ইউটিউব মার্কেটিং বা ভিডিও মার্কেটিং কিভাবে করবো ?
by Backend Digital | Apr 24, 2020 | 0 comments
ইউটিউব কে ব্যবহার করে কোন পন্য, সেবা বা বিজনেসের ব্র্যান্ডইং করাই হলো ইউটিউব মার্কেটিং।
তবে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে, তার এড থেকে প্রাপ্ত আয়কেও অনেকে ইউটিউব মার্কেটিং হিসেবে বিবেচনা করে।
অবশ্য আমরা আজকে দুটো বিষয়ই আলোচনা করবো। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর কথা বললে ফেসবুকের পরই ইউটিউব মার্কেটিং স্থান পায়।
ইউটিউব সম্পর্কে জেনে নিন কিছু তথ্য –
বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং সাইট হলো ইউটিউব।
১৯০ কোটি একটিভ ব্যবহারকারীর পদচারণা থাকে ইউটিউবে।
জানলে অবাক হবেন, প্রতিদিন এক বিলিয়ন (১০০ কোটি ) ঘন্টা ভিডিও দেখা হয় ইউটিউবে।
ইউটিউব (গুগলের মালিকানাধীন) গুগলের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন ।
ইউটিউব থেকে আয়ের উৎস কি?
নিজের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয় করাঃ আপনার কোম্পানির প্রডাক্ট বা সার্ভিসের প্রমোশন করতে পারেন তারপর ওয়েবসাইটে অর্ডার নিতে পারেন।
ইউটিউব ভিডিওতে এড দিয়ে আয় করাঃ গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে আপনার চ্যানেলটি রেজিস্টার করতে হবে।
ইউটিওব বিজ্ঞাপনের আয়ের সর্বোচ্চ ৬৮% অর্থ আপনি পেতে পারেন। (শর্ত প্রযোজ্য) ?
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমে আয় করাঃ
অন্য কোন কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রয় করে তা হতে কমিশন অর্জন করাকেই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর আয় বলা হয়।
ইউটিউব থেকে আয়ের জন্য কি করতে হবে?
প্রথমেই Google AdSense এ আবেদন করতে হবে অ্যাডসেন্সের জন্য।
এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সব তথ্য দিতে হবে। ২০১৮ সালের নিয়ম অনুযায়ী প্রত্যেকটি ইউটিউব চ্যানেলকে কিছু যোগ্যতা অর্জন করতে হবে।
যেমন –
১ বছরের মধ্যে ১ হাজার সাবস্ক্রাইবার ও ৪ হাজার ঘণ্টা ওয়াচ ভিউ অবশ্যই হতে হবে।
আপনি যে জি-মেইল দিয়ে অ্যাডসেন্স এ এপ্লাই করবেন সেই জি-মেইলে আপনার বয়স নুন্যতম ১৮ হতে হবে।
প্রত্যেকটি চ্যানেলের একটি চ্যানেল আইকন থাকতে হবে।
যদি আপনার করা ভিডিওগুলি বানিজ্যিক ভাবে সফল হয় তাহলে অবশ্যই YouTube নিজে থেকেই পার্টনার করে নেয়।
ইউটিউবের ইউজার কারা?
ভিজিটর (শুধুমাত্র ভিডিও দেখে থাকে)
ইউটিউবার বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর (যারা ভিডিও তৈরি করে আপলোড করে)
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি (যারা ইউটিউবে পন্য বা সেবার জন্য পেইড প্রমোশন করে থাকে)
ইউটিউব মার্কেটিং কেন গুরুত্বপূর্ণ?
আর্টিকেল পড়ার চেয়ে ভিডিও দেখতে এখন গ্রাহকরা আগ্রহী।
অনেক বিষয় আছে যেগুলো আর্টিকেলে বুঝানো সম্ভব হয় না, সেগুলো সহজেই ভিডিওর মাধ্যমে বুঝানো যায়।
আর্টিকেল শুধু যারা পড়তে পারে তাদের জন্য কিন্ত ভিডিও নিরক্ষর মানুষ বা বাচ্চারাও দেখতে পারে।
ছবি তুলে একটা পন্যকে যতটা আকর্ষণীয় করা যার ভিডিও করে তার চেয়ে ভালভাবে, বিভিন্ন আঙ্গিকে পন্যকে উপস্থাপন করা যায়।
ভিডিও মার্কেটিং বা ইউটিউব মার্কেটিং মোটেও ব্যয়বহুল না, ফলে সব ধরণের মানুষই ভিডিও মার্কেটিং ব্যবহার করতে পারে।
যেহেতু গুগলের পরই দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিন হলো ইউটিউব, ফলে তা সব রকমের কাস্টমারের জন্য একটি উপযোগী মার্কেট প্লেস।
ইউটিউব মার্কেটিং করতে হলে কি প্রয়োজন?
নিজের ব্র্যান্ড বা ব্যবসায়ের জন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা ।
গ্রাহকদের পছন্দ অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করে আপলোড করা।
ইউটিউব এর এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন) করা।
ইউটিউব চ্যানেলকে মার্কেটিং করা ও সাবস্ক্রাইবার বাড়ানো।
ইউটিউব এর পলিসি ও এলগোরিদম জানা।
কোন ধরণের ভিডিও ইউটিউবে আপলোড করতে হবে?
