গ্রাফিক্স ডিজাইন কি?গ্রাফিক্স ডিজাইন কেন শিখবেন?গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে কত টাকা আয় করা যায়
আজকালকার সময়ে গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি জনপ্রিয় পেশা। এই পেশা শিখে ঘরে বসেই টাকা ইনকাম করা সম্ভব।
যদি আপনি ভাল দক্ষতা অর্জন করতে পারেন তাহলে লোকাল মার্কেটপ্লেস কিংবা ইন্টারন্যাশনাল মার্কেট প্লেসেও কাজ পাবেন সমানভাবে।
গ্রাফিক ডিজাইনাররা তাদের মননশীলতার পরিচয় কিংবা ক্রিয়েটিভ পরিচয় তাদের কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলে। তাই বলা হয় গ্রাফিক্স ডিজাইন একটি ক্রিয়েটিভ পেশা।
গ্রাফিক ডিজাইন কি?
এই পৃথিবীতে যা কিছু আছে, আকাশ, বাতাস, চন্দ্র, সূর্য, নক্ষত্র, গাছপালা, প্রকৃতি ইত্যাদি সব কিছুর একটা ডিজাইন এর আদলে তৈরী করা।
এই ডিজাইন স্বয়ং সৃষ্টি কর্তা ছাড়া কেউ তৈরী করতে পারবেন না।
কিন্তু সব কিছু অবলোকন করে মনের মত করে সাজিয়ে ডিজিটাল ডিভাইস দিয়ে যে স্থিরচিত্র তৈরী করা হয় তাই গ্রাফিক ডিজাইন।
গ্রাফিক ডিজাইনাররা চাইলেই দেশের মধ্যে একটি যুদ্ধ তৈরী করতে পারে অথবা শান্তি তৈরী করতে পারে একটি পোস্টার বানিয়ে।
সুতরাং বুঝতেই পারছেন এই পেশার ক্ষমতা কিংবা আয়তন কতটুকু।
গ্রাফিক ডিজাইন কেন শিখবেনঃ
যদি এই প্রশ্ন আমাকে কেউ করে, গ্রাফিক ডিজাইন কেন শিখবেন? আমি উল্টো জিজ্ঞেস করি গ্রাফিক ডিজাইন কেন শিখবেন না?
কি নেই এই পেশায়, অর্থ, সম্মান, প্রাচুর্য সব কিছু অর্জন করা সম্ভব একজন গ্রাফিক ডিজাইনার এর।
একটি কোম্পানির পদে পদে একজন গ্রাফিক ডিজাইনার প্রয়োজন।
ব্রান্ডিং, লোগো, কন্টেন্ট,ব্রশিওর, লিফলেট, নোটবুক, ক্যালেন্ডার, সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরীতে এক জন গ্রাফিক ডিজাইনার প্রয়োজন।
সারা বছর ধরে যত নতুন নতুন স্টার্টাপ তৈরী হবে, যত কোম্পানি তৈরী হবে তত বেশী ডিজাইনার এর প্রয়োজন হবে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন এর কোন সেক্টরটাতে সবচাইতে বেশী ইনকাম?
বিভিন্ন ক্যাটাগরি আছে, তার মধ্যে ইউ আই/ইউ এক্স সব চাইতে বেশী ইনকাম করা যায়।
ইউ আই/ইউ এক্স এর কাজ হলো বিভিন্ন ওয়েবসাইট এবং এ্যাপ এর ইউসার ইন্টারফেস তৈরী করা।
কোথায় কোন ডিজাইন হবে সেটা তৈরী করা। এই সেক্টরে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা।
কারণ প্রায় প্রতি সেকেন্ডে কিন্তুু নতুন নতুন ওয়েবসাইট এর ডোমেইন বিক্রি হচ্ছে, প্রতি সেকেন্ডে প্লে স্টোরে এ্যাপ পাবলিশ হচ্ছে।
সো এই ওয়েবসাইট কিংবা এ্যাপ এর ডিজাইন কে করে? নিশ্চয়ই ইউ/আই, ইউ/এক্স ডিজাইনাররা।
একটি প্রজেক্টে কাজ করতে পারলেই $১০০০-২৫০০ ডলার নিতে পারবেন ক্লায়েন্ট এর কাছ থেকে।
গ্রাফিক্স ডিজাইনের আরও একটি জনপ্রিয় সেক্টর হচ্ছে মাইক্রোস্টক মার্কেট। মাইক্রোস্টক এর সাহায্য নিয়ে আপনি লাইফটাইম ইনকাম করতে পারবেন।
মাইক্রোস্টক মার্কেট যেমন ফ্রিপিক – লাভপিক – শাটারস্টক সহ আরও জনপ্রিয় ওয়েবসাইটে আপনার কন্টেন্ট আপলোড করতে হবে।
বিভিন্ন ক্যাটাগরি আছে, যেমন, লোগো ডিজাইন ব্যানার ডিজাইন ব্রুশিওর ডিজাইন ক্যালেন্ডার ডিজাইন টি-শার্ট ডিজাইন আইকন ডিজাইন পোস্টার ডিজাইন সোস্যাল মিডিয়া পোস্ট ডিজাইন ইত্যাদি।
