বিউবনিক প্লেগ (ইংরেজি:  Bubonic plague) কি

বিউবনিক প্লেগ (ইংরেজি: Bubonic plague) হল ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস নামক ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত প্লেগ রোগের তিনটি প্রকারের একটি।

[১] জীবাণুর সংস্পর্শে আসার ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ দেখা দেয়।

[২] উপসর্গগুলো হল জ্বর, মাথাব্যথা, বমি।

[৩] ত্বকের যে স্থান দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করে তার নিকটবর্তী লসিকা গ্রন্থি ফুলে যায় ও ব্যথা হয়। মাঝে মধ্যে ফোলা লসিকা গ্রন্থি ফেটে যেতে পারে।

বিউবনিক প্লেগঃ

বিউবনিক প্লেগ রোগে আক্রান্ত রোগীর উরুতে ক্ষত যা বিউবো নামে পরিচিত। বিশেষত্ব সংক্রামক ব্যাধি লক্ষণ জ্বর, মাথা ব্যথা, বমি, লিম্ফনোড ফুলে যাওয়া ইত্যাদি।
রোগের সূত্রপাত জীবাণুতে আক্রান্ত হওয়ার ১ থেকে ৭ দিনের মধ্যে। কারণ মক্ষিকা (flea) দ্বারা বাহিত ইয়ারসিনিয়া পেস্টিস (Yersinia pestis) রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতি রক্ত, থুতু বা লসিকা গ্রন্থিতে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করা যায়।

চিকিৎসা স্ট্রেপটোমাইসিন, জেনটামাইসিন, বা ডক্সিসাই- ক্লিন প্রভৃতি অ্যান্টিবায়োটিক।সংঘটনের হার প্রতি বছর প্রায় ৬৫০ জন রোগী আক্রান্ত হয়।
মৃতের সংখ্যা চিকিৎসা প্রদান সত্ত্বেও মৃত্যু হার ১০%।

প্লেগ রোগের তিনটি রূপভেদঃ
যেমন বিউবনিক প্লেগ, 
সেপটিসেমিক প্লেগ ও
 নিউমোনিক প্লেগ এর মধ্যে কোনটিতে আক্রান্ত হবে তা নির্ভর করে শরীরে জীবাণু প্রবেশের ধরনের উপর।

বিউবনিক প্লেগ সাধারণতঃ ছোট প্রাণী থেকে আক্রান্ত মক্ষিকার মাধ্যমে ছড়ায়।
ইহা প্লেগে আক্রান্ত প্রাণীর মৃত দেহ থেকে নির্গত তরল পদার্থ থেকেও ছড়াতে পারে।
বিউবনিক প্লেগের ক্ষেত্রে, মক্ষিকা ত্বকে কামড়ালে জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে  লসিকা নালীর মাধ্যমে লসিকা গ্রন্থিতে পৌছায় ফলে লসিকা ফুলে যায়। রক্ত, থুতু বা লসিকা গ্রন্থিতে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয় করে রোগ নির্ণয় করা যায়।

প্রতিরোধের ক্ষেত্রে বিভিন্ন জন স্বাস্থ্য বিষয়ক পদক্ষেপ নেয়া যেতে পারে যেমন যে সব এলাকায় প্লেগের প্রাদুর্ভাব বেশি সেখানে জনগণকে মৃত প্রাণীর সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখা। প্লেগ প্রতিরোধে  টীকার  কার্যকারিতা খুব একটা নেই। স্ট্রেপটোমাইসিন, জেনটা- মাইসিন, বা ডক্সিসাই ক্লিন প্রভৃতি অ্যান্টি- বায়োটিক ব্যবহৃত হয়।

চিকিৎসা না করালে প্লেগ আক্রান্ত রোগীর ৩০% থেকে ৯০% রোগীই মৃত্যুবরণ করে।
মৃত্যু হলে সাধারণতঃ দশ দিনের মধ্যেই হয়।
চিকিৎসা সত্ত্বেও মৃত্যু ঝুঁকি প্রায় ১০%।
সারা বিশ্বে প্রতি বছর প্রতিবেদনকৃত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৬৫০ জন তন্মধ্যে প্রায় ১২০ জন মৃত্যুবরণ করে।

এক বিংশ শতাব্দীতে আফ্রিকায় এই রোগটি সব চেয়ে বেশি দেখা যায়। প্লেগকে ব্ল্যাক ডেথ এর কারণ হিসেবে মনে করা হয় । যা এশিয়া, ইউরোপ ও  আফ্রিকায় চতুর্দশ শতাব্দীতে মহামারী আকারে দেখা দেয় যাতে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ প্রাণ হারায়।

যার ২৫%-৬০% লোকই ছিল ইউরোপীয়।
সে সময় বহু সংখ্যক শ্রম জীবী মানুষ মৃত্যু বরণ করায় শ্রমিক সঙ্কট দেখা দেয় ফলে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি পায়।কোনো কোনো ঐতিহাসিক এই ঘটনাকে ইউরোপীয় অর্থ নৈতিক উন্নয়নের সন্ধিক্ষণ বলে বিবেচনা করেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *