ব্যায়াম ও খাদ্য নিয়ন্ত্রণ

ওজন হ্রাস আপনার স্বাস্থের উন্নতি ঘটায়, মাত্র ৫% থেকে ১০% ওজন কমিয়ে আপনি পেতে পারেন অনেকগুলো স্বাস্থ্য সুবিধা-

ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমে যায় এবং যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রনে রাখতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ এবং রক্তে চর্বির পরিমান কমায়।

আর্থ্রাইটিসের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।

শ্বাস-প্রাশ্বাসের উন্নতি ঘটায়।

রাতে ভালো ঘুমের নিশ্চয়তা দেয়।

ওজন কমানোর উপায়ঃ

ওজন কমানোর জন্য এক্সারসাইজ বা খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করাই যথেষ্ট নয়। জানতে হবে সঠিক প্রক্রিয়া।

শরীরের গঠন ও প্রয়োজন অনুযায়ী বাছতে হবে সঠিক প্লান।

তিন দিন ডায়েটিং করার পর চতুর্থ দিনই লাগাম ছাড়া খাওয়া দাওয়া করলে ;

কিংবা সাত দিন এক্সারসাইজ করে, গায়ে হাতে পায়ে ব্যথা বলে দুই দিন ছুটি নিলে চলবে না।

ওজন কমানোর প্রাকৃতিক উপায় হলো এমন ডায়েট মেনে চলা।

যাতে বেশি পরিমাণে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার থাকে।

মাঝারি পরিমাণে প্রোটিন এবং কম পরিমাণে ফ্যাট থাকে। পুরো লাইফস্টাইলেই আনতে হবে পরিবর্তন।

খাদ্য নিয়ন্ত্রণঃ

শরীরের জন্য সব চেয়ে বেশি যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো, সঠিক ডায়েটিং মেনে চলা।

ডায়েটের বিষয়টি শুধু ওজন কমানোর জন্য নয়, ওজন কমে যাওয়ার পরও সেটা মেইনটেইন করা দরকার।

ডায়েট করারও কিছু নিয়ম আছে। সব খাবার বন্ধ করে দেবেন না।

যেমন – যদি সব ধরনের হাই ক্যালরিযুক্ত খাবার বাদ দেন তাহলে ওজন কমবে ঠিকই, একই সঙ্গে আপনার শরীর দুর্বল হয়ে যাবে।

আপনার শরীরে যতটা ক্যালরি প্রয়োজন, আপনি যদি তার থেকে কম গ্রহণ করেন তাহলে আপনার ওজন কমলেও ফ্যাট কমবে না।

এটাকে বলা হয় স্টারভেশন (উপবাস) মোড। এর ফলে ক্লান্তি, দুর্বলতা, মাথাব্যথা, মনোযোগের অভাব এসব সমস্যা দেখা দেয়।

তাই লোক্যালরি খাবার খেয়ে শরীরকে কষ্ট দেবেন না।

লাঞ্চ বা ডিনারের সাথে লো ক্যালরি হাই ফাইবার খাবার যেমন সালাদ বা তাজা ফল খান।

ভেজিটেবল স্যুপ খান। স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ গোশত বা ডিমের কুসুম বাদ দিন।

মিষ্টি, চকলেট, আইসক্রিম থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকুন।

না খেয়ে ওজন কমানোর কথা ভাববেন না। ব্রেকফাস্ট কখনোই বাদ দেবেন না।

একইভাবে ডিনারে হালকা খাবার খান। কারণ ডিনারে অতিরিক্ত ক্যালরি মেদ বাড়িয়ে দিতে পারে।

ডায়েট চার্ট করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন। অন্যেরটা দেখে নিজের জন্য ডায়েট চার্ট করবেন না।

ডায়েট টিপসঃ

কোন ধরনের কাজের সঙ্গে আপনি যুক্ত তার ওপর নির্ভর করবে আপনার ডায়েট চার্ট।

খাদ্যাভ্যাস ও বাজেটের ওপর ভিত্তি করে ডায়েট চার্ট তৈরি করে নিন।

প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে ফল, শাকসবজি ও পানি পান করুন।

