ডিজিটাল মার্কেটিং কি ? ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন ?
তাসরিফ বেশ কিছু দিন আগে গুগলে সার্চ করেছিলো “Best quality Headphone”।
কিন্তু ইদানিং সে লক্ষ্য করছে তার ফেসবুকে যে সকল এড আসে, তার বেশিরভাগ অংশ হেডফোন রিলেটেড।
যদিও এখনো সে হেডফোন কেনেনি, কিন্তু ব্যাপারটা যে শুধু ফেসবুকে দেখা যাচ্ছে তা কিন্তু না।
বরাবরের মত ইন্সটাগ্রামে গেলেও তাকে যেসব এড দেখায় সবগুলো চটকদার সব হেডফোনের কালেকশন।
এতে অবশ্য তাশরিফের বেশ কিছু উপকার হয়েছে। অনেক ব্র্যান্ড সম্পর্কে এবং তাদের অফার সম্পর্কে জানতে পেরেছে। কিন্তু সে খানিকটা চিন্তিত।
তার ধারণা, গুগলে সার্চ করার আগে তার টাইমলাইনে এই ধরনের এড আসতো না।
ঘটনা বিশ্লেষণ- তাসরিফের সাথে ঘটা ঘটনা আমাদের সকলের সাথেই কম বেশি হয়।
একটু ভালো করে চোখ কান খোলা রাখলে টের পাবেন আপনিও।
এ রকম হওয়ার পেছনের কারণ হচ্ছে – ডিজিটাল মার্কেটিং।
চৌকশ ডিজিটাল মার্কেটার বার বার রিসার্চ করে তাসরিফকে টার্গেট করেছে।
তার ফলে তার টাইমলাইনে তারা এই ধরণের এড নিয়ে আসতে সফল হয়েছে।
আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করবো ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে। আজকের পোস্টে আমরা জানবো-
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধরণ
অনলাইন মার্কেটিং
অফলাইন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
পে-পার ক্লিক এডভার্টাইজিং
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ইমেইল মার্কেটিং
Enhanced অফলাইন মার্কেটিং
রেডিও মার্কেটিং
টেলিভিশন মার্কেটিং
ফোন মার্কেটিং
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ার
ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়
ডিজিটাল মার্কেটিং কি?
ডিজিটাল মার্কেটিং কি? ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে- ইন্টারনেট, মোবাইল ফোন,
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে কনজিউমারের কাছে পন্যের জানান দেওয়ার একটি পন্থা।
মার্কেটিং এর কাজ মূলত মানুষের নিকট পন্য সঠিক সময়ে পৌঁছে দেয়া বা জানান দেয়া।
বর্তমানে মানুষ বেশিরভাগ সময় ব্যয় করে থাকে অনলাইনে।
করোনাকালীন সময়ে তার স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক গুন।
এই বিশাল পরিমানের অডিয়েন্সের সামনে আপনার পন্য সম্পর্কে তুলে ধরার সহজ এবং কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং।
যদি আরও সহজে বলতে চাই, ডিজিটাল মার্কেটিং হচ্ছে প্রোডাক্ট মার্কেটিং এর একটি দিক যেটি ইলেক্ট্রনিক্স ডিভাইস, সোসাল মিডিয়া, ইন্টারনেট এর সাথে সম্পৃক্ত।
ডিজিটাল মার্কেটিং কেন করবেন?