ভিডিও টির মালিক আপনাকে হতে হবে। আপনার পূর্বে কেউ উক্ত ভিডিওটি আপলোড করে থাকলে তার কপিরাইট আপনার নয়।
সুতরাং ইউনিক ভিডিও আপলোড করতে হবে। এমনকি ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক অন্য কারো হলে সেটাও কপিরাইট বহির্ভূত হবে।
যে কোনো বয়সের মানুষ যেন ভিডিওটি দেখতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।
ভাল কোয়ালিটি ও রেজুলেশনের ভিডিও হতে হবে। ক্যামেরা আবশ্যক নয়, মোবাইল ফোনেও ভাল ভিডিও ধারণ করা যায়।
ভিডিওর টাইটেল খুব আকর্ষণীয় হতে হবে, দেখা যায় ভিডিওর কন্টেন্ট আহামরি ভালো না হলেও শুধু টাইটেলের জন্য প্রচুর ভিউ হয়।
তবে খেয়াল রাখতে হবে টাইটেল যেন কন্টেন্টের সাথে অসামাঞ্জস্য না হয়।
অসামানঞ্জস্য টাইটেলে রিপোর্ট পড়লে ইউটিউব ভিডিও ডিলেট করে দিতে পারে।
শর্ট লেন্থের ভিডিও বেশ কার্যকর। ৩-৭ মিনিটের ভিডিওর ভিউ প্রচুর হয়।
সাধারণত লেন্থ বেশী হলে ইউজারের বিরক্তি চলে আসে ফলে সে চলে যায় এবং তা চ্যানেল এর জন্য মোটেও ভাল নয়।
অবশ্যই ভিডিওতে আপনার চ্যনেলের লোগো ব্যবহার করেন ও টেক্সট ব্যবহার করবেন যেখানে প্রয়োজনীয়।
মনে রাখবেন, ক্লিন ভিডিও (লগো না টেক্সট না থাকলে) সহজেই কেউ কপি করে তার চ্যানেলে আপলোড দিতে পারে।
খুব আকর্ষণীয় একটি থাম্পনেইল ব্যবহার করুন, আকর্ষণীয় থাম্পনেইল প্রচুর ভিজিটরকে আকৃষ্ট করে।
সফল হতে হলে ইউটিউবের এসইও করতে হবে।
ইউটিউব চ্যানেল বানানোই শেষ নয়। যদি প্রচুর সাবস্কাইবার ও ভিওয়ার পেতে হয় তবে অবশ্যই চ্যানেলটির সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO) করতে হবে।
ইউটিউবের এসইও করার পক্রিয়া হলো –
চ্যানেলের আকর্ষণীয় নাম, লগো ও ডেসক্রিপশন নির্বাচন করতে হবে।
চ্যানেলের শর্ট ও প্রাসঙ্গিক URL দিতে হবে। মনে রাখতে হবে অন্তন ১০০ জন সাবস্ক্রাইবার ও চ্যানেলের বয়স ৩০ দিন না হলে URL চেঞ্জ করা যায় না।
চ্যানেলের কি-ওয়ার্ড রিসার্চ করতে হবে। সাধারণত যে সব কি-ওয়ার্ড দ্বারা আপনার চ্যানেলকে সার্চ করা হয়।
সেক্ষত্রে ইউটিউবের সাজেস্টেড কি-ওয়ার্ডগুলো বেছে নিতে পারেন। কি-ওয়ার্ডগুলো অবশ্যই ট্যাগে ব্যবহার করতে হবে।
ইউটিউব কি ওয়ার্ড রিসার্চ সাজেশন :
ভিডিও হতে হবে প্রাসঙ্গিক ও গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে পারে এমন।
নিয়মিত ভিডিও আপলোড করতে হবে ও গ্রাহকদের চাহিদা বুঝতে হবে।
বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, টুইটার, লিংক- ডইন ইত্যাদি) সাইটে আপনার চ্যানেল বা ভিডিওর মার্কেটিং করতে হবে।
Quora এবং Ask Yahoo এই দুটি সাইটেও প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ভিডিওর মার্কেটিং করতে পারেন।
তা ছাড়াও পার্সোনাল ব্লগ বা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ভিডিও পাবলিশ করে ভিওয়ার বাড়াতে পারেন।
পরিশেষে বলি :
একজন আদর্শ ইউটিউব মার্কেটার হতে হলে অবশ্যই কোয়ালিটি এনশিওর করা উচিত।
আমদের দেশে বেশিরভাগ ইউটিউবারই সস্তা জন প্রিয়তার জন্য বিভিন্ন স্পেমিং বা অহেতুক ভিডিও পাবলিশ করে।
যদি উপরোক্ত গাইডলাইন মেনে চলতে পারেন, আশা করি আপনি খুব ভালো ইউটিউব বা ভিডিও মার্কেটারে পরিণত হবেন।