সফল গ্রাফিক ডিজাইনার হওয়ার ১০টি টিপস
এবার আসি গ্রাফিক ডিজাইনার হবার পালায়। একজন সফল গ্রাফিক ডিজাইনার হতে হলে আপনার কিছু নির্দিষ্ট বিষয়ে বেশী বেশী মন দেয়া চাই।
০১) বেসিক শেখা, বোঝায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া:
এটা সত্য যে গ্রাফিক ডিজাইন করতে হলে আপনার পুঁথিগত বিদ্যার দরকার পড়বেনা।
কিন্তু গ্রাফিক ডিজাইন করার জন্য আপনাকে প্রাথমিক গ্রাফিক ডিজাইনটা মন দিয়ে শিখতে হবে।
বেসিক মন দিয়ে শেখার পরেই আপনি দেখাতে পারবেন সৃজনশীল- তার খেলা।
০২) অনলাইন কোর্স ভরসা!
গ্রাফিক ডিজাইন যেহেতু এখন বিশ্ব জোড়া জনপ্রিয় একটা স্কিল, এটা শেখার জন্য অনলাইন কোর্স হচ্ছে সব থেকে সুবিধাজনক মাধ্যম ।
ঘরে বসেই আপনি পেয়ে যাবেন অনেক অনেক অনলাইন কোর্স। যে কোর্সটি সব মিলিয়ে আপনার জন্য সব থেকে বেশী সুবিধার, বুঝে শুনে সেটাই নির্বাচন করবেন ।
এ ক্ষেত্রে আমি আপনাকে বলবো আমাদের টেন মিনিট স্কুলের গ্রাফিক ডিজাইন কোর্সটি নিতে। কেন, তা একটু পরেই বলছি।
০৩) প্রতিষ্ঠিতদের কাজ লক্ষ্য করা:
গ্রাফিক ডিজাইনে আপনার আগ্রহ ? আজই বসে খ্যাতনামা গ্রাফিক ডিজাইনারদের খুঁজে বের করে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল ফলো করা শুরু করে দেন।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কি করে তাঁদের জীবন বদলে দিচ্ছে, সেটা লক্ষ্য করুন । যদি আপনার মধ্যে এই নিয়ে কোনো সংশয় কাজ করে, আজই সেটা ঝেড়ে ফেলে দিন ।
প্রতিষ্ঠিতদের দেখে আপনি অনেক কিছু শিখবেন , নতুন আইডিয়া পাবেন আর সব থেকে বেশী দরকারী যেটা, অনুপ্রেরণা পাবেন ।
০৪) প্রয়োজনীয় সেটআপ জোগাড় :
এই ধাপটা আসবে আপনার বেসিক গ্রাফিক ডিজাইনিং শিখে যাবার পর। যখন আপনি কাজ করা শুরু করবেন , আস্তে আস্তে প্রয়োজন পড়বে নানান ডিভাইসের।
গ্রাফিক ডিজাইন কিন্তু লেখালেখির মতো না, যে একটা ল্যাপটপ আর কিছু আইডিয়া নিয়েই আপনি কাজ করতে পারবেন ।
এ ক্ষেত্রে একে বারে সব যোগাড় করা কষ্টসাধ্য হলে, আস্তে আস্তে যোগাড় করতে থাকেন । ‘পুরো সেটআপ যেদিন আসবে সেদিন কাজ শুরু করবো’ ভাবলে আপনার কাজ কোনো দিনো হয়তো শুরু হবেনা।
০৫) দরকার সত্যিকার কাজের অভিজ্ঞতা অর্জনের :
আজ এক ধরণের লোগো বানানো শিখলেন ? কোনো একটা নাম কল্পনা করে সেটার লোগো বানিয়ে
ফেলুন ।
আপনার প্রিয় বন্ধুর সাথে ধরুন একটা ব্যবসা শুরু করার স্বপ্ন দেখছেন । সেই ব্যাবসাটা কেমন হবে সেটা কল্পনা করে একটা কাল্পনিক লোগো বানিয়ে ফেলুন।
কে জানে, এই কাল্পনিক লোগো আবার পরবর্তীতে বিশ্বসেরা কোনো একটা প্রতিষ্ঠানের জন্ম হবার কারণ হয়ে যেতে পারে! এভাবে আস্তে আস্তে সত্যিকার কাজ করা শুরু করুন।
একটু আত্মবিশ্বাস বাড়লে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং ওয়েব সাইট যেমন Upwork, Fiverr ইত্যাদিতে কাজ খোঁজ করা শুরু করে দেন । সত্যিকার কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে আপনি কী শিখছেন , সেটার হাতে নাতে প্রমাণ পাবেন। আর কাজ করা তো হচ্ছেই।
০৬) চমৎকার একটা পোর্টফোলিও চাই :
ধরেন জাপানের হারুতো সাহেবের একজন গ্রাফিক ডিজাইনারের প্রয়োজন। একজন প্রফেশোনাল হিসেবে আপনার প্রবল আত্মবিশ্বাস , আপনি ওনার কাজটির জন্য সব থেকে যোগ্য।
কিন্তু হারুতো সাহেব তা বুঝবেন কী করে? আপনি বললেই তো আর উনি বিশ্বাস করে বসবেন না।
এজন্য আপনার দরকার একটা চমৎকার পোর্ট- ফোলিও , যাতে আপনার সব দক্ষতা আর কাজের অভিজ্ঞতা সুন্দরভাবে সাজানো থাকবে ।
মনে রাখতে হবে এই পোর্টফোলিওই আপনার পরিচয়। এটি দেখেই ক্রেতা কিংবা আপনার চাকুরীদাতা অনেক জনের মাঝে আপনাকে তার কাজের জন্য নির্বাচন করবেন।
০৭) প্রফেশনাল কপিরাইটিং শেখার পালা :
গ্রাফিক ডিজাইন হোক কিংবা অন্য ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কপিরাইটিং অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা স্কিল।
আপনার এই স্কিল যতো ভালো হবে, কাজ ততো সুন্দর হবে। এ জন্য প্রথম থেকেই খেয়াল রাখবেন কপিরাইটিং ভালো ভাবে আয়ত্ত করার দিকে ।
০৮) আপডেটেড ডিজাইন ট্রেন্ডের খোঁজ খবর রাখা :
শিরোনামই বলে দিচ্ছে আপনাকে কী করতে হবে । ডিজাইন সমাজ, মানুষের মন-মানসিকতাকে ঘিরে প্রতিনিয়ত বদলাতেই থাকে ।
আপনার কাজ হলো এই পরিবর্তন সম্পর্কে খোঁজ- খবর রাখা। শুধু ট্রেন্ড জানা এ ক্ষেত্রে যথেষ্ট না।
আগের ডিজাইনের ধরণ, এক সময় থেকে আরেক সময়ের ডিজাইনের পরিবর্তন ইত্যাদি আপনার মাথায় রাখতে হবে।
০৯) একটা নির্দিষ্ট দিকে বেশি জোর দেয়া :
গ্রাফিক ডিজাইন তো একটা মহা সমুদ্রের মতো। এর ভেতরে অনেক অনেক কাজের ধরণ আছে। আপনার উচিত হবে সব বিষয়েই টুকটাক ধারণা রাখা, কিন্তু যে কোন একটা দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে সেটার প্রো হবার চেষ্টা করা।
অনেক কিছু একসাথে আয়ত্ত করার থেকে যে কোনো একটি বিষয়ে সর্বোচ্চটা দেয়া হবে বুদ্ধিমানের কাজ ।
১০) নেভার স্টপ লার্নিং !