যে কোন ব্যাবসাকে প্রচার এবং প্রসারের জন্য মার্কেটিং প্রয়োজন।
দিন বদলেছে, মার্কেটিং এর ধরন বদলেছে। মার্কেটিং এখন ডিজিটালাইজ হয়েছে। প্রতিষ্ঠান কিংবা পন্য, যেটাই হোক মার্কেটিং ছাড়া গতি নেই।
ডিজিটাল মার্কেটিং অনেক বেশি স্পেসিফিক এবং যে সকল মানুষ শুধু ঐ নির্দিষ্ট প্রোডাক্ট চান তাদের কাছেই মার্কেটিং করা যায়। যা প্রচলিত মার্কেটে সম্ভব নয়।
প্রচলিত পদ্ধতিতে কোন প্রোডাক্টের মার্কেটিং করতে গেলে ব্যবহার করতে হয় প্রিন্ট এড, ফোন কমুউনিকেশন, ফিজিক্যাল মার্কেটিং।
তাও খুব সহজে মানুষের নিকট রিচ করা যায় না যতটা যায় অনলাইনের মাধ্যম।
প্রচলিত মার্কেটিং এর আরো বড় ধরনের সমস্যা হচ্ছে এটাতে প্রচুর পরিমানে টাকা ব্যয় হয়।
এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল মার্কেটিং যেন একটি ত্রাতা হয়ে আসলো।
খুব সহজে যদি কেউ তার টার্গেটেড অডিয়েন্সের নিকট পৌছাতে চান, ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিকল্প নেই তাহলে।
ডিজিটার মিডিয়া ব্যবহার করে অডিয়েন্সের ইন্টারেস্ট অনুযায়ী এড শো করানো যায়,
যেটি ফিজিক্যাল মার্কেটিং এ করা অসম্ভবপর। আর যদিও করা যায় তাও অত্যাধিক ব্যয় বহুল।
ফিজিক্যাল মার্কেটিং করতে গেলে দেখা যায় একসাথে অনেক গুলো মানুষের সামনে কোন একটা এড শো করানো হচ্ছে বা প্রিন্টিং এড দিয়ে দেয়া হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, উপস্থিত সকলে কিন্তু এই প্রোডাক্টটি সম্পর্কে সমান আগ্রহ দেখায় না। যেটি আশাও করা যায় না।
এক্ষেত্রে হয় কি, যাদের প্রোডাকটি সম্পর্কে কৌতুহল রয়েছে তারাই মুলত প্রোডাক্টিভ মার্কেটিং এর আওতায় পড়েন।
বাদ বাকি যারা আছেন তাদের কাছ থেকে কোম্পানি আশা করার তেমন কিছু থাকে না।
আগ্রহ প্রকাশ করেন না এমন লোকের সংখ্যা যত বেশি হবে তত বেশি মার্কেটিং ব্যর্থ হবে।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এ এটির কোন সুযোগ নেই। যদি আপনি ভালো কোন এজেন্সির নিকট হতে,,
মার্কেটিং করাতে পারেন তাহলে আপনার প্রায় প্রতিটি এড টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে রিচ করবে।
মানে এড গুলো স্পেসিফিক তাদের কাছে শো করবে যারা মুলত আগ্রহ দেখান উক্ত পন্যের সম্পর্কে।
এটি হচ্ছে ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর ধরণঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং কে ২ ভাগে ভাগ করা যায়। অনলাইন মার্কেটিং এবং অফলাইন মার্কেটিং।
অনলাইন মার্কেটিং
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং
কন্টেন্ট মার্কেটিং
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
পে-পার-ক্লিক এডভার্টাইজিং
এফিলিয়েট মার্কেটিং
ই-মেইল মার্কেটিং
অফলাইন মার্কেটিং
Enhanced অফলাইন মার্কেটিং (LED Tv add)
রেডিও মার্কেটিং
টেলিভিশন মার্কেটিং
ফোন মার্কেটিংঃ
এ পর্যায়ে আমরা উপরে উল্লেখিত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণ নিবো।
শুরুতে জানা যাক অনলাইন মার্কেটিং এর ক্যাটাগরি সম্পর্কে।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনঃ
বর্তমানে সবচেয়ে বেশি ট্রাফিক জেনারেট করতে পারে সার্চ ইঞ্জিন।
এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং স্ট্রাটেজি হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
এক কথায় যদি এসইও সম্পর্কে বলি তাহলে কথাটা এমন দাঁড়ায় যে – ওয়েবসাইটকে এমন ভাবে সাজানো,
যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিন গুলো জানতে পারে আপনার কন্টেন্টে কি রয়েছে,
এবং যারা সার্চ করছেন তাদের কি-ওয়ার্ড এর সাথে ম্যাচ করে সাইটকে অপটিমাইজ করাই হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিংঃ
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং কে সংক্ষেপে বলা হয় সার্চ মার্কেটিং।
সার্চ মার্কেটিং হচ্ছে এমন একটি প্রসেসের নাম যার মাধ্যমে ট্র্যাফিক গেইন করা যায় পেইড এবং আন-পেইড উভয় মাধ্যমে।
অর্থাৎ গুগলে যখন সার্চ করি তখন দুই ধরনের রেজাল্ট আসে।
যেগুলো পেইড সেগুলো ছোট্ট করে (ad) লেখাটা লেখা থাকে।
আর যেগুলো আনপেইড সেটি এসইও এর আওতায় পড়ে।
কন্টেন্ট মার্কেটিংঃ
কন্টেন্ট মার্কেটিং বলতে অনেকেই মনে করে থাকেন ব্লগ পোস্টকে, তবে ব্যাপারটি পুরোপুরি এমন নয়।
গল্প বলার মাধ্যমে অনেকে অনেক ধরনের প্রোডাক্টের কথা আমাদের সামনে তুলে আনেন।
স্টোরিটেলিং এর মাধ্যমে প্রচার করাটাই মূলত কন্টেন্ট মার্কেটিং।
এসব নিয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হবে আগামী পোস্ট গুলোতে।
তবে এর আগে আরেকটু মস্তিষ্কের খোরাক দিয়ে যাই, সেটা হচ্ছে কন্টেন্ট মার্কেটিং,
প্রথম শুরু হয়েছে ১৮৮৫ সালে (The Furrow) নামের একটি ম্যাগাজিন এর মধ্য দিয়ে।
সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিংঃ
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সবচেয়ে জনপ্রিয় দিক হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
কারণ বর্তমান সময়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় ব্যয় করেন সোস্যাল মিডিয়াতে।
সেলারদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া, ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি।
খুব কম খরচে টার্গেটেড অডিয়েন্সের কাছে পৌছানোর সবচেয়ে সহজ মাধ্যম হচ্ছে সোস্যাল মিডিয়া মার্কেটিং।
পে-পার ক্লিক এডভার্টাইজিংঃ
মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে একটি নির্ভরযোগ্য ক্ষেত্র হচ্ছে পে-পার-ক্লিক এডভার্টাইজিং।
বিশেষ করে যারা ওয়েবসাইটে ট্রাফিক জেনারেট করতে মার্কেটিং করেন তাদের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত একটি পদ্ধতি।
এই পদ্ধতিতে প্রতি ক্লিক অনুযায়ী আপনাকে টাকা গুনতে হবে এড এর জন্য।
এছাড়া এফিলিয়েট মার্কেটিং যারা করেন তারা এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ভালো সুবিধা করতে পারবেন। তবে এটি একটি ব্যয় বহুল প্রক্রিয়া।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংঃ
অন্যকে রেফার করার মাধ্যমে যে মার্কেটিং পদ্ধতি গড়ে উঠেছে সেটিই অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং।
এখানে যারা এফিলিয়েট মার্কেটিং করে থাকেন তাদের নিজেদের কোন প্রোডাক্ট থাকে না।
ব্যাকলিংক এর মাধ্যমে ট্রাফিক জেনারেট করে দেয়ার এই মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজিটির ইভল্ভ হয়েছে।
এফিলিয়েট মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত এবং কার্যকরী মাধ্যম গুলোর একটি।
ইমেইল মার্কেটিংঃ
সহজ কথায় ই-মেইলের মাধ্যমে মার্কেটিং করার পদ্ধতিই হচ্ছে ই-মেইল মার্কেটিং।
আমরা যারা বিভিন্ন ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলি তখন তারা আমাদের ই-মেইল কালেক্ট করে রাখে।
পরবর্তীতে তারা আমাদেরকে সেই সকল ইমেইলের মধ্য দিয়ে আমাদের কাছে সহজে রিচ করতে পারে।
যদিও বাংলা দেশে ই-মেইল চেক করার প্রবণতা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম,
এখান কার কনসেপ্ট দিয়ে আপনি আপনি ই-মেইল মার্কেটিং এর দুনিয়া সম্পর্কে ধারনা করতে পারবেন না।
যদি আরো সহজে বলি – ধরুন প্রত্যেকদিন আপনি যেমন মেসেঞ্জারের মেসেজ চেক করেন সেই ভাবে যদি ই-মেইল চেক করতেন,
আর মার্কেটাররা যদি তাদের পন্যের প্রচারের জন্য আপনাকে ইনবক্স করে কত সহজে তারা তাদের কাস্টমারের কাছে সহজে রিচ করতে পারে।
অনেকে ধারণা করে থাকেন ইমেইল মার্কেটিং এর মাধ্যম টা সবচেয়ে বেশি কার্যকর পদ্ধতি।
অনলাইন মার্কেটিং সম্পর্কে বেসিক কিছু ধারণা সম্ভবত হয়েছে।
এবার আমরা অফলাইন ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে আরো কিছু ধারণা দেওয়ার চেষ্টা করবো।
Enhanced অফলাইন মার্কেটিংঃ
সহজে বলি যদি- রাস্তার পাশে বিলবোর্ডে এনিমেটেড যে এড গুলো রান করে সেগুলোই মূলত Enhanced অফলাইন মার্কেটিং।
সবচেয়ে ব্যয় বহুল একটি মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির মধ্যে একটি।
ট্রাফিক জ্যাম সমৃদ্ধ স্থানে যদি এই টাইপের এড বসানো যায়,
বিশাল পরিমান একটা অডিয়েন্সের কাছে রিচ করতে পারে খুব সহজে।
বিশেষ করে ইলেকট্রনিক পন্য সেলাররা এটি ব্যাবহার করে থাকেন।
রেডিও মার্কেটিংঃ
রেডিওর ইতিহাস অনেক পুরোনো প্রায় ১০০ বছর হতে চললো যখন রেডিওতে সরাসরি লাইভ টেলিকাস্ট হয়েছে।
আমাকে তেড়ে মারতে আসার আগে ব্যাখা করছি কেন আমি রেডিও মার্কেটিংকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর মধ্যে টেনে এনেছি।
আপনাদের মনে ইতিমধ্যে ধারনা জন্ম নিয়েছে যে রেডিও বোধ হয় মৃত একটি ইন্ডাস্ট্রি।
কিন্তু এমন যদি ধারণা করে থাকেন তাহলে আপনাকে চমকানোর মত কিছু তথ্য আছে আমার কাছে।
রেডিও প্রায় ৮৫% মার্কিনিদের কাছে এখনো পৌছায়। প্রায় ২ ঘন্টা করে অন এভারেজে শুনে থাকে তারা।
বিশ্বের রেডিও এডভার্টাইজিং এর ৪০% খরচ হয় শুধু আমেরিকাতে।
এছাড়াও মোট জনসংখ্যার অর্ধেক আমেরিকান নাগরিক কমপক্ষে মাসে একদিন হলেও রেডিও শুনে।
তবে রেডিওর জায়গাটা দিন দিন দখলে নিয়ে নিচ্ছে পডকাস্ট। এই সম্পর্কিত আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করবো।
টেলিভিশন মার্কেটিংঃ
টার্গেটেড অডিয়েন্স রিচের ব্যাপারে টেলিভিশন মার্কেটিং অনেক পিছিয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যান্য দিক এর তুলনায়।
এটা অস্বীকার করার জো নেই। কারন টেলিভিশনে যে এড শো করানো হয় তা আসলে সবাইকে উদ্দেশ্য করে দেয়া হয়।
কিন্তু ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যান্য সেক্টর গুলোতে মানুষের ইন্টারেস্ট এবং সার্ফিং এর ধরণ অনুযায়ী এড শো করা হয়।
সে ক্ষেত্রে টিভি মার্কেটিং এ কিছুটা ভাটা নিশ্চই পড়েছে।
কিন্তু তার পরেও মার্কেটিং এর হিউজ একটা শেয়ার ধরে ফেলেছে তারা।
ফোন মার্কেটিংঃ
ফোন মার্কেটিংটা আপনাদের বোঝানো সবচেয়ে সহজ হবে বলে ধারণা করছি।
কারণ আমরা যারা বাংলাদেশে আছি, থাকছি তারা মোবাইল অপারেটরদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে যাই।
তাদের এই প্যাকেজ এই টিউন ঐ প্রোডাক্ট ঐ কন্সার্ট এসবের সেসকল মেসেজ পাঠিয়ে অডিয়েন্সের কাছে রিচ করা হয় তাকেই মুলত সংক্ষেপে ফোন মার্কেটিং বলা যায়।
এছাড়া অনেক সময় দেখবেন কল করে বিভিন্ন কিছু চটকদার কথা শুনায়।
তাদের এসব কার্যক্রমও ফোন মার্কেটিং এর আওতাভুক্ত।
এছাড়া বিভিন্ন কুপন গিভওয়ে দিয়েও অনেক কোম্পানি মার্কেটিং কার্যক্রম চালায়।
আমাদের আশা আছে এসব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে আপনাদের নিয়ে যাবো অনেক অজানা তথ্যের কাছে।
ডিজিটাল মার্কেটিং ক্যারিয়ারঃ
ক্যারিয়ার হিসেবে ডিজিটাল মার্কেটিং একটি সম্ভাবনাময় কাজের ক্ষেত্র এবং প্রতিনিয়ত এই খাতের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে চলেছে।
এটি যেমন সম্ভাবনাময় কাজের ধরণ তেমনি চ্যালেঞ্জিং ও।
আরো জেনে অবাক হবেন বিশ্বের অনেক নামি দামি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডিজিটাল মার্কেটিং এর উপর ডিগ্রি দেওয়া হচ্ছে।
অনেকে আছেন মাস্টার্স পড়ার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং এর বিষয়টি বেছে নেন।
কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে এর ব্যপক চাহিদা সৃষ্টি হবে এবং এখনো রয়েছে।
তরুনদের মধ্যে অনেকে ডিজিটাল মার্কেটিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।
কারণ হিসেবে বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, এই সেক্টরটি তুলনামূল শিখা সহজ এবং চাহিদা সম্পন্ন।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেকগুলো দিক থাকার কারণে যে কেউ সহজে প্র্যাকটিস করা শুরু করে দিতে পারে।
এছাড়া কেউ যদি ডিজিটাল মার্কেটিং শিখে যায়, তাহলে অতি শীঘ্র সে নিজের যে কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে নিতে পারে।
বর্তমান সময়ে যে যাই করুক তাদের সকলের অনলাইনে প্রচারণার দরকার পড়ে।
