মেদ কমাতে
নিয়ন্ত্রিত খাবার খাচ্ছেন ও নিয়মিত ব্যায়াম করছেন । দিনরাত হাঁটা হাঁটিও কম করছেন না। নিয়মিত ওষুধও খাচ্ছেন।
তাতে ওজন একটু একটু করে কমলেও পেটের মেদ কমছে না।
মুখ থাকে শুকনো, পেট থাকে অতিরিক্ত বড়। যা চোখে দেখতে বেমানান ।
ফলে নিশ্চয় আপনি এ নিয়ে ভীষণ বিব্রত অবস্থায় আছেন।
যারা দিনরাত কসরত করেও মেদ কমাতে পারছেন না তাদের জন্য এই ছোট্ট টিপস।
এজন্য আপনাকে বেশি কায়িক পরিশ্রম করতে হবে না।
ফলে ওজন তো কমবেই সঙ্গে সঙ্গে পরিপাক তন্ত্রও ভালো ভাবে কাজ করবে।
কমবে শরীরের স্ফীত ভাব। ঘরে বসেই অতি সহজেই আপনি ইহা তৈরি করতে পারেন।
এজন্য প্রথমেই কয়েকটি উপাদান সংগ্রহ করতে হবে।
এগুলো হচ্ছে-
১. ৮ কাপ পানি
২. ১ চামচ আদা
৩. ১ টি শশা খোসা ছাড়িয়ে পাতলা করে কাটুন।
৪. ১ টি পাতি লেবু পাতলা করে কাটুন।
৫. ১২ টি পুদিনা পাতা।
এসব উপাদানকে একত্রে পানিতে মিশান। রাত ভর রেখে দিন। পরের দিন সকালে এই পানি পান করুন।
এভাবে কয়েক দিন পান করলে আপনার শরীরের মেদ কমে যাবে। আপনি হয়ে উঠবেন একজন স্লিম দেহের অধিকারী।
পুষ্টি বিশারদদের মতে- হাল্কা কায়িক শ্রমের সঙ্গে রোজ এই পানি পান করলে খুব সহজেই মেদ কমবে।
হার্বাল চায়ের গুণ বাড়াতে ৭টি উপাদানঃ
হার্বাল চা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। আর এতে যদি আরও কিছু;
বাড়তি উপাদান যোগ করতে পারেন তাহলে তা যেমন উন্নতি লাভ করবে তেমন স্বাদও বাড়বে।
হার্বাল চায়ে এসব উপাদান যোগ করলে এ থেকে স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি নানা ভেষজ গুণও পাওয়া সম্ভব।
এ লেখায় তেমন সাতটি উপাদানের কথা বর্ণনা করা হলো-
১. লেবুঃ
হার্বাল চায়ের স্বাদ ও গন্ধ বহু গুণে বাড়িয়ে দেবে লেবু।
ইহা চায়ে ভিটামিন সি যোগ করার একটি অন্যতম উপায়। আর ইহা শরীরের বিষ দূর করতেও ভালো কাজ করে।
লেবু মানসিক চাপ কমায়। আর হজমেও উপকার করে।
২. আদাঃ
আদার টুকরো কিংবা আদার পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে হার্বাল চায়ে।
আর ইহা চায়ে যোগ করাও খুব সহজ। আদা নাকের সমস্যা, মানসিক চাপ ;
বিষণ্ণতা, পেটের সমস্যা ও মাইগ্রেন জনিত মাথা ব্যথা দূর করে।
আপনার চায়ে কয়েক টুকরো আদা যোগ করলেই এ উপকার পাওয়া সম্ভব।
৩. পুদিনা পাতাঃ
টাটকা পুদিনা পাতা হার্বাল চায়ে প্রয়োগ করা হলে তা আপনার হজম শক্তির উন্নতিতে কাজে আসবে।
ইহা শরীরের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে শক্তি যোগায়।
এ ছাড়াও টেনশন ও মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। চায়ে ইহা বেশি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।
চায়ে এর সামান্য দুই-এক ফোটা দেওয়াই যথেষ্ট।
৪. হলুদঃ
হলুদ ত্বকের উন্নতিতে খুব ভালো কাজ করে। আর এটি চায়ে দিয়েও পান করা যায়।
ত্বক ছাড়াও হজম শক্তি বাড়াতে ও দেহের রক্তের জন্য উপকারি উপাদান হিসেবে কাজ করে হলুদ।
আর চায়ে দিলে এটি স্বাদের তেমন কোনো পরিবর্তন আনবে না।
আর উপকারি উপাদান হিসেবে সহজেই তা দেহ গ্রহণ করতে পারবে।
৫. বাসিল পাতাঃ
অনেকটা পুদিনা পাতার মতোই ব্যবহার করা যায় বাসিল পাতা।
ইহা হার্বাল চায়ে প্রয়োগ করা হলে তা আপনার হজম শক্তির উন্নতিতে কাজে আসবে।
শরীরের জীবাণুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে শক্তি যোগায়। এ ছাড়াও টেনশন ও মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
৬. ক্যায়িন মরিচঃ
স্বাস্থ্য গত দিক থেকে উপকারি লাল এক ধরনের মরিচ ইহা ।
ইহা শরিরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে, চাপ কমায় ও বিপাক প্রক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
আপনার হার্বাল চায়ে সামান্য পরিমাণে ইহা প্রয়োগ করলেই উপকার পাওয়া যাবে।
৭. ল্যাভেন্ডার তেলঃ
ল্যাভেন্ডার নামে বেগুনি রঙের এক ধরনের সুরভিত ফুল ল্যাভেন্ডার। এর তেলের রয়েছে নানা উপকারি গুণ।
ইহা আপনার চায়ে প্রয়োগ করা হলে তা যেমন মানসিক চাপ কমাবে তেমন আপনার ঘুমের সমস্যা দূর করবে ;
এবং নার্ভাস সিস্টেমের উন্নতি করবে। ইহা
চায়ে অতি সামান্য পরিমাণে (দুই-এক ফোটা) দিলেই চলে।
সাধারণ চিনা বাদামের অসাধারণ গুনঃ
অবসরে বা আড্ডায় সঙ্গ দিতে চীনা বাদামের জুড়ি নেই।
বাংলাদেশে তো বটেই সারা বিশ্বজুড়ে চীনা বাদাম ‘টাইমপাস ফুড’ হিসেবে জনপ্রিয়।
পৃথিবীতে যত ধরনের বাদাম উৎপা়দন হয়, চীনা বাদাম তার মধ্যে সব চেয়ে বেশি ব্যবহৃত এবং জন প্রিয়।
কাঁচা এবং ভাজা বাদাম তো বটেই, চীনা বাদাম মাখন, জ্যাম, চানাচুর, কেক, বিস্কুট;
তরকারি, ভর্তা, তেল ইত্যাদি তৈরিতেও ব্যবহার করা হয়।
চীনা বাদামে ‘চীন’ শব্দটা থাকলেও এটা প্রথম আবিষ্কৃত হয় দক্ষিণ আমেরিকায়।
প্রাচীন কালেও এর চাষ করা হতো বলে এর নিদর্শন পাওয়া যায়।
পেরুর লিমায় প্রাপ্ত বহু প্রাচীন পাত্রের গায়ে বাদাম গাছের ছবি অংকিত দেখা যায়।
ধারণা করা হয়, ইনক সভ্যতার সময়েও বাদাম খাওয়ার প্রচলন ছিল।
কারণ, ইনকাদের মৃৎ শিল্পের মধ্যে বাদামের আকৃতির পাত্র পাওয়া গেছে।
চীনা বাদাম ইউরোপে নিয়ে আসে স্প্যানিশরা। তামাক পাতার মতো তখন বাদামও ব্যবহার হতো বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে।
পরে ইউরোপীয় ব্যবসায়ীরা চীনা বাদাম আফ্রিকায় নিয়ে যায়।
তারা হাতির দাঁত ও মশলার বিনিময়ে আফ্রিকানদের চীনা বাদাম দিত।
অব শেষে আফ্রিকান ক্রীত দাসদের মাধ্যমে আফ্রিকা থেকে বাদাম প্রবেশ করে উত্তর আমেরিকায়।
যুক্ত রাষ্ট্রে চীনা বাদাম খাওয়ার প্রচলন শুরু হয় তাদের গৃহ যুদ্ধ হওয়ার আগে।
তবে তখন তা গৃহ পালিত পশুদের খাবার হিসেবেই বেশি প্রচলিত ছিল।
যুদ্ধের সময় খাদ্য সংকট দেখা দিলে কিছু সৈনিক বিকল্প খাদ্য হিসেবে বেছে নেয় চীনা বাদাম।
পরে ধীরে ধীরে তা সৈনিকদের মধ্যে জন প্রিয়তা লাভ করে।
গৃহ যুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছু দিন পর পিটি বারনাম নামে এক সার্কাস দলের মালিক;
সার্কাস চলা কালে বাদাম ভেজে বিক্রি করা শুরু করে এবং বাদাম ভাজা ব্যাপক জন প্রিয়তা পায়।
অনেক ফেরিওয়ালাই তখন আয়ের নতুন উপায় হিসেবে চীনা বাদাম ভাজাকে বেছে নেয়।
বর্তমানে সারা বিশ্বে চীনা বাদামের মোট উৎপাদনের ৪১ ভাগ চীন উৎপাদন করে।
এ কারণেই বোধ হয় এ বাদামকে চীনা বাদাম বলা হয়।
চীনা বাদামের ইংরেজি নাম Ground nut. যাবতীয় বাদামের মধ্যে একমাত্র চীনা বাদামই মাটির নিচে জন্মে।
এর বৈজ্ঞানিক নাম apios americana. তবে বিশ্বজুড়ে চীনাবাদাম Peanut নামেই পরিচিত।
এর নাম পিনাট হওয়ার কারণ হলো এটা দেখতে ‘পি’ বা মটর দানার মতো।
একে ‘মাংকিনাট’ও বলা হয়। বানর সম্প্রদায়ের এই বাদাম বিশেষ প্রিয় বলেই হয়তো এই নাম করণ !
অন্যান্য বাদামের তুলনায় চীনা বাদাম খুব সহজ লভ্য বলেই হয়তো অনেকেই একে পাত্তা দিতে চান না।
কিন্তু খাদ্য গুণে চীনা বাদাম কোনো অংশেই কম নয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা চীনা বাদামে রয়েছে –
কার্বোহাইড্রেট ৬০ গ্রাম, প্রোটিন ৫৩.৩ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৬৬ কিলোক্যালরি,
ক্যালসিয়াম ৯০ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩৫০ মিলিগ্রাম, ক্যারোটিন ৩৭ মাইক্রো গ্রাম,
ভিটামিন বি-১ ০.৯০ মিলি গ্রাম, ভিটামিন বি-২ ০.৩০ মিলিগ্রাম ;
বাদাম ভেজে নিলে এর ক্যারোটিনের মান কমে যায়।
তবে বাকি সব উপাদান প্রায় সমানই থাকে। স্বাস্থ্য রক্ষায় চীনা বাদামের রয়েছে নানা অবদান।
যেমন -চীনা বাদামের প্রোটিন দেহ গঠনে ও মাংস পেশি তৈরিতে সাহায্য করে ।
এর কো-এনজাইম হার্টকে অক্সিজেনের অভাব থেকে রক্ষা করে।
চীনা বাদামে রয়েছে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট। যা রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
এতে উচ্চ মাত্রার নিয়াসিন থাকায় দেহকোষ সুরক্ষিত থাকে।
বার্ধক্য জনিত স্মৃতি ভ্রংশের (পতনের) রোগ যেমন, অ্যাল ঝাইমার্স প্রতিরোধে সহায়তা করে।
মস্তিষ্ক সুস্থ্য রাখে ও রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।
চীনা বাদাম কোলন ক্যানসার (অন্ত্রের ক্যান্সার) , ব্রেস্ট ক্যানসার ও হার্টের রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
এতে রয়েছে প্রচুর ক্যালসিয়াম, যা হাড় গঠনে সাহায্য করে।
চীনা বাদামে রয়েছে প্রচুর আয়রন, যা রক্তে লোহিত কণিকার কার্যক্রমে সহায়তা করে।
চীনা বাদামের ভিটামিন ই এবং ক্যারোটিন ত্বক ও চুল সুন্দর রাখে। ত্বকে বলি রেখা বিলম্বিত করে।