তাই আপনি যখন কোন ক্যাটাগরি ফ্রিপিকে ফাইল আপলোড করবেন, ফ্রিপিক থেকে আপনার ফাইল এপ্রুভ করলে আপনি লাইফটাইম ইনকাম করতে পারবেন।
পরে এই পেমেন্ট ব্যাংকে উইথড্র করতে পারবেন। এই মাইক্রোস্টক মার্কেটের সবচাইতে বড় দিক হচ্ছে অটো ইনকাম। মানে এটা হচ্ছে প্যাসিভ ইনকাম।
আপনি ঘুমিয়ে থাকলেও আপনার একাউন্টে টাকা জমা হবে। আপনি যদি মুক্ত চিন্তার অধিকারী হন, নতুন নতুন বিষয় নিয়ে ভাবতে পছন্দ করেন তাহলে গ্রাফিক ডিজাইন সেক্টরে আপনার সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর।
তবে প্রথমে আপনাকে মার্কেটপ্লেস ডিমান্ড কাজ শিখতে হবে। শিখতে হবে খুটি নাটি বিষয় নিয়ে।
প্রথমেই যদি ইনকাম এর চিন্তা করেন, তাহলে গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার জন্য না।
কাজ শেখার পরে ইনকাম নিয়ে আপনাদের কোন চিন্তা নেই। কাজ নিলেন করতে পারলেন না সেটা কিন্তু সূদুর প্রসারী চিন্তা হলনা।
তাই দীর্ঘ দিন পর্যন্ত লেগে থাকার প্রত্যয় নিয়ে এই সেক্টরে আসবেন বলে ঠিক করে রাখুন।
অনেকে আছেন কাজ না শিখেই টাকা ইনকাম এর চিন্তা করে। এটা মোটেও সুবিধার নয়। আগে কাজ শিখুন, তারপর আয় করুন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখে সব চেয়ে বড় দুটি মার্কেট- প্লেস আপ ওয়ার্ক ও ফাইভার নিয়ে আলোচনাঃ
ফাইবারঃ
ফাইবার হল আপওয়ার্ক এর মত একটি জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং প্লাটফর্ম।
এখানে দেশী বিদেশী যত ক্লায়েন্ট আছে, তারা তাদের কাজ ফ্রিল্যান্সারদের মাধ্যমে সম্পন্ন করে নেয়।
গ্রাফিক্স ডিজাইন, ওয়েব ডিজাইন, ডিজিটাল মার্কেটিং সহ সব সেক্টরের কাজ এখানে পাওয়া সম্ভব।
এখানে কাজ পাওয়ার জন্য আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইন নিয়ে গিগ তৈরী করতে পারেন।
সেই গিগ এর উপর বেস করে বায়ার রিকুয়েষ্ট পাঠাতে হবে নিদিষ্ট ক্লায়েন্ট কে।
এভাবে দিনে ১০ টা করে বায়ার রিকুয়েষ্ট পাঠাতে পারবেন ক্লায়েন্ট কে।
অথবা কোন ক্লায়েন্ট এর যদি আপনার গিগ ভাল লাগে, তাহলে সেই বায়ার আপনাকে মেসেজ করবে, তার গ্রাফিক্স রিলেটেড কোন কাজ করার জন্য।
তাই কমুনিকেশন সেক্টরটা আপনাকে শিখতে হবে সুন্দর করে। কমুনিকেশন এর উপর নির্ভর করছে আপনার সাকসেস রেট।
তাই গ্রাফিক্স ডিজাইন শেখার পাশাপাশি আপনাকে শিখতে হবে ইংরেজি। কারণ এখানে ক্লায়েন্টরা আপনার সাথে বাংলায় কথা বলবে না।
কথা বলবে ইংরেজীতে। সুতরাং মার্কেটপ্লেস এ নামার আগে বুলেটের গতিতে টপাটপ ইংরেজি লিখতে জানতে হবে ।
এক নজরে এই আর্টিকেল এর মূল বিষয় সমূহঃ
০১/ প্রথমে মনোনিবেশ
০২/ দীর্ঘদিন একই সেক্টরে কাজ করার মন মানসিকতা
০৩/ প্রথমে কাজ শিখতে হবে
০৪/ প্রচুর অনুশীল করতে হবে
০৫/ কপি ওয়ার্ক করতে হবে বড় বড় ডিজাইনারদের ডিজাইন
০৬/ হতাশ হওয়া যাবেনা
০৭/ দিনের কাজ দিনেই শেষ করতে হবে
০৮/ সব সময় ক্রিয়েটিভ চিন্তা করতে হবে
০৯/ মিনিমাল ডিজাইন আইডিয়া সবথেকে জনপ্রিয়
১০/ কালার সেন্স তৈরী করতে হবে বিভিন্ন ব্লগ পরে।
আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন শিখতে চান বা গ্রাফিক্স ডিজাইনকে আপনার পেশা হিসেবে নিতে চান তাহলে উপরের আর্টিকেল টি আপনার কাজে লাগবেই।