থাইরয়েডের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা
বর্তমান যুগে বেশির ভাগ মানুষ থাইরয়েডের সমস্যার কবলে আছেন ।
কার ও থাইরয়েডের মাত্রা বেশি আবার কারও কম।
থাইরয়েড কিন্তু নানা ভাবে মানব দেহে ক্ষতি করতে পারে।
সব কিছুর সঙ্গে সঙ্গেই থাইরয়েডের অ্যান্টি বডি পরীক্ষা করা খুব দরকারী।
আমাদের সকলের মধ্যেই ইহা খুব সাধারণ একটি সমস্যা। বেশিরভাগ মানুষ শুধুই,
টিএসএইচ অথবা সাধারণ থাইরয়েড পরীক্ষা করে ক্ষান্ত (বিরত) থাকেন।
অ্যান্টি-থাইরয়েড পারঅক্সাইড, এবং অ্যান্টি -থাইরো-গ্লোবিউলিন ,
নিয়ে তৎপর হওয়া উচিত। এর সঙ্গেই সম্পর্কিত থাইরয়েড অ্যান্টি বডি।
অ্যান্টিবডি পরীক্ষা না করলে, আদৌ থাইরয়েডের মাত্রা,
সঠিক রয়েছে কিনা এই নিয়ে সন্দেহ থেকে যায়। বলা উচিত সারা শরীরে,
থাইরয়েডের এনজাইম হিসেবে কাজ করে এই দুটি হরমোন।
মাত্রা বৃদ্ধি থেকে মানব দেহে-এর বিস্তার সব থেকেই গুরু ভূমিকা পালন করে।
এই দুই অ্যান্টিবডি অথবা গোপন হরমোনের প্রভাবে,
কিন্তু, অনেকেই সমস্যায় ভোগেন । তা হলে কেন এই হরমোন গুলির মাত্রা,
নিয়ন্ত্রণে রাখবেন এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করবেন সেই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেন,
অনেক সময় থাইরয়েডের সমস্যা মানব দেহের,
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটায়। ফলেই অসুস্থতা বাড়তে থাকে।
এমনিতেই থাইরয়েড শরীরে থাকলে অন্যান্য রোগের আগমন ঘটতে বেশি সময় লাগে না!
তাই আগে থেকেই জেনে নিন।
থাইরয়েডের টিস্যু গুলিকে রক্ষা না করে.
রক্ত কোষ দ্বারা সৃষ্ট অ্যান্টি বডি গুলি ক্ষতির প্রভাব বাড়াতে থাকে।
শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। থাইরয়েডের সঙ্গে সঙ্গেই রিভার্স থাইরয়েড,
T3, T4 ,এগুলি অবশ্যই পরিমাপ করা উচিত।
অ্যান্টিবডি – এর মাত্রা যদি বেশি থাকে তবে,
কিন্তু প্রথম থেকেই শরীরে ঔষধ সঠিক ভাবে কাজ করে না।
ইমিউনিটি একে বারেই বসে যায়, তাই প্রথম থেকেই,
অ্যান্টিবডি কম করার চিকিৎসা করতে হয়।
থাইরয়েড গ্রন্থির জন্যও এটি বেশ খারাপ।
হরমোন ক্ষরণকে উজ্জীবিত করতে পারে এবং সেই থেকেই কিন্তু ফোলা ভাব,
কর্ম ক্ষমতা কমে যাওয়া এগুলি দেখা দিতে পারে।
তাই নিজেকে আগে থেকে ভাল রাখুন। চিকিৎসকের সঙ্গে,
এই বিষয়ে কথা বলুন। সকলের সুস্থতা সব থেকে বেশি কাম্য।
থাইরয়েড বিভাগঃ
থাইরয়েড বিভাগ নিনমাস-এর একটি অন্যতম প্রধান শাখা।
এই শাখায় থাইরয়েড বিশেষজ্ঞ ও দক্ষ টেকনো লজিষ্ট গণ গল গন্ড,
থাইরো-টক্সিকো-সিস ও থাইরয়েড ক্যান্সার সহ থাইরয়েডের,
সব ধরনের রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করেন।
প্রকৃত পক্ষে এই থাইরয়েড বিভাগ দেশের সর্ব বৃহৎ থাইরয়েড সেন্টার।
থাইরয়েড সংক্রান্ত রোগসমূহঃ
১. হাইপো-থাইরয়ে-ডিজম। (Hypothyroidism)
২. হাইপার-থাইরয়ে-ডিজম। (Hyperthyroidism)
৩. থাইরয়েডের সকল প্রকার ক্যান্সার সমূহ।
৪. থাইরয়েডের প্রদাহ সংক্রান্ত রোগ। (Thyroiditis)
রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে তেজস্ক্রিয় ঔষধের ব্যবহারের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞাঃ
১. গর্ভবতী মহিলা — সম্পূর্ণ নিষেধ।
২. বুকের দুধ দান কারিনী মা — সাময়িক- ভাবে নিষেধ।
৩. কনট্রাষ্ট সিটি স্ক্যান (Contrast CT Scan) হওয়া,
রোগীদের দুই মাস অপেক্ষা করতে হবে। লেভো-থাই-রক্সিন (levothyroxine) ঔষধ,
খাওয়া অবস্থায় রেডিও আয়োডিন দিয়ে চিকিৎসা করাতে ১ মাস ঔষধ বন্ধ রাখতে হবে ।
থাইরয়েড রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা সমূহঃ
১. থাইরয়েড আপটেক (Uptake) পরীক্ষাঃ
এই পরীক্ষার ন্যূনতম পরিমানে (৫-১০ মাইক্রো-কিউরি) রেডিও আয়োডিন,
রোগীকে মুখে খাওয়ানো হয়।
আপটেক যন্ত্রের মাধ্যমে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা গণনা করা হয়।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে থাইরয়েড গ্রহ্নির কার্য ক্ষমতা নির্নয় করা হয়।
২. থাইরয়েড স্ক্যান (Scan):
এই পরীক্ষায় ২ মিলি-কিউরি টেকনি-শিয়াম রোগীর শিরায় ইনজেকশনের মাধ্যমে,
দেয়া হয় এবং ২০ মিনিট পর থাইরয়েড স্ক্যানের মাধ্যমে থাইরয়েডের কার্য ক্ষমতা,
আকার ও আয়তন, থাইরয়েড জন্ম গত সমস্যা এবং অস্ত্র পচারের পর,
অবশিষ্ট থাইরয়েড টিস্যুর পরিমাণ নির্ণয় করা হয়।
প্ল্যানার গামা ক্যামেরার সাহায্যে
রোগীর থাইরয়েডের ছবি নেয়া হয়।
৩. আল্ট্রা-সনোগ্রাম (Ultrasonogram) থাইরয়েডঃ
এই পরীক্ষায় ৫-১০ মেগাহার্জ (MHz) প্রবের মাধ্যমে থাইরয়েড গ্রন্থির,
আকার ও আয়তন বোঝা যায় এবং গ্রহ্নির গঠন গত,
ত্রুটি গুলো নির্নয় করা হয়। কালার ডপলার স্টাডিও করা হয় ।
৪. থাইরয়েডের হরমোন সমূহের পরীক্ষাঃ
থাইরয়েডের হরমোন সমূহের মধ্যে T3, T4, TSH, FT3, FT4, Tg,
TPO I AntiTgAb পরীক্ষা গুলো রক্তের মাধ্যমে দেখা হয়।
থেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবাঃ
১) হাইপার-থাইরয়ে-ডিসম (Primary Hyperthyroidism) রোগীর,
I-131 থেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান এবং পরবর্তী জীবন ব্যাপী,
এ রোগ সংক্রান্ত পর্যবেক্ষনের দায়িত্ব নেয়া হয়।
২) থাইরয়েড ক্যান্সার (Thyroid Cancer):
রোগীর I-131 থেরাপীর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা প্রদান,
এবং পরবর্তী জীবন ব্যাপী পর্যবেক্ষণ করা হয়।
রেডিও আয়োডিন থেরাপী পেয়েছে এ রকম রোগীর ফাইল সংরক্ষণ করা হয়।
রেডিও-আয়োডিন থেরাপীর মাত্রা ৩০ মিলিকিউরি (30mCi),
অথবা তদূর্দ্ধ হলে রোগীকে এককভাবে ৫ থেকে ১০ দিন হাসপাতালে রাখতে হয়।
সেই সময়ে রোগীকে নিম্নলিখিত নিয়মাবলী মেনে চলতে হয়ঃ
১. কমপক্ষে ৫-১০ দিন হাসপাতালে সংযুক্ত বাথ রুম সহ,আলাদা কেবিনে একাকী থাকতে হবে।
২. রোগী প্রচুর পানি পান করবেন ও বার বার প্রস্রাব করবেন।
পানি শরীরের অতিরিক্ত তেজস্ক্রিয়তা দ্রুত কমাতে সাহায্যে করবে।
৩. টক জাতীয় খাবার মাঝে মাঝে চুষে খাবেন।
৪. থুতু, বমি, প্রস্রাব,মল টয়লেট প্যানের ভিতরে ফেলে প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।
৫. কখনও কক্ষ বা কেবিন থেকে বাইরে আসবেন না।
প্রয়োজনে টেলিফোন ব্যবহার করুন।
৬. রোগীর ব্যবহৃত কোন জিনিসপত্র কক্ষ বা কেবিনের বাইরে,
নেয়া যাবে না। ছুটির দিন সব জিনিস নিয়ে যাবেন।
৭. কোন গর্ভবতী মহিলা বা শিশু রোগীর কাছে যেতে পারবেন না।
শুধুমাত্র একজন বয়স্ক ব্যক্তি রোগীর প্রয়োজনে সর্বাধিক ৫ মিনিট তার সাথে,
থাকতে পারবে তবে কোন অবস্থাতেই এক জন ব্যক্তি,
২৪ ঘন্টায় ৩ বারের বেশী রোগীর কক্ষে প্রবেশ করবেন না।