ভিপিএন কী, ব্যবহারের সুবিধা ও অসুবিধা

ভিপিএনের পূর্ণ রূপ হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক।

ছবি: ডিজিটাল ট্রেন্ডস অনলাইনে ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা ও অপ্রবেশযোগ্য কনটেন্ট দেখার ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশে গুরুত্বপূর্ণ টুল হয়ে উঠেছে ‘ভিপিএন’।

ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে নব্বইয়ের দশকে ভিপিএনের আবির্ভাব ঘটলেও এটি এখন কতটা নিরাপদ, তা জানা জরুরি। 

ভিপিএন কী ?

ভিপিএনের পূর্ণ রূপ হচ্ছে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক।

ভিপিএন ইন্টারনেটের ভার্চুয়াল ‘টানেল’-এর মাধ্যমে কম্পিউটার থেকে এক বা একাধিক নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে। ভিপিএন স্থানীয় আইপি অ্যাড্রেস লুকিয়ে ফেলে।

এর ফলে মনে হয় অন্য কোনো দেশ বা অঞ্চল থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন ব্যবহারকারীরা।

ফলে অপ্রবেশযোগ্য প্ল্যাটফর্মগুলো ব্যবহার করা যায়। 

এটি মূলত ব্যক্তিগত ডেটা এনকোড করে এবং পুনরায় রুট করে।

আপনার তথ্য প্রথমে দুর্গম সার্ভারে পাঠানো হয় এবং তারপরে উদ্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠানো হয়।

ডেটা এমনভাবে এনক্রিপ্ট করা হয়, যেন কেউ সেটি দেখতে চাইলে কিছুই বুঝতে পারবে না।

এই প্রক্রিয়া ব্রাউজিং ও অ্যাপের বিভিন্ন কার্য কলাপের ডেটা লুকিয়ে রাখে। হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জারে কে নজরদারি করা যায়।

স্ট্রিমিং, গোপনীয়তা, গেমিং, ভ্রমণ এবং নিষিদ্ধ সাইট ও কনটেন্ট দেখতে ভিপিএন ব্যবহার করা হয়।

শুরুতে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়েও এটি ব্যবহার করা হচ্ছে। 

ভিপিএন ব্যবহারের সুবিধা :

অনলাইনে গোপনীয়তা রক্ষা, অনলাইনে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম আপনার ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।

এসব ডেটা বা তথ্য অন্য কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেয়।

তবে ভিপিএন ব্যবহার করলে তথ্য চুরি করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।

পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবহারের মাধ্যমেও ব্যবহারকারীর পাসওয়ার্ড, লগ-ইন ক্রেডেনশিয়ালস, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বিবরণ, ক্রেডিট কার্ডের তথ্য এবং ব্যক্তিগত সংবেদনশীল তথ্য হ্যাকারদের কাছে চলে যেতে পারে।

ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে এসব ক্ষেত্রে একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা পাওয়া যায়।

পরিচয় গোপন রেখে ইন্টারনেট ব্যবহার ভিপিএন ব্যবহারকারীর আইপি অ্যাড্রেস ও ভৌগোলিক অবস্থান গোপন রাখে।

ফলে বিভিন্ন ওয়েবসাইট, বিজ্ঞাপনদাতা ও অনলাইন ট্র্যাকারের কাছে ভিপিএন ব্যবহারকারীর পরিচয় গোপন থাকে।

নজরদারি সফটওয়্যার থেকে মুক্তির উপায় কী?

অন্য দেশের কনটেন্ট দেখা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম দেশভিত্তিক বিশেষ টিভি সিরিজ, মুভির মতো কনটেন্ট থাকে।

যে গুলো অন্য দেশ থেকে দেখা যায় না। ভিপিএন ব্যবহার করলে নিজের ডিভাইসের লোকেশন বা ভৌগোলিক অবস্থান পরিবর্তন করা যায়, ফলে সেই দেশের বিশেষ বিশেষ কনটেন্টগুলো উপভোগ করা যায়।

এ ছাড়া কোনো দেশের সরকার বা আইএসপি কিছু নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করে রাখতে পারে।

ভিপিএন ব্যবহার করার মাধ্যমে সেসব ওয়েবসাইটেও প্রবেশ করা যায়। 

ভিপিএনের অসুবিধা :

ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া ভিপিএন ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অসুবিধা হলো, ইন্টারনেটের গতি কমে যাওয়া।

যেহেতু ভিপিএন বিভিন্ন দুর্গম সার্ভারের মধ্যে ডেটা পাঠায়, তাই ব্রাউজিংয়ের সময় ইন্টারনেটের কম গতি পাওয়া যায়। 

বিধিমালা চূড়ান্তের আগে সাইবার নিরাপত্তা আইন সংশোধনের দাবি :

সাইবার নিরাপত্তা সত্যিকারের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুবিধার কথা উল্লেখ থাকলেও ভিপিএন সেবা দাতার হাত ধরেই তা বিঘ্নিত হতে পারে; বিশেষ করে বিনা মূল্যে যেসব ভিপিএন ব্যবহার করা হয়, সেগুলো অতটা নিরাপদ নয়।

ভিপিএন টুল ডাউনলোড করার সময় মোবাইল বা কম্পিউটারের নিয়ন্ত্রণসহ ফেসবুক, ইমেইলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যাবতীয় নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে ভিপিএন সেবাদাতার কাছে। 

খরচ :

নিরাপত্তার জন্য পেইড ভিপিএন ব্যবহার করা ভালো। তবে প্রিমিয়াম ভিপিএন সেবায় বিভিন্ন উন্নত ফিচার ও উচ্চ গতির সার্ভার ব্যবহারের সুবিধা থাকায় এগুলোর ফি অনেক বেশি। 

কারিগরি জটিলতা অনভিজ্ঞ ব্যবহারকারীর জন্য ভিপিএন জটিল মনে হতে পারে; বিশেষ করে এনক্রিপশন প্রটোকল, সার্ভার বাছাই ও ‘টানেলিং’ আলাদা করার মতো বিভিন্ন উন্নত ফিচার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকের ধারণা নেই।

আর ইন্টারনেট ভিপিএনের সঙ্গে সব সময় সংযুক্ত হতেও চায় না, তখন বারবার চেষ্টা করতে হয়।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *