গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় – সেরা ১০ উপায়
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করার উপায় সমূহ সম্পর্কে জানতে হবে।
যারা গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখছেন, গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করতে চান, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় জানতে চান।
এই পোস্টটি তাদের জন্য। আলোচনায় থাকছে গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার জনপ্রিয় এবং সহজ উপায় সমূহের তালিকা এবং বিস্তারিত।
অনলাইনে প্রবেশ করলেই আমাদের চোখের সামনে কত ডিজাইন-ই না সামনে আসে, এসব আকর্ষনীয় কারা করে বলুন তো! হ্যা গ্রাফিক্স ডিজাইনার ( Graphic Designer )!
বর্তমান যুগে একাডেমিক সার্টিফিকেট এর পাশাপাশি দুই-একটা স্কিল থাকা অত্যন্ত জরুরি।
কেননা আপনি যত বড় ডিগ্রিধারীই হন না কেন দিন শেষে আপনার কাজের দক্ষতা না থাকলে সফল হওয়া প্রায় অসম্ভব।
আর দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি যদি আপনি ক্রিয়েটিভও হন তাহলে তো কোনো কথাই নেই, সফলতা আসবেই।
তাই ক্রিয়েটিভ মানুষদের জন্য ওয়েব ডেভলপ- মেন্ট কিংবা গ্রাফিক্স ডিজাইন হতে পারে সফলতার টার্মকার্ড।
আপনি যদি ভালো ড্রয়িং পারেন, যদি বিভিন্ন কালার কম্বিনেশন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে, আর সুন্দর সুন্দর ক্রিয়েটিভ আইডিয়া আপনার মাথায় ঘুরপাক খায়।
যদি থাকে সুন্দর ডিজাইন কাঠামোর সাথে আকর্ষণীয় রঙ মিশ্রণের প্রতিভা! তবে হ্যাঁ, আপনার জন্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন। শুধু আপনার ক্রিয়েটিভ ভাবনাগুলোকে কম্পিউটারাইজড করতে হবে।
তার মানে এই না যে শুধু প্রতিভা নিয়ে জন্মানো মানুষের জন্যই এ সুযোগ। গ্রাফিক্স ডিজাইনের যে কোনো সেক্টরে আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারলেই আপনি সফল হতে পারবেন। এক্ষেত্রে দক্ষতাটাই মেইন আর প্রতিভা হচ্ছে প্লাস পয়েন্ট।
তবে আপনাকে অবশ্যই ক্রিয়েটিভিটি ডেভলপ করতে হবে, তাহলেই আপনি একজন ভালো গ্রাফিক্স ডিজাইনার হয়ে উঠবেন এবং আয় করতে পারবেন বেশ মোটা অংকের টাকা।
পূর্বে আমরা আলোচনা করেছিলাম কিভাবে পডকাস্টিং করে আয় করা যায়।
আজ আলোচনা করবো, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায়, এবং গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করার উপায় কোনগুলো।
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে টাকা আয় করার উপায় :
১) UI & UX গ্রাফিক্স ডিজাইন,
২) অ্যাপস, ওয়েব ডিজাইন করে ইনকাম,
৩) ফন্ট, টেমপ্লেট গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয়,
৪) লোগো ডিজাইন করে আয়,
৫) টি-শার্ট ও মগ ডিজাইন বিক্রি করে আয়,
৬) পোস্টার, ব্যানার ও লেবেল ডিজাইন করে আয়,
৭) কভার ফটো ডিজাইন থেকে আয়,
৮) বিজনেস কার্ড/ক্যালেন্ডার/ফুড মেন্যু ডিজাইন,
৯) অনলাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রতিযোগিতা,
১০) ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে শেষ কথা :
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায়?
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় এই বিষয়ে ধারণা দেওয়ার জন্য SimplyHired.com সহায়ক স্যালারি অনুমান করার চেষ্টা করেছে:
গ্রাফিক ডিজাইনারের অভিজ্ঞতা
আয় (বাৎসরিক)
ইন্টার্ন গ্রাফিক্স ডিজাইনার
$25,291
গ্রাফিক্স ডিজাইনার
$38,310
সিনিয়র গ্রাফিক্স ডিজাইনার
$55,149
সিনিয়র ডিজাইনার
$83,312
আর্ট ডিরেক্টর
$76,602
ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর
$108,833
ইনস্ট্রাকশনাল ডিজাইনার
$60,294
ওয়েব ডিজাইনার
$61,970
ভিজ্যুয়াল ডিজাইনার
$77,109
ইউজার ইন্টারফেস ডিজাইনার
$80,712
এটা আমেরিকান ওয়েব ডিজাইনার যারা কোন কোম্পানীতে পার্মানেন্ট জব করেন, তাদের গড় বাৎসরিক ইনকাম।
এখন, আপনি বাংলাদেশে যখন কোন কোম্পানীর হয়ে কাজ করবেন, তখন অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার ভিত্তিতে মাসিক ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন পাবেন।
তাছাড়া, ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করলে প্রতিটি প্রজেক্ট এর জন্য ১০০ থেকে ১০০০ ডলার পেতে পারেন।
এছাড়া, অনলাইন কোর্স করানো, স্টক মার্কেটে গ্রাফিক্স ডিজাইন বিক্রি করে আয় করার উপায় তো থাকছেই।
আশা করি, গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে আপনি এখন একটি ভালো ধারণা পেয়েছেন।
তবে আপনি কত টাকা আয় করবেন তা নির্ভর করছে গ্রাফিক্স ডিজাইনের কোন কাজটি বেছে নিচ্ছেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে টাকা আয় করার উপায় :
গ্রাফিক্স ডিজাইন ছোট্ট গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ কোনো বিষয় নয়। এটি একটি বিস্তর বিষয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের বিশাল এরিয়ায় অসংখ্য কাজ রয়েছে যা গনে শেষ করা যাবে না। তার মধ্যে থেকে সব চেয়ে ইফেক্টিভ এবং জনপ্রিয় কিছু কাজ নিয়ে আজ আলোচনা করবো।
কঠিন কাজগুলো দিয়ে যাত্রা শুরু করে ধীরে ধীরে সহজ কাজের দিকে যাবো।
এখানে উপর দিকে কঠিন কাজগুলো নিয়ে আলোচনা শুরু করে ক্রমাগত সহজ কাজগুলো শেষের দিকে আলোচনা করা হবে।
কারণ, সবাই শুধু সহজ রাস্তা খোঁজে কিন্তু, কঠিন রাস্তাগুলোর খোঁজও রাখা চাই।
আগে তেতো খেয়ে পরে মিঠা খাওয়া যেমন ভালো তেমনি শুরুতে কঠিন কাজ গুলো জেনে নিলে পরে সহজ কাজগুলো আরও সহজ লাগবে।
যারা কঠিন কাজের চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত কিংবা সহজ কাজ করে টাকা ইনকাম করতে চান উভয়ের জন্যই আজকের আলোচনাটি ফলপ্রসূ হবে আশা করছি।
০১) UI & UX গ্রাফিক্স ডিজাইন
গ্রাফিক্স ডিজাইনের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর মধ্যে একটা হলো UI & UX ডিজাইন। UI বা User interface হচ্ছে কোনো অ্যাপের বাহ্যিক ফেস বা আউটলুক।
অর্থাৎ, প্রাথমিকভাবে অ্যাপ্সটির একটি বাহ্যিক সৌন্দর্য বা বাহ্যিক চেহারা, যা ঐ অ্যাপ্সটির প্রতি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। যেটা দেখে একজন ইউজার ঐ অ্যাপ্সটি ইউজ করতে আগ্রহী হবে।
অপরদিকে UX বা User experience হচ্ছে কোনো একটি অ্যাপ্স কিংবা একটি সফটওয়্যার কোনো ইউজার কতটা সহজে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবহার করতে পারবে তা ঠিক করে দেওয়া।
যাতে ইউজারকে সন্তুষ্ট করা যাবে এবং বেশিক্ষণ ধরে ঐ সফটওয়্যার বা অ্যাপ্সটির মধ্যে তার মনোযোগ ধরে রাখা যায়।
