লিভার ফেইলিউর রোধে ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণ জরুরি

লিভার ফেইলিউরের ভয়াবহতা, চিকিৎসার সুযোগ সুবিধা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে লিভারের কার্য –

ক্ষমতা যখন কমে যায় অথবাশরীরের প্রয়োজন অনুযায়ী যখনই এটা কাজ করতে পারে না তখনই এটাকে লিভারফেইলিউর বলা হয়। 

একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়ঃ

এক. আকস্মিক ফেইলিউর, 

দুই.   দীর্ঘমেয়াদি ফেইলিউর, 

তিন. দীর্ঘমেয়াদি আকস্মিক ফেইলিউর।

আর ভয়াবহের মধ্যে যদি আমরা ভাগ করি তাহলে আকস্মিক ফেইলিউর অত্যন্ত মারাত্মক। উন্নত বিশ্বে এতে মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ। আমাদের দেশেও এ রকম। আর দীর্ঘমেয়াদি লিভার ফেইলিউর আক্রান্তদের মৃত্যুর ঝুঁকি দুই-তৃতীয়াংশ বা ৬৬ 

শতাংশ।

লিভার ফেইলিউরের কোন ধরনে মানুষ

আক্রান্ত হচ্ছে বেশি?

দীর্ঘমেয়াদি লিভার ফেইলিউরে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে 

লিভার সিরোসিস থেকে  যে ফেইলিউরটা হয় । এটা হলো দীর্ঘ মেয়াদি লিভার ফেইলিউর, সংখ্যার দিক

 থেকে এটাতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।

ইহা বেশি হওয়ার কারণ কী ?

দেশে হেপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসের কারণে এরোগে সব চেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। আগে হেপাটাইটিস

  ‘সি’ ভাইরাসের কারণে বেশি ছিল। সেখানে লিভারের আলাদা কেয়ার বা ইউনিট নেই। ফলে এসব রোগী চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসেই বাড়ছে লিভার ফেইলিউর। লিভার এমন একটি আবশ্যিক প্রত্যঙ্গ,যা পরিপাক নালি থেকে আসা রক্তকে শোধিত করে পুরো শরীরে  ছড়িয়ে দেয়। শরীরে এর বেশ কিছু কাজ রয়েছে, যেমন হজমে সাহায্য করা, পেশি

গড়ে তোলা, সংক্রমণ রোধ, গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ ও রক্ত জমাট বাঁধতে না দেয়া।এছাড়া প্রয়োজনীয় রাসায়নিককে বিষমুক্ত করা ও সেবনকৃত ঔষধ কার্যকর করার পাশাপাশি প্রোটিনকে সমন্বয় করে

এ লিভার। মানব দেহের এসব কাজ করতে 

যখন ব্যর্থ হয় তখনই তাকে লিভার ফেইলিউর বলা হয়। যেসব ব্যক্তির সাধারণতঃ আগে থেকে লিভারের রোগ ছিল না তাদের লিভারের লক্ষণ শুরু হওয়ার চার সপ্তাহের মধ্যে লিভার ফেইলিউর দেখা দেয়। 

মস্তিষ্কে প্রভাব পড়ায় প্রথমে আচরণগত পরিবর্তন হয়। এর মাধ্যমে রোগী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। তবে পুরোপুরি অজ্ঞান হয় না। লিভার ফেইলিউরের  ভয়াবহতা ব্যাপক। উন্নত বিশ্বে তীব্র লিভার  ফেইলি- উরের রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা পর্যাপ্ত রয়েছে। লিভার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ইহা ভালো করা যায়। তবে সব রোগীকেই প্রতিস্থাপন করতে হয় না।কোন রোগীর প্রয়োজন এটির জন্য কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়। মডেল ফর এন্ড স্টেজ লিভার ডিজিজ (এমইএলডি) স্কোরের মাধ্যমে বেশ কিছু তথ্য জানা 

যায়। এমইএলডি স্কোরের মাধ্যমে রোগীর বেঁচে থাকার পূর্বাভাস বোঝা যায়। তাছাড়া চিকিৎসার ঝুঁকি, সুবিধা গুলোও  অনুমান করার জন্য লিভারের রোগের তীব্রতা মূল্যায়ন করতে সহায়তা করে। ইহা লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য অঙ্গ বরাদ্দের প্রক্রিয়ায় এবং যত্নের লক্ষ্য গুলোকে নির্দেশিত করতে সহায়তা করে। আমাদের দেশে লিভার ফেইলিউরের রোগী বাড়ে মূলতঃ হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’ভাইরাসের কারণে।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *