থাইরয়েডজনিত সমস্যা ও তার প্রতিকার
থাইরয়েড হরমোন আসলে মেয়েদের থাইরয়েড হরমোনের সমস্যা,
ছেলেদের চেয়ে ১০ গুণ বেশি। এটাকে আমরা অটো-ইমিউন ডিজিজ বলি।
অটো-ইমিউন ডিজিজ মেয়েদেরই বেশি হয়ে থাকে।
সে ক্ষেত্রে আমরা যখন সিম্পটন বুঝি, একটা মেয়ে মোটা হয়ে যাচ্ছে,
তার গলাটা কর্কশ হয়ে যাচ্ছে, চুল পড়ে যাচ্ছে, মাসিক বেশি বেশি হচ্ছে,
পায়খানা কষা হচ্ছে, চামড়া খস খসে হয়ে যাচ্ছে; আমরা ধরে নেই যে,
তার হাইপো-থাইরয়ে-ডিজম হয়েছে অথবা থাইরয়েড হরমোন সিক্রেশন কম হচ্ছে।
কখনও আমরা দেখি যে কারও কারও চোখ বড় হয়ে গেছে,
গলা ফুলে গেছে, বুক ধড় ফড় করছে, হাত-পা কাঁপছে, অতিরিক্ত ঘাম হচ্ছে,
অস্থির অস্থির লাগছে , পায়খানা নরম হচ্ছে; তাদের আমরা ,
হাইপার থাইরয়ে-ডিজম বলে একটা রোগ আছে বলে চিকিৎসকগণ মনে করন,
তার মানে হচ্ছে গলা থেকে থাইরয়েড হরমোন,
অতিরিক্ত তৈরি হওয়ার কারণে এ জটিলতা গুলো হচ্ছে।
হরমোন জনিত সমস্যায় ভুগছেন? জানুন প্রতিকারঃ
হরমোন হচ্ছে যে, আমাদের শরীরে বিভিন্ন রকম গ্রন্থি থাকে,
গ্রন্থি থেকে বিভিন্ন রকম রস তৈরি হয় এবং যেটা জীবনের,
শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আমাদের সুস্থতা নিশ্চিত,
করার জন্য চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে।
অনেক সময় মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, তাদের স্কিনে,
বিশেষ করে মুখের কথা যদি বলি, একটু লোমের পরিমাণটা,
বা পশমের পরিমাণটা বেশি থাকে। এটা কি হরমোন জনিত সমস্যার কারণে হয়ে থাকে?
ইহা মেয়েদের জন্য অনেক বড় ধরনের সামাজিক সমস্যা তৈরি করে।
বিশেষ করে যারা স্কুল-কলেজে যায়, তারা মুখের মধ্যে যদি একটু খানি লোম দেখা দেয়,
তাহলে তাদের নানা রকম ভাবে বুলিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,
তার মনটা খারাপ হয়ে যায়, হতাশায় থাকে। অনেকের দেখেছি পড়া শোনাও,
বন্ধ করে দেয়,স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে যেতে চায় না, মুখ দেখাতে চায় না।
এই জিনিস গুলো একটু আমলে আনা দরকার।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যারা মুখে পশম নিয়ে আসে,
এটা পুরুষ হরমোন কোনও কারণে যদি মেয়েদের মধ্যে বেড়ে যায়।
তার মধ্যে কমনেস্ট হচ্ছে পলিসিস্টিক ওভারি-সিন-ড্রোম।
যেখানে কয়েকটা কমপো-নেন্ট থাকে, মেয়েটা মোটা হয়ে যাবে,
ঘাড় কালো হয়ে যাবে, বগলের নিচে কালো হয়ে যাবে,
পেটে ফাটা ফাটা দাগ পড়তে পারে, মাসিক অনিয়ম হয়ে যাবে,
এবং তার মুখে ও গায়ে লোম দেখা দেবে। এই রোগের চিকিৎসা রয়েছে।
হরমোনের প্রভাবে শরীরে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারেঃ
হরমোন হলো আমাদের শরীরে বিভিন্ন গ্রন্থি। এখান থেকে তৈরি হওয়া কিছু কেমিক্যাল,
যেগুলো বিভিন্ন গ্ল্যান্ড থেকে তৈরি হয়ে রক্তের মাধ্যমে শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
হরমোনের মাধ্যমে শরীরের সব ধরণের কার্যক্রম,
গ্রোথ ডেভেলপ-মেন্ট হয়। শরীরের সব কিছুর সাথেই হরমোনের সম্পর্ক রয়েছে।
হরমোনে সমস্যার কারণে শরীরে হতে পারে নানা ধরণের সমস্যা।
হরমোনের ধরণ ও কাজঃ
ঘুম থেকে জেগে ওঠার ক্ষেত্রে একটি হরমোন রয়েছে।
ইংরেজিতে যাকে বলা হয় কেমিক্যাল ম্যাসেঞ্জার।
এ গুলো গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়ে একজন আরেক জনকে মেসেজ পাঠায় যে,
তোমাকে এই কাজটি করতে হবে। তার পর তাকে সাহায্য করে,
এবং কাজ গুলো করিয়ে নেয়। হরমোন- গুলো আবার অনেক গুলো নিয়ম-শৃঙ্খলায় আবদ্ধ।
প্রথম হরমোন তৈরি হয়, ব্রেন থেকে। ব্রেনের হাইপো-থেলা-মাস নামক অংশ আছে।
সেখান থেকে হরমোন তৈরি হয়। প্রিটোরি-গ্রান্ট অংশে চলে আসে।
যা আমরা দুই ভাবে ভাগ করি। একটি সামনে, আরেকটি পেছনে পিঠে তৈরি।
ইহা খুবই ছোট একটা অংশ। যার ওজন ১০ থেকে মাত্র ১২ গ্রাম।
এন্টি-নোক-ট্রিকো সামনের অংশ থেকে ছয়টা হরমোন তৈরি হয়।
পেছনের অংশ থেকে দুইটি গুরুত্ব পূর্ণ হরমোন তৈরি হয়।
পিটুইটার সামনের অংশ থেকে যে হরমোন তৈরি হয়,
তারা সরা সরি কাজ করে বা অন্যান্য গ্রন্থিকে বার্তা পাঠায়।
অ্যান্টি-নোক-ট্রিকো হরমোন ট্রাফিক আমাদের কিডনির সাথে সম্পর্কিত।
তার উপরে রয়েছে সুপার অ্যানাল গ্রেন্ড।
সুপার অ্যানাল গ্রেন্ডের আবার দুটি অংশ।
কটেক্স, আরেকটা হচ্ছে প্রিনোটার। এগুলো আমাদের রক্তের ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করে।
লবণের ওপর কাজ করে এবং সেক্স হরমোন তৈরি করে।
সেক্স হরমোনের সাথে ছেলে বা মেয়েদের বিষয়টি জড়িত।
সেক্স হরমোনের শুরুটা প্রিটো-টারি হরমোন থেকে আসে।
প্রিটো-টারি এইচএফএস এবং এলএস হরমোন।
দু’টি হরমোনই মেয়েদের ক্ষেত্রে ওভারির উপর কাজ করে।
ওভারি থেকে মেয়ে হরমোন ইস্ট্রোজেন প্রস্ট্রেশন তৈরি করে।
আর ডিম্বাণু তৈরি করে। পুরুষদের ক্ষেত্রে
অন্ড কোষের ওপর এসে কাজ করে।
শুক্রাণু তৈরি করে। অ্যাড্রিনাল গ্রন্থি থেকে কিছু পরিমাণ সেক্স হরমোন তৈরি করে।
এই ধরণটির প্রভাবে মেয়েদের শরীরে কিছুটা ছেলেদের হরমোন থাকে।
যখন সেটা ভারসম্য হীন হয়ে যায়, তখনই নানা রকম উপসর্গ তৈরি হয়।
থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন। এসএইচ হরমোনটা,
এসে কাজ করে থাইরয়েডের উপর। থাইরয়েড থাকে,
আমাদের গলার সামনের দিকে। এগুলো প্রত্যেকটি কোষে কাজ করে।
হরমোন জনিত সমস্যায় হতে পারে বন্ধ্যাত্বঃ
হরমোন সমস্যায় বন্ধ্যাত্ব গুরুত্ব পূর্ণ একটি রোগ।
বাবা হওয়ার জন্য টেস্টেস্টেরন এবং শুক্রাণু দু’টোই প্রয়োজন।
হাইপো-থাইরয়ে-ডিজম মানে হচ্ছে থাইরয়েডের কম কাজ করা।
আর হাইপার থাইরয়ে-ডিজম মানে থাইর-য়েড গ্ল্যান্ড বেশি কাজ করে।
হাইপো-থাইরয়েডে সাধারণতঃ টিএসএইচ বেড়ে যায়।
হাইপার থাইরয়েডের সাধারণত টিএইচএস হরমোন কমে যায়।
থাইরয়েড হরমোন বন্ধ্যাত্বের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারে।
মেয়েদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণু আর পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে।
প্রোল্যাকটিন একটা হরমোন। এ হরমোন জেনেটিক কাজ করে।
মেয়েদের বাচ্চা হওয়ার পরে ব্রেস্ট থেকে দুধ তৈরি করে।
কোন কারণে এ হরমোন বেড়ে গেলে অবিবাহিত মেয়েদের,
অথবা যে মেয়েরা গর্ভধারণ করেনি অথবা বৃদ্ধ বয়সেও দুধ নিঃসরণ হতে পারে।
এটাকে বলে হাইফা প্রলাক্টিন এনিমা।
প্রলাক্টিন হরমোনের গন্ডগোল।
এটাও বন্ধ্যাত্বের সাথে জড়িত। প্রোল্যাকটিন হরমোন বেড়ে গেলে,
মেয়েদের ঠিকমত ডিম ফোটে না। ছেলেদের ক্ষেত্রে দুধ নিঃসরণ হয়না।
তবে তাদের ক্ষেত্রেও বন্ধ্যাত্ব আসতে পারে। আমরা যখন,
বীর্য পরীক্ষা করি, সেখানে হরমোনের প্রভাবের বিষয়টি ধরা পড়তে পারে।