যেহেতু এখন নিত্য নতুন বিভিন্ন অ্যাপ্স, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার বের হচ্ছে তাই এই UI ও UX এর চাহিদাও ব্যাপকভাবে বাড়ছে।
কারণ কোনো একটি ওয়েবসাইট বা অ্যাপ্স তৈরিকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য থাকে ইউজারকে সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করা।
তাদেরকে নানান ফিচারস দিয়ে তাদের আস্থা ও মনোযোগ ধরে রাখা। তাই UI / UX ডিজাইন এর কাজ করে যে কেউ সহজেই ঘরে বসে আয় করতে পারেন।
২) অ্যাপস, ওয়েব ডিজাইন করে ইনকাম :
আপনি যদি UI / UX design এর মতো হাই লেভেলের কাজ না করে তুলনামূলক একটু সহজ কাজ করতে চান তাহলে এই পয়েন্টটি আপনার জন্য।
আপনি চাইলে বিভিন্ন কোম্পানির ওয়েবসাইট ডিজাইন করে দিতে পারেন। বর্তমানে ওয়েব ডিজাইনের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে।
এছাড়া অনলাইন বিজনেসও দিনে দিনে ব্যাপক বৃদ্ধি পাচ্ছে যার ফলে সব প্রতিষ্ঠানই তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইট বানাতে চায়, যাতে ইউজাররা তাদের ওয়েবসাইটে এসে সাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারে।
কাজেই বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট ডিজাইন করেও ঘরে বসেই ইনকাম করা খুব একটা কঠিন হবে না যদি আপনার ধৈর্য আর ইচ্ছার কমতি না থাকে।
০৩) ফন্ট, টেমপ্লেট গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় :
আপনি যদি নিজের সৃজনশীলতা কাজে লাগিয়ে নতুন নতুন ডিজাইন টেমপ্লেট বা ফন্ট বানাতে পারেন তাহলে সেটাই আপনার ইনকামের দরজা খুলে দিবে।
ফন্ট ডিজাইনের কথাই বলি, এটি বর্তমানে বেশ বড়ো একটি বিজনেস।আপনার যদি নতুন আঙ্গিকে কোনো বর্ণ/ শব্দ লেখার সৃজনশীলতা থাকে তাহলে সহজেই ফন্ট ডিজাইন ও বিক্রি করে আয় করতে পারবেন।
ETSY হলো জনপ্রিয় একটি ফন্ট ডিজাইন সাইটের নাম যেখানে রয়েছে প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ।
অর্থাৎ এখানে আপনার একটা ফন্ট যতবার বিক্রি হবে আপনি ততবার টাকা পাবেন।
আপনি বিভিন্ন ধরনের টেমপ্লেট ডিজাইন করতে পারেন। যেমন – ওয়ার্ডপ্রেস টেমপ্লেট, ওয়েব টেমপ্লেট ইত্যাদি।
শুধু টেমপ্লেট তৈরি করে বিক্রি করার মাধ্যমেই আপনি টাকা আয় করতে পারেন। অনলাইনে এরকম অনেক সাইট রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে টেমপ্লেট কেনা-বেচা করা যায়।
এক্ষেত্রেও কিছু কিছু সাইট থেকে প্যাসিভ ইনকাম করার সুযোগ আছে।
০৪) লোগো ডিজাইন করে আয় :
এতক্ষণ যেগুলো বলেছি তার মধ্যে সবচেয়ে মজার একটি কাজ হলো লোগো ডিজাইন করা। এটি তুলনামূলক সহজ এবং এর ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে বর্তমানে।
আজকাল বিভিন্ন কোম্পানির জন্য লোগো একটি অত্যাবশ্যকীয় অবজেক্ট হয়ে গেছে। এটি একটি কোম্পানির আইডেন্টিটি বহন করে।
লোগো দেখে কোম্পানি সম্পর্কে কিছুটা প্রাথমিক ধারণা লাভ করা যায়। অনলাইনে লোগো ক্রয়-বিক্রয়ের অসংখ্য সাইট রয়েছ যেখানে নিজের তৈরি লোগো বিক্রি করে এককালীন কিংবা প্যাসিভ উভয় ধরণের ইনকামই করা যায়।
তবে ইদানিং অনলাইনে লোগো তৈরির প্রতিযোগিতাও বেশ সাড়া ফেলেছে। সেসব প্রতিযোগিতায় অংশ নিলে এসংক্রান্ত নলেজ বাড়ে আর জিততে পারলে তো কথাই নেই।
০৫) টি-শার্ট ও মগ ডিজাইন বিক্রি করে আয় :
গ্রাফিক্স ডিজাইনের সবচেয়ে সহজ ও জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হলো টি-শার্ট ও মগ ডিজাইন। আপনি যে কোনো একটি অথবা উভয়ই করতে পারেন।
টি-শার্ট ডিজাইনের চাহিদা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। আপনি চাইলে যে কোনো দেশি-বিদেশি কোম্পানির টি-শার্ট বা মগ ডিজাইন করে দিতে পারেন অথবা নিজের ডিজাইন করা টি-শার্ট বা মগ বিক্রি করে নিজের প্রতিষ্ঠান চালাতে পারেন।
টি-শার্ট ডিজাইন বিক্রি করার জনপ্রিয় কিছু সাইট হলো – Redbubble, Threadless, Teespring
৬) পোস্টার, ব্যানার ও লেবেল ডিজাইন করে আয় :
এবার আসি পোস্টার ও ব্যানার ডিজাইন নিয়ে। আজকাল অনেক অনলাইন বা অফলাইন প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন ইভেন্টে পোস্টার / ব্যানার যেনো না হলেই নয়।
একটি পোস্টারে সুন্দর করে ইভেন্টের সময়, অতিথিদের নাম, ইভেন্টের বিভিন্ন কার্যাবলির কথা শর্টকাটে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা থাকে। তাই এর চাহিদাও ব্যাপক হারে বাড়ছে।
আবার প্রতিনিয়ত নানাবিধ কোম্পানির প্রোডাক্টের জন্য লেবেল তৈরি একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছে।
লেবেল ছাড়া প্রোডাক্ট আর ডিজাইন ছাড়া লেবেল আর গ্রাফিক্স ডিজাইনার ছাড়া ভালো ডিজাইন তো ভাবাই যায় না।
তাহলে বুঝতেই পারছেন এ ক্ষেত্রেও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আয় করতে পারবেন।
৭) কভার ফটো ডিজাইন থেকে আয় :
এই আধুনিক যুগে সৃজনশীলতার কদর যেমন বাড়ছে তেমনি সৃজনশীলতার ছোঁয়া যেন প্রতিটি সেক্টরের মানুষেরই কাম্য।
এমনকি ডিজিটাল বুক কিংবা ই-বুকেও লেগেছে সেই ছোঁয়া। দেখা যায় যে, ই-বুক, ম্যাগাজিন কিংবা প্রিন্টেড বইয়ের আকর্ষণীয় প্রচ্ছদ সহজেই পাঠককে আকৃষ্ট করে। কারণ কথায় আছে, “আগে দর্শনধারী, পরে গুণ বিচারি”
তাই পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সুন্দর ডিজাইনের বুক কভারের কোনো বিকল্প নেই আর তার জন্য অবশ্যই দরকার পড়বে একজন সৃজনশীল গ্রাফিক্স ডিজাইনারের।
আর এটাই হয়তো আপনার জন্য একজন গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আয় করার অন্যতম উপায় হতে পারে।
৮) বিজনেস কার্ড/ ক্যালেন্ডার/ ফুড মেন্যু ডিজাইন :
গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে আয় করার আরও একটি সহজ উপায় হলো বিজনেস কার্ড, ক্যালেন্ডার, রেকর্ড কার্ড, ফুডমেনু ইত্যাদি ডিজাইন করে আয় করা।
অনলাইন কিংবা অফলাইনে যে কোনো ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিজনেস কার্ড ডিজাইন করে আয় করাটা তুলনামূলক সহজ।
এ ছাড়াও বিভিন্ন যারা ফুড বিজনেস করেন তাদের জন্য ফুডমেনু একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ অবজেক্ট।
কারণ এটা দেখেই কাস্টমাররা তাদের পছন্দের খাবার অর্ডার করে থাকে।
তাই বিভিন্ন খাবারের ছবি ও দাম সম্বলিত সুন্দর ও চিত্তাকর্ষক মেনুকার্ড যদি আপনি বানাতে পারেন তাহলে এটা আপনার জন্য আরেকটা সহজ উপায় হবে ইনকামের।
কিন্তু লং টাইম টাকা ইনকামের জন্য এই রাস্তাটা খুব একটা পারফেক্ট না আমি বলবো।
তবে হালকা পাতলা ইনকামের জন্য কিংবা সহজ কাজ দিয়ে শুরু করার জন্য আবার এটা ঠিক আছে।
আপনি প্রথমে বিজনেস কার্ড ডিজাইন বা রেকর্ড কার্ড কিংবা ফুডমেনু ডিজাইন দিয়ে শুরু করে এরপর আস্তে আস্তে আপনি টি-শার্ট, লোগো ডিজাইন এর দিকে যেতে পারেন।
৯) অনলাইন গ্রাফিক্স ডিজাইন প্রতিযোগিতা :
গ্রাফিক্স ডিজাইনের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েও আপনি আয় করতে পারেন। বিভিন্ন সাইটে লোগো ডিজাইন, টি-শার্ট সহ নানাবিধ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে জিতলে শত শত ডলার পুরস্কার পাওয়া যায়।
তবে প্রথমদিকে আপনি হয়তো জিততে পারবেন না তবে আপনার অভিজ্ঞতা বাড়বে, আপমি নতুন নতুন জিনিস শিখতে পারবেন, অন্যান্য প্রতিযোগীদের ডিজাইনগুলো দেখে নতুন নতুন আইডিয়া পাবেন এবং ধীর ধীরে আপনার কাজের উন্নতি হবে। ফলে পরবর্তী প্রতিযোগিতা গুলোতে ভালো করতে পারবেন।
তবে এখানে লং টাইম ইনকামের সুযোগও নেই। আপনি হয়তো অনেকগুলো প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে একটা/ দুইটাতে জিততে পারবেন।
তবে এক্ষেত্রে আপনার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে, যা আপনাকে পরবর্তীতে কোনো লং টাইম আয়ের পথ দেখাবে।
১০) ফ্রিল্যান্স গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয়
উপরের আলোচনায় আমরা যতোগুলো কাজের কথা আলোচনা করেছি সবগুলো কাজ আপনি বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং সাইটে গিয়েও করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আপনার ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন করতে হবে।
তাছাড়া আপনি কি ধরনের কাজ করতে চান, বা আপনার দক্ষতা সম্বলিত গিগ প্রকাশ করেও কাজ পেতে পারেন। গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ পাওয়া যায় এমন কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট হলো :
Freelancer
Upwork
Fiverr
Guru.com
99designs
গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় সে বিষয়ে শেষ কথা :
গ্রাফিক্স ডিজাইন থেকে আয় করার উপায় নিয়ে উপরের প্রত্যেকটি পয়েন্টই কোনো না কোনোভাবে আপনার জন্য হেল্পফুল।
আপনার সুবিধামতো যে কোনোটি দিয়েই গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজ শুরু করতে পারেন।
পছন্দমতো যেকোনো বিষয়ের ওপর অনলাইন বা অফলাইন ফ্রি অথবা পেইড কোর্স কিংবা ইউটিউব ভিডিও দেখে শিখে নিতে পারেন।
তারপর, ছোটো ছোটো কাজের মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে নিন। হাল না ছেড়ে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকলে তবেই আপনি সফল হতে পারবেন।
ডিজিটাল এই যুগের সবকিছুই ডিজিটালাইজড হচ্ছে আর সেই সাথে পাল্লা দিয়ে গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের চাহিদাও তরতরিয়ে বাড়ছে।
তাই আপনি যদি আপনার দক্ষতা আর সৃজনশীলতার সাথে ধৈর্যের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে চেষ্টা করে যেতে পারেন, তাহলে আপনার সাফল্য সুনিশ্চিত।
মনে রাখতে হবে, কোনো কিছুই সহজ নয়। সাফল্যের আসলে কোনো শর্টকাট রাস্তা নেই। যে গুলো আছে তা শুধুই মরিচিকা।
তাই মিথ্যে মরিচিকার পেছনে না ছুটে ধৈর্য্য আর পরিশ্রম দিয়ে চেষ্টা করে যেতে হবে।
মানুষের হাতে শুধু এই চেষ্টাটুকুই আছে, ভাগ্য নয়। তবে সৎপথে থেকে চেষ্টা করলে ভাগ্য বদলানো সম্ভব।
আর নিজের সৃজনশীলতা দিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার আনন্দই অন্যরকম। তাই আপনার মতো ধৈর্যশীল সৃজনশীলমনা ব্যক্তির জন্যই গ্রাফিক্স ডিজাইন।
তাহলে আর দেরী কেন? আজ থেকেই গ্রাফিক্স ডিজাইন করে আয় করার কাজে লেগে যান।
আশা করি, এখন গ্রাফিক্স ডিজাইন করে কত টাকা আয় করা যায় এবং কি কি উপায়ে আয় করা যায় সে বিষয়ে একটি ভালো ধারণা হয়েছে।