ব্লগ তৈরির নিয়ম ও ইনকামের বিভিন্ন উপায় :

ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয়ঃ

আমরা বেশিরভাগই যারা চাকরীতে কর্মরত থাকি তারা কিংবা আশে পাশের সকলেই মনে করে থাকে, চাকরী আছে মানেই জীবনটা একেবারে নিরাপদ।

কিন্তু সত্যিই কি তাই? চলুন তবে বাস্তবতা থেকে ঘুরে আসি।

এইতো কিছুদিন আগের কথা, করোনাতে আমাদের জীবন প্রায় ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছিল।

আমাদের বেঁচে থাকাটাই অনিশ্চিত হয়ে উঠেছিল। তাতে আর চাকরী করে বেতন পাওয়া তো দূরে থাক আমরা শুধুমাত্র বেঁচে থাকার ক্ষীণ আশায় ছিলাম।

এর মধ্যে অনেকেই চাকরীচ্যুত হয়েছিল কোন কারন ছাড়াই। মাঝে একদিন আমার স্কুল বন্ধু রবিন এর ফোনকল আসল।

ও একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কর্মরত ছিলো। যে কিনা ব্যস্ত থাকার জন্য কখোনোই আমাদের জন্য সময় বের করতে পারত না।

এবার মূল কথায় আসা যাক, খুব হতাশ হয়েই রবিন আমার কাছে ফোন করে।

ওর চাকরীটা নাকি চলে গেছে এখন  আর করার মত কিছুই নেই। এদিকে ওর পুরো পরিবার নিয়ে পথে বসার মত অবস্থা।

জানতে চাইলাম। এতোদিন চাকরী করে কি কিছুই সঞ্চয় হয়নি? যা দিয়ে সংসার চলা যায়?

রবিন দুঃখের হাসি হেসে বলল, তোরা আর গোটা সমাজ মনে করে যে আমরা যারা চাকরী করি তাদের জীবন আসলে নিরাপদ হয়ে গেছে।

আগে আমিও মনে করতাম। কিন্তু, দিন শেষে যা হয় আমরা যতটুকুই আয় করতাম তা দিয়ে আসলে আমাদের মত মধ্যবিত্ত পরিবারের পুরো খরচ শেষ হয়ে যায়।

এতে করে জমানোর আর অবশিষ্ট কিছুই থাকে না। এখন আমি কি করব কোন উপায় থাকলে সাহায্য কর?

এরপর থেকেই বুঝলাম জীবনে আসলে নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই।

করোনাতে যেমন আমাদের অনেক সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে ঠিক তেমনি সব থেকে উপকার হয়েছে  আমাদের দেশে ফ্রীল্যান্সিং এর মত এতবড় কাজের সুযোগ আসার ফলে।

যার জন্য ব্লগ রাইটিং থেকে শুরু করে ডিজিটাল মার্কেটিং করে অনায়াসেই অনলাইনে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায়।

তাইতো, আর দেরী না করে রবিনকে জলদি ফ্রীল্যান্সিং এর আইডিয়া দেই।

আর আমার কথামত ব্লগ রাইটিং শিখে রবিন এখন একজন দক্ষ ব্লগ লেখক।

এখন তার নিজস্ব প্রতিষ্ঠান আছে এবং সেখানে অনেকেই প্রশিক্ষন নিয়ে কন্টেন্ট রাইটার হচ্ছে।

তাই আপনিও কি ঘরে বসে অনলাইনে ব্লগিং এর মাধ্যমে টাকা ইনকাম করতে চাচ্ছেন?

কিন্তু কোনো উপায় বা গাইডলাইন পাচ্ছেন না। আবার ব্লগিং সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়ার জন্য গুগলে খোজাখুজি করছেন?

কারণ, আজকে আমি ব্লগ তৈরির নিয়ম এবং ব্লগ থেকে কিভাবে আয় করা যায়, সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

ব্লগ তৈরির নিয়মঃ

দুঃখজনক হলেও সত্যি বর্তমানে লেখাপড়া শেষ করেও চাকরির সুযোগ মিলছে না।

চাকরি যেনো সোনার হরিণ। তাই প্রযুক্তি নির্ভর যুগে, বেকার বসে না থেকে ব্লগিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে অনেকই।

কারণ নিজের স্বাধীন মতো ব্লগিং করে মাসে প্রচুর টাকা ইনকাম করা এখন কঠিন কিছু না।

আমাদের কাছে অনেকেই জানতে চেয়েছেন, ব্লগ কি? ব্লগ পোস্ট কি? ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি?

ব্লগ তৈরির নিয়ম, ব্লগ থেকে আয় করার উপায়, ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয় ? 

আজকে আমি আপনাদের মনের সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে হাজির হয়েছি।

আজকের আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়লে, ব্লগ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পেয়ে যাবেন।

এবং আমার আজকের দেওয়া গাইডলাইন অনুসরণ করলে আপনি ব্লগ থেকে খুব সহজেই টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক প্রিয় পাঠক।

ব্লগ মূলত কি (What is a blog basically?)

যারা একদমই নতুন তারা প্রশ্ন করেন, ব্লগ কি? শুনুন, ব্লগ হচ্ছে এমন একটি ওয়েবসাইট, যা পরিচালনাকারী প্রতিনিয়ত আপডেট করে নতুন তথ্য যুক্ত করে।

ব্লগ সাইটে নতুন নতুন তথ্য (কনটেন্ট) যুক্ত করতে হয়। এই তথ্য গুলো পাঠক জানার জন্য সাইটে ভিজিট করে।

সাইটে ভিজিট করলে সাইট পরিচালনাকারী বিভিন্ন মাধ্যমে ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করতে পারে।

এক কথায় বলতে গেলে ব্লগ হচ্ছে লেখা। এখন আপনার মনে যদি প্রশ্ন জাগে, কি লিখবো? তাহলে শুনুন, আপনি বিভিন্ন বিষয়ে লিখতে পারবেন।

যেমনঃ আর্টিকেল লিখতে পারেন, গল্প লিখতে পারেন, প্রডাক্টের ডিটেইলস লিখতে পারেন, আবার আপনি লিখে কিছু শেখাতেও পারেন।

যে কোনো বিষয়ে লেখালেখি করাকে ব্লগ বলে। নিচে ব্লগ পোস্ট কি এবং ব্লগ থেকে কি ধরনের আয় হয় আলোচনা করা হলো।

আপনি যদি ড্রপশিপিং বিজনেস সম্পর্কে জানতে চান তবে লিঙ্ক টিতে ক্লিক করুন।

ব্লগ পোস্ট কি (What is a blog post?)

ডায়রিতে আমরা যেমন বিভিন্ন টপিক লিখে রাখি, ব্লগ পোস্টও ঠিক তেমন।

ডাইরিতে লেখার সময় আমরা উপরে যেমন টাইটেল লিখি, ব্লগ পোস্টেও তেমন টাইটেল লিখতে হয়।

ডাইরিতে অফলাইনে লিখতে হয় আর ব্লগে অনলাইন লিখতে হয়, শুধু এইটুকু পার্থক্য। 

এক কথায় ব্লগ আপনার ব্যাক্তিগত ডাইরির মতো। তবে ব্লগে আপনার বিভিন্ন বিষয়ে গুছিয়ে পরিষ্কার করে লিখতে হবে।

কারণ ডাইরির লেখার পাঠক বলতে গেলে আপনি নিজেই, কিন্তু ব্লগে আপনার লেখা পড়ার জন্য অনেক পাঠক থাকবে। ঠিক যেমন আপনি আমার লিখাটি পড়ছেন।

ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? (What is the main driving force of the blog?)