ডুবো তেলে ভাজা কিছু খাবেন না।

এনার্জি ড্রিংকস, হেলথ ড্রিংকস, সফট ড্রিংকস খাবেন না।

চিনি একেবারেই খাবেন না।

আলু, চালের রুটি খাবেন না।

গরু, খাসির মাংস ও চিংড়ি মাছ মোটেই খাবেন না।

খাদ্য তালিকায় ফাইবার , ভিটামিন , মিনারেল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যাতে যথেষ্ট পরিমাণে থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

দুপুর ও রাতের খাবারের মাঝা মাঝি সময়ে খুব খিদে পেলে শুকনো রুটি বা টোস্ট বিস্কুট খান। ফল, সবজি বা এক বাটি মুড়ি খেতে পারেন।

বেশি রাতে কার্বোহাইড্রেট-জাতীয় খাবার কম খাবেন।

ব্যায়ামঃ

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যায়াম করা খুবই জরুরী। যারা জিমে যেতে পারেন না, তারা বাসাই ফ্রি হ্যান্ড এক্সার সাইজ করতে পারেন।

তবে কতক্ষণ করবেন সেটি নির্ভর করবে আপনার শারীরিক প্রয়োজন ও চাহিদার ওপর।

একবারেই সব মেদ কমনোর চেষ্টা করবেন না। বরং ১০ শতাংশ কমানোর প্রাথমিক লক্ষ্য স্থির করুন।

আপনি ফিট থাকতে পারবেন এবং অতিরিক্ত মেদ শরীরে জমা হবে না।

নিয়মিত এক্সার সাইজে আপনার মেটাবলিক(বিপাকীয়)রেট বেড়ে যাবে। ফলে ওজন কমবে ধীরে ধীরে।

ফ্রি হ্যান্ড এক্সার সাইজের মধ্যে জাম্পিং, জগিং, স্ট্রেচিং, সিট আপস প্রভৃতি পদ্ধতি করতে পারেন।

এ ছাড়া যোগ ব্যায়ামও করতে পারেন। তবে প্রথমে ওয়ার্ম আপ করে নেবেন।

বাড়িতে যত সময় অবস্থান করবেন সে সময় শুয়ে-বসে না থেকে হাঁটা চলা করুন।

আপনার বাড়িতে লিফট থাকলেও দৈনিক কয়েক বার সিঁড়ি দিয়ে ওঠা নামা করুন।

আরো ভালো হয় যদি হালকা জিনিসপত্র বহন করা যায়। এতে মাসল টোনড হবে।

বিভিন্ন ধরনের স্ট্রেচিং ব্যায়াম, যেমন- আর্ম স্ট্রেচিং বা লেগ লিফটিং করতে পারেন।

রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের মেদ কমে যাবে।

হার্ট সুস্থ রাখার জন্য জগিং খুব ভালো ব্যায়াম।

বাড়ির যে কোন জায়গায় আপনি স্পট জগিং করতে পারেন।

এ সময় উপযুক্ত জুতা পরবেন, যাতে পায়ের ওপর স্ট্রেস না পড়ে।

নিয়মিত করুনঃ

ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ ও উদ্যমী জীবন যাপন করতে চাইলে প্রতি দিনের জীবন যাত্রার সাথে কিছু অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

অনেকক্ষণ বসে না থেকে মাঝে মাঝে কিছুটা হাঁটা চলা করুন।

ঘরের কাজ গুলো নিজেই করার চেষ্টা করুন।

দুপুরে না ঘুমিয়ে কোনো কাজ করুন।

দুধ-চিনি দেয়া চায়ের বদলে লিকার খান। সকালে এক গ্লাস লেবু মেশানো হালকা গরম পানি পান করুন।

কাজের ফাঁকে ফল খান।

একসাথে বেশি না খেয়ে অল্প করে কয়েক বার খান।

খাওয়ার আগে দুই গ্লাস পানি পান করুন।

টিভি দেখতে দেখতে খাবেন না; কারণ এতে বেশি খেয়ে ফেলতে পারেন।

যা খেতে ভাল বাসেন মাঝে মধ্যে অবশ্যই খাবেন; তবে অল্প খাবেন।

অল্প তেলে রান্না করা খাবার খান।

রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে এসব কাজ নিয়মিত করতে হবে। তাহলেই প্রত্যাশিত ফল পাবেন।

