শারীরিক ব্যায়াম
নিয়মিত ব্যায়াম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পুনরুদ্ধারে সাহায্য করে।
হৃদ্ররোগ, সংবহন তন্ত্রের জটিলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে শারীরিক ব্যায়াম ।
শারীরিক ব্যায়াম বা শরীর চর্চা হল যে কোন শারীরিক কার্যক্রম যা শারীরিক সুস্থতা রক্ষা বা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
ব্যায়ামের উপকারিতাঃ
ব্যায়াম সে সব শারীরিক ক্রিয়া কর্মকে নির্দেশ করে যা আমাদের মানসিক সক্ষমতাকে স্বাভাবিক কিংবা কখনো কখনো বাড়াতে সহায়তা করে।
সাধারণতঃ মানব পেশির কর্ম ক্ষমতা বাড়াতে, অস্থির দৃঢ়তা রক্ষায়, রক্ত সংবহন তন্ত্রের ক্রিয়া কর্ম স্বাভাবিক রাখতে, শারীরিক কসরতপূর্ণ খেলায় অধিক দক্ষতা আনায়নকল্পে, দেহের ওজন স্বাভাবিক রাখতে কিংবা অতিরিক্ত ওজন কমাতে কখনো বা বিনোদনের অংশ হিসেবে
ব্যায়ামের জুড়ি মেলা ভার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নিয়মিত ও পরিমিত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব শতকরা ১৭ ভাগ ক্ষেত্রে
হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস, শতকরা ১২ ভাগ ক্ষেত্রে বৃদ্ধ বয়সে হঠাৎ পড়ে যাওয়া জনিত সমস্যা এবং শতকরা ১০ ভাগ ক্ষেত্রে স্তন ও অন্ত্রের ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
ব্যায়ামে বিভিন্ন উপকারঃ
১। দৈনিক ৩০ মিনিটের দ্রুত হাঁটা কিংবা ব্যয়ামাগারে কিছু সময় ব্যায়াম আপনাকে কিছুটা শান্তির পরশ বুলিয়ে দেবে ।
নিয়মিত ও পরিমিত ব্যায়াম আপনার মস্তিষ্ককে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণে উদ্দীপিত করে। মস্তিষ্ক কর্তৃক নিঃসৃত এসব রাসায়নিক পরবর্তীতে আপনাকে করে তুলবে আরো সুখী ও কর্মক্ষম।
বাড়িয়ে দেবে নিজের আত্ম বিশ্বাস। এভাবেই নিয়মিত ও পরিমিত শরীরিক ব্যায়াম বিষন্নতা প্রতিরোধে সহায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।
২। ব্যায়াম বনাম দীর্ঘমেয়াদি নানা রোগঃ
আপনি কি হৃদরোগ নিয়ে শঙ্কিত? কিংবা অস্থির ক্ষয়জনিত রোগ অস্টিওপরোসিস রোগ প্রতিরোধে কি আশাবাদী?
তাহলে ব্যায়ামই হতে পারে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার একমাত্র চাবি কাঠি। নিয়মিত ও পরিমিত শারীরিক ব্যায়াম কমিয়ে রাখে রক্ত চাপ।
প্রতিরোধ করে উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা। রক্তে কমিয়ে দেয় মাবব দেহের জন্য ক্ষতিকর চর্বি জাতীয় পদার্থ ট্রাইগ্লাইসেরইড ও হলো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের মাত্রা।
বাড়িয়ে রাখে মানব দেহের জন্য উপকারী হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন নামক কোলোস্টরলের মাত্রা।
এই দুই ক্রিয়ার মিলিত প্রভাব মানব রক্তনালীর প্রাচীরে চর্বি অবাঞ্ছিত জমাট বদ্ধতা জনিত সমস্যা এথেরোমা তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করে।
নিশ্চিত করে মানব রক্তনালী দিয়ে নিরবিচ্ছিন্ন ও সুষম রক্ত প্রবাহ। এ ছাড়াও নিয়মিত ব্যায়ামের মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যেতে পারে ডায়াবেটিস, অস্টিওপরোসিস, স্তন ক্যান্সার, অন্ত্রেও ক্যান্সারসহ আরো নানা প্রকার মারাত্মক রোগ।
৩। নিশ্চিত করবে দেহের সঠিক ওজনঃ
আপনি কি মেদ ভুঁড়ি কি করি এই জাতীয় সমস্যায় ভুগছেন? কিংবা শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে ইচ্ছুক?
তবে অবসর কিংবা দিবানিদ্রার কিছুটা সময় ব্যয়িত হোক না ব্যায়ামের বিনিময়ে।
তাছাড়া শুধু ব্যায়াম কেন, যে কোনো শারীরিক পরিশ্রম মানেই অতিরিক্ত ক্যালরি তথা শক্তি ক্ষয়।
যার শেষ পরিণতি ওজন হ্রাস। কাজেই যত গতিশীল কাজের গতি তত দ্রুত ওজন হ্রাস। বিনিময়ে দেহের ওজন সঠিক রাখার নিশ্চিয়তা।
এর জন্য আপনাকে নিয়মিত কোনো ব্যায়ামাগারে ব্যায়াম করতে হবে, এমন কোনো ধরা বাধা নিয়ম নেই। বরঞ্চ বহুতলা ভবনে উঠার ক্ষেত্রে লিফট ব্যবহারের পরিবর্তে নিয়মিত সিঁডি বেয়ে উঠানামা করুন ।
মধ্যহ্ন ভোজের বিরতিতে দিবা নিদ্রার পরিবর্তে কিছুটা সময় হোক না হাঁটার ।
কুলি-মজুরের পরিবর্তে প্রয়োজনে নিজেই বহন করুন না নিজের বোঝা।
টিভি বন্ধ কিংবা চালু করার সময় রিমোট কন্ট্রোল ব্যবহারের পরিবর্তে নিজেই ওঠে গিয়ে তা করুন।
আর এ সব ছোট ছোট কাজই আপনার বাড়তি ওজন কমানোর জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৪। দেহ হবে নব শক্তিতে বলীয়ানঃ
দৈনিক গৃহস্থলী টুকিটাকি কাজ কিংবা মুদি দোকানে কেনাকাটায় আপনি কি বিরক্ত?
তাহলে আর হতাশা নয় । দৈনিক পরিমিত ব্যায়ামে আপনার দেহ ফিরে পাবে নতুন প্রাণ। দেহ নব শক্তিতে বলীয়ান হয়ে উঠবে । আপনি ফেলবেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।
নব উদ্যমে খেলা করবে আপনার দেহ ও মন। পরিমিত দৈনিক ব্যায়াম আপনার দেহের সমগ্র কোষ কলার স্বাভাবিকের
চেয়ে অধিক অক্সিজেন ও পুষ্টির সরবরাহ নিশ্চিত করবে।
হৃৎপিণ্ডসহ আপনার সমগ্র রক্ত সংবহন তন্ত্র হয়ে উঠবে আরো অধিক ক্রিয়াশীল। শ্বাস তন্ত্রের কাজে যুক্ত হবে নতুন মাত্রা।
ফলে এই দুই তন্ত্রের আরো অধিক কার্যকারিতা আপনার কাজের উৎসাহের মাত্রা অনেক গুণ বাড়িয়ে দেবে ।
৫। সুনিদ্রার বড় দাওয়াইঃ
আপনি কি ঘুমের জন্য সংগ্রাম করছেন অথবা নিদ্রা বিহীন রাত যাপন করে চলেছেন?
তাহলে প্রতিদিন সকাল কিংবা বিকেলে পরিমিত ব্যায়াম হতে পারে সুনিদ্রা আনায়নের বড় দাওয়ই। পরিমিত ব্যায়ামের ফলে শুলেই আপনার দু’চোখজুড়ে ভর করবে রাজ্যের ঘুম ও অন্য দিকে বেড়ে যাবে আপনার ঘুমের গাঢ়তা ।
যদিও বিছানায় যওয়ার ঘণ্টা দুই আগে অতিরিক্ত ব্যায়াম সুনিদ্রা আনয়নে সহায়ক নয়। তাই আপনি যদি নিদ্রাহীনতায় ভুগে থাকেন তবে প্রাত্যহিক সকালে কিংবা বিকেলে পরিমিত ব্যায়ামের কোনো বিকল্প নেই।
আর একটি রাতের সুনিদ্রা বহুগুণে বাড়িয়ে দেবে আপনার কাজের একাগ্রতা ও উৎপাদন শীলতা।আনন্দের ভাব দেহে ও মনে জেগে উঠবে ।
৬। উদ্দীপিত হবে লুপ্ত যৌন জীবনঃ
আপনি কি হারানো যৌবন নিয়ে চিন্তিত? কিংবা মোটাসোটা আলু থালু দেহকে অপরের অন্তরঙ্গ সান্নিধ্যে আসার প্রধান বাধা হিসেবে মনে করেন কি?
তাহলে ব্যায়ামই এই বিপদ থেকে মুক্তির শেষ ভরসা । কেননা দৈনিক পরিমিত ব্যায়ামে আপনার দেহের বাড়তি ওজন
হ্রাস পাওয়ার পাশাপাশি আপনি হয়ে উঠবেন আরো নিটোল সুগঠিত আর যৌন আবেদনময়ী যা আপনার যৌন জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এক গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম মহিলাদের যৌন উত্তেজনার সাড়া প্রদান বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সেই সাথে দূর করে পুরুষদের যৌন উত্তেজনার সময় পুরুষাঙ্গের ঋজু না হওয়ার নানা সমস্যা (যা ইরেকটাইল ডিসফাংশন নামে পরিচিত)।
কাজেই নিয়মিত শারীরিক ব্যায়ামই চির যৌবন প্রাপ্তির এক গুরুত্বপূর্ণ মহৌষধ।
৭। অবসর বিনোদনে ব্যায়ামঃ
বন্ধের দিন কিংবা অবসর সময় কি করবেন তা নিয়ে ভাবছেন? কিংবা অবসরে পরিবারের সবাইকে নিয়ে কি করবেন যা সবার সাথে খাপখায়?
তবে তা হয়ে উঠুক না শারীরিক পরিশ্রম সম্বন্ধীয়। ব্যায়াম বলতে কেবল এক ঘেয়েমি খাটুনি নয়। বরং তা হতে পারে নানা বিনোদনের অংশ হিসেবে।
যেমন : ভ্রমণের অংশ হিসেবে পদব্রজে কোনো গ্রামের কিংবা বুনো পথ ভ্রমণ, দুর্গম কোনো জায়গা অতিক্রম, উঁচু কোনো পাহাড় কিংবা পর্বতে আরোহণ, কিংবা অবসরে শারীরিক পরিশ্রম সমৃদ্ধ নানা খেলা যেমন : ফুটবল, সাঁতার, দৌড়ঝাপ, কাবাডি, গোল্লাছুট প্রভৃতি বিনোদনে চালিয়ে যেতে পারেন শারীরিক পরিশ্রম।
আপনি কি উপরোক্ত ব্যাপার সম্বন্ধে দৃঢ় প্রত্যয় পোষণ করেন?
যদি করে থাকেন তবে আজ থেকেই উপকার পেতে নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস শুরু করুন।
শিশুর বাড়তি খাবার কেমন হবেঃ
অনেক মায়েরাই শিশুদের কী খাবার দেবেন, কখন দেবেন, কী পরিমাণে দেবেন- এসব ব্যাপার নিয়ে দুশ্চিন্তা করে রীতিমতো আতঙ্ক বোধ করেন।
শারীরিক ব্যায়াম বা শরীর চর্চা হল যে কোন শারীরিক কার্যক্রম যা শারীরিক সুস্থতা রক্ষা বা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর অপর একটি অর্থ হল শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত আন্দোলন।
বিভিন্ন কারণে ব্যায়াম করা হয়, যেমন-
মাংসপেশী ও সংবহন তন্ত্র সবল করা, ক্রীড়া-নৈপুন্য বৃদ্ধি করা, শারীরিক ওজন হ্রাস করা বা রক্ষা করা কিংবা শুধু উপভোগ করা।
নিয়মিত ব্যায়াম মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে পুনরুদ্ধার হতে সাহায্য করে ।
হৃদ্ররোগ, সংবহন তন্ত্রের জটিলতা, টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং স্থূলতা রোধে শারীরিক ব্যায়াম কার্যকর ভূমিকা রাখে। এছাড়া মানসিক অবসাদ গ্রস্ততা দূর করতে, ইতিবাচক আত্ম সম্মান বৃদ্ধিতে, সামগ্রিক মানসিক স্বাস্থ্যের সুরক্ষায়, ব্যক্তির যৌন আবেদন বৃদ্ধি, শরীরের সঠিক অনুপাত অর্জনে শারীরিক ব্যায়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
শিশু স্বাস্থ্যের স্থূলতা একটি সমকালীন বিশ্বব্যাপী সমস্যা। ব্যায়াম শরীরের স্থূলতা রোধে কাজ করে।
স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীরা শারীরিক ব্যায়ামকে “অলৌকিক” এবং “আশ্চর্য জনক” ঔষধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন । শরীরের সামগ্রিক সুস্থতা রক্ষার্থে ব্যায়ামের গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা প্রমাণিত ।
লিপবাম কী? কেন?
শীতকাল আসলেই সব মেয়েদের হাত ব্যাগে একটি নতুন পণ্য লক্ষ্য করা যায়।
ব্যায়াম করার ৯টি উপকারী দিক সম্পর্কে জেনে নিনঃ
এরকম বাক্য নিশ্চয়ই শুনেছেন, “ব্যবহার কর, নয়তো ক্ষয়ে যাবে” অথবা “ফেলে রাখলে, মরচে পড়ে”। এ কথা
গুলো মানুষের শরীরের জন্য অনেক
বেশি প্রযোজ্য।
আপনি যদি আপনার শরীর ব্যবহার না করেন, তবে তার ক্ষয় হবেই । আপনার পেশি হয়ে পড়বে থল থলে, নিস্তেজ ও দুর্বল। আপনার শরীরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যেমন হার্ট, ফুসফুস, লিভার এগুলো ঠিকঠাক মত কাজ করবে না।
আপনার শরীরের জয়েন্টগুলো হয়ে পড়বে অনমনীয় । বলা হয়ে থাকে, নিষ্ক্রিয়তা বা শরীর কাজে না লাগানো অনেকটা ধূম পানের মতোই তীব্র ক্ষতিকর। তাহলে এটা জানাও জরুরী যে, কী কী কারণে ব্যায়াম এত গুরুত্বপূর্ণ ।
ব্যায়াম এর উপকারিতাঃ
১) রোগ প্রতিরোধ করে ; রোগ মানুষের সব চেয়ে বড় শত্রু। এমন কোন মানুষ পৃথিবীতে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব, যিনি কোন প্রকার রোগে ভোগেন নি।
মানুষ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রচেষ্টা হচ্ছে, রোগমুক্ত থাকা। আর এই রোগ প্রতি রোধেই সাহায্য করে ব্যায়াম। নিয়মিত ব্যায়াম খুব প্রয়োজনীয় শারীরিক ফিটনেস ও ভালো স্বাস্থ্যের জন্য ।
এটা বড় বড় রোগ যেমন হৃদরোগ, ক্যান্সার, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস ও অন্যান্য রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
ব্যায়াম আপনার চেহারার আবেদন বাড়াতে এবং দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া ঠেকাতে সাহায্য করবে। তাই সুস্থ থাকতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই।
২) সহনশক্তি বাড়ায়ঃ
এটি মানসিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। আপনি যখন ব্যায়াম করেন, তখন আপনার শরীর শক্তি ব্যয় করে। আপনার শরীর যদি স্থূল, চর্বিযুক্ত ও কায়িক পরিশ্রমহীন হয়ে থাকে, তাহলে আপনি অল্প শারীরিক শ্রমেই অধিক ক্লান্ত হয়ে পড়বেন।
আপনি যখন নিয়মিত ব্যায়াম করবেন, তখন কম ক্লান্তিতেই অধিক পরিমাণে কাজ করতে পারবেন। ভয় পাওয়া কঠিন কাজটিও দেখবেন, এক তুড়িতেই করতে পারছেন।
৩) ব্যায়াম মনকে চাঙ্গা করেঃ
ব্যায়ামের মাধ্যমে নানা রকম রাসায়নিক পদার্থ মস্তিষ্ক হতে নির্গত হয় । এসব রাসায়নিক উপাদান চিত্ত প্রফুল্ল করে এবং শারীরিক ও মানসিক প্রশান্তির পাশাপাশি চেহারায় লাবণ্য ও ঔজ্জ্বল্য বাড়ায়।
যিনি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাকে বিষন্নতা কিংবা হতাশা সহজে গ্রাস করতে পারে না।
৪) ওজন নিয়ন্ত্রণ করেঃ
সুস্থ থাকার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার
হল শরীরের বাড়তি ওজন ও মেদ ঝরিয়ে ফেলা। কিন্তু বাড়তি ওজন কমাতে ব্যায়ামের কোন বিকল্প নেই । শারীরিক চর্চা করলে ক্যালোরি খরচ হয় ।
এভাবে আমরা যতই ব্যায়াম করবো ততই আমাদের ক্যালোরি খরচ হবে এবং যার ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
৫) শরীরের নমনীয়তা বাড়ায়ঃ
আমাদের শরীরকে ফ্লেক্সিবল (Flexible) করতে ব্যায়ামের কোন জুড়ি নেই। আমাদের শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ও মাংস পেশী নমনীয় হওয়াটা জরুরী ।
তাহলে শরীরের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ছোট খাটো আঘাতে মচকে বা ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা কম থাকে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন ও ভালো থাকুন।
৬) শরীরকে করে শক্তিশালীঃ
মাংস পেশীর গাঁথুনি যার যত ভালো, সে ততো বেশি শক্তিশালী । ব্যায়াম প্রতিটি পেশীকে আলাদা আলাদা ভাবে গড়ে
তোলে ।
পুরো ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে আপনার উপর। কারণ আপনি ঠিক যেভাবে আপানার পেশীকে শক্তিশালী করতে চান, সেভাবেই করতে পারবেন।
৭) কর্মস্পৃহা বাড়ায়ঃ
আপনি যদি শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন , তাহলে কাজের প্রতি আপনার অনীহা তৈরি হবেই । ব্যায়ামের ফলে আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষে অতিরিক্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি সরবরাহ হয় ।
এর ফলে সমস্ত শরীরে একটি সুস্থ প্রাণ স্পন্দন ও উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়। এটা আমাদের কর্মস্পৃহা বাড়ায়।
৮) যৌন জীবনের জন্য উপকারীঃ
দাম্পত্য জীবনে যৌন সুখ পুরো সংসার জীবনেই প্রভাব পড়ে । যাদের যৌন জীবনে জড়তা কিংবা অনাগ্রহ এসেছে , তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী । নিয়মিত ব্যায়াম করলে যৌন স্পৃহা বাড়ে , যৌন মিলনের স্থায়ীত্বকাল বৃদ্ধি পায় এবং দাম্পত্য জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন
আনে ।
৯) সুনিদ্রায় সহায়কঃ
আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন যে, আপনি যখন ক্লান্ত থাকেন, তখন খুব গাঢ় ও গভীর ঘুম হয় । তাই যাদের ঘুমের সমস্যা আছে তাদের জন্য ব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী । ব্যায়াম অনিদ্রা দূর করে, অতি নিদ্রা হ্রাস করে ।
অবশ্য একে বারে ঘুমানোর আগে ব্যায়াম করা উচিত নয় । কারণ ব্যায়ামের পরে মানসিক চাঙা ভাবের কারণে ঘুম আসা বিলম্বিত হতে পারে। তাই নির্দিষ্ট সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
সার্বিক জীবন ব্যবস্থার উন্নয়নে ব্যায়ামের রয়েছে অপরিসীম ভূমিকা । এতদিন তো হেলা ফেলায় জীবন কাটালেন। আজ থেকেই শুরু করুন না ! দেখবেন আপনার জীবনটা নিজের হাতের মুঠোয় রাখতে পারছেন।