ঘরে ব্যায়াম করার নিয়মাবলী
ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজঃ
ঘরের বারান্দায় কিংবা ছাদে এ ব্যায়ামটি খুব সহজে করা যায় । বিশেষ করে রাতের খাবারের পর ১০ মিনিট হাঁটা হাঁটি করে এবং অন্তত ৩০ মিনিট পর ঘুমাতে যাওয়া উচিতে।
এতে যেমন খাবার হজমে সুবিধা হয় তেমন শরীরের পেশীগুলো সচল হয় । হার্ট সুস্থ রাখার জন্য জগিং খুব ভালো ব্যায়াম। বাড়ির যে কোনো জায়গায় স্পট জগিং করতে পারেন।
তবে জগিংয়ের সময় উপযুক্ত জুতা পরে নিতে
হবে ; যাতে পায়ের ওপর স্ট্রেস না পড়ে।
পেট ও কোমরের মেদ কমাবে সিট আপ, লেগ রেইসঃ
সিট আপঃ কোনো একটি সমতল জায়গায় বা মেঝেতে শুয়ে পড়ুন। এবার পা দুটো ভাঁজ করে দিন ।
হাত থাকবে হাঁটু বরাবর সোজা, সামনের দিকে। এবার শ্বাস ছাড়তে ছাড়তে সোজা সামনের দিকে উঠে বসুন।
পা ভাঁজ অবস্থায় থাকবে। এবার আবার আগের অবস্থায় শুয়ে যান। বসা অবস্থায় বেশিক্ষণ থাকবেন না। উঠে আবার শুয়ে পড়বেন, আবার উঠে বসুন।
এভাবে মোট ১২ বার করা হয়ে গেলে এক মিনিট শুয়ে বিশ্রাম নেবেন। এক মিনিট পরে ঠিক একই নিয়মে আবার শুরু করবেন।
আবার ১২ বার করবেন। এভাবে ১২ বারে হবে এক সেট। আপনাকে এভাবে দুই সেট করতে হবে প্রাথমিক অবস্থায়। পরে সেট আস্তে আস্তে বাড়িয়ে নিবেন।
লেগ রেইসঃ
সোজা হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ুন। পা দুটো জোড়া করে সোজা ৯০ ডিগ্রি ওপরে তুলে দিন। হাত দুটো সোজা পাশে থাকবে।
এবার নিশ্বাস নিতে নিতে পা দুটো জোড়া অবস্থায় নিচে নামান। তবে পা দুটো মেঝেতে লেগে যাবে না। আপনার পায়ের সঙ্গে মেঝের কিছুটা দূরত্ব থাকবে ।
ওই অবস্থায় নিশ্বাস ছাড়তে ছাড়তে আবার পা দুটো ৯০ ডিগ্রি ওপরে তুলে দিন। আবার নিচে নামান। মাথা থেকে কোমর পর্যন্ত মেঝেতে লেগে থাকবে। এভাবে ১২ বার করে দুই সেট করুন।
এ ব্যায়ামগুলো নিয়মিত করলে মেদহীন হবে কোমর পেট । তবে মনে রাখবেন প্রতিদিন পেটের ব্যায়াম করবেন না। একদিন পরপর করবেন।
নিতম্ব ও উরুর মেদ কমাতে
স্কোয়াট কিক ব্যাকঃ
দু’পায়ের মাঝে কিছুটা বেশি ফাঁকা রেখে দাঁড়ান। দুই হাতে ভারী কিছু রাখুন এবং তা পুরো ব্যায়ামের সময়ই কাঁধের উপরে তুলে রাখুন ।
চেয়ারে বসার মতো ভঙ্গি করুন, নিজের ওজন দিন দুই হাঁটুর এবং পায়ের গোড়ালির উপর।
এরপর এক পায়ের উপর ভর দিয়ে অন্য পা ডান দিকে, বাম দিকে সোজা করে যথা সম্ভব ছড়িয়ে দিন।
আবার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসুন। একইভাবে অন্য পায়ের এমন এক্সারসাইজ করুন।
দড়ি লাফঃ
সারা শরীর থেকে অতিরিক্ত ক্যালরি এবং চর্বি ঝরাতে দড়ি লাফ হলো সব চাইতে কার্যকরী ব্যায়াম।
পা, হাত, কাঁধ সহ পুরো শরীরের হাড় এবং মাসলকে শক্তিশালী করার জন্য এর জুড়ি নেই।
ছোটবেলার এ খেলাটি ব্যায়াম হিসাবে করতে পারেন দিনের যে কোন সময়ে । নিজের ঘরের যে কোন স্থানে এটি
স্বাচ্ছন্দ্যে করা যায়।
দড়ি লাফানোর এই ওয়ার্ক আউটটির মাধ্যমে প্রথম দিকে প্রতি এক মিনিটে
পুরো দশ ক্যালোরির উপরে বার্ন করা
যায়।
আস্তে আস্তে দক্ষ হয়ে উঠলে দশ মিনিটে ২০০ ক্যালোরির উপরে বার্ন করতে পারবেন খুব সহজেই।
পুশ আপঃ
প্রথম দিকে ৮ টি পুশ আপ দেওয়ার চেষ্টা করুন । পরবর্তীতে যখন অভ্যস্ত হয়ে যাবেন তা চাহিদা অনুযায়ী ১২ থেকে ১৪ টিতে উন্নতি করুন।
পুশ আপের নিয়মঃ
মাথা, গলা, কোমর, পা সোজা সমান লাইনে
রাখুন ।
সেট অনুসারে পুশ আপ দিন। যেমন আপনি যদি ২০টা পুশ আপ দিতে চান তাহলে, ৫ টা করে ৪ বার দিন। আর সক্ষমতা বাড়লে ১০টা করে ২ বারে দিন।
পুশ আপের সময় তাড়া হুড়া করা যাবে না। আস্তে আস্তে হাতের উপর ভর দিয়ে উঠতে হবে আবার নামতে হবে ।
বুকের সক্ষমতা বাড়াতে চাইলে পুশ আপ দিন । তারপর হাত মাথার পিছনের অংশে দিন। পুরো হাতের উপর বডির ওজন দিয়ে ভর দিন।
সব সময় সোজা হয়ে বসুন । কখনো বাঁকা হয়ে বসবেন না। কিছুক্ষন অপেক্ষা করুন তার পর ধীরে ধীরে পেছনের দিকে সরান, এভাবে বার বার চেষ্টা করুন।
অতিরিক্ত টিপসঃ
রুটিনের মধ্যে পুশ আপ দেওয়ার সংখ্যা অবশ্যই নির্ধারণ করুন। সারা শরীরকে
৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ড অবধি হোল্ড করে রাখার চেষ্টা করুন, ফ্লোরে শুয়ে শুরু
করুন।
যেমন ধরুন পুশ আপ করার সময় শরীরের ভর হাতের উপর রাখার চেষ্টা করুন। এভাবে মিনিমাম ৩০ সেকেন্ড রাখুন ।
মুখমন্ডলকে ফ্লোরের দিকে করে রাখুন, তখন পুশ আপ না করে পুরো শরীরের ভর হাতের উপর দেওয়ার চেষ্টা করুন।
ব্যায়ামটি করার সময় অবশ্যই শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক আছে কিনা চেক করে নিবেন।
আপনার মাসল নিয়ে কাজ করুন। পুরো শরীরের ভর পায়ের উপর দিয়ে, মাথাটা নিচের দিকে দেওয়ার চেষ্টা করুন । এভাবে কিছু সময় বিরতি নিয়ে পুনরায় চেষ্টা করুন।
দেখবেন শরীরের অতিরিক্ত মেদ ঝরে যাওয়ার পাশা পাশি, শরীর নতুন করে কর্ম চঞ্চল হয়ে উঠবে যা নতুন করে কাজ করার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা যোগাবে ।