থাইরয়েডের সমস্যা
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও, অনেকেই থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন।
এ সমস্যা থেকে বাড়ছে অন্যান্য শারীরিক সমস্যাও।
যখন থাইরয়েড গ্রন্থি অস্বাভাবিক কার্যক্রম করে তখনই এসব সমস্যা দেখা দেয়।
থাইরয়েড গ্রন্থিতে হরমোন উৎপাদন স্বাভাবিকের চেয়ে,
বেড়ে গেলে হাইপার-থাইরয়ে-ডিজম এবং কমে গেলে হাইপো-থাইরয়ে-ডিজম সমস্যা দেখা যায়।
এসব সমস্যা থেকে দূরে থাকতে খাদ্য তালিকা থেকে কিছু খাবার বাদ দিতে হবে।
যে সব শাকসবজি খাওয়া কমিয়ে দেবেনঃ
কিছু শাকসবজি যেমন, ব্রকলি, ফুলকপি, বাঁধাকপি,
শরীরের থাইরয়েডের কার্য ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
এ ছাড়াও যারা আয়োডিনের সমস্যায় ভুগছেন,
তারা অবশ্যই এসব শাক-সবজি কাঁচা অবস্থায় খাবেন না।
তবে ভালো ভাবে সিদ্ধ করার পর এসব শাক সবজি,
থাইরয়েড গ্রন্থির ওপর তেমন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে না।
সয়াবিন,ডাল এসব খাবারে থাকা অতিরিক্ত ফাইবার,
থাইরয়েড সমস্যাকে আরো জটিল করে তুলতে পারে।
বেশি ফাইবার যুক্ত খাবার খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
তাই এসব খাবার অল্প পরিমানে খাবেন।
তেলে ভাজা খাবারঃ
তেলে ভাজা খাবারে থাকে প্রচুর পরিমাণে আন-সেচু-রেটেড ফ্যাট।
ইহা থাইরয়েড সমস্যাকে অনেক বেশি জটিল করে তুলতে পারে।
তাই থাইরয়েড রোগীদের অবশ্যই তৈলাক্ত ও চর্বি যুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত।
প্রক্রিয়াজাত খাবারঃ
কেক, কুকিজ, পাস্তা, পিৎজা এসব প্রক্রিয়াজাত খাবারে,
অনেক বেশি মাত্রায় সোডিয়াম থাকে। তাই এগুলো বাদ দিতে হবে।
মাংসঃ
লাইপিক এসিড বেশি থাকে এমন মাংস না খেয়ে এড়িয়ে চলুন।
কারণ, শরীরে লাইপিক এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে তা থাইরয়েড গ্রন্থিকেও,
প্রভাবিত করে এবং সমস্যা আরো বাড়িয়ে দিতে পারে।
চিনি, পানীয় ও অ্যাল-কোহলঃ
চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার এমনিতেই শরীরে,
খাবারের হজম প্রক্রিয়াকে কমিয়ে দেয়।
আবার পানীয়তেও অনেক বেশি চিনি থাকে।
অন্য দিকে থাইরয়েড সমস্যায় শরীরের মেটা-বলিজম এমনিতেই কমে যায়।
তাই সুস্থ থাকতে এসব খাবার এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
অন্য দিকে অ্যাল-কোহল শরীরে থাইরয়েড হরমোনের ভার সাম্য নষ্ট করে দেয়।
কফিঃ
কফির অভ্যাস আপনার থাইরয়েড সমস্যা বাড়িয়ে তা জটিল করে তুলতে পারে।
কারণ ক্যাফেইন এসব রোগীদের শরীরে ঔষধের কাজে বাধা দেয়।
থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এসব খাবার গুলো এড়িয়ে চলতে পারেন।
থাইরয়েডের সমস্যায় উপকারী খাবারঃ
থাইরয়েড হল গলার ভেতর প্রজাপতি আকৃতির একটা গ্রন্থি,
যা শরীর সুস্থ রাখতে গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখে।
থাইরয়েডের সমস্যা থেকে দেখা দিতে পারে ওজন হ্রাস, অবসাদ এবং চুল পড়ে যাওয়া।
খাদ্য তালিকায় কিছু খাবার যোগ করে এসব সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
খাদ্য ও পুষ্টি-বিষয়ক একটি ওয়েব-সাইটে প্রকাশিত,
প্রতিবেদন অবলম্বনে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হল।
গাঢ় সবুজ পত্রল সবজিঃ
সবুজ শাক সবজি শরীরের প্রদাহ কমায়। এগুলো ক্যারোটি-নয়েডস,
এবং অ্যান্টি-অক্সি-ডেন্টের ভালো উৎস । যা শরীরের ক্ষয় পূরণে সাহায্য করে।
মাছঃ
স্যামন, ট্রাউট, টুনা বা সার্ডিন উচ্চ ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ,
যা খাবার হিসেবে আদর্শ। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড প্রদাহ কমায়,
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হৃদ রোগের ঝুঁকি কমায়।
তা ছাড়া মাছ সেলি-নিয়ামের ভালো উৎস।
ডিমঃ
বিশেষ করে ঘাস-পাতা খেয়ে বড় হওয়া মুরগির ডিম,
আয়োডিন ও সেলিনি-য়ামের ভালো উৎস। যা থাইরয়েড উপযোগী পুষ্টি উপাদান।
একটা ডিমে ২০ শতাংশ সেলি-নিয়াম এবং ১৫ শতাংশ আয়োডিন থাকে,
যা থাইরয়েড গ্রন্থির কার্য কারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
এছাড়াও প্রোটিন ও টায়রো-সিনের ভালো উৎস ডিম।