২০২৪ সালে ব্লগিং করে কী টাকা আয় করা সম্ভব?
Created by UY LABin News22 Jan 2024
আপনি ব্লগ করতে ভালোবাসেন এবং কিছু অতিরিক্ত নগদ অর্থ আয় করতে চান?
ব্লগিং হল লেখা-লেখির মতো একটি কম খরচের ব্যবসায়িক ধারণা যার মাধ্যমে প্রতি মাসে হাজার হাজার ডলার উপার্জন করা যায় , আপনি এই পোস্টটি পড়ছেন তার মানে এর অর্থ হল professional Blogging এর প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে।
আজকের প্রতিবেদনে আমরা জানব ব্লগ কী, Blogging কী ও কীভাবে Blogging শুরু করবেন?
যখনই আমরা Professionally কিছু করি,তার অর্থ হলো আমরা আমাদের সর্বোত্তম দক্ষতা ব্যবহার করে ভাল কিছু করতে চাই।
ব্লগ কি?
ব্লগ থেকে আয় এবং প্রফেশনাল Blogging করার আগে আপনার মাস্ট Blogging সম্পর্কে একটু ধারণা থাকা প্রয়োজন।
Blog হলো এক ধরনের website, যেখানে ব্লগাররা তাদের knowledge or information শেয়ার করে থাকে নিজেদের দক্ষতা অনুসারে।
আরো সহজ ভাষায় বলা যায় যে, ব্লগ হল একটি ওয়েবসাইট যার মাধ্যমে ব্লগাররা সেই ওয়েবসাইট- টিকে তাদের ডিজিটাল ডায়েরি হিসাবে ব্যবহার করে।
একটি ব্লগের মাধ্যমে blogger তাদের অভিজ্ঞতা, চিন্তা ভাবনা, ভালো লাগা এবং প্রয়োজনীয় তথ্য, পাঠ্য, চিত্র, ভিডিও, অডিও ইত্যাদি সবার সাথে ভাগ করে।
ব্লগ মূলত দুই ধরনের-
০১) পার্সোনাল ব্লগ :
যেখানে ব্লগাররা শুধু মাত্র তাদের অনুভূতি, চিন্তাভাবনা এবং জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকে।
০২) প্রফেশনাল ব্লগ :
কিছু ব্লগার রয়েছে যাদের উদ্দেশ্য ব্লগ তৈরি করে প্রতিমাসে অর্থ উপার্জন করা এবং এর জন্য তারা বিভিন্ন ধরনের টপিক নিয়ে ব্লগ তৈরি করে।
সেগুলোতে লোকেরা যে ধরনের তথ্য গুলো অনলাইনে খুঁজে থাকে ওই তথ্য গুলো সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করে থাকে।
ব্লগিং কী ?
Blogging বলতে লেখা, ফটোগ্রাফি এবং অন্যান্য মিডিয়াকে বোঝায় যা অনলাইনে প্রকাশিত হয়।
এটি ব্যক্তিদের জন্য ডায়েরি-স্টাইল এন্ট্রি লেখার একটি সুযোগ হিসাবে শুরু হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে এটি অনেক ব্যবসার জন্য ওয়েবসাইটগুলিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
এর বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে রয়েছে ঘন ঘন আপডেট, অনানুষ্ঠানিক ভাষা এবং পাঠকদের অংশ গ্রহণের এবং কথোপকথন শুরু করার সুযোগ।
অনেক কিছু সম্পর্কে তো জানা হলো, চলুন এইবার ২০২৪ সালে এটি করে কী টাকা আয় করা সম্ভব?
যদি সম্ভব হয় তাহলে কীভাবে সম্ভব সেই বিষয়ে চলেন জেনে নেওয়া যাক।
যাতে করে আপনিও এই ব্লগ পড়ে আয় করতে পারেন, এটিই এই আর্টিকেলের মূল উদ্দেশ্য। তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।
ব্লগিংয়ের ইতিহাস :
Justin Hall নামে প্রথম 1994 সালে একজন আমেরিকান শিক্ষার্থী প্রথম ব্লগ লিংক তৈরি করেছিলেন l
এই ব্লগে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনের নানা বিষয় সম্পর্কে লিখতেন।
তারপর Robot Wisdom নামের একটি ব্লগের সম্পাদক Jorn Barger নামে এক ব্যক্তি প্রথম 1997 সালে “weblog” শব্দটি ব্যবহার করেছিলেন।
এরপর, Matt Mullenweg 2003 সালে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ওয়েবসাইট ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম ( CMS) ওয়ার্ডপ্রেস ( WordPress ) চালু করেছেন।
২০২৪ সালে Blogging করে আয় করার উপায় :
ব্লগকে বিভিন্ন উপায়ে মনিটাইজ করা যেতে পারে। আপনার ব্লগ থেকে টাকা উপার্জনের জন্য অনলাইন উপার্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল এবং সেরা পদ্ধতিগুলি এখানে তুলে ধরা হলো-
আপনার যদি কোনো ব্লগ বা সাইট থাকে – বা এই রকম কিছু শুরু করার কথা ভেবে থাকেন – তাহলে জেনে রাখুন যে আপনার কাছে এখনও উপার্জন করার অনেক সুবিধা আছে।
ব্লগকে বিভিন্ন উপায়ে মনিটাইজ করা যেতে পারে। এই আর্টিকেলে অনলাইনে উপার্জন সংক্রান্ত বিভিন্ন মডেল এবং ডিজিটাল কন্টেন্ট মনিটাইজ করার সেরা পদ্ধতিগুলির কথা বলা আছে।
শুরুতে আপনি প্রাথমিক বিষয় দিয়ে শুরু করুন।
মনিটাইজেশন কী ?
সহজভাবে বলতে গেলে মনিটাইজেশনের অর্থ হল আপনার সাইট থেকে টাকা উপার্জন করার একটি প্রসেস।
আপনি নিজের ব্লগে অনলাইন কন্টেন্ট থেকে আয় করলে সেটিকে মনিটাইজেশন বলা হবে।
আপনার ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম শুরু করার জন্য, এখানে বেশ কিছু অনলাইন ব্যবসায়িক ধারণা আছে-
বিজ্ঞাপন,
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং,
সরাসরি বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রোডাক্টের অফার,
সাবস্ক্রিপশন,
কোচিং,
লাইভ ভিডিও কোচিং এবং
বাংলায় ব্লগিং।
কীভাবে আপনি নিজের এবং আপনার ব্লগের জন্য উপরোক্ত কাজগুলি করতে পারেন!
মনিটাইজেশনের প্রতিটি ধারণা খুব ভাল করে বুঝে নেওয়া যাক, যাতে আমাদের ইনকাম করাটা সহজ হয়।
বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মনিটাইজেশন :
টাকা উপার্জনের জন্য আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন দিন। একজন ব্লগের প্রকাশক হিসেবে, আপনার অনলাইন কন্টেন্টে বিজ্ঞাপন যোগ করলে সহজে টাকা পেতে পারবেন।
বিজ্ঞাপন দাতারা আপনার অডিয়েন্সের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য পেমেন্ট করতে ইচ্ছুক।
ঠিক একইভাবে বেশি মাত্রায় সার্কুলেট হওয়া সংবাদ পত্রিকা বিজ্ঞাপন দাতাদের আরও বেশি চার্জ করতে পারে, আপনার সাইট এবং কন্টেন্ট যত বেশি জন প্রিয় আপনি তত বেশি উপার্জন করতে পারবেন।
আপনার ব্লগের নির্দিষ্ট পৃষ্ঠায় উপস্থিত কন্টেন্টের সাথে প্রাসঙ্গিক বিজ্ঞাপন দেখানোর বিষয়ে AdSense সাহায্য করে।
যেমন- আপনার ব্লগটি অ্যাডভেঞ্চার ভ্রমণের বিষয়ে থাকলে এবং Rekyavik-এ ভ্রমণ সংক্রান্ত কোনও পোস্ট এইমাত্র আপলোড করে থাকলে, AdSense আপনাকে হয়ত ভ্রমণ সংক্রান্ত বীমা, আইসল্যান্ড বা উষ্ণ পোশাক সম্পর্কে কোনো বিজ্ঞাপন দেখাবে।
যেখানে বিজ্ঞাপনটি দেখানো হচ্ছে সেই সাইটের মালিক হিসেবে, কোনও ব্যবহারকারী যখন কোনও বিজ্ঞাপন দেখেন বা যোগাযোগ করেন তখন AdSense আপনাকে পেমেন্ট করে।
এছাড়া অনলাইন বিজ্ঞাপনগুলিকে আপনার ব্লগের কন্টেন্ট এবং পাঠকদের জন্য প্রাসঙ্গিক করে তোলার দক্ষতা সহ, অনেক বিজ্ঞাপন দাতারা আপনার বিজ্ঞাপনের স্লটের জন্য একটি প্রিমিয়াম মূল্য দিতে আগ্রহী।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং :
প্রোডাক্টের সুপারিশ করে টাকা উপার্জন করুন। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হল আপনি যখন অন্য কোন সাইটে বিক্রয়ের জন্য কোনও প্রোডাক্ট বা পরিষেবাতে আপনার কন্টেন্টে কোনও লিঙ্ক অন্তর্ভুক্ত করেন।
এটি কীভাবে কাজ করে তা এখানে রয়েছে, যখন কেউ আপনার সাইটে লিঙ্কটি ক্লিক করে, অ্যাফিলিয়েট সাইটে যায় এবং আপনার অনুমোদন করা প্রোডাক্ট কেনার জন্য প্রসেস করা হয়, আপনি বিক্রয়ের উপর কমিশন পান।
প্রোডাক্টের সাজেশনে আগ্রহী এমন নিযুক্ত অডিয়েন্স সহ ব্লগের জন্য, এটি একটি কার্যকরী উপার্জনের মডেল হতে পারে।
তথ্য সংক্রান্ত, কীভাবে এবং লাইফস্টাইল সংক্রান্ত নিবন্ধগুলি অ্যাফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রচারের জন্য প্রচুর সুযোগ দেয়।
আপনার অডিয়েন্সদের বিশ্বাস বজায় রাখতে, গ্রাহকের সাথে আপনার সম্পর্কে স্বচ্ছতা বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
এছাড়াও আপনার ব্লগের খ্যাতি আপনার প্রোডাক্ট বা প্রচার করা পরিষেবার সাথে সম্পর্কযুক্ত, সুতরাং আপনার অ্যাফিলিয়েট পার্টনার বেছে নেওয়ার সময় কোয়ালিটির বিষয়টি মনে রাখুন।
সরাসরি বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে প্রোডাক্টের অফার :
আপনার ব্লগ থেকে টাকা উপার্জন করতে জিনিস বিক্রি করুন।
নিজেদের ব্লগ থেকে আয় করার জন্য এখন অনেক ব্লগার অনলাইন স্টোরের মাধ্যমে নিজেদের প্রোডাক্ট বিক্রির জন্য একটি ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার চেষ্টা করছেন।
আপনার প্রোডাক্ট ফিজিক্যাল বা ডিজিটাল হতে পারে।
অ্যাডভেঞ্চার ট্রাভেল ব্লগের উদাহরণে, আপনার লোগো প্রদর্শিত টি-শার্ট বা বিদেশি গন্তব্যের জন্য ডিজিটাল গাইডবুক বিক্রি করতে পারেন।
আপনার প্রোডাক্ট ফিজিক্যাল বা ভার্চুয়াল যাই হোক না কেন, পেমেন্ট গ্রহণের জন্য আপনাকে সিস্টেম সেট করতে হবে।
ফিজিক্যাল প্রোডাক্ট বিক্রি করার সময় আপনাকে যে বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে তা হল- স্টক স্টোর করা, শিপিং অর্গানাইজ করা এবং কর ও শুল্ক ম্যানেজ করা।
ডিজিটাল প্রোডাক্ট লজিস্টিক্যালি কম জটিল কারণ সেগুলি অনলাইনে ডেলিভার করা যেতে পারে।
সাবস্ক্রিপশন :
আয়ের নতুন স্ট্রিম যোগ করার জন্য সাধারণ ফি চার্জ করুন।
যদি আপনার ব্লগের কোনও অ্যাক্টিভ কমিউনিটি থাকে যারা আপনার বিষয় সম্পর্কে আরও জানতে আগ্রহী, সেক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদে উপার্জনের জন্য আপনার মূল্যবান কন্টেন্ট ব্যবহারের অন্যতম উপায় পেইড মেম্বারশিপ বা সাবস্ক্রিপশন মডেল।
এই ধরনের ব্যবসায়িক মডেলে, পাঠকরা নিয়মিত- ভাবে, মাসিক বা বার্ষিক ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পেমেন্ট করে।
এইভাবে পাঠকদের কাছ থেকে মেম্বারশিপ বা সাবস্ক্রিপশন ফি সংগ্রহ করে, আপনি বার বার আয় করতে পারেন।
এই ধরনের অনবরত ক্যাশ ফ্লো আরও স্থিতিশীল, অনুমানযোগ্য এবং সঠিক উপার্জনের স্ট্রিমের সম্ভাবনা অফার করে।
বিনিময়ে, আপনি সাবস্ক্রাইবার বা মেম্বার প্রিমিয়াম কন্টেন্ট, কমিউনিটি এরিয়া, শেখার সংস্থান, ভিডিও বা অতিরিক্ত পরিষেবা এবং টুল সরবরাহ করতে পারেন।
আপনার ব্লগের সাথে মানানসই হবে এমন বিভিন্ন ধরনের বেশ কিছু এলিমেন্ট একত্রিত করতে পারেন।
কোচিং :
আপনি ব্লগের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ সেবা অফার করলে অনলাইন কোর্স বা কোচিং প্যাকেজ সেট-আপ করে তাতে চার্জ বসিয়ে টাকা উপার্জন করতে পারেন।
আপনি যখন ভিডিও বা ডাউনলোড করা যাবে এমন ই-বুকের মতো স্ব-নির্দেশিত শিক্ষামূলক উপকরণ তৈরি করেন, তখন আপনি আপনার অডিয়েন্সদের মধ্যে যারা মেম্বার তাদের নিজের মতো করে এগিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেন।
ব্যক্তিরা আপনার কোর্স করা চালিয়ে গেলে, তাদের অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহের সম্পর্কে আপনি জানতে পারেন।
একটি অনলাইন পাঠ্যক্রম প্রক্রিয়া ডেভেলপ করতে আগে থেকেই আপনার যথেষ্ট সময় এবং সংস্থান প্রয়োজন হতে পারে।
সুতরাং এটি কার্যকর করতে আপনার এই বিষয়ের সাথে যুক্ত সকল অডিয়েন্সের দরকার হবে।
লাইভ ভিডিও কোচিং :
আয় বাড়ানোর আর একটি বিকল্প হল লাইভ ভিডিও কোচিং অফার করা।
আপনার অফারটি অনলাইন কোর্স বা অন-ডিমান্ড কোচিং যার উপরেই ভিত্তি করে হোক না কেন, আপনি ইমেলের মাধ্যমে বা আপনার ব্লগের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথোপকথন করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
বাংলায় Blogging করে আয় :
সহজ এবং সত্যি ভাষায় বলতে গেলে বাংলাতে একটি ব্লগ তৈরি করে তাতে বাংলা ভাষাতে আর্টিকেল লিখে আপনারা খুব সহজেই টাকা আয় করতে পারবেন।
এটা বলাই বাহুল্য নিজের bangla ভাষার blog থেকে আপনারা English ব্লগের তুলনায় অধিক সহজে ইনকাম করতে পারবেন।
কারণ, এই সময় ইন্টারনেটে বাংলা ভাষাতে তেমন ভালো ভালো কনটেন্ট খুব কম পরিমাণে রয়েছে। বাংলা কনটেন্ট এর চাহিদা প্রচুর।
English ব্লগ এর চাহিদা ইদানীং অনেকটা বেশি থাকলেও, বর্তমানে ইন্টারনেটে হাজার হাজার English আর্টিকেল পড়ে রয়েছে।
তাই, English ব্লগের তুলনায় Bangla ব্লগে অধিক সহজেই সফলতা পাওয়া যায়।
এই পোস্টে আমি ২০২৪ সালে ব্লগিং করে আয় করার সেরা কয়েকটি উপায় শেয়ার করেছি।
যে গুলোর মাঝে থেকে আপনি যে কোনো একটি বেছে নিতে পারেন আপনার অনলাইন ক্যারিয়ার হিসেবে।
যেখানে কাজ করে আপনি যশ ও খ্যাতি উভয়ই পেতে পারেন।
কিন্তু সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অবশ্যই ভাবনা-চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিবেন।
যে কাজটিতে আপনার মন বসে, যেটি আপনি দীর্ঘদিন যাবত চালিয়ে যেতে পারবেন, আপনার ভালো লাগে, সেই কাজ আপনার করা উচিত। তবেই সফল হওয়া সম্ভব। শুভকামনা আপনার জন্য।