ব্লগিং করার আগে, প্রথমে ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? সেটা জানতে হবে।

কারণ আপনি যে কাজই করেন না কেনো, আপনাকে আগে কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে৷

ব্লগিং করে টাকা ইনকাম করতে চাইলে, আপনাকে আগে ব্লগের মূল চালিকাশক্তি কি? সেটা বুঝতে হবে।

কারণ ব্লগ সম্পর্কে যদি পুরোপুরি ধারণা না থাকে, তাহলে ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করা অসম্ভব।

SEO ফ্রেন্ডলি কোয়ালিটি কন্টেন্টই হলো ব্লগের মূল চালিকাশক্তি।

যত বেশি কোয়ালিটি কনটেন্ট দিতে পারবেন, ব্লগ থেকে তত বেশি টাকা ইনকাম করতে পারবেন।

কারণ, আপনার ব্লগে কোয়ালিটি কন্টেন্ট থাকলে গুগল তার প্রথম পাতায় আপনার কন্টেন্টটি শো করবে।

আর যখন গুগলের প্রথম পাতায় কনটেন্ট থাকবে, তখন সাইটে ভিজিটর বেশি আসবে।

সাইটে ভিজিট বেশি আসলেই ব্লগ সাইট র‍্যাংক করতে থাকবে।

ব্লগ থেকে টাকা ইনকাম করতে চাইলে নিয়মিত কোয়ালিটি কন্টেন্ট সাইটে পাবলিশ করতে হবে।

তাই ব্লগের মূল চালিকাশক্তি হলো SEO ফ্রেন্ডলি কোয়ালিটি কন্টেন্ট।

ব্লগ তৈরির নিয়ম (Rules for creating a blog)

অনলাইনে ব্লগ থেকে ইনকামের জন্য, প্রথমেই ব্লগ তৈরির নিয়ম জানতে হবে।

তাই অনেকেই ব্লগ তৈরির নিয়ম জানতে চেয়েছেন। আপনি ফ্রিতে ই ব্লগ তৈরি করতে পারবেন।

ব্লগ তৈরি করার জন্য আপনার কোনো ইনভেস্ট করতে হবে না।

ফ্রি ব্লগার একাউন্ট করার জন্য আপনাকে প্রথমে blogger.com সাইটে প্রবেশ করতে হবে।  

blogger.com সাইটে প্রবেশ করার পর, আপনাকে Gmail account এর ইউজার নাম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে সাইটে প্রবেশ করতে হবে।

ব্লগারে একাউন্ট করতে হলে আপনার অবশ্যই জি-মেইল একাউন্ট থাকতে হবে।

আশা করি সবার স্মার্ট ফোনেই জিমেইল একাউন্ট আছে।  

blogger.com সাইটে জিমেইল দিয়ে লগইন করার পর setup page নামে অপশন পাবেন। 

setup page এ ক্লিক করার পর create Google plus account দেখতে পাবেন।

তারপর create Google plus account এ ক্লিক করে তথ্য দিয়ে ফরমটি পূরণ করতে হবে।

ফরমটি পূরণ করার পর আপনার ব্লগার সাইট ক্রিয়েট করা হয়ে যাবে।

তারপর continue to  blogger অপশনে ক্লিক করে Dashboard দেখতে পাবেন। 

Dashboard এ প্রবেশ করার পর create a blog অপশনে ক্লিক করে ব্লগ পোস্ট পাবলিশ করতে পারবেন।

শুধু তাই নয়, আপনি চাইলে (wordpress.com, wix.com, squarespace.
com) এই সাইটগুলোতে গিয়ে খুব সহজেই ব্লগ ওয়েবসাইট, ই-কমার্স ওয়েবসাইট ফ্রিতে শুরু করতে পারেন।  

পরবর্তীতে আপনি একটি ডোমেইন এবং হোস্টিং কিনে আপনার ওয়েবসাইটটিকে নিজের মতো করে পরিচালনা করতে পারবেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *