শারীরিক অসুস্থতা ও মানসিক স্বাস্থ্য
আমাদের মধ্যে অনেকেই কখনো না কখনো বড়ো কোনো শারীরিক অসুখে আক্রান্ত হই।
অসুখ আর তার চিকিৎসা দুটোই আমাদের চিন্তা ভাবনা ও অনুভুতিকে প্রভাবিত করতে পারে।
বিচ্ছিন্ন বোধ করি আমরা পরিবার ও বন্ধু বর্গের থেকে ।
অনেক সময় নিকট জনের সাথে অসুখের কথা বলতে অসুবিধা হয়। আমরা তাদের চিন্তায় ফেলতে বা মনে কষ্ট দিতে চাই না।
কারো কারো ক্ষেত্রে মনকে ভীষণ ভাবে নাড়া দেয় শারীরিক অসুস্থতা ।
ক্যান্সার বা হার্টের অসুখ হলে আমরা চিন্তিত বা বিষণ্ন বোধ করতে পারি। এতে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাত্রা ব্যাহত হতে পারে।
বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা হলে কী রকম অনুভূতি হয়?
দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতা আমাদের শরীর আর মন দুইই আচ্ছন্ন করে। অনেক সময় দুটো একই সময় হয়।
দুশ্চিন্তা রোগের অনুভূতিঃ
সব সময় মাথায় চিন্তা ঘোরে বিশেষতঃ অসুখ বা অসুখের চিকিৎসা সংক্রান্ত চিন্তা।
সব চেয়ে খারাপ যা পরিনতি হতে পারে, মনে হয় যে সেটাই ঘটবে।
যেমন ধরুন মনে হতে পারে যে অসুখটার খুব বাড়া বাড়ি হবে, বা মারা যেতে পারি।
বুকের ধুক পুকানি শুনতে পাওয়া (বুক ধড়ফড় করা)।
মাংস পেশিতে ব্যথা বা টান টান ভাব।
রিল্যাক্স করতে না পারা।
ঘামা।
দ্রুত নিশ্বাস নেওয়া (ঘন ঘন শ্বাস নেওয়া)।
মাথা ঘোরা।
মনে হওয়া যে এই বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাব।
গ্যাস অম্বল হওয়া বা বার বার পায়খানায় যাওয়া।
বিষণ্নতার অনুভূতিঃ
সব সময় বিষণ্ন বোধ করা এবং মনে করা যে এই বিষণ্নতা কোনো দিন কাটবে না।
জীবনে কোনো কিছুতেই উৎসাহ না থাকা।
কোনো কিছু উপভোগ করতে না পারা।
ছোটো খাটো ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে না পারা।
অসম্ভব বেশি ক্লান্ত লাগা সব সময়।
অস্বস্তি বা অস্থিরতা বোধ করা।
ক্ষুধা না হওয়া এবং ওজন কমা (কিছু ক্ষেত্রে ঠিক উল্টোটা হয়, ক্ষিদে আর ওজন দুটোই বাড়ে)
ঘুম না আসা আর সকালে তাড়া তাড়ি ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া।
সহবাসে অনীহা।
আত্ম বিশ্বাসের অভাব এবং নিজেকে অপদার্থ, অক্ষম ভাবা।
অন্যের সঙ্গ বর্জন করা।
খিটখিটে হয়ে যাওয়া।
নিজের সম্বন্ধে, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এবং পৃথিবী সম্পর্কেই সামগ্রিক হতাশা।
মনে হতে পারে যে, আমি কোনো দিন ভাল হব না, বা মনে হতে পারে আমি একে বারেই খরচের খাতায়।
আত্ম হত্যার কথা মনে হতে পারে। ইহা বিষণ্নতায় প্রায়ই হয়।
এ রকম মনে হলে তাই নিয়ে কথা বলা ভাল, সবটা মনের মধ্যে চেপে না রেখে।
এর কিছু কিছু উপসর্গ যথা অনিদ্রা, অক্ষুধা বা ক্লান্ত লাগা আপনার শারীরিক অসুস্থতা বা তার চিকিৎসার জন্য হতে পারে।
আপনি যদি এ ব্যাপারে আপনার ডাক্তার বা নার্সের সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে তিনি নির্ণয় করতে পারবেন এর কারণ কী?
যে কোনো কারণে স্ট্রেস হলেই বিষণ্নতা এবং দুশ্চিন্তার প্রবণতা বাড়ে।
অসুস্থতা এবং অসুখের চিকিৎসা স্ট্রেস সৃষ্টি করে। মনে হয় এটাই সবচাইতে সম্ভাব্য কারণ।
কিছু ঔষধ (যথা স্টেরয়ড) মস্তিষ্কের কাজের ওপর প্রভাব ফেলে। এর থেকে বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা হতে পারে।
কিছু কিছু অসুখ, যেমন নিষ্ক্রীয় থাইরয়েড গ্রন্থি মস্তিষ্কের কাজের ওপর প্রভাব ফেলে। এতেও বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা হতে পারে।
তাছাড়া বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তা দুটোই সাধারণ মানুষের মধ্যে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়।
কাজেই একসঙ্গে দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতার সঙ্গে আপনার শারীরিক রোগ হতে পারে।
শারীরিক অসুস্থতা থাকলে আপনার মানসিক অসুখের প্রবণতা বাড়ে ;
যদি আপনি আগে দুশ্চিন্তা গ্রস্ত বা বিষাদ রোগ গ্রস্ত হয়ে থাকেন।
আপনার এমন কোনো আত্মীয় বা বন্ধু নেই যার সঙ্গে আপনি আপনার অসুখ সম্বন্ধে কথা বলতে পারেন।
আপনি মহিলা (পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বিষাদ রোগ বা দুশ্চিন্তার প্রবণতা বেশি)।
আপনার জীবনে এই সময়ে আরো অনেক স্ট্রেস রয়েছে যথা ডিভোর্স, প্রিয় জনের মৃত্যু, চাকরি চলে যাওয়া ইত্যাদি।
আপনার খুব ব্যথা।
আপনার অসুখ প্রাণ ঘাতী হতে পারে।
অসুখের জন্য আপনি নিজের কাজ নিজে করতে পারছেন না।
যে সময় আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার প্রবণতা বাড়েঃ
যখন প্রথম আপনি আপনার অসুখের কথা জানতে পারেন।
বড়ো ধরনের সার্জারির পর, অথবা আপনার চিকিৎসা বেশি ক্লেশ দায়ক হলে।
যদি কিছু দিন সুস্থ থাকবার পর ফের অসুখ হয়।
যেমন দ্বিতীয় বার হার্ট আটাক হলে, বা ক্যান্সার কমে যাবার পরে ফের বাড়া বাড়ি হলে।
যদি চিকিৎসা কার্যকরী না হয়।
কখন আপনার সাহায্য চাওয়া উচিত?