যেটি সামনের দিন গুলোতে আরো বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।
এই সকল প্রতিষ্ঠান অনলাইনে নিজেদের একটিভিটি বাড়াতে আগ্রহী হচ্ছে।
ফলে সবার নিজস্ব একটি মার্কেটিং এজেন্সি কিংবা মার্কেটার প্রয়োজন হতে পারে।
এই তো গেলো লোকাল সেক্টর, এর বাইরে যত বড় প্রতিষ্ঠান আছে, যেমন ধরুন ফোন কম্পানি গুলো।
তাদের পন্যের প্রচারণার জন্য মাসে প্রচুর পরিমানে মার্কেটিং এজেন্সি গুলোর পেছনে টাকা ঢালতে হয়।
সবাইকে আজ হোক কাল হোক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে আসতে হবে, ইহার বিকল্প নেই।
আর যখনি সবাই এসে পড়বে তখন প্রয়োজন হবে তাদের পন্যের কথা সকল কে জানানো।
কিন্তু সোস্যাল প্ল্যাটফর্মগুলো এমন ভাবে ডিজাইন করে যাচ্ছে দিন দিন,
যাতে আপনি যদি টাকা খরচা না করেন বা ডিজিটাল মার্কেটিং না করেন তাহলে আপনার পোস্ট খুব নগণ্য সংখ্যক লোকের কাছে পৌছাবে।
যারা ইতিমধ্যে ফেসবুক পেইজ খুলেছেন তারা জানেন বিষয় টা।
বা যারা ফেসবুক আইডি ব্যাবহার করেন তারাও দেখবেন মোট ফ্রেন্ড এর তুলনায় ২৫-৪০% মানুষের কাছে আপনার পোস্ট রিচ করে।
পেইজের ক্ষেত্রে সেটা আরো অনেক কম। ২০% সর্বোচ্চ রিচ করে কিনা সন্দেহ।
এক্ষেত্রে সোসাল মিডিয়া ফ্ল্যাটফর্মগুলো চাচ্ছে আপনাকে মার্কেটিং এর পেছনে টাকা ঢালতে। না হয় আপনার পোস্ট তারা কাওকে দেখাচ্ছে না।
ভালো মানের মার্কেটিং শিখতে পারলে কাজের ক্ষেত্র নিয়ে চিন্তা করতে হয় না।
ছোট পাড়ার দোকানের মার্কেটিং থেকে শুরু করে অ্যাপল মার্কেটার হওয়ার মত বড় বড় সুযোগ রয়েছে।
এছাড়া ফ্রিল্যান্সিং করে বেশ কিছু পরিমান টাকা আয় করা যায়।
ডিজিটাল মার্কেটিং করে আয়ঃ
যুক্তরাষ্ট্রে একজন ডিজিটাল মার্কেটার এর মান্থলি স্যালারি প্রায় ৪৮৬২ ডলার।
বাংলাদেশি টাকায় প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার কাছাকাছি।
আমাদের পাশের দেশ ইন্ডিয়াতে ডিজিটাল মার্কেটারদের মান্থলি গড়ে ১৫-৮৮ হাজার রুপি স্যালারি রয়েছে ।
ডিজিটাল মার্কেটিং এর সম্ভাবনার দ্বার বিশাল। আপনি চাইলে ফ্রিল্যান্সিং করতে পারেন।
কোন সংস্থার জন্য হয়ে কাজ করতে পারেন। কোন বড় মিডিয়ার জন্য কাজ করতে পারেন।
নির্বাচনি প্রচার করে আয় করতে পারেন। এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত।
এবারের মার্কিন নির্বাচনে আমরা দেখেছি সরাসরি প্রচারণার চেয়ে প্রেসিডেন্টরা সোসাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে বেশি টাকা খসিয়েছেন।
সামনে যুক্তরাষ্ট্র কে ফলো করে অনেক দেশ নির্বাচনী প্রচারণার জন্য সোসাল মিডিয়াকে ব্যবহার করলে নতুন একটি বিশাল সম্ভাবনাময় দিক উন্মোচিত হবে ডিজিটাল মার্কেটিং এর জন্য।
আশা করি পাঠক আপনার সামনে সামান্য কিছু তথ্য তুলে ধরতে পেরেছি ডিজিটাল মার্কেটিং সম্পর্কে।
আগামী পোস্ট গুলোতে নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। সেই পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।