ক) খাদ্যাভ্যাসঃ

জেনে নিন প্রাকৃতিক উপায়ে ওজন কমানোর সহজ কিছু ঘরোয়া উপায়।

নতুন করে খাদ্যাভাস শুরু করুন, যাতে আপনার খাদ্যে ক্যালোরির পরিমাণ কমে যায়।

১। মসলাঃ

মসলা জাতীয় খাবার, যেমন – আদা, দারুচিনি, গোল মরিচ এগুলো প্রতি দিনের খাবারে রাখতে হবে।

মসলা জাতীয় খাবার হলো ওজন কমানোর কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি। নিয়মিত খাবারে এদের ব্যবহার ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

 ২। মধুঃ

ঘরোয়া পদ্ধতিতে ওজন কমানোর আরেকটি ভালো উপায় হলো মধু খাওয়া।

মধু দেহের অতিরিক্ত জমানো চর্বিকে রক্ত চলাচলে পাঠিয়ে শক্তি উৎপাদন করে, যা ব্যবহৃত হয় দেহের স্বাভাবিক কার্যকলাপে।

এ ধরনের চিকিৎসায় এক চামচ টাটকা মধুর সঙ্গে আধা চামচ কাঁচা লেবুর রস আধা গ্লাস হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে নির্দিষ্ট বিরতি দিয়ে প্রতিদিন কয়েকবার খেতে হবে।

৩। বাঁধাকপিঃ

বাঁধা কপিকে ওজন কমানোর আরেকটি কার্যকর উপায় হিসেবে ধরা হয়।

বাঁধা কপি মিষ্টি ও শর্করাজাতীয় খাবারকে চর্বিতে রূপান্তর করতে বাধা দেয়।

এ জন্য বাঁধাকপি খুবই কার্যকর ভূমিকা রাখে ওজন কমাতে। এটিকে কাঁচা অথবা রান্না করেও খাওয়া যায়।

৪। সুপ অথবা সালাদঃ

ভারী খাবারের আগে সুপ অথবা সালাদ খান। তবে সুপ ও সালাদ যেন মেওনেজ ও ক্রিম ছাড়া তৈরি হয় সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

প্রচুর সালাদ খাবেন, সালাদের সাথে ভিনেগার মিশিয়ে নেবেন। সালাদে কোনো মাছ বা মাংসের টুকরো মেশাবেন না।

বরং কিছু মসলা যোগ করতে পারেন। স্বাস্থ্য সম্মত সালাদ আপনার ওজন হ্রাসে সহায়ক।

৫। দুপুরে আর রাতে অবশ্যই এক কাপ করে শসার সালাদ খান আপনার নিয়মিত খাবারের সাথে।

যাদের শসায় গ্যাসের সমস্যা হয়, তাঁরা টমেটো-গাজর-বিট-কাঁচা পেঁপে ইত্যাদি যে কোনটি বেছে নিতে পারেন।

৬। ফলমূল ও সবুজ শাক সবজিঃ

তাজা ফলমূল ও সবুজ শাক সবজি হলো কম ক্যালরিযুক্ত খাদ্য, তাই যাদের ওজন বেশি তাদের বেশি করে এগুলো খাওয়া উচিত।

এ খাবার গুলোতে মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ও ফাইবার বেশি থাকার কারণে তা কোলেস্টেরল ও পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করে।

যে কোন এক বেলার নিয়মিত খাবারকে প্রতিস্থাপন করুন ফল দিয়ে। তবে সকালের বেলায় নয়।

লাঞ্চ, ডিনার বা বিকালের নাস্তার বদলে খান ফল বা ফলের সালাদ।

রাতের বেলা সবজির তরকারি-মাছ মাংস ডিম যেটাই খাওয়া হোক না কেন, সেটা রাতের বেলা খাওয়া বাদ দিন গরমের দিনে।

ভাত রুটি যাই খাওয়া হোক না কেন, সাথে নিন সবজি ও ডাল। তবে আলুকে কম খান। খেতে হলে ভাজি না খেয়ে ভর্তা খান ।

৭। সবুজ চা (গ্রিন টি):

সবুজ চা বা গ্রিন টি ওজন কমাতে খুবই সাহায্য করে।

এর প্রতিটি দানায় রয়েছে মানুষের শরীরের ওজন কমাতে সহায়ক পলিফেনল ও কোরোজেনিক এসিড।

দৈনিক মাত্র ২ থেকে ৩ কাপ সবুজ চা পান করে বছরে ১৫ পাউন্ড পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব।

অতিরিক্ত মেদ ঝরাতে এর কোন জুড়ি নেই। মেটাবোলিজমের হার বাড়িয়ে বাড়তি মেদ জমতেও দেয় না।

৮। লেবু চাঃ

যাদের বার বার চা খাওয়ার অভ্যাস, গরমে তাঁরা দুধ চা বাদ দিয়ে লেবু চা খাওয়ার অভ্যাস করুন।

গরমে লেবু চা আপনাকে সতেজ থাকতে সাহায্য করবে তো অবশ্যই , সাথে দুধ না খাবার ফলে ক্যালোরিও কম গ্রহণ করা হবে।

লেবু চায়ে চিনিও লাগে কম। যারা দিনে ২/১ বার চা খান, তাদের দুধ চা চলতে পারে।

তবে কনডেনসড মিল্ক বাদ দিয়ে গরুর দুধ খান, কম পক্ষে গুঁড়া দুধ। কফিতে ক্রিম খাওয়াটা ছেড়ে দিন।

৯। লেবু-মধু পানীয়ঃ

সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক গ্লাস হালকা বা কুসুম গরম পানির সঙ্গে দুই চা চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে খেয়ে নিন।

এর কিছুক্ষণ পর সকালের নাশতা খেতে পারেন। লেবু-মধু পানীয় ওজন কমাতে অব্যর্থ পদ্ধতি।

১০। প্রচুর পানিঃ

প্রতিদিন প্রচুর পানি পান করুন। ছয় থেকে আট গ্লাস। প্রচুর পানি পানে শরীর থেকে দূষিত চর্বি জাতীয় পদার্থ বের হয়ে যায়।

খাবার সহজে হজম হয়। ফলে দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমার সুযোগ পায় না।

খাওয়ার আগে এক থেকে দুই গ্লাস বরফ শীতল পানি পান করুন।

এতে দ্রুত ও দীর্ঘ স্থায়ী ভাবে আপনার পেট ভরার অনুভুতি আসবে।

অল্প খাবার খেয়েই তৃপ্তি চলে আসবে শরীর ও মনে।

১১। প্রোটিনঃ

প্রোটিন জাতীয় খাবার প্রতি বেলাতেই কিছু না কিছু খেতে হবে। এতে করে মেটাবোলি- জমের হার বেড়ে যায়।  

আমিষ (প্রোটিন) সমৃদ্ধ খাবার যেমন-
মাছ, ডাল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে খান।

মাছ খান সপ্তাহে অন্তত ৫দিন। কারণ মাছ খাওয়ার দরুন লেপ্টিন নামক হরমোন এর লেভেল কমে যায়।

লেপ্টিন হরমোন বেশি থাকলে মেদ বাড়ার প্রবণতা থাকে। বেশি করে মাছ খান সামুদ্রিক মাছ।

সামুদ্রিক মাছে থাকে ওমেগা ত্রি ফ্যাটি অ্যাসিড। এই অ্যাসিড মেদ বৃদ্ধিতে দায়ী চর্বিকে পোড়াতে এবং শরীরে ভালো চর্বির পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে।

সামুদ্রিক মাছ থেকে যে ফ্যাট পাওয়া যায় তার নাম ‘পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট’।

১২। ডিমঃ

ডায়েট করলে কি ডিম খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে?

না বরং সকালে ডিম খাওয়া ওজন কমাতে সহায়ক। তবে গরমে ডিম পোঁচ বা ভাজি না খেয়ে খান সিদ্ধ ডিম।

কারণ তাতে তেল কম খাওয়া হবে, অর্থাৎ স্বাস্থ্যকর হবে খাওয়া।

১৩। পরোটা- রুটি- পাউরুটিঃ

পরোটা তেল বা ঘিয়ে না ভেজে তাওয়ায় শুকনো করে সেকে নিন রুটির মতন, ক্যালোরি কমে অর্ধেক হয়ে যাবে।

ময়দার রুটি না খেয়ে আটার রুটি খান, সম্ভব হলে লাল আটা। আর মাখন বা জেলি দিয়ে ব্রেড না খেয়ে, ভাজি বা দুধ দিয়ে খান।

এত সামান্য একটা ব্যাপার, কিন্তু কত ক্যালোরি যে বাঁচবে কল্পনাই করতে পারবেন না।

 ১৪। স্টার্চঃ

উচ্চ শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্য, যেমন—চাল, আলু অবশ্যই নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় খেতে হবে, আর গম (আটা) খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে।

স্টার্চ জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। রিফাইন্ড ময়দা, সাদা চাল, আলু এগুলো এড়িয়ে চলুন।

ব্রাউন আটা খেতে পারেন। কার্বোহাইড্রেট বাদ দেয়া যাবে না।

কার্বোহাইড্রেট এর চাহিদা পূরণ করবেন শাক সবজি, ডাল, ব্রাউন আটা এগুলো থেকে।

১৫। আয়রনঃ

আয়রন এর অভাব হলে অক্সিজেনের অভাব হয়। তখন মেটাবোলিজমের হার-ও কমে যায়।

এজন্য আয়রন খাওয়া খুব-ই জরুরী। কচু শাকে, কলায় প্রচুর আয়রন আছে।

১৬। দুধ ও দই জাতীয় খাবারঃ

দুধ এবং টক দই জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। এতে যে ক্যালসিয়াম থাকে, তা ফ্যাট বার্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তবে পনির, মাখন, চিনি —এগুলো পরিহার করতে হবে। কারণ, এগুলো উচ্চ চর্বিযুক্ত।

ওজন বাড়ানোর উপায়ঃ

১। চার ঘণ্টার বেশি না খেয়ে থাকবেন না:

আপনার শরীর নিয়মিত খাবারের সাপ্লাই চায়। যা শরীরকে পর্যাপ্ত শক্তির যোগান দিবে।

বেশি সময় খাবার না খেয়ে থাকলে শরীরে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিতে পারে ফলে ওজন বাড়ার বদলে উল্টো কমে যেতে পারে ।

খালি পেটে তো কিছুতেই থাকবেন না বরং সময়মত বেশি করে খাবার খেয়ে শরীরে খাদ্য ঘাটতি পুষিয়ে ফেলুন।

২। ক্যালরি যুক্ত খাবার বেশি করে খানঃ

প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যুক্ত খাবার গ্রহণ করুন।

যেমন – বাদাম এবং শস্যদানা, চকোলেট, বাদামের মাখন, চিংড়ি, স্ট্রবেরী, কন্ডেনস্‌ড মিল্ক।

ডিম, সয়াবিন, কিসমিস, খেজুর, নারকেল দুধ, বাদামী চাল, ওটমিল, বাটার বা তাহিনি;

দই, কলা, অলিভ অয়েল, আঙুরের জুস, আনারস, আপেল, কমলা।

দুগ্ধজাত খাবার এবং উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যথা – মাছ, মাংস ইত্যাদি থাকতে হবে প্রতি বেলার খাদ্য তালিকায়।

৩। ব্লেন্ড করে খানঃ

আপনার যদি সব সময় খেতে ইচ্ছা না করে তাহলে খাবার গুলো ব্লেন্ড করেও খেতে পারেন।

ড্রিংক হিসাবে কলা, খেজুর এর সাথে একটু মাখন, দুধ অথবা আম, পেস্তা বাদাম ;

স্ট্রবেরি, কমলা ইত্যাদি শ্রেষ্ঠ পুষ্টিকর উপাদান দিয়ে জুস তৈরি করে হাতের কাছে রাখুন।

এগুলো আপনার শরীরের মাংস পেশী – গুলোকে সুগঠিত করতে যথেষ্ট প্রোটিন সরবরাহ করবে।

৪। বারবার খাওয়ার অভ্যাস ত্যাগ করুনঃ

অনেকেই ভাবেন যে বারবার খেলে বুঝি ওজন বাড়বে। এটা মোটেও সঠিক না। বরং নিয়ম মেনে পেট পুরে খান।

