স্ট্রোক কী ধরনের অসুখ

স্ট্রোক মস্তিষ্কের একটি রোগ, যাতে রক্ত নালির জটিলতার কারণে হঠাৎ করে
মস্তিষ্কের একাংশ কার্য কারিতা হারায়। মনে রাখতে হবে, স্ট্রোক হার্টের কোনো রোগ নয়।

স্ট্রোকের লক্ষণঃ

  • হঠাৎ করে শরীরের একাংশ অবশ বা দুর্বল হয়ে যাওয়া।
  • মাথা ব্যথা ও বমি হওয়া।
  • হঠাৎ অজ্ঞান হওয়া।
  • কথা জড়িয়ে যাওয়া বা একে বারেই কথা বলতে না পারা।

স্ট্রোক হলে তাৎক্ষণিক কী করণীয়?

ওপরের লক্ষণ গুলো দেখা দিলে বুঝতে হবে তাঁর স্ট্রোক হয়েছে। এ ক্ষেত্রে আতঙ্কিত না হয়ে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিতে হবে।
সম্ভব হলে মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করে স্ট্রোকের ধরন বুঝতে হবে। মনে রাখতে হবে স্ট্রোক দুই ধরনের হয়। মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার জন্য অথবা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের জন্য এবং যার চিকিৎসাপদ্ধতিও ভিন্নতর।

জরুরি চিকিৎসা (অজ্ঞান রোগীর ক্ষেত্রে):

  • শ্বাস নালি, শ্বাস প্রশ্বাস ও রক্ত সঞ্চালন নিয়মিত রাখা।
  • রোগীকে এক দিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে।
  • চোখের যত্ন নিতে হবে।
  • মূত্র থলির যত্ন (প্রয়োজনে ক্যাথেটার দিতে হবে)।
  • খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।

স্ট্রোকের সব রোগীর হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না। তবে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ খিঁচুনি রোগী অজ্ঞান হলে বা স্ট্রোকের সঙ্গে অন্যান্য রোগ (যেমন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ইত্যাদি) থাকলে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন। চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুর ঝুঁকি কমানো কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরবর্তী সময়ে যেন স্ট্রোক না হয় তার ব্যবস্থা করা।

প্যারালাইসিস হলে বা মুখ বেঁকে গেলে কী করা যায়?

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা ও ফিজিওথেরাপি নিতে হবে। বাংলাদেশে স্ট্রোকের হার প্রতি হাজারে ৫-১২। আর প্রায় ৫ শতাংশ মানুষ ঝুঁকির মধ্যে আছে।

স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়ঃ

স্ট্রোক অনেকাংশেই প্রতিরোধ যোগ্য। স্ট্রোক প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা। যেমন: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান পরিহার করা,
রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ, শারীরিক ব্যায়াম নিয়মিত করা ওজন ঠিক রাখা। প্রতি দিন পর্যাপ্ত পরিমাণ শাক সবজি ও সতেজ ফল মূল খাওয়া। চিকিৎসা করলে ৩০ শতাংশ সম্পূর্ণ রূপে সুস্থ হয় আর ৩০ শতাংশ পক্ষা-ঘাত-গ্রস্ত হয়ে থাকে।

সাধারণতঃ চল্লিশোর্ধ্ব মানুষের স্ট্রোক বেশি হয়। তবে কম বয়সেও স্ট্রোক হতে পারে।

স্ট্রোকের বিভিন্ন কারণঃ

০১) ডায়াবেটিস।

০২) উচ্চ রক্তচাপ।

০৩) রক্তে অতিরিক্ত চর্বি/ কোলেস্টে-রল।

০৪) ধূমপান।

এ ছাড়া বিভিন্ন জন্মগত ত্রুটির কারণেও স্ট্রোক হতে পারে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *