ইউটিউবে সফল হতে করণীয়
বেশ কয় বছর আগে মজার ছলে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার প্রচলন থাকলেও বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম সার্চ ইঞ্জিনে পরিণত হয়েছে ইউটিউব।
দিনে দিনে ভিউয়ার ও এডভার্টাইজার বাড়ার সাথে সাথে একটি ওয়ান-স্টপ এন্টারটেইনমেন্ট প্ল্যাটফর্ম হয়ে গিয়েছে ইউটিউব।
জন প্রিয়তার কারণে ইউটিউব প্ল্যাটফর্মে প্রচুর প্রতিযোগিতা রয়েছে। ইউটিউবে শুধুমাত্র ভিডিও আপলোড করে সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়।
এই পোস্টে জানবেন ইউটিউবে সফলতা অর্জন কিভাবে করা সম্ভব সে সম্পর্কে বিস্তারিত।
প্রথমত আপনার কাছে ইউটিউবে সফলতা এর মানে কি, তা জানতে হবে।
আপনি কিসের জন্য ভিডিও তৈরী করে ইউটিউবে পোস্ট করবেন, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার বিষয়টি প্রথমেই ঠিক করে নিন।
আপনি কি চান অনেক মানুষ আপনার ভিডিও দেখুক? তাহলে ভিডিও ভিউস হলো আপনার প্রধান লক্ষ্য।
আবার আপনার লক্ষ্য হতে পারে আপনার ভিউয়ারদের অন্য ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানানো ও সেখান থেকে কোনো অ্যাকশন গ্রহণে উদ্ধুদ্ধ করা।
আবার আপনার ব্যান্ড সম্পর্কে সম্ভাব্য কাস্টমারদের জানাতেও ইউটিউব ব্যবহার করা যেতে পারে।
তাই প্রথমে আপনি লক্ষ্য ঠিক করুন ও তারপর সে অনুসারে পরিকল্পনা করে ইউটিউব কনটেন্ট প্ল্যানিং করুন।
কিওয়ার্ড রিসার্চ :
ইউটিউবে অসাধারণ কনটেন্ট তৈরী করার সমান গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো কিওয়ার্ড রিসার্চ করা।
কিওয়ার্ড রিসার্চ না করলে ভালো ভিডিও তৈরী করলেও তা উপযুক্ত অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাবে না।
তাই আগে জানতে হবে মানুষ কি ধরনের ভিডিও দেখছে, কি বিষয়ে সার্চ করছে।
অবশ্যই আপনি চাইলে ইউনিক টপিকে ভিডিও তৈরী করতে পারেন, কিন্তু ইউটিউবে যাত্রা যখন প্রথম শুরু করবেন তখন কোনো ধরনের নতুন ধাচের টপিকে ভিডিও তৈরী না করাই ভালো।
চ্যানেল ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করলে তারপর আপনার ইউনিক টপিকের ভিডিও দর্শকের সামনে নিয়ে আসতে পারেন।
তবে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ আপনার নিজের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে।
ইউটিউবে যাত্রার শুরুর দিকে কিওয়ার্ড রিসার্চ এর মাধ্যমে অরগানিকভাবে বেশ বড় অডিয়েন্স পাওয়া সম্ভব হয়।
প্রতিযোগিতা যাচাই করুন :
আপনার খুঁজে নেওয়া কিওয়ার্ডগুলো সার্চ করে দেখুন এবং কি ধরনের ভিডিও মানুষ দেখছে ও র্যাংক করছে তা বিশ্লেষণ করুন।
সেরা ভিডিওগুলোর কনটেন্ট যাচাই করুন ও এর থেকে শিক্ষা নিয়ে আরো ভালো কনটেন্ট তৈরীর চেষ্টা করুন।
অন্যদের কনটেন্ট এর তথ্য ব্যবহার করে আপনার কনটেন্টকে আরো অসাধারণ করে তুলতে পারেন।
তবে কপি পেস্ট করলেই সমস্যায় পড়বেন। সেকথা আগেই জানিয়ে দিচ্ছি! 👉 ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম জানুন।
অসাধারণ কনটেন্ট তৈরী করুন :
চাইলেই কিন্তু ভাইরাল কনটেন্ট তৈরী করা সম্ভব নয়। তবে আপনি আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে পারেন অসাধারণ কনটেন্ট তৈরীতে।
আপনার অডিয়েন্স উপভোগ করবে ও তাদের মনোযোগ ধরে রাখা যায় এমন ভিডিও তৈরী করুন।
কোনো ভিডিও তৈরীর সময় তা আপনার কাছে ভালো মনে হওয়া যথেষ্ট নয়৷
আপনাকে একজন দর্শকের দৃষ্টিকোণ থেকে আপনার ভিডিওগুলোকে যাচাই করতে হবে।
সম্ভব হলে ভিডিও এর মান যাচাই করুন বন্ধু ও পরিবারের সাহায্যে।
👉 ইউটিউব থেকে আয় করার উপায় :
সঠিকভাবে ভিডিও এসইও করা :
ভালো ভিডিও তৈরী করে ইউটিউবে পোস্ট করলে অটোমেটিক ভিউস আসবে, এমন ভাবা বোকামি।
ইউটিউব কিন্তু কোনো মানুষ ম্যানুয়ালী নিয়ন্ত্রণ করেনা, এটি মেশিন নিয়ন্ত্রিত একটি অটোমেটিক এলগরিম অনুসরণ করে ৷
আর আপনার ভিডিওতে কি আছে, তা এই মেশিন বা এলগরিদম জানবে আপনার ভিডিও এর মেটা ট্যাগ, অর্থাৎ টাইটেল, ডেসক্রিপশন, থাম্বনেল, ক্যাটাগরি, ট্যাগ, ইত্যাদি বিষয় হতে।
তাই সঠিকভাবে ইউটিউব সার্চ ইঞ্জিনের ভিডিও অপটিমাইজ বা এসইও করা ইউটিউবে সফলতা অর্জনের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ।
চ্যানেল সাজানো :
ইউটিউব চ্যানেল সাজানো কিন্তু ইউটিউবের সফলতার একটি অনন্য অংশ।
ভিডিও এর নিচে প্রয়োজনীয় লিংক প্রদান করা, সোর্স সম্পর্কে জানানো, সাবস্ক্রাইব করতে বলা, ইত্যাদি খুব সাধারণ বিষয় মনে হলেও আসলে ইউটিউবে সফলতা অর্জন করতে এসব বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রতি ভিডিওতে আপনার অন্য ভিডিও সম্পর্কে দর্শককে জানান, এতে উক্ত ভিউয়ার প্রথমবারের মত আপনার চ্যানেল দেখলে সে ক্ষেত্রে অন্য ভিডিও ও চেক করবেন।
👉 ইউটিউব শর্টস থেকে আয় করার উপায় :
আপনার কোনো ভিডিও ভালো লাগলে কেউ আপনার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করবে, এরপর অবশ্যই তারা আপনার চ্যানেল ঘুরে আসবে ।
এরপর উক্ত ভিউয়ারের কি কনটেন্ট দেখা উচিত তা আপনি যদি সুন্দরভাবে সাজিয়ে রাখেন চ্যানেলে, তবে ভিউয়ার আপনার ভিডিও দেখতে থাকবে।
অর্থাৎ একজন সাবস্ক্রাইবারকে পরবর্তী কনটেন্ট দেখতে উদ্ধুদ্ধ করার দায়িত্ব সম্পূর্ণ আপনার।
সংযোগ স্থাপন :
ইউটিউবের কমেন্ট সেকশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার ভিডিওতে আসা মূল্যবান কমেন্টের রিপ্লাই করতে ভুলবেন না।
আপনার কমেন্ট প্রমাণ করবে যে আপনার কাছে ভিউয়ারের মতামতের প্রাধান্য রয়েছে।
এছাড়া সাবস্ক্রাইবারদের সাথে ভালো সম্পর্ক স্থাপন করলে তারা অন্যদের আপনার ভিডিও দেখতে বলতে পারে।
এতে বেশ সহজে চ্যানেল বড় করা যায় সুসম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার :
ইউটিউবে সফলতা অর্জনের চেষ্টায় থাকলে অবশ্যই সোশ্যাল মিডিয়ার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত।
সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনার প্রোফাইল বা পেজে আপনার ভিডিও এর প্রচারণা চালাতে পারেন।
এছাড়াও আপনার বন্ধু বা পরিবারের সদস্যরা ভিডিও তাদের সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করলে বেশ সহজে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হয় অল্প সময়ের মধ্যে।
পুনরায় যাচাই-বাছাই করা :
পূর্বে গ্রহণ করা সকল সিদ্ধান্ত থেকে শিক্ষা নিতে পারেন। কেনো আপনার কোনো ভিডিও ভালো পারফর্ম করেছে ও অন্য ভিডিও তেমন ভালো করেনি, তা বিবেচনা করুন।
এক জন সফল ইউটিউবার তার ভুল থেকে শিক্ষা নেন ও সঠিক পদক্ষেপ গুলোকে আরো ভালোভাবে ব্যবহার করেন।
তাই ইউটিউবে সফল হতে চাইলে অবশ্যই আপনার পূর্বের কর্মকান্ডকে কাজে লাগাতে পারেন রেফারেন্স হিসেবে।