কম্পিউটার নেটওয়ার্কের  বিভিন্ন টর্মস ও ডিভাইস :

সার্ভার কিঃ সার্ভার হলো এমন একটি শক্তিশালী কম্পিউটার যা নেটওয়ার্কের মধ্যে থাকা অন্য কম্পিউটারগুলোকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে।

অর্থাৎ এটি serve করে। সার্ভার (Server) মূলত একটি কম্পিউটার প্রোগ্রাম।

অনেক প্রকারের সার্ভার রয়েছে। যেমন – ডেটাবেজ সার্ভার, ফাইল সার্ভার, মেইল সার্ভার, প্রিন্ট সার্ভার, ওয়েব সার্ভার, গেমিং সার্ভার, এ্যাপ্লিকেশন সার্ভার ইত্যাদি।

ক্লায়েন্ট কিঃ ক্লায়েন্ট (Client) হলো সেবা গ্রহণকারী। কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ক্লায়েন্ট বলতে এমন হার্ডওয়্যার বা সফটওয়্যারকে বুঝায় যেটি সার্ভার থেকে কোন সেবা গ্রহণ করে।

যেমন- আপনি আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্টটি কোন মোবাইল বা কম্পিউটার দিয়ে পড়ছেন তাহলে আপনার মোবাইল বা কম্পিউটার হলো ক্লায়েন্ট।

আর আমাদের ওয়েবসাইটটি যেখানে আছে সেটি হলো ওয়েব সার্ভার।

মিডিয়া কিঃ 

কম্পিউটার নেটওয়ার্কে মিডিয়া (Media) হচ্ছে এমন একটি মাধ্যম যার সাহায্যে কম্পিউটারকে জুড়ে দেওয়া হয়।

বিদুৎতের তার, কো-এক্সিয়াল তার, অপটিক্যাল ফাইবার ইত্যাদি মিডিয়া হিসাবে কাজ করে।

তবে বর্তমানে তার বিহীন ওয়াই-ফাই(Wi-Fi) কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এ মিডিয়া হিসাবে ব্যবহৃত হয়।

নেটওয়ার্ক এডাপ্টার কিঃ 

কোন কম্পিউটারকে নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত করতে হলে নেটওয়ার্ক এডাপ্টার ( Network Adapter) ব্যবহার করতে হয়।

নেটওয়ার্ক এডাপ্টারকে নেটওয়ার্ক ইন্টারফেস কার্ড বা কন্ট্রোলার (Network interface controller) বলা হয়।

NIC মূলত কম্পিউটারকে মিডিয়ার সাথে কানেক্ট করে ডেটা ট্রান্সমিট করে।

রিসোর্স কিঃ 

ক্লায়েন্টকে ব্যবহারের জন্য যে সকল তথ্য – উপাত্ত বা সেবা দেওয়া হয় তাকে রিসোর্স বলে।

কম্পিউটার দিয়ে আমরা যখন ইন্টারনেট থেকে গেমস খেলার সফটওয়্যার ব্যবহার করি তা হলো রিসোর্স।

কেউ যদি তোমার কম্পিউটারে থাকা তথ্য নেটওয়ার্ক এর ব্যবহার করে তখন তোমার কম্পিউটারটি resource হবে।

এমনই আমরা যখন ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন আর্টিকেল বা ভিডিও দেখি সেগুলোও রিসোর্স।

ইউজার(User) কেঃ 

নেটওয়ার্কের মাধ্যমে যে ক্লায়েন্ট সার্ভার থেকে রিসোর্স ব্যবহার করে তাকে ইউজার বা ব্যবহারকারী বলা হয়।

প্রটোকল কিঃ 

একটি নেটওয়ার্ক কোন নিয়মে, কোন ভাষায় গঠিত হবে এসব নিয়ম-নীতি হলো প্রটোকল।

ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য আমরা ব্যবহার করি http মানে hyper text transfer protocol. প্রতিটি ওয়েবসাইটের নামের শুরুতে এটি দেখা যায়।

হাব কিঃ 

হাব ( Hub ) হল এমন একটি যন্ত্র যার সাহায্যে তথ্য বা উপাত্ত এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে পাঠানো যায়।

হাব বলতে ইন্টারনেট হাব বা নেটওয়ার্ক হাব বুঝালেও বর্তমানে USB হাবও দেখা যায়।

সাধারণত অনেকগুলো কম্পিউটার বা প্রিন্টার অথবা অন্য কোন ডিভাইস দিয়ে তারযুক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হাব ব্যবহার করা হয়।

তবে হাব ব্যবহারে সমস্যা হলো এতে কম গতি থাকে এবং সুবিধাও কম।

এছাড়াও একটি তথ্য পাঠালে তা নেটওয়ার্ককে থাকা সকল কম্পিউটার পায়। অর্থাৎ হাব নিদিষ্ট ঠিকানায় তথ্য পাঠাতে পারে না।

সুইচ কিঃ

হাবের মতোই সুইচ(Switch) একটি ক্ষুদ্র আইসিটি যন্ত্র।

হাবের সাথে সুইচের পার্থক্য হলো সুইচ তার সাথে যুক্ত সকল ডিভাইসকে আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে কিন্তু হাব সেটা পারে না।

সুইচ তার সাথে যুক্ত প্রতিটি ডিভাইসের জন্য আলাদা আলাদা ঠিকানা(MAC= Media Access Control Address) বরাদ্দ করে।

ফলে ঠিকানা অনুযায়ী যাকে প্রয়োজন তাকে দ্রুত গতিতে তথ্য প্রেরণ করা যায়। এসব সুবিধার জন্যই সুইচ জনপ্রিয়।

রাউটার কিঃ

নেটওয়ার্ক তৈরির কাজে রাউটার(Router) ব্যবহার করা হয়।

রাউটার একটি গুরুত্বপূর্ণ ডিভাইস যা হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যারের সমন্বয়ে তৈরি।

রাউটার নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়ে ডাটা প্যাকেট তার গন্তব্যে কোন পথে যাবে তা নির্ধারণ করে। ডেটা প্যাকেট হলো ডেটার ব্লক বা ডেটার সমষ্টি।

রাউটার Data প্যাকেটগুলোকে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য সবচেয়ে কম দূরত্বের পাথ(path) ব্যবহার করে।

অন্যান্য ডিভাইসঃ 

এছাড়াও আরোও অনেক নেটওয়ার্ক ডিভাইস রয়েছে যেমনঃ মডেম, ল্যান কার্ড, রিপিটার, গেটওয়ে ইত্যাদি।

সহজ ভাষায়, কম্পিউটারগুলোর পারস্পরিক যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বলে।

নেটওয়ার্ক চার প্রকার। যে লেআউট ব্যবহার করে নেটওয়ার্ক গঠন করা হয় তা হলো টপোলজি।

নেটওয়ার্ক তৈরি করতে যে সকল জিনিস লাগে তাই ডিভাইস।

গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন ও উওর

০১।কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি?

যখন দুইবা ততোধিক কম্পিউটারকে কোন উপায় বা মাধ্যমে ব্যবহার করে একসঙ্গে যুক্ত করে দেওয়া হয় তখন তাকে বলা হয় কম্পিউটার নেটওয়ার্ক।

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদান করা হয়।

 ০২।কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কত প্রকার?

কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ৪ প্রকার। যথা:

০১) LAN (Local Area Network)

০২) MAN (Metropolitan Area Network)

০৩) WAN (Wide Area Network)

০৪) PAN (Personal Area Network)

০৩।ইন্টারনেট কি?

ইন্টারনেট হচ্ছে ইন্টারকানেক্টেড নেট্ওয়ার্ক (interconnected network) এর সংক্ষিপ্ত রূপ।

এটা বিশেষ গেটওয়ে বা রাউটারের মাধ্যমে কম্পিউটার নেটওয়ার্কগুলো একে-অপরের সাথে সংযোগ করার মাধ্যমে গঠিত হয়। ইন্টারনেটকে প্রায়ই নেট বলা হয়ে থাকে।

০৪।কম্পিউটার নেটওয়ার্কের কয়টি উপাদান থাকে?

কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাধারণত তিনটি উপাদান থাকে। যেমন:

০১) অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার।

০২) নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার।

০৩) নেটওয়ার্ক হার্ডওয়ার।

০৫।কত সালে প্রথম কম্পিউটার নেটওয়ার্ক চালু হয়?

ইন্টারনেটের ভিত্তি 1960 সালে ARPANET (অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি নেটওয়ার্ক) নামে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে মার্কিন সরকারের প্রতিরক্ষা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত হয়েছিল।

০৬। Wan এর উদাহরণ কোনটি?

WAN-এর পূর্ণরূপ হচ্ছে Wide Area Network। যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক অনেক বড় ভৌগোলিক অবস্থান জুড়ে থাকে, তাকে ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক বলে।

সাধারণত বিশ্বের বিভিন্ন শহরে অবস্থিত LAN বা MAN বা অন্য কোনো কম্পিউটার ডিভাইসও এ নেটওয়ার্কে সংযুক্ত থাকতে পারে।

পৃথিবীর সবচেয়ে বড় WAN-এর উদাহরণ হলো ইন্টারনেট।

০৭। নেটওয়ার্ক টপোলজি কত প্রকার কি কি?

নেটওয়ার্ক টপোলজির প্রকারভেদ-

*বাস টপোলজি

*রিং টপোলজি

*স্টার টপোলজি

*ট্রি টপোলজি

*হাইব্রিড টপোলজি

*মেশ টপোলজি

শেষ কথা

আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করেছি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কি এবং এর প্রকারভেদ সম্পর্কে।

আশা করছি আজকের পোস্টের মাধ্যমে পুরো বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন।

যদি কারো কোন কিছু জিজ্ঞাসার থাকে অবশ্যই আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না।

আশা করি সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *