ছাটা চাল, বিভিন্ন ধরনের শস্য এবং ডালে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি ১২ থাকে।
ভিটামিনের অভাব বোঝার ৬ লক্ষণঃ
সারাদিন যে পরিমাণে পরিশ্রম হচ্ছে সে পরিমাণে খাবার না খাওয়ায় শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিনের চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। যার কারণে শারীরিকভাবে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। শরীরে ভিটামিনের অভাব হলে শারীরিকভাবে কিছু অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা যায়। শরীরে ভিটামিনের অভাব বোঝার ৬ লক্ষণ দেওয়া হলো-
১) অতিরিক্ত চুল পড়া ও তাড়াতাড়ি চুল পেকে যাওয়ার কারণ হচ্ছে যত্নের অভাব বা কসমেটিকের জন্য, এটি অনেকেই মনে করেন। কিন্তু, এই ধারণাটি ভুল, এটি কোনো ধরণের কেমিক্যালের প্রভাব নয় বা যত্নের অভাব নয়। এটি ভিটামিন বি৭ (বায়োটিন), ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে এর অভাবজনিত সমস্যার লক্ষণ।
এই ভিটামিনের অভাব পূরণ করার উপায়ঃ মাছ, ডিম, মাশরুম, ফুলকপি, বাদাম, তিলের বীজ ও কলা রাখুন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়।
২) হাতে ও পায়ে ঝি ঝি ধরা, পায়ের পাতা, তালু এবং পায়ের পেছনের অংশে ব্যথা অনুভব করার সমস্যায় পড়েন কমবেশি অনেকেই। আমরা ধরে নেই এ সকল সমস্যার কারণ একটানা বসে থাকা ও নার্ভে চাপ পড়া। কিন্তু এই সমস্যাগুলোর মূলে রয়েছে ওয়াটার স্যলুবল বি ভিটামিন, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব।
ভিটামিনের অভাব পূরণঃ সবুজ শাক, কাঠবাদাম, তাল, কমলা, কলা, চিনাবাদাম, ডাবের পানি, কিশমিশ, কাজু বাদাম ইত্যাদি রাখুন খাদ্য তালিকায়।
৩) ঠোঁটের কিনার ফাটা ও পায়ের গোড়ালি ফেটে যাওয়ার কারণ হচ্ছে ভিটামিনের অভাব। আমরা অনেকেই মনে করি, ঠোঁট ফাটা বা ঠোঁটের কিনার ফাটা শীতকালের সমস্যা অথবা একটু পানিশূন্যতার লক্ষণ। কিন্তু এটি ভিটামিন বি৩, বি২ ও বি১২ এবং আয়রন, জিংক ও দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গঠনকারী গুরুত্বপূর্ণ প্রোটিনের অভাবের লক্ষণ।
ভিটামিনের অভাব পূরণঃ
ডিম, টমেটো, চিনাবাদাম, ডাল, দই, পনির, ঘি এবং ভিটামিন সি জাতীয় খাবার রাখবেন খাদ্য তালিকায়।
৪) দেহের নানা অংশে অবশ বোধ হওয়া খুবই সাধারণ একটি লক্ষণ। অনেক সময় আমরা ভাবি একটানা এক ভাবে বসে থাকা কিংবা নার্ভের ওপর চাপ পড়ার কারণে এটি ঘটে। কিন্তু সত্যিকার অর্থে ভিটামিন বি৯, বি৬ এবং বি১২ এর অভাব দেহে হলে এই লক্ষণটি দেখা দেয়। এছাড়াও ভিটামিনের অভাবের কারণে বিষণ্ণতা, রক্তস্বল্পতা, দুর্বলতা এবং হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার মতো লক্ষণও দেখা যায়।
ভিটামিনের অভাব পূরণঃ
সামুদ্রিক মাছ, লাল চালের ভাত, বাদাম, ডিম, মুরগির মাংস, কলা, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি এবং সবুজ শাক রাখুন খাদ্য তালিকায়।
৫) মাঝে মাঝে পায়ের হাঁটুর পিছনের পেশিতে টান ধরলে বুঝতে হবে, ভিটামিন বি ও তার সঙ্গে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও পটাশিয়ামের কমতি রয়েছে শরীরে।
অভাব পূরণঃ ছোট মুরগীর মাংস বেশি করে খেতে হবে তার সঙ্গে ডিম ও দুধ রাখা প্রয়োজন।
৬) মুখ, বাহু, উরু এবং দেহের পিঠের নিচে ও পেছনের অংশে লাল বা সাদাটে রংয়ের ফোস্কা উঠে, সেটা আমরা সাধারণ সমস্যা মনে করি। কিন্তু আসলে দেহের এই সকল স্থানে লালচে ও সাদাটে রংয়ের ফোস্কা ভিটামিন এ ও ডি এবং এসেনশিয়াল ফ্যাটি এসিডের অভাবের লক্ষণ।