এই ‘নেভার স্টপ লার্নিং’- বাক্যটাকে আপনার মস্তিষ্কে ঢুকিয়ে নিন ।
গ্রাফিক ডিজাইন শেখার কোন এক পর্যায়ে আপনার মনে হতে পারে আপনি একজন প্রফেশনাল, আপনার আর শেখার প্রয়োজন নেই।
কিন্তু বিশ্বাস করুন , শেখার শেষ আসলেই হয়না। তা ছাড়াও গ্রাফিক ডিজাইন অল্প অল্প করে শেখার জিনিস ।
কয়েক দিনেই আপনি এটা আয়ত্ত করে ফেলতে পারবেননা । অনেক অনেক বছরের অভিজ্ঞ গ্রাফিক ডিজাইনাররাও প্রতিনিয়ত নতুন জিনিস শিখতে থাকেন।
আবার প্রথম কয়েক দিন শেখার পর আপনার আগ্রহ কমতে থাকতে পারে। তখনও কিন্তু বেদ বাক্যের মতো এই লাইন আওড়াতে পারেন !
T-Shirt Design করে Freelancing
কোর্সটি করে যা শিখবেন:
বেসিক থেকে শুরু করে প্রফেশনাল টি-শার্ট ডিজাইন করার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যাডোবি ইলাস্ট্রেটরের টুলস ক্লায়েন্টের চাহিদা অনুযায়ী কাস্টমাইজড টি শার্ট ডিজাইন করার কৌশল ও উপায়।
প্রফেশনাল টি-শার্ট ডিজাইন পোর্টফোলিও তৈরি করার স্ট্র্যাটেজি।
গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখব ?
উপরে বললাম, আবার বলি । গ্রাফিক ডিজাইন শেখা আসলে খুকির হাতের মোয়া না । এটি শিখতে যেমন ইচ্ছাশক্তি দরকার, ধৈর্য দরকার, তেমনি দরকার সঠিক গাইড লাইন ।
অনলাইনে আপনি অনেক কোর্স পেয়ে যাবেন গ্রাফিক ডিজাইনের । এর মাঝে কোর্সেরা, ইউডেমি, খান একাডেমীর মতো ওয়েবসাইটের চমৎকার কিছু কোর্স আছে।
কিন্তু বেশ বড় সড় সমস্যা হচ্ছে, প্রথমত কোর্সগুলোর প্রায় সবই ইংরেজিতে। যতই ইংরেজি ভালো জানা থাকুক, ভাষার দেয়াল অনেকের জন্য একটা সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় ।
তাহলে আমরা যারা খুব ভালো ইংরেজি বুঝিনা, তারা গ্রাফিক্স ডিজাইন কিভাবে শিখবব? দ্বিতীয়ত, বিগেনার দের কথা মাথায় রেখে এই কোর্সগুলোর অধিকাংশই ডিজাইন করা হয়নি ।
ফলে অনেক আগ্রহ নিয়ে শিখতে আসলেও পরে ব্যাপারটা এত জটিল মনে হয় যে, অনেকেই হাল ছেড়ে দেয় ।
টেন মিনিট স্কুল এই কথা মাথায় রেখে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছে গ্রাফিক ডিজাইনের ওপর বেশ কয়েকটি চমৎকার কোর্স ।
সবার কথা মাথায় রেখে এখানে সাজানো হয়েছে গ্রাফিক ডিজাইনের বেসিক থেকে শুরু করে প্রফেশনাল লেভেল, যেখানে বাংলায় সাবলীলভাবে বোঝানো আছে গ্রাফিক ডিজাইনের আদ্যোপান্ত ।
তাহলে আর অপেক্ষা কীসের? গ্রাফিক ডিজাইন শেখার এই এডভেঞ্চারাস পথ যাত্রায় নেমে পড়েন টেন মিনিট স্কুলকে সাথী করে ।
পথে জটিলতা আসবে, কিন্তু হাল কখনোই ছাড়বেননা ! কারণ এই পথের শেষ হয়তো আপনার জন্য নিয়ে বসে আছে নতুন এক জীবনের অপার সম্ভাবনা !