যদি আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার মাত্রা
মাত্রা ছাড়িয়ে যায় ;
এমন দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতা আপনার আগে হয় নি।
সময়ের সঙ্গে এর প্রকোপ কমছে না।
আপনার কাজকর্ম, শখ আহ্লাদ, আত্মীয় পরিজন ও বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে।
মনে হয় জীবনের কোনো মানে নেই, বা আপনি না থাকলেই সকলের মঙ্গল হয়।
আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন না যে আপনি বিষাদ গ্রস্ত ;
যদি আপনি মনে করেন যে, আপনার
অসুবিধার কারণ শারীরিক অসুস্থতা।
আপনি নিজেকে অলস বা দুর্বল মনে করেন।
অন্যেরা হয়ত এ ব্যাপারে আপনাকে আশ্বাস দিতে পারে।
তাঁরা হয়ত বলবেন যে, সাহায্য চাওয়া দুবর্লতার লক্ষণ নয়।
কেউ কেউ বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার মোকাবিলা করতে নিজেদের কাজের মধ্যে ডুবিয়ে রাখেন।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে এতে কাজ হলেও অনেক সময়ে এতে মানুষ আরো পরিশ্রান্ত হয়ে যায়।
অনেক সময় বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার জন্য মন খারাপ বা ভয়ের বদলে মাথা ব্যথা, অনিদ্রা বা সারা শরীরে ব্যথা হয়।
আপনার বন্ধু বা আত্মীয় কারো সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে দেখতে পারেন, তাঁরা আপনাকে সাহায্য করতে পারে।
কিন্তু তাতে লাভ না হলে, আপনার ডাক্তার বা নার্সের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন।
যখন আমরা শারীরিক ভাবে অসুস্থ তখন সাহায্য চাইতে মনে দ্বিধা জাগতে পারে।
মনে হতে পারেঃ
আপনার কষ্টের কারণ বোঝাই যাচ্ছে- এ ব্যাপারে আর কিছু করার নেই।
আপনি চান না যে, লোকে ভাবুক আপনি অকৃতজ্ঞ, যেন আপনি আপনার ডাক্তার বা নার্সের সম্বন্ধে নালিশ করছেন।
আপনি মনে করছেন যে, আপনার মানসিক অসুবিধা হচ্ছে বললে আপনার শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসার অসুবিধা হতে পারে।
আপনার মনে হতে পারে যে ডাক্তার বা নার্স আপনার শারীরিক রোগের দেখা শোনা করবেন ;
তাদের মানসিক অসুবিধার ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যাথা নেই
ইহা ঠিক যে, আমরা বুঝতে পারি কারো শারীরিক অসুস্থতা হলে সে বিষণ্ন বা চিন্তা গ্রস্ত হতেই পারে।
তার মানে এই নয় যে, সেটা নিয়ে আর কিছু কর বার নেই।
ডাক্তার বা নার্স আপনার সামগ্রিক সুস্থতা চান। আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তাও এর অন্তর্গত।
তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেনঃ
এই পরিস্থিতে আপনার মনে যে দুশ্চিন্তা জাগছে, সেই কথা জেনে ;
আপনি আপনার রোগ এবং এর চিকিৎসা সম্বন্ধে যথেষ্ট জানেন কিনা।
আপনি আপনার অনুভুতির ব্যক্ত করতে সাহায্য করা।
আপনার দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতার জন্য চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কিনা নির্ণয় করা।
কী করে বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার চিকিৎসা করা যায়?
অনেক প্রফেশনাল আছেন যারা আপনাকে সাহায্য করতে পারেন।
এদের মধ্যে আপনার গৃহ চিকিৎসক, কাউন্সেলর, সাইকোথেরাপিস্ট, সাইকো – লজিস্ট, এবং সাকায়াট্রিস্ট সকলেই আছেন।
চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ভর করবে আপনার লক্ষণের উপর, আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার তীব্রতার উপর ;
এবং আপনার পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর। এর চিকিৎসা কখনো কথা বলে, কখনো বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি সেবন করে, কখনো বা দুটোই।
কথা বলার মাধ্যমে যে চিকিৎসা হয়ঃ
নিজের প্রকৃত অনুভূতি ব্যক্ত করতে অসুবিধা হতে পারে, এমনকি নিকট বন্ধুর কাছেও।
এটা প্রফেশনালের কাছে করা অপেক্ষাকৃত সহজ।
তিনি আপনাকে সমস্যা সমাধানের পথ দেখাতে পারেন, এবং আপনার সমস্যার মুল্যায়ন করতে সাহায্য করতে পারেন।
কথা বলার মাধ্যমে যে চিকিৎসা হয়, তা সাধারণতঃ দীর্ঘমেয়াদী হয় না, আটটি সেশনের বেশি প্রয়োজন হয় না।
আপনি থেরাপিস্টকে একক ভাবে অথবা একটি গ্রুপের সঙ্গে দেখাতে পারেন।
আপনার পার্টনার বা কেয়ারার থাকলে তিনিও এর মধ্যে যুক্ত থাকলে ভাল হয়।
অনেক ভাবে কথার মাধ্যমে চিকিৎসা হতে পারে, তবে সব ক্ষেত্রেই কিছু কথা প্রযোজ্যঃ
পেশেন্ট এবং থেরাপিস্টের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বাস।
আপনার চিন্তা অনুভুতি এবং সমস্যা সম্বন্ধে খোলা খুলি কথা বলবার সুযোগ।
দুশ্চিন্তা, কষ্টকর অনুভূতি এবং সমস্যার সমাধানের চেষ্টা।
এতে লাভ হবে কী?
শুধু কারো সঙ্গে কথা বলা ভীতি প্রদ বা অর্থহীন মনে হতে পারে।
কিন্তু, একবার শুরু করলে, বেশির ভাগ রুগী (কঠিন শারীরিক রোগগ্রস্ত) এতে উপকৃত হন।
কীভাবে এটা কাজ করে?
আপনার মনো জগতে কী হচ্ছে তা সম্বন্ধে আপনার ধারনা সুস্পষ্ট হবে।
এতে আপনার চিন্তা, অনুভূতি এবং সমস্যার সঙ্গে মোকাবিলা করা সহজ হবে।
আপনি বিশ্বাস করতে পারেন অথচ আপনার ব্যাপারে মতামত পেশ করছে না ;
এইরকম কারো সঙ্গে কথা বলতে পারলে সুবিধা হয়।
কাজ হতে কত সময় লাগে?
কারো কারো প্রথম থেকেই কাজ হয়। কেবল মাত্র নিজের চিন্তার কথা বলতে পারলেই হাল্কা লাগে।
অন্যদের ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে।
বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি
যদি আপনার বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তা তীব্র বা দীর্ঘমেয়াদী হয়, তবে কিছুদিন বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি সেবন করলে উপকার পাওয়া যেতে পারে।
এতে বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার তীব্রতা কমে, এবং তারা আবার নিজেদের সমস্যার মোকাবিলা করতে পারেন।
জীবনকে উপভোগ করতে পারেন। এগুলি ঘুমের ঔষধ নয়, যদিও এগুলি আপনার অস্থিরতা কমিয়ে আপনাকে শান্ত করবে।
ব্যথা বা ঘুমের অসুবিধাতেও এতে কাজ হয়।
সঙ্গে সঙ্গে কাজ হবে কী?
বোধহয় না। অন্যান্য ঔষধের সঙ্গে বিষাদ প্রতিরোধক বড়ির পার্থক্য এখানেই। সঙ্গে সঙ্গে কাজ হয় না।
প্রথম দুতিন সপ্তাহে বিষণ্নতা কমে না। কিছু কিছু উপসর্গের অবশ্য আগেই উপশম হয়।
যেমন – কয়েক দিন পরেই অনেকে খেয়াল করেন যে, তাদের দুশ্চিন্তা কমেছে বা ঘুম ভাল হচ্ছে।
এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কী?
সব ঔষধের মতই বিষাদ প্রতিরোধক বড়ির কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে।
এগুলি সাধারণত; বেশি গুরুতর নয় এবং চিকিৎসা চলাকালীন আস্তে আস্তে এর প্রকোপ কমে আসে।
বিভিন্ন বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি বিভিন্ন ভাবে কাজ করে।
প্রয়োজন হলে এর সঙ্গে আপনি ব্যথার ঔষধ, আন্টি বায়োটিক বা গর্ভ নিরোধক বড়ি ব্যবহার করতে পারেন।
তবে মদ্যপান করবেন না। মদ আর বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি একসঙ্গে ব্যবহার করলে বেশি ঘুম পাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
আপনার শারীরিক অসুখের জন্য যে চিকিৎসা চলছে ;
তার সঙ্গে বিষাদ প্রতিরোধক বড়ি খেলে অসুবিধা হবে কিনা তা আপনার ডাক্তার বলে দেবেন।
আপনি নিজে কী করে নিজেকে সাহায্য করতে পারেনঃ
প্রফেশনাল সাহায্য ছাড়াও আপনি এগুলি নিযে নিজে করলে উপকার পাবেনঃ
আপনার চিন্তা ভাবনা আপনার নিকট জনকে জানান।
আপনি হয়তো অবাক হবেন—এটা কষ্টদায়ক না হয়ে, হয়ত এতে আপনার কষ্ট ভার লাঘব হবে।
সুষম খাদ্য খান। দুশ্চিন্তা বা বিষণ্নতার জন্য যদি আপনার অ ক্ষুধা হয়, তবে আপনার ওজন কমতে পারে।
এতে আপনার শারীরিক অসুখের প্রকোপ বাড়তে পারে।
আপনার অসুখ আর আপনার জীবন এই দুইয়ের মধ্যে একটা সামঞ্জস্য আনবার চেষ্টা করুন।
“অসুস্থতার জন্য এটা করা যাবে না” এবং “অসুখ সত্ত্বেও এটা আমি করব” এর মাঝামাঝি কোথাও এই অবস্থান।
নিজের দেখাশুনা করুন। দৈনন্দিন রুটিনের মধ্যে ব্যায়াম, রিল্যাক্স করা এবং নিজের মনোমত কাজ রাখুন।
মদ্যপানের মাধ্যমে মনে আনন্দ আনবার চেষ্টা করবেন না।
এতে আপনার বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তা বাড়তে পারে। আপনার ঔষধের সঙ্গেও এর প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
ঘুমের ব্যাঘাত হলে বেশি মুষড়ে পরবেন না। বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তাতে ঘুমের অসুবিধা হতেই পারে।
আপনার মনের অবস্থার উন্নতি হলেই ঘুম হবে ঠিক মত।
ডাক্তারের সঙ্গে কথা না বলে ঔষধ বাড়াবেন না, কমাবেন না বা বন্ধ করবেন না।
এর সঙ্গে অন্য ভেষজ কিছু ব্যবহার করার আগে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।
যদি কোনো কষ্টকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হয়, আপনার ডাক্তার বা নার্সকে জানান। মুখ বুজে সহ্য করবেন না।
পরিবারের অন্য সদস্যেরা বা বন্ধুরা কীভাবে সাহায্য করতে পারেন?
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথমে বন্ধু বা আত্মীয় স্বজনেরা লক্ষ্য করেন কারো শারীরিক অসুস্থতার উপরে বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তারোগ দেখা দিলে।
আপনার কোনো কাছের মানুষ বিষাদ রোগ গ্রস্ত হলে তাকে সাহায্য নিতে বলুন।
তাকে বলুন যে বিষণ্নতা আর দুশ্চিন্তা রোগ অনেকেরই হয় এবং চিকিৎসা করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্পুর্ণ নিরাময় হয়ে যায়।
কেউ বিষণ্ন বা দুশ্চিন্তা রোগ গ্রস্ত হলে তার সঙ্গে সময় কাটান।
তাদের উৎসাহ দিন, তাদের কথাবার্তা বলতে বা দৈনন্দিন কাজ করতে উৎসাহ দিন।
যারা বিষণ্ন বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত তাদের আশ্বস্ত করুন যে তারা ভাল হয়ে যাবেন ;
যদিও সে সময় তারা একথা বিশ্বাস নাও করতে পারেন।
তাদের সুষম খাদ্য খেতে বলুন আর অত্যধিক মদ্যপান থেকে বিরত থাকতে বলুন।
যদি তাদের বিষণ্নতা বা দুশ্চিন্তার অবনতি হয়, বা তারা বলেন যে বেঁচে থেকে আর লাভ নেই অথবা আত্মহত্যার কথা ভাবেন,
তাহলে সে ব্যাপারে যথেষ্ট গুরুত্ব দেবেন। ডাক্তার বা নার্স যেন এব্যাপারে সম্পূর্ণ অবগত থাকেন।
কোনো ব্যক্তি যদি শারীরিক এবং মানসিক ভাবে অসুস্থ হন, তবে তার দেখাশুনা করা খুব ক্লান্তিদায়ক কাজ। আপনি বিপযর্স্ত বোধ করলে, সাহায্য নিন।