ভিটামিনের অভাব পূরণঃ একটানা অনেকক্ষণ এসি ঘরে থাকবেন না, সূর্যের আলোতে বের হন, প্রচুর পরিমাণে মাছ, শাকসবজি ও ডিম রাখুন খাদ্য তালিকায়।
উপরোক্ত ০৬ টি ছাড়াও নিম্নোক্ত ৭ টি লক্ষণে বুঝবেন শরীরে ভিটামিনের অভাবঃ
১. শুষ্ক ত্বকঃ
ভিটামিন এ ত্বকের কোষ তৈরি ও মেরামতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া এটি কিছু ত্বকের সমস্যার কারণে প্রদাহের সঙ্গে লড়াই করতেও সাহায্য করে। আর পর্যাপ্ত ভিটামিন এ’র ঘাটতি একজিমা এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যার জন্য দায়ী হতে পারে। শুষ্ক ত্বকের অনেক কারণ থাকতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী ভিটামিন-এ’র ঘাটতি থাকলে এটি বেশি হয়ে থাকে।
২. চোখে শুষ্ক ভাবঃ
ভিটামিন-এ’র অভাবজনিত কারণে চোখের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় এটি অনেকেরই জানা। এসব সমস্যার অন্যতম একটি হচ্ছে চোখে শুষ্কভাব দেখা দিতে পারে। আর চরম ক্ষেত্রে, শরীরে পর্যাপ্ত ভিটামিন ‘এ’ না পাওয়ার ফলে সম্পূর্ণ অন্ধত্ব বা কর্নিয়ায় মারা যেতে পারে। তাই শুষ্ক চোখ বা অশ্রু উত্পাদন করতে অক্ষমতা, ভিটামিন-এ’র অভাবের প্রথম লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি।
৩. রাতকানা রোগঃ
ভিটামিন-এ’র অভাবে রাতকানা মারাত্মক রোগ হতে পারে। বেশ কিছু পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় বলা হয়েছে যে, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে রাতকানা রোগের উচ্চ প্রবণতা রয়েছে। এই সমস্যার মাত্রার কারণে, স্বাস্থ্য পেশাদাররা রাতের অন্ধত্বের ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের ভিটামিন-এ’র মাত্রা বাড়াতে পরামর্শ দিয়েছেন।
৪. বন্ধ্যাত্ব ও গর্ভধারণে সমস্যাঃ
ভিটামিন ‘এ’ নারী ও পুরুষ উভয়ের প্রজননের পাশাপাশি শিশুদের সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। আর নারীদের যদি গর্ভবতী হতে সমস্যা হয় তবে ভিটামিন এ’র অভাব তার অন্যতম কারণ হতে পারে। এ ছাড়া ভিটামিন এ’র অভাবে পুরুষ ও নারী উভয়েরই বন্ধ্যাত্ব হতে পারে।
৫. বৃদ্ধিতে বিলম্বঃ
যেসব শিশু পর্যাপ্ত ভিটামিন এ পায় না তাদের বৃদ্ধি স্থবির হতে পারে। কারণ ভিটামিন এ মানবদেহের সঠিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয়। বেশ কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ভিটামিন ‘এ’ শিশুদের বৃদ্ধিতে উন্নতি করতে পারে।
৬. গলা এবং বুকে সংক্রমণঃ
ঘন ঘন সংক্রমণ, বিশেষ করে গলা বা বুকে হলে তা ভিটামিন -এ’র অভাবের লক্ষণ হতে পারে। আর শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণে ভিটামিন ‘এ’ ভালো সাহায্য করতে পারে।
বয়স্ক ব্যক্তিদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রোভিটামিন ‘এ’ উচ্চ রক্তের মাত্রা ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারে।
৭. ক্ষত নিরাময়ে সমস্যাঃ
আঘাত বা অস্ত্রোপচারের পরে ক্ষত নিরাময়ে সমস্যা দেখা দিলে তা হতে পারে ভিটামিন এ’র অভাবের অন্যতম একটি কারণ । ভিটামিন এ স্বাস্থ্যকর ত্বকের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান কোলাজেন তৈরিতে সহায়তা করে। তাই এই ভিটামিনটির অভাবে ক্ষত নিরাময় হতে সমস্যা দেখা দেয়।
ভিটামিন (Vitamin) আমাদের শরীরের পক্ষে খুবই জরুরি । যে কোনও ভিটামিনের ঘাটতি হলেই শরীর উপসর্গের মাধ্যমে তা বুঝিয়ে দেয়।