পেট পুরে খাওয়া হলে মেটাবলিজম হার কমে যায়।

ফলে খাবারের ক্যালোরির অনেকটাই বাড়তি ওজন হয়ে শরীরে জমবে।

অল্প অল্প করে বার বার খাওয়াটা মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয়, ফলে ওজন কমে।

৫। ঘুমাবার ঠিক আগেই দুধ ও মধু খানঃ

ওজন বাড়াবার জন্য একটা অব্যর্থ কৌশল। রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই বেশ পুষ্টিকর কিছু খাবেন।

আর খিদে পেলে তো আয়েশ করে পেট পুরে খেয়ে নেবেন। আর সাথে সাথেই ঘুমিয়ে যাবেন ।

ফলে খাবারের ক্যালোরিটা খরচ হবার সময় পাবে না, বাড়তি ওজন হিশাবে জমবে শরীরে।

ঘুমাবার আগে প্রতি দিন এক গ্লাস ঘন দুধের মাঝে বেশ অনেকটা মধু মিশিয়ে খেয়ে নিবেন।

৬। নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করুনঃ

আমাদের সবার ধারণা ব্যায়াম শুধু ওজন কমানোর জন্যই কাজ করে। কিন্তু এটি ঠিক নয়।

ব্যায়াম করলে শরীর একটিভ হয় এবং পুষ্টি উপাদান গুলো ঠিক মতো কাজে লাগে।

ঠিক সময়ে ক্ষুধা লাগে, এবং তখন খাদ্য গ্রহণের রুচিও বৃদ্ধি পায়। প্রতি দিন হালকা কিছু ব্যায়ামই এর জন্য যথেষ্ট।

৭। পর্যাপ্ত ঘুমান ও দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকুনঃ

আপনার খাদ্যাভ্যাস আর শরীর চর্চার পাশা পাশি যেই জিনিসটা লাগবে তা হলো পর্যাপ্ত ঘুম এবং দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা।

দৈনিক ৮-৯ ঘণ্টা ঘুম এবং অন্যান্য বিষয় গুলো মেনে চললে আশা করা যায় আপনার ওজন বাড়ানোর লক্ষ্য পূরণ হবেই।

ব্রেনের উপর কোনো চাপ নেবেন না।

৮। প্রচুর শাক সবজি ও ফল খানঃ

ভাবছেন এগুলো তো ওজন কমাবার জন্য খাওয়া হয়, তাই না?

ওজন বাড়াতেও কিন্তু আপনাকে সাহায্য করবে এই ফল আর সবজি। এমন অনেক ফল আর সবজি আছে যেগুলো উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত।

যেমন- আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা ইত্যাদি।

ফল ও সবজি খেলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে, তেমনি ওজনও বাড়বে।

৯।খাদ্য তালিকায় যোগ করুন কিছু বিশেষ খাবারঃ

আপনার নিয়মিত খাবারের পাশা পাশি অবশ্যই কিছু উচ্চ ক্যালোরি সম্পন্ন খাবার যোগ করতে হবে খাদ্য তালিকায়।

উচ্চ রক্ত চাপের সমস্যা না থাকলে এই খাবার গুলো খেতে পারেন অনায়াসে।

যেমন- ঘি/ মাখন, ডিম, চিজ/ পনির, কোমল পানীয়, গরু-খাসির মাংস ;

আলু ভাজা, মিষ্টি জাতীয় খাবার, চকলেট, মেয়নিজ ইত্যাদি।

১০। আলুঃ

প্রচুর শর্করাতে ভরপুর আলু। তাই নিশ্চিত ভাবেই বলা যায় নিয়মিত আলু খেলে ওজন বাড়বেই।

আলু তরকারিতে দিয়ে, ভাজি করে, গ্রীল করে বাটার মিশিয়ে বা ভালো মানের তেল দিয়ে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই করে নিয়মিত খান।

যে কোন উর্বশী সব্জী বা তরকারীর সাথে আলু মানিয়ে নেয়া যায়। তাই আলুর উপর প্রাধান্য দিন।
 

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *